হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের নদী গুলো।।

হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমাদের দেশের নদী নিয়ে একটি ব্লগ শেয়ার করবো। আশা করি ব্লগটি আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে।

Link

আমাদের বাংলাদেশ নদী মাতৃক দেশ। আমাদের নিজেদের দুষের কারনে আজকে আমাদের দেশের নদী গুলোর বেহাল দশা । যে নদী দিয়ে এক সময় বড় বড় লঞ্চ যাতায়ত করতো সেই সব নদী দিয়ে এখন নৌকা চলাচল করতে কষ্ট হয়। আর যে সব নদী দিয়ে মানুষ নৌকা চালাতো সেই সব নদীতে এখন ছেলেরা ক্রিকেট আর ফুটবল খেলে। আবার কোথাও কোথাও বিভিন্ন শাক সবজি চাষ করে। এর দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে দিনকে দিন আমাদের দেশের নদী গুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। আর এর সম্পূর্ণ দুষ হলো আমাদের নিজেদের। আমাদের পাপের ফল আমরা নিজেরাই ভোগ করতেছি এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও এর ফল ভোগ করবে।

আমরা যখন ছোট সময় স্কুলে যেতাম, তখন আমাদের যাত্রা পথে দুই জাগায় নদী পড়তো। বর্ষার সময় আমরা বাঁশের সাঁকো পাড়ি দিয়ে স্কুলে যেতাম। আর চৈত্র বৈশাখ মাসে নদীতে যে পানি থাকতো সেটা একটি ড্রেনের মত জায়গা দিয়ে পানি চলে যেতো। যার ফলে যারা সাঁকোতে উঠতে ভয় পেতো তারা নিচ দিয়ে চলে যেতো। ধীরে ধীরে নদীর পানি শুকিয়ে যেতে লাগলো। সেই সাথে বাঁশের সাঁকো গুলো উঠে যেতে লাগলো। বর্তমানে স্কুলে যেতে কোথায় কোন প্রকার ব্রিজ বা সাঁকো পড়ে না। তার কারন ঐ সব জায়গা ভরাট করে এখন বাড়ি ঘর তৈরী করে ফেলেছে।

এটা যে শুধু আমাদের গ্রামের চিত্র তা নয়। সারা বাংলাদেশের চিত্রই এটা। সবাই নিজেদের সুবিধা মত নদী,খাল,পুকুর ভরাট করে ফেলেছে। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আমাদের জনজীবনে। আগে বর্ষার সময় আমাদের চকের, বিলের জমি গুলোতে পানি আসতো। কিন্তুু বিভিন্ন জায়গায় নদী,খাল ভরাট করে ফেলার কারনে মূল নদী থেকে আর পানি আসতে পারে না। যার ফলে সারা বছর সেঁচ পাম্প দিয়ে পানি তুলে জমি চাষ করতে হয়। বিভিন্ন সময় প্রত্রিকায় দেখা যায় পানির অভাবে কৃষক ভাইয়েরা পাট গাছ ভিজাতে পারে না। তাদের জমির আশে পাশের খাল গুলো শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে। সে গুলোতে পানিতো দুরে থাক বিচ বপন করে রাখা হয়েছে।

উপরের ফটোগ্রাফিতে যে শুকনো নদীটা দেখতে পাচ্ছেন সেটা আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিখ্যাত তিতাস নদী। এই শুকনো জায়গাটিতে এক সময় মানুষ ভয়ে গোসল করতে নামতো না। আর এখন সেটা শুকিয়ে পাথর গুলো খাঁ খাঁ করছে। বর্ষার সময় এখানে যে আহামরি পানি থাকে তা কিন্তুু না। সর্বউচ্চ পাথর গুলো পানির নিচে যায়। দুই এক বছর পরে হয়তো ঐ পানি টুকু আর দেখা যাবে না। এর কারন হলো দিনকে দিন নদীতে পানি কমতেছে। উপর থেকে আর পানি আসে না। জাগায় জাগায় বাঁধ আর ভরাটের ফলে নদী গুলো হুমকির মুখে পড়েছে। এখন বৃষ্টি হলে নদী থেকে শহরের ভিতরে বেশি পানি দেখা যায়। এখন ঢাকা, চট্রগ্রাম শহর নদীতে পরিনত হয়ে যায়।

বর্তমানে বাজারে গেলে চাষের মাছ ছাড়া দেশি মাছ চোখেই দেখা যায় না। দেশি মাছ কোথায় পাবেন,খাল বিল নদীতে পানি থাকলে তো মাছ থাকবে...। আমরা ছোট সময় বিলে মাছ ধরতে যেতাম। জেলেরা জাল,আনতা দিয়ে মাছ ধরতো। এখন মানুষ বিলে পানি আছে কি না সেটা দেখতে যায়। চকের জমি তো বর্ষার পানি দেখে না অনেক বছর হয়ে গেছে। বিলের জমিও অলরেডি বর্ষার পানি দেখা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে এক সময় নৌকা থাকবে বলে মনে হয় না। এখনই খাল বিল থেকে নৌকা তুলে জাদুঘরে রেখে দিচ্ছে। ভবিষ্যতের কথা আর কি বলবো।

আমাদের অফিসে কয়েক জন বলেছিল নদীর পানিতে সাঁতার কাটতে চাঁদপুর মহন পুর যাবে। কয়েক জন বলে ভাইয়া নদীতে এখন আর সেই পানি নেই। শুধু শুধু যাবেন,কোন মজা পাবেন না। চিন্তা করেন পদ্মা মেঘনা নদীতে চর পরে নদী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আর ছোট খাল বিলের অবস্থার কথা চিন্তা করেন। পশ্চিম বঙ্গের দিকে অনেক বড় বড় নদী শুকিয়ে গেছে। নদী যদি সম্পূর্ণ রুপে শুকিয়ে যায়,তাহলে আমাদের কৃষি ও জীবন যাপনের উপর মারাত্নক প্রভাব পড়বে। আমাদের সরকারের উচিত সময় থাকতে নদী ও খাল বিল গুলো উদ্ধারে জরুরী প্রদক্ষেপ গ্রহন করা।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।