প্লাস্টিক ও পলি দূষণ: আমাদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ দূষণের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে প্লাস্টিক ও পলি দূষণ। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই এখন প্লাস্টিকের ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। খাবার মোড়ানো, বোতল, ব্যাগ, কাপ, প্লেট, এমনকি পোশাকেও। এই সহজলভ্যতার পেছনে লুকিয়ে আছে এক ভয়ংকর বাস্তবতা। প্লাস্টিক কখনোই সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয় না। এটি শত শত বছর মাটিতে ও পানিতে পড়ে থেকে প্রকৃতি ও প্রাণবৈচিত্র্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় ৩০ কোটি পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার হয় বলে পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য পাওয়া যায়। এই ব্যাগগুলোর অধিকাংশই ব্যবহার শেষে নদী, নালা, খাল, ড্রেন ও মাটিতে ফেলা হয়। ফলে নর্দমা বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা, নদী ভরাট হয়ে পানি প্রবাহ ব্যাহত হওয়া, এমনকি মাটির উর্বরতা হ্রাস পাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। গ্রামাঞ্চলেও এখন প্লাস্টিকের প্রভাব বিস্তৃত। চাষাবাদের জায়গায় পলি ব্যাগ, খাবারের মোড়ক, স্যাচেট, বোতল- সব মিলে মাটি হারাচ্ছে তার প্রাকৃতিক জীবনীশক্তি।
বিশ্বের সমুদ্রগুলোতে প্রতি বছর প্রায় ৮ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য জমা হয়। এই প্লাস্টিক ধীরে ধীরে মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়ে মাছ, সামুদ্রিক প্রাণী এবং শেষ পর্যন্ত মানুষের খাদ্যচক্রে প্রবেশ করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে প্রায় ৬০% সামুদ্রিক মাছের দেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। এর মানে হলো-আমরা নিজেরাই প্রতিদিন অজান্তে প্লাস্টিক খেয়ে চলেছি। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল, বিশেষ করে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রসৈকত এলাকায়ও প্লাস্টিকের পাহাড় তৈরি হচ্ছে, যা পর্যটন ও জীববৈচিত্র্যের জন্য এক বড় হুমকি।
প্লাস্টিক শুধু প্রকৃতি নয়, মানুষের শরীরেও বিষ ঢালছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট, লিভার ও কিডনির ক্ষতি, এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য এটি আরও ভয়াবহ, কারণ প্লাস্টিকের রাসায়নিক উপাদান বিকাশজনিত সমস্যার কারণ হতে পারে।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে আমাদের সচেতন হতে হবে এখনই।
প্রথমত, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক যেমন পলি ব্যাগ, প্লাস্টিক কাপ ও স্ট্র, এগুলো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, বিকল্প উপকরণ যেমন কাপড়ের ব্যাগ, জুট বা পাট, বাঁশ বা কাগজের তৈরি পণ্য ব্যবহার বাড়াতে হবে।
তৃতীয়ত, প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার তথা recycling শিল্পকে উৎসাহ দিতে হবে, যাতে ব্যবহার শেষে বর্জ্য পুনরায় কাজে লাগানো যায়।
স্কুল-কলেজ থেকে শুরু করে প্রত্যেক পরিবারে পরিবেশ সচেতনতা শিক্ষা দিতে হবে, যাতে নতুন প্রজন্ম প্রকৃতিকে ভালোবাসতে শেখে।
প্লাস্টিক ও পলি দূষণ এখন আর শুধু পরিবেশের সমস্যা নয়, এটি আমাদের অস্তিত্বের হুমকি। আমরা যদি আজই পদক্ষেপ না নিই, তাহলে আগামী প্রজন্ম হয়তো শ্বাস নেওয়ার মতো বিশুদ্ধ বাতাসও পাবে না। তাই এখনই সময়, নিজেকে বদলানোর, সচেতন হওয়ার, এবং প্রকৃতিকে বাঁচানোর। প্রত্যেকটি ব্যাগ, বোতল ও মোড়ক ফেলার আগে মনে রাখা উচিত প্রকৃতি আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে, এখন আমাদের পালা প্রকৃতিকে বাঁচানোর।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server

















