পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ভ্রমন- সপ্তম পর্ব (পাহাড়ী আদিবাসি গ্রাম পরির্দশন)।।
যারা বাংলা ভাষায় ব্লগিং করতে চান,তাদেরকে আমাদের এই কমিউনিটিতে স্বাগতম-
হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ভ্রমন- সপ্তম পর্ব শেয়ার করবো। এই পর্বের মাধ্যমে পাহাড়ী আদিবাসি গ্রাম দেখার অনুভূতি ও তাদের বিভিন্ন বাড়িঘরের ফটোগ্রাফি দেখতে পারবেন।
আমরা আদিবাসি মার্কেট ঘুরে সাড়ে বারোটার দিকে আবার নৌকায় ফিরে আসলাম। তারপর সেখানে থেকে আমরা শুভলং ঝর্ণা দেখার উদ্যেশ্যে রওয়ানা হলাম। যাওয়ার সময় পাহাড়ের নিচে দিয়ে পাহাড় দেখতে দেখতে যাচ্ছিলোম। বিশাল বড় বড় পাথরের পাহাড় দাড়িয়ে আছে। এসব পাহাড় থেকে এক টুকরো পাথর পড়লে আমরা সবাই চিৎপটাং হয়ে যাবো। পাহাড় দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে যেতে লাগলাম। শুভলং ঝর্ণার কাছাকাছি গিয়ে এডমিন আপু বলতেছে, ঝর্ণার পানি মনে হয় শুকিয়ে গেছে। ঝর্ণা থেকে পানি পড়তে দেখা যাচ্ছে না। আপুর কথা শুনেই আমাদের মন খারাপ হয়ে গেলো। তারপরও সবাই সত্যতা যাচাই করার জন্য ঝর্ণার স্থলে গেলাম। গিয়ে দেখি সত্যিই ঝর্ণা শুকিয়ে গেছে। ঝর্ণা দিয়ে এক ফোটাও পানি পড়ছে না। সবাই দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে ঝর্ণার দিকে তাকিয়ে রইল। আমরা তাকিয়ে থাকলে তো আর ঝর্ণা দিয়ে পানি পড়বে না। তাই সবাই ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।
এখানে দেরি করলে আমাদের অন্যান্য স্পট গুলো দেখা হবে না। তাই আমরা দ্রুত নৌকা ঘুরিয়ে আরেকটি স্পটের দিকে চলতে লাগলাম। এবার আমাদের গন্তব্য হলো পাহাড়ী আদিবাসি গ্রাম পরির্দশন। প্রায় অধা ঘন্টা নৌকা চলে পাহাড়ী গ্রামের পাদদেশে নৌকা এসে থামলো। আমরা এসে দেখি আমাদের আসার আগেই অনেক গুলো নৌকাতে করে পর্যটক পাহাড়ী গ্রামে প্রবেশ করেছে। আমাদের নৌকা ঘাটে বিরানোর জায়গাই পাচ্ছে না। অবশেষে একটি নৌকা চলে গেলে পরে কিছু জায়গা করে আমাদের নৌকা নোঙ্গর ফেললো। ধীরে ধীরে আমরা নৌকা থেকে নেমে পড়লাম।
আমি নৌকা থেকে নেমেই আশে পাশের কয়েকটা ফটোগ্রাফি নিলাম। আপনাদেরকে চারপাশটা দেখানোর চেষ্টা করলাম। পাহাড়ের নিচে লেকের কিনারায় তারা অনেক প্রকার সফলের চাষ করেছে। বিস্তর জায়গা জুড়ে ধান চাষ দেখলাম। আবার কিছু জাগায় মিষ্টি কুমড়ো,চাল কুমড়ো,ঢেড়স চাষ করতেও দেখলাম। এই লেকের পানিতে তারা গোসল করে,ভিজা কাপড় সবুজ ঘাসের উপর শুকাচ্ছে। নৌকা ঘাটে তারা কিছু দোকানপাট বসিয়েছে। এই দোকান গুলোতে পাহাড়ী ফল বিক্রয় করে। যেমন আনারস,ডাব নারিকেল,কলা এই সব বিক্রয় করতে দেখা যায়। আমরা এখানে এসেও আনারস খেয়েছি। আনারস দেখলে আমি লোভ সামলাতে পারি না। এখন উপরের দিকে উঠতে লাগলাম।
উপরে গিয়ে দেখলাম এখানে পাহাড় কেটে বেশ কিছু ঘরবাড়ি বানানো রয়েছে। ঘর গুলো বাস কাঠ ও উপরে টিন দিয়ে তৈরী করেছে। আমরা বাড়ি গুলো আনাচে কানাচে ঘুড়েছি। তবে তেমন মানুষ দেখতে পায়নি। এখানে যারা বসবাস করে তারা ছোট ছোট দোকান দিয়ে বিভিন্ন পাহাড়ি জিনিষ পত্র বিক্রয় করে। একটি জিনিষ দেখে অবাক হলাম। আপনারা উপরের তিন নাম্বার ফটোগ্রাফিতে আকাশ টিভির সংযোগ লাইন দেখতে পাচ্ছেন। এই পাহাড়ি অজপাড়া গ্রামে এটা দেখে আমি সত্যিই অবাক হলাম। মানুষ পাহাড় জঙ্গলে থাকলেও বিনোদনের কথা ভুলে না। যায়হোক এই পাহাড়টি কাপ্তাই লেক থেকে একশত ফুট উপরে হবে।
তারপর আমরা আরো উপরের দিকে উঠতে লাগলাম। উপরের দিকে যতই যায়,ঘন জঙ্গল আর বড় বড় গাছ পালা দেখতে পায়। আমাদের সাথে আরো অন্যান্য গ্রুপের মানুষও ছিল। সবাই নিজের ইচ্ছা মত বিভিন্ন জাগায় ঘুরতে লাগলো। আমি সাহস করে পাহাড়ের উপর পর্যন্ত গিয়েছি। তবে যতই যায় রাস্তা শেষ হয় না। এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাওয়ার রাস্তা রয়েছে। চিন্তা করলাম বেশি গভীরে গেলে রাস্তা হারিয়ে ফেলতে পারি। তাছাড়া এখানে মোবাইলের কোন নেট পাওয়া যায় না,পরে কেউ খুঁজেও পাবে না। তাছাড়া সাপ, বিচ্ছু, পাহাড়ি বন্যপ্রাণীর ভয় আছে। তাই আর বেশি গভীরে গেলাম না। সামনের দিকে আর একটি পাহাড় ছিল। এটার পরেই ইন্ডিয়ার বর্ডার রয়েছে। পাহাড়ের একেবারে উপরে বিশাল বড় একটি বট গাছ দেখলাম। এটার নিচে অন্য গ্রুপের কিছু ছেলে পেলে বসে ধুমপান করেছে। আমি আবার এসব করি না। তাই ধীরে ধীরে নিচের দিকে নেমে যেতে লাগলাম।
বন্ধুরা পাহাড়ী আদিবাসি গ্রাম পরির্দশন করতে করতে তখন প্রায় আড়াইটার উপরে বেজে যায়। পেটের মধ্যে দারুন খিদা পেয়েছে। তাই তারাতারি নিচে নেমে এডমিন আপুকে বললাম তারাতারি চলেন,খিদায় পেট চ্যু চ্যু করছে। তিনি বললেন নৌকায় গিয়ে বসেন,আমি সবাইকে নিয়ে আসতেছি। সেখান থেকে আমরা আবার সেই রেস্টুরেন্টে ফিরে গেলাম। লাঞ্চে কি কি আইটেম ছিল সেটা পরের পর্বে দেখতে পারবেন.....চলবে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ভ্রমন- সপ্তম পর্ব (পাহাড়ী আদিবাসি গ্রাম পরির্দশন)।। |
স্থান | পাহাড়ী আদিবাসি গ্রাম,রাঙামাটি, চট্রগ্রাম, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০১ /০৩ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন খুবই সুন্দর একটি পোস্ট। আজকে আপনার শেয়ার করা পোস্টটি ছিল পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ভ্রমণের খুবই সুন্দর একটি পর্ব। ইতিপূর্বে আপনার পর্বগুলো দেখা হয়নি তবে এই পর্বটি দেখে খুবই ভালো লাগলো। আর আমি জানি রাঙ্গামাটি স্থানটি অনেক পাহাড়ে পরিপূর্ণ। দেখে মনে হচ্ছে দারুন একটা সময় অতিবাহিত করেছেন ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
জী ভাইয়া রাঙামাটি রঙের মতই অনেক সুন্দর। ইচ্ছা করলে আগের পর্ব গুলো দেকে আসতে পারেন। ধন্যবাদ।
আজকে আপনি রাঙ্গামাটি ভ্রমণের সপ্তম পর্ব শেয়ার করেছেন। আপনার এই সুন্দর ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট দেখে আমার অনেক ভালো লেগেছে। আপনার এই পোস্টের মধ্যে দিয়ে কিন্তু অনেক কিছু জানার সুযোগ হল। আশা করব পরবর্তী পর্ব খুব সহজে আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং সুন্দর উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে।
জী ভাইয়া ধীরে ধীরে সব গুলো পর্বই আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো,ইনশা আল্লাহ।।
অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আপনার এই ভ্রমণের পোস্টটি পড়ে আমার অনেক ভালো লেগেছে। আপনার এই ভ্রমণের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে পাহাড়ি আদিবাসীদের সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা জানতে পারলাম। একই সাথে পাহাড়ি আদিবাসীদের চমৎকার চমৎকার দৃশ্যের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে। অসাধারণ সুন্দর একটি ভ্রমণের পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
জী ভাইয়া পাহাড়ী আদিবাসি গ্রামে ঘুরে অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন রাঙ্গামাটি ভ্রমণের সপ্তম পর্ব। আসলে প্রায় দর্শনীয় স্থানগুলো আমি নিজে ভ্রমণ করেছি তবে আমি এখনো রাঙ্গামাটি ভ্রমণ করতে পারিনি। তবে ইচ্ছে আছে এবার কোরবানির ঈদ পর রাঙ্গামাটি ঘুরতে যাব। আপনার পোষ্টের ছবি দেখে বোঝা যাচ্ছে সেখানে বেশ দারুন সময় অতিবাহিত করেছেন আপনারা। গ্রাম পরিদর্শন করতে গিয়ে আপনার বেশ খিদা লেগে গিয়েছিল জানতে পেরে বেশ খারাপ লাগলো ভাই। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জী ভাইয়া সময় করে চলে যাবেন। অনেক সুন্দর জায়গা। ধন্যবাদ।
অনেক সুন্দর একটি পোস্ট করেছেন ভাইয়া পার্বত্য জেলায় রাঙ্গামাটি ভ্রমণ এ খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন এবং অনেকগুলো ফটোগ্রাফি করেছেন। পাহাড়ি আদিবাসীদের কিছু ঘরবাড়ি ও কিছু প্রকৃতির ফটোগ্রাফি করেছেন যেগুলো দেখতে আমার কাছে অসাধারণ লাগছে। আমি কখনো রাঙ্গামাটিতে বা পাহাড়ি জেলার আদিবাসীদের দেখিনি তবে দেখার অনেক ইচ্ছে আছে এই রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা। তবে আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আজকে কিছুটা হলেও দেখার স্বাদ উপভোগ করলাম। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপু একদিন সময় করে চলে যাবেন। খুবই সুন্দর জায়গা। ধন্যবাদ।
পাহাড়ের উপর নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না একথা তো সত্যি। তবে সেখানে সব থেকে বড় ভয় হল সাপ। কারণ পাহাড়ের যত উপরে যাওয়া হয়, তত বিষাক্ত সাপের আস্তানা দেখা যায়। যাইহোক, পাহাড়ের এতো উপরে বটগাছটা দেখে কিন্তু আমার অনেক ভালো লাগলো ভাই। তাছাড়া, আপনি যে ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করেছেন এখানে, সেগুলো বেশ সুন্দর ছিল।
জী ভাইয়া পাহাড়ের একেবারে চূড়ার মধ্যে বটগাছটি ছিল। আমিও সাপের কিছুটা ভয়ে ছিলাম। ধন্যবাদ।