শুভ’র কি হয়েছে কেউ জানে না।। 10% beneficary for @shyfox ❤️
আসসালামুআলাইকু/ নমস্কার/ আদাব।
আজকে আপনাদের সাথে একটি শিক্ষামূলক একটি পোষ্ট শেয়ার করবো।
হ্যালো ডিয়ার ফ্রেন্ডস,
কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। প্রতিদিনের কাজের অংশ হিসাবে আজকে আপনাদের সাথে শিক্ষামূলক একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। ঘটনাটি ঘটেছে আমাদের ফ্লাটের চতুর্থ তলায়। চলুন মূল ঘটনাটি পড়ি।
গত মাসের ঘটনা। আমার আগের বাসায় আমি থাকতাম পঞ্চম তলায়। আমাদের চতুর্থ তলায় একটি ফেমিলি থাকতো। ফেমিলি বলতে তিনজন সদস্য। আন্টি আর আন্টির ছেলে আর আন্টির মেয়ে। আন্টির হাসবেন্ড মানে আঙ্কেল থাকে বিদেশে। আন্টির ছেলে শুভ এবছর ইন্টার ফাষ্ট ইয়ারে পড়ে। আপনাদের সাথে মনে হয় তার একটি ঘটনা শেয়ার করেছিলাম। গত বছর দশম শ্রেণী পাস করেছে।
গত মাসের শেষ দিকে শীতের কিছু কেনাকাটা করার জন্য আন্টি আর আন্টির মেয়ে শুভকে বাসায় রেখে মার্কেটে গেছে। যাওয়ার সময় শুভকে বলে গেছে সে যেন প্রাইভেট পড়ে এসে বাসায় থাকে। কারন তারা বাসার চাবি নিচ্ছে না। বাসার চাবিটা শুভর কাছে দিয়ে গেছে। শুভ প্রাইভেট পড়ে এসে বাসার ভিতর দিক থেকে লক দিলো। বিকাল পাচঁটার পরে শুভকে আর কেউ দেখে নাই। রাত প্রায় আটটার সময় আন্টির কান্নাকাটির আওয়াজ শুনে আমরা সবাই চতুর্থ তলায় গেলাম।
গিয়ে দেখি আন্টি আর আন্টির মেয়ে কান্না কাটি করতেছে। কারন হলো ভিতর থেকে বাসার দরজা লক করা। ভিতরে শুভ আছে অথচ শুভ দরজা খুলতেছে না। আর শুভর কাছে কোন মোবাইলও নাই যে তার সাথে যোগাযোগ করবে। আবার ভিতরে শুভ আছে কিনা সেটাও ঠিক ভাবে বলা যাচ্ছে না। আমরা কয়েক জন মিলে দরজায় প্রচন্ড আওয়াজ এবং ধাক্কাধাক্কি করলাম। জোরে জোরে শুভকে ডাকলাম। কিন্তুু ভিতর থেকে কোন আওয়াজ আসতেছে না। প্রাইভেটের স্যারকে ফোন দিয়ে জানা গেল যে শুভ পাচঁটার আগেই চলে এসেছে। আমাদের আওয়াজ শুনে আমাদের ফ্লাট সহ আশে পাশের সব ফ্লাটের মানুষ জড়ো হয়ে গেল। আন্টির মেয়ে আবার বিদেশ তার বাবার কাছে এসব কথা বলে দিয়েছে। তিনি আবার তার আত্বীয় স্বজনকে ফোন দিয়েছে। রাত প্রায় দশটা বেজে গেল দরজা খুলছে না।
বাড়িওলা আঙ্কেলের কাছে দরজা ভাঙ্গার জন্য অনুমতি চাওয়া হলো। তিনি কিছুটা চিন্তা ভাবনা করে দরজা ভাঙ্গার অনুমতি দিয়েছেন। দরজা খুলার জন্য দারোওয়ান মিস্ত্রী আনতে গেল। এদিক দিয়ে আন্টির অনেক আত্নীয় স্বজেন এসে হাজির। সবাই আন্টিকে বিভিন্ন কথা বলতেছে। কেউ বলতেছে শুভ মনে হয় আত্মহত্যা করেছে। আবার কেউ বলতেছে শুভ গলায় ফাসঁ দিয়েছে। বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন কথা শুনে আন্টি ভেঙ্গে পড়লেন। আর বার বার বলতেছেন এখন আমি ছেলের বাবার কাছে কি জবাব দিবো। আর কিছুক্ষণ পর পর বেহুশ হয়ে যাচ্ছেন। পানি দিয়ে দিয়ে হুশ ফিরানো হচ্ছে।
এলাকা বাসির মধ্যে কেউ একজন পুলিশকে ফোন করে বলে দিয়েছে, অমুকে এলাকয় একটি ছেলে গলায় ফাসঁ দিয়েছে। পুলিশও কিছুক্ষণের মধ্যে লাশ নেওয়ার জন্য এসে হাজির হয়ে গেল। কয়েক ঘন্টার মধ্যে এলাকায় একটি আলোড়ন সৃষ্টি হয়ে গেল। কেউ কেউ লাশের সাথে কে কে গ্রামে যাবে এসব বিষয়ে আলোচনা করতে লাগলো। রাত প্রায় এগারোটার দিকে মিস্ত্রী এসে দরজা ভেঙ্গে বাসায় প্রবেশ করলো। বাসাটি একেবারে অন্ধকার। ভিতরের রুমে গিয়ে দেখে শুভ খাটের উপরে শুয়ে ঘুমাচ্ছে। সবাই এত আওয়াজ ডাকাডাকি করতেছে সেই আওয়াজ তার কানে পৌছতেছে না। শুভর মা যখন তার পা ধরে জোড়ে চিৎকার দিলো। তখন শুভর ঘুম ভেঙ্গে গেল। তবে শুভ কিছু বলতেছে না। সবার দিকে কেমন কেমন করে তাকাচ্ছে। প্রায় দশ পনের মিনিট পরে শুভ নরমাল হয়ে জিঙ্গেস করলো। কি হয়েছে।
সবাই শুভকে জিঙ্গেস করতেছে তুমি কোন আওয়াজ শুনো নাই। সে বলতেছে না,আমি তো কোন আওয়াজ শুনি নাই। আমি তো প্রাইভেটে গেছিলাম। সেখান থেকে কবে আসলাম,কিভাবে আসলাম,আমি তো কিছু বুঝতেছি না। ঐদিনের পর থেকে শুভকে আর তেমন দেখা যায় না। হঠাৎ করে গতকাল রাস্তায় শুভর মাকে দেখতে পেয়ে জিঙ্গেস করলাম শুভ কেমন আছে। আন্টি আমাকে বললো সেই দিনের পর থেকে শুভ আর ঘর থেকে তেমন বের হয় না। আর কারো সাথে তেমন কথাও বলে না। কি হয়েছে কেউ কিছু বলতে পারছে না। কয়েকবার ডাক্তার দেখিয়েছি,কোন ডাক্তার তার কোন রোগ ধরতে পারতেছে না। শুভর কি হয়েছে কেউ জানে না।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
আপনার পুরো পোস্ট মনোযোগ দিয়ে পড়ছিলাম, আসলে আমি ও ভেবেছিল শুভর কোন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমন আবস্হা হয়েছে যে আন্টি কেনো যেকেউ এমন করতো।যাইহোক অনেক বড় বিপদ থেকে শুভ বেঁচে আছে এটাই অনেক। শুভর যায় হোক আশাকরি শুভ দূত্য স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
জী আপু ঐদিন আন্টির অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে গেছিলো। যদি শুভর কিছু হতো আন্টি পাগল হয়ে যেত। ধন্যবাদ আপু।
আমাদের বাসার ও একবার এমন হয়েছিলো। আমার ছোট বোনকে বাসায় রেখে একজনের বাসায় গিয়েছিলাম। সেখানে থেকে এসে দেখি ভিতরে থেকে দরজা লাগানো। ডাক দিলে আমার ছোট বোন শুনে না। পরে ঠিক তিন ঘন্টা পরে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখি সে ঘুমে। যাক শুভোর কিছু হয়নি যেনে ভালো লাগলো। শুভুর জন্য শুভ কামনা রইলো 🤲
জী ভাইয়া অনেক সময় এমন ঘটনা শুনি। তবে ঐদিন আমি আশ্চর্য হয়ে গেছিলাম। এত আওয়াজের মাঝে কিভাবে ঘুমিয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
গল্পটা পড়ে খুবই খারাপ লাগলো তবে গল্পের মাঝেও কিছুটা সময় অনেক বেশি খারাপ লাগছিল যখন শুভ রুমের মধ্যে ছিল কিন্তু বাহির থেকে এত চিৎকার চেঁচামেচি করার পরেও সে দরজা খুলছিল না। এই গল্পটা পড়ে যতটুকু বুঝলাম শুভর কি হয়েছে কেউ জানে না আমি নিজেও বুঝতে পারলাম না কি কারনে তার এমন অবস্থা কেনই বা সে রুম থেকে বের হয় না। আসলে বড় কোন ডাক্তার দেখানো উচিত বলে আমার মনে হয় কিন্তু তারা তো ডাক্তার দেখিয়েছে, ডাক্তার যদি বলতে না পারে কি হয়েছে তাহলে তো ব্যাপারটা সত্যিই আরো বেশি কষ্টদায়ক।
জী ভাইয়া ডাক্তারও কিছু বলতে পারতেছে না কি হয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
সত্যি বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত যদি এভাবে কেউ দরজা বন্ধ করে ঘরে থাকে তাহলে অনেক জনের মনে অনেক কিছুই সৃষ্টি হয়। কি হয়েছিল শুভর তা কেউই জানা না আজ পর্যন্ত। আমি তো ভেবেছিলাম অন্য কিছু হয়ে গিয়েছিল। মায়ের এরকম অবস্থা হওয়ারই কথা। শুভর কিছু হয়নি এটা জেনেই ভালো লাগলো। শুভ যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে পড়ে এবং আবার আগের মত জীবন যাপন করতে পারে সেই কামনা করছি।
জী আপু আমিও দোয়া করি শুভ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক। ধন্যবাদ আপু।