বিদেশে কর্মসংস্থান সংকট ও প্রবাসীদের রেমিট্যান্স: বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রভাব।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
,

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হলো রেমিট্যান্স। বিদেশে কর্মরত শ্রমিকরা তাদের কঠোর পরিশ্রমের অর্থ দেশে পাঠিয়ে কেবল নিজেদের পরিবারের জীবনযাত্রা উন্নত করেন না, দেশের অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখেন। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, আমদানি ব্যয় মেটানো এবং জাতীয় অর্থনীতিকে সচল রাখার ক্ষেত্রে রেমিট্যান্স একটি প্রধান শক্তি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশে কর্মসংস্থান সংকুচিত হওয়া এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়া বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত কয়েক বছরে মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য চাকরির সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। অনেক দেশ অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজার রক্ষায় বিদেশিদের জন্য নতুন শর্ত আরোপ করছে। ফলে নতুন ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে, অভিবাসন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় নিম্নআয়ের মানুষের জন্য বিদেশে যাওয়া দিন দিন কষ্টকর হয়ে উঠছে। প্রায়ই দেখা যায়, একজন শ্রমিক বিদেশে যেতে চার পাঁচ লাখ টাকা খরচ করছেন, কিন্তু কাজের নিশ্চয়তা বা পর্যাপ্ত আয় পাচ্ছেন না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রেমিট্যান্স প্রবাহ বিগত কয়েক মাসে কমে এসেছে। এর প্রধান কারণ হলো বৈদেশিক মুদ্রার সংকট, অনানুষ্ঠানিক পথে তথা হুন্ডি মাধ্যমে টাকা পাঠানোর প্রবণতা, এবং বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের অনিশ্চিত কর্মপরিস্থিতি। অনেকে ব্যাংক চ্যানেল ব্যবহার না করে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠাচ্ছেন, ফলে দেশের ডলার রিজার্ভে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
রেমিট্যান্স কমে যাওয়ার সরাসরি প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতিতে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে, ফলে আমদানি ব্যয় মেটাতে সমস্যা হচ্ছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেসব পরিবার সম্পূর্ণভাবে প্রবাসী আয়ের উপর নির্ভরশীল, তারা বড় ধরনের আর্থিক সংকটে পড়ছে। দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ কমে যেতে পারে এবং কর্মসংস্থান আরও সীমিত হয়ে পড়তে পারে।
এই সংকট থেকে উত্তরণে কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
নতুন শ্রমবাজার খোঁজা: জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউরোপের কিছু দেশে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা রয়েছে। সরকারকে কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে সেই বাজারগুলো উন্মুক্ত করতে হবে।
দক্ষতা উন্নয়ন: শ্রমিকদের ভাষা শিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও আধুনিক দক্ষতায় সমৃদ্ধ করতে হবে, যাতে তারা ভালো বেতনের চাকরি পায়।
হুন্ডি প্রতিরোধ: বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে প্রবাসীদের উৎসাহিত করতে হবে এবং এর জন্য প্রণোদনা আরও বাড়ানো উচিত।
অভিবাসন ব্যয় কমানো: বিদেশে যেতে শ্রমিকদের যে অস্বাভাবিক খরচ করতে হয় তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং দালালচক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে এক কঠিন সময় পার করছে। বিদেশে কর্মসংস্থান সংকট ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় ডলার সংকট তীব্র হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এবং শ্রমশক্তিকে দক্ষ করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা গেলে আবারও প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server