প্রিয় লাল শাক দিয়ে চিংড়ি চিকেন চাউমিন রেসিপি।।

হ্যালো প্রিয় বন্ধুরা,
সবাই কেমন আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আপনাদের সাথে আনকমন একটি রেসিপি শেয়ার করবো। এই রেসিপি এখন পর্যন্ত কাউকে তৈরী করতে দেখি নাই। আশা করি আপনাদের থেকে ভালো একটি সাপোর্ট পাবো।

রেসিপি খুবই চমৎকার একটি বিষয়। মজার মজার রেসিপির মাধ্যমে মানুষের মন জয় করা সম্ভব। কারন মানুষের মজার মজার খাবার পেলে আর কিছু লাগে না। আমাদের কমিউনিটির সম্মানিত এডমিন মডারেটরগণ রেসিপির বিষয়ে দক্ষতা বাড়ানোর দিকে লক্ষ রেখেই ৪৫ তম প্রতিযোগিতার বিষয় নির্ধারন করেছেন শেয়ার করো তোমার প্রিয় শাকের সেরা রেসিপি। আমার কাছে অনেক শাকই প্রিয়। যেমন,লাল শাক,পালং শাক,মোলা শাক,কলমি শাক,কচু শাক,লাউ শাক,মিষ্টি কুমড়ো শাক ইত্যাদি। সব গুলো শাক এক মৌসুমে পাওয়া যায় না। বিভিন্ন মৌসুকে সেই শাক গুলো হয়ে থাকে। গ্রামের দিকে আরো অনেক শাক রয়েছে। যে গুলোর নামও আমার জানা নেই। গ্রামে থাকলে সেই শাক গুলো খুজে বের করা যেত। তবে শহরে সেটা সম্ভব নয়।

আমি আজকে কমন একটি শাক দিয়ে আনকম একটি রেসিপি শেয়ার করতে যাচ্ছি। আমার রেসিপির নাম প্রিয় লাল শাক দিয়ে চিংড়ি চিকেন চাউমিন রেসিপি।।। অনেক চিন্তা ভাবনা করে আমি এই রেসিপিটি বের করেছি। লাল শাক শরীরের জন্য খুবই উপকারী। লাল শাকে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, চর্বি রয়েছে। লাল শাক শরীরে রক্ত ​​চলাচল বাড়াতে সাহায্য করে। দৃষ্টিশক্তি ফেরাতে, হাড়ের স্বাস্থ্য ফেরাতে দারুন কাজ করে। তাছাড়া লাল শাক রক্তচাপ কমায় ও হার্ট ভাল রাখে।

বাজারের চাউমিন থেকে বেজিটেবল চাউমিন খুবই সুস্বাদু এবং ভিটামিন যুক্ত। আমি এগুলোর সাথে ডিম,মাছ,মাংস ব্যবহার করে রেসিপিটি তৈরী করেছি। ফাষ্ট টাইম তৈরী করেছি,খেতে খুবই ‍সুস্বাদু হয়েছে। অনেক প্রশংসাও পেয়েছি। এখন আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। আপনাদের মতামত জানতে আমি খুবই আগ্রহী। চলুন বিস্তারিত বর্ণনা করছি।

লাল শাক	২ আটি
চিংড়ি মাছ,	২৫০ গ্রাম
মুরগির মাংস	২৫০ গ্রাম
ডিম	২ টি
হট টমেটো সস্	দুই প্যাকেট
টমেটো	২ টি
বাধা কপি	পরিমান মত
আলু	১ টি
কাঁচা মরিচ	৬ টি
ধনে পাতা গাছ	৩টি
আঁদা বাটা	পরিমান মত
রসুন বাটা	পরিমান মত
জিরে বাটা	পরিমান মত
পেঁয়াজ কুচি	পরিমান মত
ময়দা	দুই কাপ
বরবটি	পরিমান মত
হলুদের গুঁড়ো	পরিমান মত
মরিচের গুঁড়ো	পরিমান মত
নুন	পরিমান মত
তেল	পরিমান মত
স্বাদ-ই ম্যাজিক	দুইটি

এখন ধাপে ধাপে রন্দন প্রক্রিয়া তুলে ধরছি

প্রথম ধাপ-

প্রথম ধাপে আমি লাল শাক গুলো কেটেকুটে ধুয়ে একটি সিরামিক্সের পাত্রের মধ্যে রাখলাম। তারপর চুলাতে একটি কড়াই বসিয়ে তাতে লাল শাক গুলো দিয়ে সেদ্ধ করে নিলাম। শাকের সাথে লবন দেওয়া যেতে পারে আবার না দিলেও প্রবলেম নেই। আমি লবন ছাড়াই সেদ্ধ করলাম।

দ্বিতীয় ধাপ-

এই পর্যায়ে আমি সেদ্ধ করা লাল শাক গুলোর সাথে একটি রসুনের কোয়া আর একটি কাচাঁ মরিচ সহ সব গুলো শিল পাটা দিয়ে বেটে নিলাম। ঘরের ব্লেন্ডার নষ্ট। যার ফলে এই কষ্টকর পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়েছে। শাক গুলো বেটে একটি পাত্রের মধ্যে রেখে তাতে একটি ডিম ভেঙ্গে দিয়ে দিলাম। তারপর ডিমটা শাকের রসের সাথে মিক্স করে তাতে ময়দা দিয়ে দিলাম।

তৃতীয় ধাপ-

এই পর্যায়ে লাল শাকের সাথে ময়দাটা ভালো ভাবে মিক্স করে তারপর মেরিনেট করে আধা ঘন্টা ফ্রিজের নরমালে রেখে দিলাম। এর মাধ্যমে চাউমিন গুলো সুন্দর ভাবে ফুলে উঠবে।

চতুর্থ ধাপ-

এই পর্যায়ে আমি ত্রিশ মিনিট পরে ফ্রিজ থেকে মেরিনেট করা শাকের মিশ্রনটা নামিয়ে বেলুন পিড়ি দিয়ে রুটি বানিয়ে নিলাম। তারপর ছুরি দিয়ে চাউমিনের মত করে কেটে একটি প্লেটে রাখলাম। দেখতে পাচ্ছেন পুরোপুরি চাউমিন হয়ে গেছে।

পঞ্চম ধাপ-

এই পর্যায়ে সব গুলো চাউমিন বানানো শেষ হওয়ার পরে আমি চুলাতে একটি পাতিল বসিয়ে তাতে পানি দিয়ে দিলাম। পানির মধ্যে তিন ফুটা তেল দিয়ে দিলাম যেন চাউমিন গুলো সেদ্ধ হওয়ার সময় পাতিলের সাথে লেগে না যায়। এটাই এই রেসিপিটির মূল পয়েন্ট। তারপর চাউমিন গুলো সেদ্ধ করে পানি ছাড়ানোর জন্য একটি প্লাস্টিকের জালিতে রাখলাম।

ষষ্ট ধাপ-

এই ধাপে আমি মাংস আর চিংড়ি মাছ গুলোর সাথে আঁদা বাটা,রসুন বাটা,হলুদের গুঁড়ো,মরিচের গুঁড়ো, ধনিয়ার গুঁড়ো আর লবন দিয়ে ভাল ভাবে মিক্স করে নিলাম।

সপ্তম ধাপ-

এই পর্যায়ে আমি চুলার মধ্যে কড়াই বসিয়ে তাতে সয়াবিন তেল দিয়ে দিলাম। তারপর তেল গরম হওয়ার পরে তাতে পেঁয়াজ কুচি গুলো ছেড়ে দিলাম। পেঁয়াজ কুচি গুলো একটু হলুদ বর্ণ ধারন করলে তাতে মাংস আর চিংড়ি মাছ গুলো দিয়ে দিলাম। তারপর ভালো ভাবে নেড়ে চেড়ে মিক্স করে ডাকনা দিয়ে ডেকে দিলাম।

অষ্টম ধাপ-

তারপর মাংস আর চিংড়ি মাছ গুলো হালকা ভাবে সিদ্ধ হয়ে গেলে তাতে কেটে রাখা আলু গুলো দিয়ে দিলাম। মাছ আর মাংসের সাথে আলু গুলো সঠিক ভাবে সিদ্ধ করে এই অবস্থায় কড়াইটা উঠিয়ে রাখলাম।

নবম ধাপ-

তারপর চুলার মধ্যে আরেকটি কড়াই বসিয়ে দিলাম। তাতে তেল আর পেঁয়াজ দিয়ে দিলাম। পেঁয়াজ ভাজা হওয়ার পরে তাতে বরবটি,বাধা কপি,টমেটো,কাচাঁ মরিচ স্বাদ-ই ম্যাজিম দিয়ে সবজি গুলো হালকা ভাবে সেদ্ধ করে নিলাম।

দশম ধাপ-

এই পর্যায়ে সবজি গুলো হালকা সেদ্ধ হয়ে আসলে তাতে একটি ডিম দিয়ে দিলাম। ডিম আর সবজি গুলো ভালো ভাবে নেড়ে রান্না করে নিলাম। তারপর আগের মাংস আর চিংড়ি মাছের কড়াইটা চুলাতে বসিয়ে তাতে লাল শাকের চাউমিন গুলো দিয়ে উপরে রান্না করা সবজি গুলো দিয়ে দিলাম।

একাদশ ধাপ-

সর্বশেষ পর্যায়ে আমি মাংস,চিংড়ি মাছ আর সবজি গুলো দিয়ে চাউমিন গুলো ভালো ভাবে মিক্স করে নিলাম। তারপর ধনিয়া পাতা দিয়ে কিছুক্ষন কুক করে রান্না শেষ করে দিলাম। বিকাল চারটার সময় শুরু করেছিলাম,সেটা শেষ হয়েছে রাত নয়টার সময়। তারপরও আমি যে সফল হয়েছি সেটাই জন্য খুব ভালো লাগছে।

উপস্থাপনা-

বন্ধুরা এই হলো আমার আজকের রেসিপি। রান্না করার সময় ঘ্রানেই আমার অর্ধভোজন হয়ে গেল। রেসিপিটি খুবই টেষ্ট হয়েছে। আমাদের কমিউনিটির উসিলায় এত সুন্দর ইউনিক একটি রেসিপি করতে সক্ষম হয়েছি। । আশা করছি রেসিপিটি আপনাদের কাছেও অনেক ভালো লেগেছে। আবার আপনাদের সাথে নতুন ব্লগ নিয়ে হাজির হবো। সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।