অনেক দিন পরে রাতভর বৃষ্টি পেলাম।।
বাংলা ভাষায় অনুভূতি শেয়ার করার একমাত্র কমিউনিটি-
এই তো কিছুদিন আগেও বৃষ্টির জন্য হাহাকার ছিল। গরমে অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। গরমে বাচ্চা জোয়ান কত মানুষের শরীরে ঠসা ফুটে গেছে। দিন রাত মিলিয়ে তিন চারবার গোসল করতে হয়েছে। বিছানা ছিল উনুন আর ফ্যানের বাতাস ছিল আগুন। উত্তপ্ত গরমে মানুষ তীর্তের কাকের মত বৃষ্টির আশায় আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল। কত জাগায় বৃষ্টির জন্য সালাতুল ইসতেস্কা বা বৃষ্টির নামাজ পড়া হয়েছিল। ধীর্ঘদিনের গরম সহ্য করার পরে কিছুটা বৃষ্টি হলেও গাছের পাতাই ভিজতো না। মাটিতে বৃষ্টির ফুটার পড়ার সাথে সাথেই শুকিয়ে যেতো। মাটি থেকেও গরম ভাপ বের হতো। মানে গরমের বর্ণনা দেওয়ার মত অবস্থা ছিল না। দুই ফ্যান চালিয়ে অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তখন অধীর আগ্রহ নিয়ে ধীর্ঘ বৃষ্টির আশায় দিন গুনতে লাগলাম।
অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হলো। গত কয়েক দিন যাবৎ ভালোই বৃষ্টিপাত হচ্ছিলো। আগেও হয়েছে তবে সেটা ছেড়ে ছেড়ে বৃষ্টি হয়েছে। কয়েক ঘন্টা বা ধীর্ঘ সময় বৃষ্টি দেখতে পাচ্ছিলাম না। ছোট সময় দেখতাম টানা পাঁচদিন সাতদিন বৃষ্টিপাত হতো। তখন এত বৃষ্টিতে বিরক্ত লাগতো। কারন বৃষ্টি আসলে খেলাধুলা করতে পারতাম না। কত শতবার ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে বাড়ি চলে আসতে হয়েছে। কত খেলা বৃষ্টির জন্য বাতিলে হয়েছে তার কোন সঠিক হিসাব নেই। তখন বৃষ্টি চাইতাম না তারপরেও বৃষ্টি হতো। আর এখন বৃষ্টি চাই তবে বৃষ্টি পায় না। তাছাড়া বৃষ্টিতো আর আমাদের হাতের মুঠোয় না যে চাইলেই পেয়ে গেলাম। বৃষ্টি হলো সৃষ্টিকর্তার রহমত, বৃষ্টি হলো গাছ পালা, জমিনের আহার।
গতকাল সকাল এগারোটার দিকে হালকা একটু বৃষ্টি ছিল। তখন মনে মনে চাইছিলাম টানা কয়েক ঘন্টা যেন বৃষ্টি হয়। কারন যেহেতো গতকাল শুক্রবার ছিল, বাসায় আরামে একটি ঘুম দিতাম। কিন্তুু হালকা একটু কি বৃষ্টির ছিটে পড়ে বৃষ্টি উদাও হয়ে গেছে। জুম্মার নামাজ পড়েও বৃষ্টির আশায় বারবার ছাদে যাচ্ছি , আকাশের অবস্থা কেমন সেটা দেখার চেষ্টা করতেছিলাম। তবে বিকাল থেকে আকাশ মেঘাছন্ন ছিল। বৃষ্টি হবে হবে ভাব। সারা বিকাল বৃষ্টি হলো না। আসরের আজানের পরে বাহিরে যাওয়ার চিন্তা করলাম। মানে বাহিরে একটু কাজ আছে, সেটা শেষ করে ফার্মেসিতে যাবো।
যেই চা বিস্কিট খেয়ে টি-শার্ট পড়ে গেইটের সামনে গেলাম, নেমে গেলো বৃষ্টি। আর বাহিরে যাওয়া হলো না। কিন্তুু পাঁচ মিনিট পড়েই বৃষ্টি শেষ। আবার বাসা থেকে বের হলাম। তারপর অল্প একটু কাজ করে ফার্মেসীতে গেলাম। ফার্মেসিতে গিয়ে বসার একটু পরেই আবার বৃষ্টি শুরু হলো। এইযে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, আর থামার কোন লক্ষন নেই। ফার্মেসিতে বসে আছি তো বসেই আছি। এদিকে বৃষ্টির কারনে রোগিও তেমন আসে না। দুই একজন ছাতা নিয়ে যারা আসে, দুই একটা গ্যাস্টিকের ট্যাবলেট, আর ঘুমের ট্যাবলেট নিয়ে চলে যায়।
ফার্মেসিতে কোন কাস্টোমার না আসায় ভেবেছিলাম বাসায় চলে আসবো। কিন্তুু এত বৃষ্টি হচ্ছে যে ছাদা দিয়ে বাসায় গেলেও ভিজে যাবো। আর রাস্তাও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। ফার্মেসির আংকেল আবার মুড়ি আনালেন বসে বসে মুড়ি খাচ্ছি আর বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় আছে। নাহ বৃষ্টি থামার কোন লক্ষন নেই। সেই সাতটা থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সাড়ে দশটার দিকে আংকেল বললেন চলো আর অপেক্ষা করে লাভ নেই। বাসায় চলে যায়। দোকান বন্ধ করে ছাতা নিয়ে ধীরে ধীরে বাসায় আসলাম।
খাওয়া দাওয়া করে রাত এগারোটার দিকে শুইলাম। পুশের মার্কেট দেখতে দেখতে আর ডিস্কের্ডে কয়েকটি ম্যাসেজ করতে করতেই বারোটা বেজে গেলো। সকাল আটটার এলার্ম দিয়ে মোবাইল রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ঘুম চলে আসলো। শরীরে কাঁথা দিয়ে আরামে একটা ঘুম দিলাম। রাত চারটার দিকে কাঁথা দিয়ে শীতকে আর ম্যানেজ করতে পারছি না। ঘুম থেকে উঠে ফ্যানটা অফ করে দিলাম। বাঙালীরা তো নবাবের বংশধর সেই জন্য প্রচন্ড বৃষ্টিতে, শীতেও ফ্যান চালিয়ে ঘুমায়,হা হা হা। যায়হোক যখন ঘুম থেকে উঠেছি তখনো জানালা দিয়ে দেখলাম বৃষ্টি হচ্ছে। আবার ঘুম দিলাম। সকাল আটটায় ঘুম থেকে উঠেও দেখতেছি বৃষ্টি হচ্ছে। মানে প্রায় বারো ঘন্টার উপরে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পরিমান কম থাকলেও সারারাত বৃষ্টি হয়েছে। সেই জন্য দারুন একটি ঘুম হয়েছে। আজকে মনটা খুবই ফ্রেশ। আসলে ঠিক ভাবে ঘুম না হলে কিছু ভালো লাগে না। যায়হোক সৃষ্টিকর্তার কাছে এক টানা বৃষ্টিও চাই না আবার একটানা রোদ গরমও চাই না। যখন যেটা প্রয়োজন হয়, সৃষ্টিকর্তা যেন সেটার ব্যবস্থা করে দেন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
নাম | অনেক দিন পরে রাতভর বৃষ্টি পেলাম।। |
স্থান | নারায়নগঞ্জ, ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০৫/১০/২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
একটানা বৃষ্টি হলে দৈনিক কর্মজীবী মানুষের অনেক কষ্ট। আপনি মনে মনে বৃষ্টি চেয়েছিলেন ভাইয়া আর বৃষ্টি সত্যি দেখা দিল। এমন বৃষ্টি হলে ফার্মেসিতে কেন অন্য কোথাও তেমন মানুষজন দেখা যায় না সবাই শুধু বাড়ির মধ্যেই থাকে। তবে আজকে রাতে আমাদের এলাকাতেও অনেক বৃষ্টি হয়েছে আর ভিশন জোরে। ভালো লাগলো ভাইয়া আপনার অনুভূতি জানতে পেরে ধন্যবাদ।
দিনের বেলা থেকে রাতের বেলা বৃষ্টি হলে অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ।
একটানা বৃষ্টি কর্মজীবনে অনেক কষ্ট দেয়। আসলে একটানা বৃষ্টি আমারও পছন্দ না। আমাদের শহরেও একটানা বৃষ্টি হয়েছে আর এই বৃষ্টির কারণে যেন বাইরে বের হতে পারছি না। রাস্তায় পানি জমা হয়ে গেছে। আপনাদের ওখানেও বৃষ্টির মুহূর্তের অনুভূতি জানতে পেরে ভালই লাগলো।
জি ভাই গতকাল রাতে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। একটানা বৃষ্টি হলে সবারই সমস্যা।
আমাদের এখানে বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টি হয়েছিল। আজকে বৃষ্টিটা বিকেলে বন্ধ হয়েছে। আশেপাশের পুকুরগুলো পানিতে পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। সারা দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলো। যাই হোক সারা রাত আপনাদের ওখানে বৃষ্টি হয়েছে রাতে খাওয়া-দাওয়া করে শুয়ে আছেন এরপর পুসের মার্কেট দেখেছেন, চ্যাট করেছেন এরপর ঘুমিয়ে গেছেন। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখেছেন খুব সুন্দর অবস্থা। যাই হোক আর যেন বৃষ্টি না হয় এটাই কামনা করছি।
জি ভাই নিম্নচাপের কারণে সারা বাংলাদেশে বৃষ্টি হয়েছে। দিনের বেলা থেকে রাতের বেলা আরো বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
আমি নিজেও অনেকদিন পর এমন বৃষ্টি দেখলাম। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকদিন ধরেই এমন বৃষ্টির আশায় ছিল সবাই। আমি নিজেও ছাতা নিয়ে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরও ভিজে যায়। আর এমন বৃষ্টির সময় মানুষ খুব একটা বের হয় না। এইজন্যই আপনার ফার্মেসী ছিল জনশূণ্য।
জী ভাইয়া এমন বৃষ্টি দেখে অনেক ভালো লাগলো। ওয়েদারটা ঠান্ডা হয়েছে। ধন্যবাদ।
বর্ষাকাল শেষ হয়ে যাওয়ার পরবর্তী সময়ের জন্য বৃষ্টির পরিমাণটা অনেক বেড়ে গিয়েছে। এমন বৃষ্টি হলে কর্মজীবী মানুষদেরকে অনেক বেশি কষ্টের সম্মুখীন হতে হয়। তাদের অনেক কষ্টে তাদের নিজেদের কর্মস্থলে যেতে হয় বিষয়টা আসলেই অনেকটাই কষ্টের।
জী ভাইযা টানা বৃষ্টি হলে সাধারন কর্মজীবী মানুষের জন্য কিছুটা কষ্টকর। ধন্যবাদ।
আমি তো তাহলে নবাবের নাতনি। এখনো ফ্যান চালিয়ে ঘুমাই। কাঁথা মুড়ি দিয়ে ফ্যান চালিয়ে ঘুমানোর মজাই আলাদা। তবে ভাইয়া বৃষ্টির দিনে ঘুমানোর আনন্দই আলাদা। আমাদের এখানে তো কয়েকদিন থেকেই টানা বৃষ্টি হচ্ছে।
আমি তো জানি বাংলাদেশের সবাই নবাবের বংশধর। তারা ফ্যান চালিয়ে ঠান্ডা করে আবার ঠান্ডার জন্য কম্বল কাঁথা ব্যবহার করে,হা হা হা। ধন্যবাদ।