আপনি কি কখনও অঙ্কে ১০০ পেয়েছেন?
আজ মঙ্গলবার, ২৪ই মাঘ-১৪২৯
আসসালামুআলাইকু/ নমস্কার/ আদাব।
আজকে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি মজার একটি পোষ্ট নিয়ে।।
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। যত পড়বেন তত লিখবেন,তত বেশি শিখবেন। এটা আমার কথা নয় এটা আমার অঙ্ক স্যারের কথা। কি বুঝলেন,পোষ্টের শুরুতেই অঙ্ক স্যারের কথা আসলো কেন,তাই তো..? চলুন বিস্তারিত বর্ণনা করি।
আমি যখন দশম শ্রেনীতে পড়তাম তখন আমাদের বাড়ির পাশে একজন স্যারের কাছে অঙ্ক প্রাইভেট পড়তাম। আমরা তিনজন বন্ধু এক সাথে স্যারের বাসায় গিয়ে অঙ্ক পড়তাম। স্যারের নাম ছিল উজ্জল আহমেদ। আমরা তিনিকে উজ্জল স্যার বলে ডাকতাম। তিনি ছিলেন অন্য স্কুলের অঙ্ক স্যার। রমজান মাস আসার সাথে সাথে স্যার ট্রান্সফার হয়ে কুমিল্লা চলে গেলেন।স্যার চলে যাওয়ার কারনে আমরা পড়ে গেলাম বিপদে। এখন আপনারা বলতে পারেন নিজের স্কুলের স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়ি না কেন। আমাদের স্কুলের স্যারের কাছে প্রায় ত্রিশ চল্লিশ জন স্টুডেন্ট এক সাথে পড়ে। তিনটা অঙ্ক করালে দুইটা এমন অংঙ্ক যেটা আমরা পারি। আর একটা এমন অঙ্ক করাবে যেটা আমরা নিজে নিজে চেষ্টা করলেই সমাধান করে ফেলতে পারবো। আমরা কিছু এডভান্স অংঙ্ক শিখার জন্য অন্য স্যারের শরণাপন্ন হতাম।
অনেক খুজাখুজি করে অবশেষে একজন ভাইয়া পেলাম। তার নাম হলো জুয়েল মাহমুদ। আমরা কখনো তাকে জুয়েল ভাইয়া, কখনো জুয়েল স্যার বলে ডাকতাম। জুয়েল স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে অনেক ভাল লাগতো। কারণ তিনি উজ্জল স্যারের থেকেও আরো সহজ ভাবে অঙ্কের সমাধান করতেন। স্যারের একটি বৈশিষ্ট ছিল তিনি প্রতি শুক্রবারে বাকি ছয়দিন যা অঙ্ক করা হয়েছে সব গুলোর পরিক্ষা নিতেন। তবে তিনির পরিক্ষায় কেউ সব গুলো অঙ্কের সমাধান করতে পারতো না। যতই ভাল ভাবে অঙ্ক করি না কেন, যে কোন একটি অঙ্কে ঠিকই ভুল খুজে বের করে ফেলতেন।
আমাদের ফাইনাল পরিক্ষার কথা চিন্তা করে তিনি একটি উদ্যোগ গ্রহন করলেন আর সেটা হলো, তিনি প্রতি মাসে বিভিন্ন বোর্ডের একটি করে প্রশ্ন নিয়ে ১০০ নাম্বারে পরিক্ষা নিতেন। তবে কেউ তিনির পরিক্ষায় ১০০ নাম্বার পেত না। স্যার একদিন ঘোষনা দিলেন যে মাসিক পরিক্ষায় ১০০ থেকে ১০০ নাম্বার পাবে তার ঐ মাসের বেতন ফ্রী। এই ঘোষনা শুনার পর থেকে আমরা মাজায় গামছা বেধেঁ নামলাম। যেদিন পরিক্ষা নিবে এর আগের দিন রাতে খাওয়া ঘুম বাদ দিয়ে অঙ্ক করতাম। কোন বোর্ডের কত সালের প্রশ্ন দিয়ে পরিক্ষা নিবে স্যার সেটা বলতেন না। সারা রাত জেগে ঢাকা বোর্ডের প্রশ্ন সমাধান করতাম আর পরের দিন স্যার প্রশ্ন দিতো যশোর বোর্ডের। যদি পড়তাম সিলেট বোর্ডের প্রশ্ন দিতো বরিশাল বোর্ডের প্রশ্ন। কোন মাসের প্রশ্নই কমর পড়তো না। অবশেষে প্রশ্ন বাদ দিয়ে বই থেকে অঙ্ক করা শুরু করলাম।
আমরা প্রায় বিশ থেকে পচিশ জন স্টুডেন্ট পরিক্ষায় অংশগ্রহন করতাম। যত জড়-তুফানই আসুক না কেন আমাদের পরিক্ষা মিস হতো না। শীতে হাত কাঁপতে কাঁপতে পেন্সিল কম্পাসের কাটা হাতে ফোটে যেত। তারপরও অঙ্ক করা বা পরিক্ষা দেওয়া মিস হতো না। অঙ্ক করতে করতে অনেক সময় দেখা যেত ফজরের আজান দিয়ে দিছে।এমন ভাবে চেষ্টা করেও স্যারের এক মাসের টাকা ফ্রী করতে পারি নাই।
লাষ্ট যেদিন স্যারের কাছে টেষ্ট পরিক্ষা দিয়েছিলাম সেদিন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্ন দিয়ে পরিক্ষা দিয়ে ৯৫ পেয়েছিলাম। অবশেষে স্যার আমি সহ আমাদের পাঁচ জনের এক মাসের প্রাইভেটের টাকা ফ্রী করে দিয়ে ছিল। ২০১২ সালে এসএসসি ফাইনাল পরিক্ষা দিয়েও আমি ৯৫ আনছার করেছিলাম।
স্যারের এই উদ্যেগের জন্য আমরা অনেক অঙ্ক শিখেছিলাম। যদিও কখনো আমি ১০০ পায়নি তারপরেও মনে কোন কষ্ট নাই। যেখানেই থাকি সব সময় স্যারকে স্বরণ করি,সম্মান করি। আল্লাহ তায়ালা স্যারকে নেক হায়াত দান করুন। আমীন।।
বন্ধুরা আপনারা কখনো কি অঙ্কে ১০০ পেয়েছেন কিনা,সেটা কমেন্ট করে জানাবেন। আজকে এখান থেকেই বিদায় নিতেছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
প্রথমেই বলবো আমি কখনো অংকতে ১০০ তে ১০০ পাইনি। আরে ভাই আপনি তো ৯৫ পেয়েছেন আমি সেটাও পাইনি। তবে হ্যাঁ মুখস্থ করে ক্লাস এইটে একবার ৮০ পেয়েছিলাম। ওইটাই প্রথম ঐটাই শেষ। আমি অংকতে একেবারেই জিরো। অংকতে আমি খুব খারাপ যেটা আমার মাথায় ধরে না। আর খুব বিরক্ত কর সাবজেক্ট গুলোর মধ্যে অংক একটি ছিল, এবং আছেও বটে। তবে আপনার কথা মনে হলো আপনি অংকতে খুব ভালো।
আপু অনেক চেষ্টা করেও ১০০ তে ১০০ পায়নি। ৯৫ পেয়েছিলাম,ধন্যবাদ আপু।
আসলে ভাইয়া আমি অনেক বারি প্রাইভেট স্যারের কাছে পরিক্ষা দিয়ে ১০০ তে ১০০ পেয়েছি তবে বোর্ডের পরিক্ষায় কখনো ৮৫ এর নিচে পায়নি, সেটা ক্লাস ওয়ান দেখে মাস্টার্স পর্যন্ত। তবে আর যাইহোক প্রতিযোগিতায় ১০০ না পেলেই কি অংক গুলো তো শিখতে পেরেছেন। আমি ও সারাজীবন বাইরে প্রাইভেট পড়ে এসেছি। এখনো আমি বাচ্চাদের অংক করাই।আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
জী আপু স্যারের মহান উদ্দ্যেগের জন্য অনেক অঙ্ক শিখেতে পেরেছিলাম। ধন্যবাদ আপু।
না কখনো পুরো 100 পাইনি। কিন্তু লাস্ট ৯৬ পর্যন্ত পেয়েছি। এসএসসি বোর্ডে অংকে এ প্লাস পেয়েছিলাম। তবে আপনাদের স্যারের আইডিয়াটা বেশ ভালো ছিল। উনার জন্য আপনারা অংক শিখতে পেরেছিলেন। তবে আবার ৯৫ পর্যন্ত পেয়েছেন। এই ধরনের আইডিয়া ইউজ করলে প্রত্যেকে কিন্তু বেশ ভালো করবে।
তাহলে তো ভালই ৯৬ পর্যন্ত পেয়েছিলেন। স্যারের আইডিয়াটা আমার কাছেও অনেক ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ আপু।