ট্রেনের ভিতরে একদিন।।
বাংলা ভাষায় শেয়ার করো তোমার মনের অনুভূতি-
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমার জীবনের সাথে ঘটে যাওয়া কিছু দুঃখজনক মূহর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। আমি ছাড়া আর কারো সাথে এমন ঘটনা হয় কি না,সেটা আমার জানা নেই।
গত একই ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার আমি বাড়িতে যাওয়ার প্লান করি। তার কারন হলো দুই তারিখ শুক্রবার নিসার আকিকার অনুষ্ঠান ছিল। আমি সাধারনত বৃহস্পতিবারে বাড়িতে গেলে বিকাল চারটার সময় অফিস থেকে বের হয়ে যায়। কারন আমি সাধারনত তিতাস ট্রেনে যাতায়ত করি। আর সেই ট্রেনটি বিকাল পাঁচটা পঞ্চাশ মিনিটে কমলাপুর স্টেশন ত্যাগ করে। তবে সব থেকে কষ্টের ব্যাপার হলো বৃহস্পতিবারে রাস্তার এত পরিমানে জ্যাম থাকে যে, আমার প্রতিবার বাড়িতে যাওয়ার সময় যাত্রাবাড়ি থেকে ফ্লাইওভার দিয়ে হেঁটে যেতে হয়েছে। তাই আমি তিতাস ট্রেনে যাতায়ত করা এক প্রকার বাদ দিয়ে দিয়েছি।
এর পরিবর্তে রাত সাড়ে নয়টার সময় একটি ট্রেন আছে,সেটা দিয়ে ভ্রমন করি। সেটির নাম হলো মহানগর এক্সপ্রেস। তো এখন বাড়িতে গেলে এই ট্রেনেই যাতায়ত করা হয়। গত এক তারিখ বৃহস্পতিবারে চারটার সময় অফিস থেকে বের হয়নি। কারন যেহেতো ট্রেন রাত সাড়ে নয়টার সময় ছাড়বে, এত আগে যাওয়ার দরকার নেই। তাই সন্ধা ছয়টার সময় অফিস থেকে বের হয়ে,বাসায় গিয়ে জামা কাপড় চেন্জ করে সন্ধা সাতটার সময় বাসা থেকে বের হয়েছি। ঐদিন আবার বিশ্ব এজতেমা ছিল।
এক তো বৃহস্পতিবার, দ্বিতীয় এজতেমা, তৃতীয় হালকা বৃষ্টিও ছিল। যার ফলে কমলাপুর যেতে অনেক কষ্ট হয়েছে। সনির আখড়া থেকে হেটেঁ যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভার ব্রিজের অর্ধেক পর্যন্ত গেছি। কারন রায়ের বাগ থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত জ্যাম ছিল। অনেক কষ্ট করে নয়টা দশ মিনিটে কমলাপুরে গিয়ে পৌছালাম। টিকেট নিতে গেলাম,সিট না থাকায় স্টেন্ডিং টিকেটও দিলো না। নিরুপায় হয়ে টিকেট ছাড়াই স্টেশনের ভিতরে প্রবেশ করলাম। যেহেতো টিকেট নেই,যে কোন বগিতে উঠায় যায়।
ট্রেনের মাঝখানের একটি বগিতে উঠলাম। গিয়ে দেখি প্রত্যেক দুই সিটের একটিতে লোক বসা। আর একটি করে খালি। তো যেহেতো আমার টিকেট নেই,তাই আমি দাড়িয়ে রইলাম। কোন খালি সিটে বসলাম না। এক লোক আমাকে ইশারা দিয়ে এক মহিলার পাশে একটি খালি সিটে বসতে বললো। আমি চিন্তা করলাম দুই মিনিট পড়েই,সিটের মূল মালিক চলে আসবে। দুই এক মিনিটের জন্য শুধু শুধু বসে লাভ নেই। তাই দাড়িয়ে রইলাম। কিছুক্ষন পরে একটি লোক এসে ঐ সিটের পাশে দাড়ালো। তারও টিকেট নেই। সে নরসিংদী যাবে। সে কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে টপ করে মহিলার পাশের সিটে বসে পড়লো। আমি দাড়িয়ে তাকিয়ে রইলাম। যথা সময়ে ট্রেন ছেড়ে দিলো,সিটের মূল মালিকে না আসায় আমি দাড়িয়ে দাড়িয়ে চিন্তা করতেছি,কেন আমি সিটের মধ্যে বসলাম না। মনকে সান্তনা দিলাম,বিমানবন্দর গিয়ে হয়তো সিটের মূল মালিক চলে আসবে। কিন্তুু না,আমার চিন্তার উলটো হলো,মূলত এই সিটের মূল মালিক কোন কারনে ভ্রমন ক্যানসেল করেছে অথবা ট্রেন মিস করেছে। উক্ত লোকটি নরসিংদী পর্যন্ত গেলো,সিটের মূল মালিকের দেখা নেই। তখন সিটে না বসার কারনে নিজেকে মনে মনে অনেক গালি দিলাম।
উপরের সিটে দুইজন মানুষকে দেখতে পাচ্ছেন। তারা আমার সাথে দাড়ানো ছিল,তাদের কাছেও টিকেট নেই। বিমান বন্দরে গিয়ে এই সিট দুটো খালি পেয়ে তারা দুইজন বসে পড়ে। এই দুই সিটের মূল মালিকও কোন কারনে আসে নাই। তাদের কথার ভাবে বুঝতে পারলাম তারা নরসিংদী গিয়ে নেমে পড়বে। আমি আশায় বসে থাকলাম তারা নেমে গেলে আমি বসে পড়বো। নরসিংদী আসার আগেই তারা সিট ছেড়ে দরজায় চলে গেলা। আমি তাদের সিটে বসে জোরে একটা নিঃশ্বাস নিলাম। আর ঐ যে মহিলার পাশের লোকটিও সিট ছেড়ে নেমে গেলো। আমি যেহেতো একটি সিটে বসেছি তাই মহিলার পাশের সিটে বসলাম না।
নরসিংদী থেকে এক জন লোক এসে মহিলার পাশের সিটে দাড়ালো তবে বসলো না। কারন সাধারনত সবাই মনে করে মহিলার পাশের সিটে তার হাসবেন্ড বা কেউ না কেউ আছে। তবে দুই মিনিট অপেক্ষা করে কেউ না আসায় সেও মহিলার পাশের সিটে বসে গেলো। তারমানে বুঝতে পারলাম মহিলার সাথে আসলে কেউ নেই। আর সিটের মূল মালিকও নেই। নরসিংদী থেকে ট্রেন ছাড়ার দশ পনের সেকেন্ট আগে আমার সিটের মূল মালিক চলে আসলো। আমি দাড়িয়ে চিন্তা করতেছি যদি মহিলার পাশের সিটে বসতাম তাহলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত সিটে বসে যেতে পারতাম। অবশেষে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত গেলাম।
আপনারা উপরের ছবিতে লক্ষ করলে বুঝতে পারবেন, ঐদিন কি পরিমান জ্যাম ছিল ট্রেনের ভিতরে। আর এই জ্যামের মধ্যে ট্রেনে একটি সিট পাওয়া মানে,সোনার হরিণ পাওয়ার মত। সেই জাগায় আমি সিট পেয়েও নিজের লজ্জার কারনে সিটে বসলাম না। যার ফলে সারা রাস্তা দাড়িয়ে দাড়িয়ে গেলাম। যদিও একটি সিটে বসেছিলাম, তবে সেই সিটের মূল মালিক চলে আসায়,সাথে সাথে সিট ছেড়ে দিতে হয়েছে। আর আমি যেটাতে বসলাম না,সেটার মূল মালিকের খবর নেই। একেই বলে ভাগ্য।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | ট্রেনের ভিতরে একদিন।। |
স্থান | ঢাকা,বাংলাদেশ। |
তারিখ | ০১ /০২/২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
ট্রেন ভ্রমণ আমার ভালই লাগে।তবে আপনার মত পরিস্থিতিতে পড়িনি।তবে ভয়াবহ ভীড়ে ভ্রমণ করেছি সিটে বসে।বিশেষ করে ঈদ যাত্রায়। আপনি ঠিকেই বলেছেন,স্টান্ডিং টিকেট নিয়ে ভিড়ের দিন্,ট্রেনের সিট পাওয়া মানে সোনার হরিণ।কিন্তু এবারের যাত্রায় সোনার হরিণ আপনি হেলায় হারিয়েছেন।ট্রেন যাত্রার অভিজ্ঞতা নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া।
জী আপু ট্রেন একটি আনন্দদায়ক যানবাহন যার ফলে সবাই ট্রেনে চড়তে চাই। যার কারনে প্রচুর ভিড় হয়। ধন্যবাদ।
আসলেই ভাই এতো ভিড়ের মধ্যে একটি সিট পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। আর আপনি তো মহিলার পাশে সিট খালি থাকা সত্ত্বেও বসলেন না লজ্জায়। আসলে মহিলাদের পাশে বসতে লজ্জা লাগাটা স্বাভাবিক। আসলে সবসময় ভাগ্য সহায় হয় না আমাদের। শেষপর্যন্ত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কষ্ট করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত যেতে হলো আপনাকে। যাইহোক এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
জী ভাইয়া ঐ মহিলার সাথে বসতে পারলে সারা রাস্তা বসে যেতে পারতাম। ধন্যবাদ।
আসলে ভাই ট্রেনের মধ্যে এরকম পরিবেশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ট্রেন জার্নি করাটা বেশ কঠিন। আর এরকম পরিবেশে জার্নি করাটা শুধুমাত্র ধৈর্যের উপরই নির্ভর করে। মোটামুটি ভালই লাগলো আপনার লেখা গুলো পড়ে এবং ট্রেনের যাত্রা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেলাম।
জী ভাইয়া ধৈর্য ছাড়া ট্রেন জার্নি করা যায় না। ধন্যবাদ।
ভাইয়ার দেখি ট্রেন জার্নিতে বেড লাক তা বরাবরই খারাপ! আপনি যথা সময়ে চলে আসেন, তো সেদিন ট্রেন দেরি করে, আবার আপনার যদি দেরি হয় সেদিন আবার ট্রেন অন টাইমে আসে। আবার আজকে যে পরিস্থিতি শেয়ার করলেন আপনি যে সিটে বসেছেন কিছুক্ষণ পরই তার মূল মালিক চলে এসেছিল। অথচ সেই মহিলার পাশের সিট টিতে বসলে আরামসে বসে বসে পুরো জার্নিটা করতে পারতেন। সবই কপাল ভাই। হয় ভাই, আমাদের সকলের সাথেই সময়ে সময়ে এমনটা হয়। কষ্ট হলেও ঠিকঠাক মতো বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন এটাতেই শুকরিয়া। আশা করি মেয়ের অনুষ্ঠান ভাল মতই হয়েছে।
জী আপু ট্রেন জার্নিতে আমার লাক খুবই খারাপ। কমলাপুর যেতে রাস্তায় জ্যাম পড়বেই পড়বে। কিছু করার নেই।
এটি আমরা অনেকে খেয়াল করে যখন ট্রেনে বা গাড়িতে যাওয়ার সময় যদি মহিলার পাশে সিট খালি থাকে মনে হয় তার হাজবেন্ড বা কেউ আছে। দুঃখজনক ব্যাপার হলো আপনি সিট দেখেও বসতে পারলেন না। তবে রাত্রেবেলা ট্রেনে চলাফেরা করতে অনেকে পছন্দ করে।মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে করে বাড়িতে গেলেন। তবে আপনার ফটোগ্রাফির মধ্যে দেখতেছি ট্রেনের মধ্যে অতিরিক্ত মানুষ। সুন্দর করে পোস্ট করেছেন তাই ধন্যবাদ আপনাকে।
জী ভাইয়া ভেবেছি সেই সিটে কেউ না কেউ আছে। অথচ পরে জানলাম কেউ নেই,হা হা হা। ধন্যবাদ।