ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২৪ এ যাওয়ার অনুভূতি- অন্তিম পর্ব।।

হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২৪ এ যাওয়ার অনুভূতি- অন্তিম পর্ব শেয়ার করতে যাচ্ছি। আমি বলেছিলাম বাণিজ্য মেলার ফটোগ্রাফি দুই পর্বে শেষ করে দিবো। আর আজকেরই সেটার শেষ পর্ব । আশা করি ব্লগটি আপনাদের সবার কাছে অনেক ভালো লাগবে।

বন্ধুরা আপনারা সবাই জানেন যে এ বছর ২৮ তম বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবছর বাণিজ্য মেলাতে ভারত,পাকিস্তান,নেপাল,ভুটান,ইরান সহ প্রায় পনেরটি দেশ অংশ গ্রহন করেছিল। সব ব্যবসায়ীদের ইচ্ছা ছিল যে মেলার সময় কয়েকদিন বাড়িয়ে দিতে। কিন্তুু যারা বিদেশ থেকে এসেছে তারা আগেই টিকেট কেটে ফেলেছিল। যদি মেলার সময় বৃদ্ধি করা হয় তাহলে তাদের টিকেট গুলো বাতিল হয়ে যাবে। তাই বাণিজ্য মন্ত্রনালয় মেলার সময় বৃদ্ধি করে নাই। ২০ই ফেব্রুয়ারী রাত ১২টা পর্যন্ত মেলা ছিল।

আমি এই বছরই প্রথম বাণিজ্য মেলাতে গিয়েছিলাম। আগার গাঁও থাকতে আমি যেতে পারি নাই। এখন মূল ঢাকা শহরের থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে গেছে। তবে পূর্বাচলের রাস্তা গুলো দারুন করেছে। ঐ জায়গাটাকে আধুনিক ঢাকা হিসাবে গড়ে তুলা হবে। এমন পরিকল্পনা নিয়েই মেলার স্থানটা পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন জায়গা হওয়ার কারনে মানুষ তুলনামূলক কম ছিল। আমি গিয়েছিলাম শেষের দিন। যার ফলে গিয়ে দেখি অনেক বিদেশি শপ বন্ধ করে দিচ্ছে। আর যে গুলো অপেন ছিল সে গুলো ঘুরে ঘুরে কিছু ফটোগ্রাফি করেছি। সে গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি।

মেলাতে বেশি অংশ দেখলাম বিভিন্ন ব্যান্ডের ইলেকট্রনিক পণ্য। SKB, KIAM, WALTON, SINGER, VISION সহ আরো অনেক ব্যান্ডের পণ্য দেখলাম। আমাদের সাংসারিক জীবনে নিত্যপ্রয়োজনীয় যে জিনিষ গুলো লাগে,সে গুলো বেশি বিক্রয় হচ্চে। যেমন,রাইস কুকার,ব্ল্যান্ডর মেশিন, ফ্রাইপেন, ইলেক্ট্রনিক কেটলি, হাড়ি-পাতিল সহ আরো অনেক কিছু। আমি কিছুদিন আগে একটি রাইস কুকার কিনেছিলাম এখানে দাম কিছুটা কম ছিল। এই সব শপের মধ্যে মানুষের আনাগোনা বেশি ছিল।

এখানে যে ছবি গুলো দেখতে পাচ্ছেন সে গুলো হলো ইন্ডিয়ান শপ। এগুলোতে পিতলের,কাশাঁর,অরিজিনাল সিলভারের জিনিষ পত্র বিক্রয় করা হয়। এই শপের মধ্যে মানুষের প্রচুর ভিড় ছিল। এই শপ গুলো মেলার মূল ভবনের বাহিরে ছিল। আপনারা ভালো ভাবে লক্ষ করলে বুঝতে পারবেন বেশি অংশই সিলভারের পণ্য দেখা যায়। এই শপের কর্মচারিরা বেশি অংশ হিন্দিতে কথা বলছিলো। আবার কিছু বাঙ্গালীও ছিল।

তারপর গেলাম আইসক্রিমের জগতে। বিভিন্ন ব্যান্ডের আইসক্রিম ছিল। পোলারের শপটা একটু ভিন্ন ধরনের ছিল। তারা শপটা এমন ভাবে সাজিয়েছে দেশে মনে হয় বরফের রাজ্য। ফ্রিজের ভিতরে প্রবেশ করে আইসক্রিম খাচ্ছি এমন মনে হয়। তারপর সেভয় আইসক্রিম শপের সামনে একটি মানব আইসক্রিম দেখলাম। একজন মানুষ আইসক্রিমের আদলে সেজেছে। ঘুরে ফিরে মানুষকে আনন্দ দিয়ে তাদের মনযোগ আকর্ষন করে। ইগলু কোম্পানিও কোন দিক দিয়ে কমতি রাখেনি। তাদের শপটাও সুন্দর ভাবে সাজিয়েছে। তাদের শপে সুন্দর সুন্দর আপুরা আইসক্রিম সার্ভ করছিল। সব কিছু দেখে ভালোই লাগলো। আমার কোন কিছু খাওয়ার সময় ছিল না। দৌড়ের উপরে ছিলাম। কারন তখন শপ গুলো বন্ধ করে ফেলতেছিল।

মেলার মূল ভবনের ভিতরেও প্রচুর শপ ছিল। আঁচার,হোটেল-রেস্টুরেন্ট সহ অনেক ধরনের কসমেটিক পণ্য ছিল। বিশাল বড় এড়িয়া,সম্পূর্ণ মেলা ঘুরে দেখতে একদিন ফুল সময় হাটতে হবে। যেমন মানুষের ভিড় ছিল ঠিক তেমনি শপও ছিল। যে দিকে তাকায় শুধু শপ আর শপ। বেশি অংশ শপের মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পেইমেট করা যাচ্ছিল। হয়তো আর পাঁচ দশ বছর পরে হ্যান্ড ক্যাশ আর থাকবে না। সব শপে মোবাইল ব্যাংকিং হয়ে যাবে। আরএফএল এর বিশাল বড় একটি শপ ছিল। দুই তলার একটি বিশাল বড় শপে সব ধরনের ব্যান্ডের পণ্য তারা রেখেছিল। আমি গিয়ে দেখি সেটা অলরেডি ভেঙ্গে ফেলছে।

আপনারা দেখতে পাচ্ছেন ঝর্না গুলোও বন্ধ করে দিয়েছে। সবাই সব কিছু গুছিয়ে ফেলছে। আমরা সাড়ে দশটার দিকে মেলা থেকে বের হয়ে গেলাম। বের হওয়ার পরে অনেক আফসোস করতে লাগলাম। কেন আরো আগে আসলাম না। দিনের বেলা আসলেও অনেক কিছু দেখতে পারতাম। ভিতরে বাহিরে অনেক সুন্দর করেই সাজানো হয়েছে। আমার কাছে মেলাটা ভালোই লেগেছে। যদি সৃষ্টিকর্ত বাচিঁয়ে রাখে তাহলে পরের বছর আগেই চলে যাবো। কারন সেখানে দেখার মত শেখার মত অনেক কিছু আছে। আশা করি আপনারাও যাবেন।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।