ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে কিছু সময় // [১০% লাজুক খ্যাঁকের জন্য]//
মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি “আমার বাংলা ব্লগ” এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী ছোট,বড় আদরের স্নেহের সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আলাহামদুল্লাহ ভাল আছি। সবার সুন্দর ভবিষ্যৎ এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করে আমি আমার আজকের ব্লগ শুরু করতেছি।
place
এটি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জের প্রধান ফটক। সবাই এখন প্রশ্ন করবে জেলখানায় কেন গিয়েছিলাম। অবশ্যই কোন অঘটন ঘটিয়েছি, অথবা কোন অপরাধ করেছি, তা না হলে জেলখানায় কেন যাবো। বিভিন্ন মানুষের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন আসতে পারে। আসতে পারাটা স্বাভাবিক আমি কাউকে দুষ দিচ্ছি না। আমি কারো জেলখানার পোষ্ট দেখলে হয়তো এমন কিছুই ভাবতাম। এসব বাজে চিন্তা না করে আসুন মূল কথায় আসি।
আমি ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় আসি ১৬ তারিখ সকাল বেলা। সকাল ১১ টার সময় অফিসে প্রবেশ করি। আমার অফিস সকাল ৯টায় কিন্তুু ১৬ তারিখ অপেনিং ডে ছিল যার কারনে একটু দেরী করে প্রবেশ করেছি। তাতে কোন সমস্যা হবে না। সেটা আমি আগে থেকেই জানি, যার কারনে লেইট করে প্রবেশ করেছি। আমি অবশ্য ইচ্ছে করে লেইট করিনি, বাড়ি থেকে আসতে ট্রেন লেইট করেছে।
অফিসে আসার পর আমার এক কলিগ আমাকে একটি দুঃসংবাদ দিল। ঈদের আগের দিন রাতে নাকি তার আংকেলকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। এখন সে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জে আছে। তাকে দেখেতে যেতে হবে। সাথে আমাকে যেতে হবে। আমি আবার বাংলাদেশের পুলিশকে একটু ভয় পায়, তাদেরকে বিশ্বাস নেই কখন কোন মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দেয় বলা যায় না। আমার কথা বাদ দিয়ে আমার অফিস কলিগের আংকেলকে কেন জেলে নিয়ে গেছে সেই ঘটনা বলি।
আংকেল একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরী করে। ট্রাভেল এজেন্সির নামটা এখানে উল্লেখ করলাম না। তো ট্রাভেল এজেন্সির কাজ কি সেটা সবাই জানেন....। আপনারা ঠিক ধরেছেন, বিদেশে লোক পাঠায়। কিছু মানুষ বিদেশে কাজ করতে যায় আবার কিছু মানুষ বিদেশে ভ্রমন করতে যায়। সেটা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার, সেটা নিয়ে আমার কোন কথা বলার অধিকার নেই। আংকেলের ট্রাভেল এজেন্সি সব ধরনের লোকই বিদেশ পাঠায়।
গত কয়েক মাস আগে আংকেল ঢাকার যাত্রাবাড়ি থেকে একটি ছেলেকে সৌদিআরবে পাঠিয়েছিল চাকরী করার ভিসা দিয়ে। সে সুস্থ ভাবে সৌদিআরবে পৌছে কাজেও জয়েন করেছে। তার পরও একটি কারনে তার বাবা আংকেলের নামে ও ট্রাভেল এজেন্সির মালিকের নামে এবং মালিকের ছেলের নামে মামলা দিয়েছে। আর সেই মামলায় পুলিশ আংকেলকে ঈদের আগের দিন রাতে ধরে নিয়ে গেছে। ঈদটা করার সুযোগও দিল না। এখন বলি কি কারনে মামলা দিলো। কারনটা না বললে অনেকে আবার কমেন্ট করে প্রশ্ন করতে পারেন। তাই উত্তরটা আগেই দিয়ে দেয়।
ছেলেটিকে ভিসা দেওয়ার আগে বলেছিল তাকে অফিসে কম্পিউটারের কাজ দেওয়া হবে। সে অনুযায়ী ছেলের বাবা থেকে টাকা নিয়েছিল ট্রাভেল এজেন্সি। আর তার সমস্ত ব্যাপারটি ডিল করেছে কলিগের আংকেল। এখন ছেলেটি যখন কাজে জয়েন করলো তাকে দেওয়া হলো বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কার্পেট বিছানোর কাজ। সে কাজে অবশ্য কিছুটা বকশিস আছে। যেখানেই কার্পেট নিয়ে যায়, সেখানে কাজ শেষ করার পর কিছু রিয়াল বকশিস পায়। এক রিয়াল বর্তমানে বাংলাদেশের টাকায় বাইশ বা তেইশ টাকা হবে। যেটা তার এক্সটা ইনকাম।
ছেলেটি তার বাবাকে ফোন করে জানায় যে তাকে কম্পিউটারের কাজের পরিবর্তে কাপের্ট বিছানোর কাজ দেওয়া হয়েছে। ব্যাস ছেলের বাবা ট্রাভেল এজেন্সিতে এসে আংকেলকে যা তা বলে গালা গালি করলো। আংকেল ছেলেটির বাবাকে বললো আমরা ব্যাপারটি দেখতেছি। তো এক দুই মাস হয়ে গেলে কোন পরিবর্তন না হওয়ায় ছেলের বাবা তিন জনের নামে মানব পাচার মামলা দিয়ে দিল। আর সেই মামলায় জেলে বসে বসে আংকেল এখন দিন গুনে কখন জেল থেকে বের হবে।
আংকে কুরবানীর জন্য গরু কিনেছিল। গরুটাও কুরবানী দিতে পারলো না। পুলিশ বুঝতে পেরেছে এই রাতে তাকে বাড়িতে গেলে হাতে নাতে ধরা যাবে তাই জোব বুঝে কুব মেরেছে। যায় হোক ব্যাপারটি খুবই দুঃখজনক।
place
কেন্দ্রীয় কারাগারের বিশাল বড় এড়িয়া। ভিতরে অনেক জায়গা। বিশাল বিশাল রাস্তা। আমি বেশি ভিতরে গেলাম না। আশে পাাশে থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে কয়েকটা ফটোগ্রাফি করলাম। যদি কোন পুলিশ দেখে ফেলে আবার আমার নামে কোন মামলা দেয়ে কিনা সেই ভয় তো আছেই হা হা হা ...
place
এগুলো হলো আমাদের পুলিশ স্যারদের বাস ভবন মানে কোয়াটার। এখানে তারা ছেলে মেয়ে স্ত্রী সহ সবাই বসবাস করে। খুব সুন্দর আর মজবুত করে বিল্ডিং গুলো তৈরী করা হয়েছে। আশে পাশের পরিবেশ টা অনেক সুন্দর।
place
আসামীদের সাথে যারা দেখা সাক্ষাৎ করতে আসে তারা এখানে বসে বসে অপেক্ষা করে। দু একজন ছাড়া বেশি মানুষ ভিতের প্রবেশ করেতে পারে না। আমি এখানেই কিছুক্ষন বসে বাহিয়ে চলে এসেছিলাম। আমার কলিগ ভিতরে প্রবেশ করেছিল।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.