অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কেটে, সেটা আবার সেল দেওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা।।
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন সবাই কেমন আছেন। আশা করছি সবাই পরিবারের সাথে,বন্ধুবান্ধবের সাথে খুবই ভালো আছেন। তাদের সাথে সুন্দর সময় অতিবাহিত করছেন। আজকে সর্তক মূলক একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করছি ব্লগটি পড়লে আপনারাও সতর্ক থাকতে পারবেন। প্রতারনার হাত থেকে বেঁচে যেতে পারবেন।
আপনারা সবাই জানেন যে বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে ট্রেন খুবই আনন্দদায়ক ভ্রমনের একটি বাহন। স্থলপথে কোথাও ভ্রমন করতে গেলে সাধানত সবাই চেষ্টা করে ট্রেনে ভ্রমন করতে। কারন ট্রেন জার্নি খুবই আনন্দদায়ক। আমি বাড়িতে বা কোথাও ঘুরতে গেলে সর্বউচ্চ চেষ্টা করি ট্রেনে ভ্রমন করতে। আর ট্রেনের টিকেট তিনটি পদ্ধতির মাধ্যমে গ্রহন করা যায়। একটি হলো সরাসরি স্টেশনে গিয়ে টিকেট কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করা যায়। দ্বিতীয় হলো অনলাইনের মাধ্যমে সংগ্রহ করা যায়। আর তৃতীয়টি হলো যে কোন ব্যাক্তির মাধ্যমে সংগ্রহ করা যায়। কোন ব্যাক্তির মাধ্যম বলতে সবাই ব্ল্যাকার মনে করতে পারেন। ব্ল্যাকর ছাড়াও অনেক মানুষের কাছে টিকেট পাওয়া যায়,যাদের কোন কারনে ভ্রমন বাতিল হয়ে যায়। তাদের টিকেট গুলোও সংগ্রহ করা যেতে পারে।
আমি গত মাসের পচিঁশ তারিখ অনলাইনের মাধ্যমে ঢাকা টু ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহানগর এক্সেপ্রেস ট্রেনের দুইটি টিকেট সংগ্রহ করেছিলাম। ট্রেনটি চট্রগামগামী তবে যাওয়ার সময় ব্রাহ্মনবাড়িয়াতে স্টোপিজ দিয়ে যায়। যার ফলে আমাদের ঢাকা বা চট্রগাম যাওয়া আসা করতে অনেক সুবিধা হয়। ঢাকা টু ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত শোভন চেয়ার সিটের ভাড়া হলো ১৪৫ টাকা। আর অনলাইন থেকে সংগ্রহ করলে প্রতি টিকেটে ২০ টাকা ব্যাংক চার্জ কাটে। অর্থাৎ আমার দুইটি টিকেট সংগ্রহ করতে খরচ হয়েছে ১৪৫*২=২৯০+ ব্যাংক চার্জ ৪০ টাকা। সর্বমোট খরচ হলো ৩৩০ টাকা। যায়হোক টিকেট পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলাম।
তিন তারিখ আমার ওয়াইফের পরিক্ষা থাকায় আমি টিকেট কেটেছিলাম ০২-১০-২০২৩ ইং তারিখ রাত ৯.৩০ মিনিটের। কিন্তুু গত মাসের ২৯ তারিখ বিকাল বেলা হঠাৎ করে আমার শাশুড়ি বাসায় এসে হাজির। হঠাৎ কোন খবর না দিয়ে চলে এসেছেন। এসে তিনি জানালেন মেয়েকে দেখতে খুবই ইচ্ছা জাগলো। গত দুই মাস ধরে মেয়েকে দেখে না। তাই কোন খবর না দিয়েই চলে এসেছেন। তিনি জানতেন আমরা দুই তারিখ ব্রাহ্মনবাড়িয়া যাচ্ছি। তারপরও তার মন মানতে ছিলো না। একেই বলে মায়ের মন। দুই দিনও ধৈর্য ধরে থাকতে পারে নাই। কত দুর থেকে চলে এসেছেন। মায়ের ভালোবাসার তুলনা হয় না। তিনি শুক্রবারে এসেছে আবার শনিবারে চলে যাবে। আমি আমার ওয়াইফ কে বললাম যেহেতো মা এসেছেন, তুমি তোমার মায়ের সাথে চলে যাও। আমার যেহেতো অফিস আছে,তাই আমি না গেলে ভালো হয়। সে বললো আমরা যে টিকেট কিনে ফেলেছি। আমি বললাম টিকেট আমি আবার অনলাইনে সেল দিয়ে দিবো। তখন সে মায়ের সাথে যেতে রাজি হলো।
শনিবারে সকাল ৮ টার সময় শ্বাশুড়ি এবং বউকে তুবা লাইন এসি বাসে উঠিয়ে দিলাম। তারপর আমি অফিসে এসে টিকেট গুলো কিভাবে সেল দেওয়া যায় সেই চিন্তা করতে লাগলাম। তারপর ফেসবুকে ঢুকে অনেক গুলো ট্রেন টিকেট বাই সেল গ্রুপে জয়েন হলাম। তারপর বেশ কয়েকটা গ্রুপে পোষ্ট করলাম। পোষ্ট করার সাথে সাথে কয়েক জন টিকেটের জন্য ম্যাসেজ দিলো। সবাই স্কিন শর্ট দিতে বলে। আমি জানি যে, তিনটি জিনিষ হাইড করে তারপর অনলাইনে টিকেটের স্কিন শর্ট শেয়ার করতে হয়। সে তিনটি জিনিষ হলো কিউআর কোড,সিট নাম্বার,আর পিএনআর নাম্বার। এই তিনটি জিনিষের মধ্যে একটি যদি কেউ জেনে যায় তাহলে আমার টিকেট অন্য জন বসে যাবে। কেউ পিএনআর নাম্বার পেলে তো কাউন্টার থেকে সংগ্রহ করে ফেলবে।
আমি উপরের তিনটি জিনিষ হাইড করে স্কিট শর্ট শেয়ার করার ফলে কেউ আর কিনতে চাইলো না। ভেবেছে হয়তো নতুন বা বোকা মানুষ। কোন কিছু বুঝে না। চাইলেই টিকেট দিয়ে দিবো। তিন চার জনের মধ্যে একজন আমার আইডি কার্ড,নাম্বার,সব কিছু নিয়েছে। নাম্বার নিয়ে বলে টাকা পাঠাইছি টিকেট দেন। তখন আমি বললাম আপনি টাকা কোন নাম্বারে দিছেন,রকেট,বিকাশ না কি নগদে। লাস্ট নাম্বার বলেন,স্কিন শর্ট দেন। সে তখন গালাগালি শুরু করলো। আমি নাকি ব্ল্যাকার এক টিকেট কয়েক জনের কাছে বিক্রয় করেছি,ব্লা ব্লা ব্লা অনেক কিছু বলেছে। তারপর আমি অনলাইনে টিকেট বিক্রয় করার চিন্তা বাদ দিয়ে দিলাম।
গত কাল দুই তারিখ সাতটার সময় স্টাফ বাসে চড়ে কমলাপুর চলে গেলাম। আটটার সময় একজোড়া নবদম্পতির নিকট টিকেট সেল দিয়ে চলে এলাম। ভদ্রলোক খুশি হয়ে চারশো টাকা দিয়েছিলো। আমার টিকেটের দাম ৩৩০+৫০ টাকা আসার ভাড়া যোগ করে ৩৮০ টাকা রেখে ২০ টাকা ফেরত দিয়ে দিলাম।
অনলাইনে কাউকে বিশ্বাস করা খুবই বিপদজকন। আমি জানি অনলাইনে ব্ল্যাকাররা এক টিকেট কয়কজনের কাছে সেল দিয়ে মানুষকে হয়রানি করে। যার ফলে মানুষ সবাইকে ব্ল্যাকার মনে করে। ঐ লোকের ব্যবহারে আমি তেমন কিছু মনে করিনি। কারন সে হয়তো ভুক্তভোগী।
বন্ধুরা এই হলো আমার আজকের আয়োজন। উপরিউক্ত বিষয়ের উপরে আপনাদের যদি কোন অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আমিও জানতে চাই আপনাদের তিক্ত ও ভালো অভিজ্ঞতা সমূহ। আজকে আর বাড়াবো না। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
নতুন একটা বিষয় সম্পর্কে ধারণা অর্জন করলাম যেখানে বেশ সুন্দর ভোগান্তিও রয়েছে। আসলে আমি কোনদিন অনলাইন থেকে এভাবে ট্রেনের টিকিট কাটেনি আবার পরবর্তীতে সেল দেওয়া সত্যিই বিরক্তকর। তবে যাই হোক আপনার পোষ্টের মধ্য দিয়ে কিন্তু নতুন একটা বিষয় সম্পর্কে ধারণা অর্জন হল আমার। পাশাপাশি অনেক তথ্য পেলাম।
জী ভাইয়া সেই জন্যই পোষ্টি করলাম। হয়তো অনেকেই এই বিষয়ে সতর্ক হবে। ধন্যবাদ।
এরকম ভোগান্তির আমিও শিকার হয়েছি এর আগে আমরা ট্যুরে যাওয়ার প্ল্যান করেছিলাম। অনলাইনে টিকিট কাটার পর কিছু ব্যক্তিগত কারণে সেই টুর প্ল্যান বাতিল হয়ে যায় পরে প্রতিটা টিকেটের উপর চল্লিশ টাকা করে লস হয় যাইহোক ভালো লাগলো আপনার তিক্ত গল্প পড়ে।
জী ভাইয়া ২৪/৭২ ঘন্টার মধ্যে টিকেট কাউন্টারে ফেরত দিলে একটা অংশ টাকা কেটে রেখে দেয়। ধন্যবাদ।
খুবই দুখ জনক একটি ঘটনা।ঠিকি বলেছেন মায়ের মন বলে কথা সে তো আর অপেক্ষা করতে পারে না।যাইহোক শেষ অবদি টিকেট বিক্রি হলো তাহলে।ধন্যবাদ আমাদের মাঝে আপনার গল্প শেয়ার করার জন্য।
জী ভাইয়া অবশেষে টিকেট টা সেল দিতে পেরেছিলাম। ধন্যবাদ।
আজকাল ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপে মানুষ নানা ভাবে ঠকে ভাই। আর তাই হয়তো অনেকেই বিশ্বাস করতে চায় না, এতে ভোগান্তি বাড়ে । আর ট্রেনের টিকিট সেলের ক্ষেত্রে যে তিনটি জিনিস হাইড করে দিতে হয়, সেটা আমারও জানা ছিলো না। আপনার পোষ্ট পড়েছি জানলাম। আপনাকে ধন্যবাদ ভাই এমন সচেতনতা মূলক পোষ্ট শেয়ার করার জন্য।