আবহাওয়া পরিবর্তন।।
বাংলা ভাষায় প্রকাশ করো নিজেকে-
মানুষ হলো মুসাফির। আজকে এখানে আছে তো কালকে ওইখানে। কোন দিন, কখন কোথায় যাবে, সেটা সে নিজেও জানে না। অনেক সময় প্লান প্রোগ্রাম করে একরকম কিন্তু বাস্তবে হয়ে যায় আরেক রকম। গত রমজানের ঈদে আমি গ্রামের বাড়িতে যাইনি। বাবু ছোট থাকার কারণে এই গরমের মধ্যে যাওয়া হয়নি। ঢাকাতেই ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়েছে। ঈদুল ফিতরে বাড়িতে না যাওয়ার কারনে ফ্যামিলি আত্মীয়-স্বজনের সাথে কিছুটা মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। কেউ বাস্তবতা বোঝার চেষ্টা করেনি। সবার একটাই প্রশ্ন কেন বাড়িতে যাইনি। বাবু ছোট অন্যদিকে প্রচন্ড গরম এই ইস্যুগুলো তারা মানতে নারাজ। তারপরেও দিনরাত অতিক্রম হয়ে ক্যালেন্ডারের পৃষ্ঠা পরিবর্তন হয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর চলে যায়। পবিত্র ঈদুল আযহার আগমনী বার্তা শোনা যায়।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসের ১৬ অথবা ১৭ তারিখে সারা বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা তথা কোরবানির ঈদ পালন করা হবে। পবিত্র ঈদুল আযহার আমেজ অলরেডি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমাদের অফিসে প্রতিদিনই আলোচনা হয় এই বছর ঈদুল আযহাতে কতদিন অফিস বন্ধ রাখবে। আমাদের সাধারণত ঈদ উৎসবে সাত থেকে আট দিন ছুটি দিয়ে থাকে। অনেকে চিন্তাভাবনা করতেছে, হয়তো এই ঈদের মধ্যে দশ দিন বন্ধ দিবে। কিন্তু সেটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। অফিস মিটিং এর মধ্যে সম্মানিত এমডি স্যার ছয় দিনের বেশি ছুটি দিতে অস্বীকৃতি জানাই। তারপরও হয়তো রিকুয়েস্ট করে একদিন ছুটি বাড়ানো যেতে পারে। তবে সেটা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করছে।
যেহেতু আমি ঈদুল ফিতরের সময় গ্রামের বাড়িতে যাইনি সুতরাং পবিত্র ঈদুল আযহার সময় কোনভাবেই বাড়িতে যাওয়া মিস করা যাবে না। এজন্য আমি আগে থেকেই পবিত্র ঈদুল আজহা পালন করার জন্য বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করতেছি। এমত অবস্থায় আমার বাবা-মা আমাকে ফোন করে জানায় আমার ওয়াইফ এবং বাচ্চাকে যেন ২-৩ সপ্তাহ আগে গ্রামে পাঠিয়ে দেয়। কারণ তারা জানে আমি ঈদের সময় বাড়িতে ৩-৪ দিন থেকেই আাবার ঢাকাতে চলে আসি। তাই তারা আমাকে আগেই আল্টিমেটাম দিয়ে রাখলো। আমার ওয়াইফ ও গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। শহরের চার দেয়ালে বন্দি জীবন, উদ্ভট গরম,আর সহ্য করতে পারছে না। অতি দ্রুত আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য ছটফট করতে লাগলো। যার ফলে চিন্তা করলাম রাস্তাঘাটে এমনি সব সময় যানজট লেগে থাকে, আর ঈদুল আযহার সময় আরো বেশি যানজট লাগে। কারণ তখন দেখা যায় পাবলিক রাস্তা ব্যবহার করে পশুর হাট বসানো হয়। যার ফলে আমিও তাদের সাথে একমত হয়ে এই মাসেই ফ্যামিলি বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার চিন্তা করলাম।
আব্বু আমাকে বলেছিল যদি আমি আসতে না পারি তাহলে তিনি এসে তাদেরকে নিয়ে যাবেন। কিন্তু আমার ওয়াইফ আমি ছাড়া কারো সাথে বাড়িতে যাবে না। কারণ এই প্রথম বাবু তার দাদার বাড়ি যাচ্ছে। যার ফলে আমাকে বাড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হলো। গতকালকে অফিস থেকে একদিন ছুটি নিলাম। গতকাল থেকেই বাড়িতে আসার প্রস্তুতি নিতে থাকলাম। রাত বারোটার মধ্যে সমস্ত প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়ে গেলো। আমি সাধারণত বাড়িতে ট্রেনে আসা-যাওয়া করি। আজকেও বাসা থেকে বের হওয়ার সময় চিন্তা করেছি ট্রেনে যাবো। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে বাড়িতে যাওয়ার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি শেষ করলাম। ঠিক সাতটার সময় বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম। সাইনবোর্ড এসে ঘড়িতে চেয়ে দেখি সাড়ে সাতটা বাজে। আর সকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া উদ্দেশ্যে যে দ্বিতীয় ট্রেনটি ছেড়ে যাবে,সেটা সাড়ে নয়টার সময়। প্রথম ট্রেনটি সাড়ে ছয়টার সময় ছেড়ে চলে গেছে। আমি সাড়ে সাতটার সময় চিন্তা করলাম এখন কমলাপুর গেলে দুই ঘন্টার উপরে বসে থাকতে হবে। এদিকে আমার কোলে ছোট বাবু ও রয়েছে।
অনেক দিকে চিন্তা ভাবনা করে বাসে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। সোহাগ বাস কাউন্টারে গিয়ে দুইটি টিকেট নিলাম। টিকেট হাতে পাওয়ার ১০-১৫ মিনিট পরে বাসে উঠে গেলাম। বাসে উঠার পরে আমার কোলের উপরে শুয়ে বাবু ঘুমিয়ে গেছে। আমরা বসলাম ড্রাইভারের ঠিক পিছনে সিটে।আমাদের সিট নাম্বার হল তিন এবং চার। এখন সোহাগ বাসের ড্রাইভার গাড়ি চালানোর জন্য প্রতি মিনিটে দশবার সাউন্ড বাটনে ক্লিক করে । অনেক সময় লম্বা সাউন্ড করে। অতিরিক্ত সাউন্ডের ফলে বাবু প্রায় সময়ই ঘুম ভেঙ্গে উঠে যাই। ড্রাইভার সাহেব কে একবার বলার পরেও তেমন কাজ হয়নি। তিনি তার মতো করে গাড়ি চালাতে লাগলেন। এদিকে শত আওয়াজের পরেও আমাদের বাবু ভৈরব পর্যন্ত ঘুমিয়েছে। ভৈরব পার হওয়ার পরে বাবু ঘুম থেকে উঠে কান্না শুরু করে। তারপর অনেক কষ্ট করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত আসলাম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসে বাস থেকে নেমে কাউতলী মোড় থেকে কিছু লিচু আর কিছু মিষ্টি কিনলাম। তারপর একটি সিএনজি চড়ে আমাদের গ্রামের বাস কাউন্টারে চলে আসলাম। সেখান থেকে আবার অটো দিয়ে আমাদের বাড়ির গেইটে চলে আসলাম। আজকে তেমন রোদ ছিল না তবে প্রচন্ড গরম ছিল। যার ফলে ঢাকা থেকে আসতে মোটামুটি অনেক কষ্ট হয়েছে। তব ঈদের সময় বাচ্চা নিয়ে আসলে আরো অনেক বেশি কষ্ট হতো।
বিকাল বেলা ছাদের মধ্যে চেয়ার নিয়ে বসে ছিলাম, অনেক সুন্দর ঠান্ডা প্রাকৃতিক বাতাস উপভোগ করলাম। ক্ষণিকের জন্য আবহাওয়া পরিবর্তন করে মনটা রিফ্রেশ লাগছে। ইচ্ছা করছে কিছুদিন গ্রামের প্রাকৃতিক বাতাস উপভোগ করে যাই। কিন্তু সেটা আর সম্ভব নয় আগামীকাল জুম্মার নামাজ পড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিবো, ইনশাল্লাহ।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | আবহাওয়া পরিবর্তন।। |
স্থান | ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ৩০/০৫ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আসলে ছোট বাচ্চা থাকলে কতো জনের কথা শোনতে হয় বলার মতো নয়। তবে নিজের ভালো যেটা হয় সেটাই করা উচিত। সত্যি ঈদের সময় এত ভীর থাকে ছোট বাচ্চা নিয়ে যাওয়া মুশকিল। যাইহোক অবশেষে বাচ্চা নিয়ে ভালো মতো বাড়িতে পৌঁছাতে পেরেছেন অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
জী আপু সে জন্যই গরমের মধ্যে রমজানের ঈদে বাড়িতে যায়নি। ধন্যবাদ।
আসলে সত্যিই দাদা এই কর্মব্যস্ত জীবনে আমরা অফিস থেকে খুব কমই ছুটি পাই। বিশেষ করে এই উৎসবের দিনগুলোতে যদি আমরা কম ছুটি পাই তখন আমাদের আনন্দটা অর্ধেক নিরানন্দে পরিণত হয়। যদিও এই গরমের সময় এবং ছুটি কম এই দুটো দিক চিন্তা করলে আমাদের মনটা খুব খারাপ হয়ে যায়। আশা করি আপনি সামনের ঈদে আপনার পরিবারকে ভালোভাবে সময় দিতে পারবেন।
জী দাদা,সামনের ঈদে বাড়িতে যাবো,ইনশাআল্লাহ।।
অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া যেখানে এক কর্মস্থল থেকে বাসায় যাওয়ার অনুভূতি এবং টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটা থেকে শুরু করে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তবে জেনে ভালো লাগলো ভালোভাবে পৌছাতে পেরেছেন। আসলে ভিড়ের মধ্যে চলাচল আর প্রচন্ড গরমের মুহূর্তে চলাচল বেশ কঠিন।
জী আপু চেষ্টা করেছি সব কিছু বিস্তারিত বর্ণনা করতে। ধন্যবাদ।