বাস্তবতাকে অস্বিকার করে আমাদের বেঁচে থাকা অসম্ভব।।
হ্যালো বন্ধুরা,
সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। যদিও পারিপার্শ্বিক দিক চিন্তা করলে ভালো থাকার উপায় নেই। ভিতরে বাহিরে সব দিক দিয়েও আমরা অসুস্থ। শুধু ভালো থাকার অভিনয় করছি। সেই সাথে বাস্তবতাকে অস্বিকার করার ব্যর্থ চেষ্টা করছি। আমরা জানি যে এই ব্যর্থ চেষ্টার কোন ফলাফল আসবে না। হয়তো সাময়িক ভাবে একটি সান্তনা পাওয়া যাবে। তবে স্থায়ী কোন সমাধন পাওয়া যাবে না।
আমি আমার আজকের ব্লগের হেডলাইন দিয়েছি বাস্তবতাকে অস্বিকার করে আমাদের বেঁচে থাকা অসম্ভব। আমাদের জীবন চলার পথে অনেক বাধাঁ বিপত্তি আসবেই। যেহেতো মানুষ হিসাবে জন্ম নিয়েছি এসব বাধাঁ অতিক্রম করতেই হবে। আজকে আমি পারিপার্শ্বিক দিক নিয়ে তেমন বেশি আলোচনা করবো না। গত কয়েক দিন যাবৎ যে বিষয়টি আমি লক্ষ করছি শুধু সেই বিষয়টা তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
গত মঙ্গলবারে আমি ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাওয়ার জন্য বিকাল চারটার সময় অফিস থেকে বের হয়। সাইনবোর্ড গিয়ে কমলাপুর যাওয়ার জন্য লাইব্বাইক গাড়িতে উঠলাম। আমি জানি যে যদি আমি ইমার্জেন্সি ভাবে কমলাপুর যেতে চায় তখনই যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভার ব্রিজে জ্যাম লাগে। অথচ অন্য সময় যখন যায় তখন জ্যাম লাগে না। আর এটাই বাস্তাবতা ! আমি প্রায় সময় গাড়ি থেকে ফ্লাইভারে নেমে তারপর হেঁটে যায়। তো গত মঙ্গলবারেও আমি জানি যে যাওয়ার সময় যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভারে জ্যাম লাগতে পারে। বাস কন্টাকটারগণও বিষয়টা জানে। তাই ফ্লাইওভারে গাড়ি উঠার সাথে সাথেই যাত্রী থেকে তারা ভাড়া নিয়ে নেয়। সাইনবোর্ড থেকে কমলাপুর যাওয়ার ২৫ টাকা ভাড়া আমি দিয়ে দিলাম। আমার মত অনেকেই ভাড়া দিলো আবার অনেকে ভাড়া দিলো না। যারা ভাড়া দিলো না তারাও জানে যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভারে জ্যাম লাগতে পারে। আর জ্যাম ধীর্ঘ হলে হেঁটে যাওয়া লাগতে পারে।
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ৮০% ফ্লাইওভার পাড় হওয়ার পরে জ্যাম লেগে গেল। জ্যামও বিশাল বড়, ফ্লাইওভার থেকে একেবারে টিটি পাড়া পর্যন্ত। পাঁচ থেকে সাত মিনিট বসে থেকে দেখলাম গাড়ি চুল পরিমানও নড়ে না। তাই আমি বাধ্য হয়ে ফ্লাইওভার থেকে কমলাপুর পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। কারন দেরি হলে আবার ট্রেন মিস করবো। ট্রেনে তো আর জ্যাম লাগে নাই যে আমার জন্য বসে থাকবে। আমি বাস কন্টাকটারকে বললাম ভাই আমি এখানে নেমে যাবো ১০ টাকা বাড়া রিটার্ন দেন। কিন্তুু বাস কন্টাকটার বললো না ভাই টাকা রিটার্ন দেওয়া যাবে না কারন আমাদের লোক সীট গুনে ফেলছে। আমি জানি ভাড়া রিটার্ন দেয় না। তারপরও বলে দেখলাম।
আমার সাথে আরো কয়েকজন নেমে যাবে। তারা দশ টাকা করে ভাড়া রিটার্ন চাইলো। কিন্তুু বাস কন্টাকটার কোন ভাবেই ভাড়া রিটার্ন দিবে না। এটা নিয়ে এক তুমুল কান্ড ঘটে গেল। আর যারা আগে ভাড়া দেয় নি তারা ঠিকই পনের টাকা করে ভাড়া দিয়ে নেমে যেতে চাইলো। কিন্তুু এখানেও বাস কন্টাকটার বাধা দিলো। ফুল ভাড়া দিয়ে যেতে হবে। আর না হয় বসে থাকেন জ্যাম ছুটলে নিয়ে যাবো। কারন আমাদের ফ্লাইওভারের চার্য দিতে হবে। তারপরও তারা জোর করে ১৫ টাকা করে ভাড়া দিয়ে নেমে গেলো।
তারপর শুরু হলো হাটার পালা। হাটতে লাগলাম গোপিবাগ গিয়ে একজন বলতেছে আমাদের দেশে এত জ্যাম কেন..? রাস্তায় এত গাড়ি কেন..? ঢাকা শহরে এত মানুষ কেন...? ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি উনাকে বললাম ভাই আপনি যেমন এই দেশের নাগরিক তারাও এই দেশের নাগরিক,আপনার যেমন রাজধানীতে বসবাস করতে মন চায়, তাদেরও রাজধানীতে থাকতে মন চাই। রাস্তার জ্যাম জট,মানুষ,আওয়াজ সমস্যা এগুলো বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতা আমাদের মানতেই হবে। এই বাস্তবতাকে অস্বিকার করে আমাদের বেঁচে থাকা অসম্ভব। তারপর জীবনের সাথে যুদ্ধ করে বিভিন্ন বাধাঁ বিপত্তি পাড় হয়ে কমলাপুর গিয়ে পৌছালাম।
ট্রেনের টিকেট কাটতে যাবো সিট নেই। তাই আর সিরিয়াল ধরে স্টান্ডিং টিকেট নিলাম না। ট্রেনেই টিকেট পাবো। ট্রেনে গিয়ে দেখি অনেক মানুষ দুইটি টিকেট কেটে একটি সিট পেয়েছে। আবার তিনটি টিকেট কেটে দুইটি সিট পেয়েছে। আর ট্রেনটি লোকাল প্রত্যেকটি স্টেশনে থামায়। তবে প্রতি স্টেশনে এক থেকে দুই মিনিটের বেশি দাড়িয়ে থাকে না। যার জন্য একটু স্বস্থি লাগে। এখন ট্রেনে উঠে কিছু যাত্রীর অভিযোগ ট্রেন এতে স্লো যায় কেন...? দুই টিকেট কেটে একটি সীট পেয়েছি, টাকা বেশি দিয়েছি, ট্রেনের মধ্যে দাড়িয়ে মানুষ যায় কেন....? অন্য দেশে তো এমন হয় না..ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি একজনকে বলেছি ভাইয়া কে বলেছে আপনাকে এই ট্রেনে আসতে...? আপনি ভিআইপি ট্রেনে চলে যান না...। আর কে বলেছে আপনাকে এই দেশে থাকতে,আর দুই টিকেটের টাকা দিয়ে একটি সীট কিনতে...। নিজের ইচ্ছাতেই এসব করেছেন আবার ট্রেনে এসে এসব কথা বলছেন। যেহেতো এই দেশে জন্মগ্রহন করেছেন বাস্তবতাকে মেন নেন। যদি পারেন পুলিশকে গিয়ে বলেন তারা দুই টিকেটের টাকা নিয়ে আমাকে এক টিকেট দিয়েছে। অথবা তাদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করেন। এখানে ট্রেনের ভিতরে এসব কথা বলে তো লাভ নেই। তখন চুপ করে বসে রইল।
আর আমি ২০ টাকা দিয়ে বুদ্ধি করে একটি স্টান্ডিং টিকেট কেটে নিলাম। বুদ্ধিটা হলো এক লোক তিন টিকেটের টাকা দিয়ে দুইটি সিট নিয়েছে। আরেকটি টিকেট তাকে ফ্রি দিয়েছে যেটায় সীট নাম্বার নাই। যার কারনে বিনা সিটের টিকেট তার কাছে কোন মূল নেই। কিন্তুু আমার কাছে মূল আছে । কারন আমার কাছে কোন টিকেটই নেই। তাই তাকে বিশ টাকা দিয়ে বললাম একটি কফি খাবেন আর বিনা সিটের টিকেট টা আমার কাছে থাক। ট্রেন কর্তৃপক্ষ ভেবেছে তারাই চালাক। আর যাত্রীরা সব বোকা, হে হে হে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ঢাকা শহরের জ্যাম এবং বাস কন্টাকটার এর আচরণ বিধি এগুলোর কিছুটা হলেও অভিজ্ঞতা রয়েছে ভাই। মাঝে মাঝে ঢাকায় গেলে এরকম অভিজ্ঞতায় পড়তে হয়। যাই হোক আসলেই এই বাস্তবতাকে মেনে কিন্তু চলতে হবে না হলে কোন উপায় নেই।তবে মজা লাগলো যে ওই ব্যক্তিকে কফির টাকা দিয়ে স্টেন্ড টিকিটটি নিজে নিয়ে নিলেন। যাইহোক ভাই অনেক ভালো লাগলো পুরো পোস্টটি পড়ে ধন্যবাদ আপনাকে।
জী ভাইয়া বুদ্ধিটা কাজে লাগিয়ে দিলাম,হে হে হে।
ঢাকা শহরের বাস কন্টাক্টর গুলো এক একটা হারামজাদা ভাই। এইরকম বাস্তব অভিজ্ঞতার স্বাক্ষী প্রতিটা ঢাকায় থাকা মানুষ হয়েছে। আর আপনি তো বেশ চালাক ভাই হা হা। বিশ টাকার কফি টাকা দিয়ে সব ম্যানেজ হা হা। এখন সাধারণত সব টিকিট অনলাইনেই বিক্রি হয়ে যায়। স্ট্যান্ড টিকিট ছাড়া পাওয়া যায় না।।
জী ভাইয়া ঢাকা শহরের কত তিলিস্মাতি চলে,যারা থাকে তারা জানে। ধন্যবাদ।
পরিবেশ এবং প্রস্তুতিকে মোকাবেলা করে চলতে হবে ভাই। ঢাকা শহরের যানজটের মধ্যে পড়ে বেশ বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হলো। আসলে ভাই গাড়ির মধ্যে এ ধরনের ঘটনা প্রায় সময় ঘটে থাকে। আপনি ভাই বুদ্ধির কাজ করেছেন বিশ টাকা দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করেছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী বুদ্ধি কাজে লাগিয়েছেন। আপনার পুরো পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
জী ভাইয়া উপস্থিত বুদ্ধিটা কাজে লাগিয়ে দিলাম। ধন্যবাদ।