ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরে আসা।।

in আমার বাংলা ব্লগ7 months ago

হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে তিনদিন ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরে আসার অনুভূতি শেয়ার করবো। আশা করি অভিজ্ঞতা গুলো পড়লে আপনাদের কাজে লাগবে।

photo_2023-12-12_15-00-07.jpg

গত ৮ই ডিসেম্বর রোজ শুক্রবার তিন দিন ছুটি নিয়ে আমি বাড়িতে গিয়েছিলাম। খুব সুন্দর ভাবেই তিনদিন ছুটি কাটিয়েছি। শহর থেকে গ্রামের দিকে শীত আর কুয়াশা একটু বেশি। গরমের সময় রাত ১১টা, সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত দোকান পাটে মানুষ থাকে। কিন্তুু শীতের দিনে রাতটার পরেই দোকনপাট বন্ধ করে সবাই বাসায় চলে যায়। কারন সন্ধারপর থেকে কুয়াশা পড়তে শুরু করে। কুয়াশার সাথে সাথে মানুষকে শীত প্রচন্ড আকারে ঝাপটে ধরে। রাত নয়টা দশটার পরে চা খেতে গেলেও দোকান খুঁজে পাওয়া যায় না।

একদিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে চা খেতে বের হয়েছিলাম। প্রায় এক কিলোমিটার হেটেছি চা খাওয়ার জন্য। অনেক দুরে গিয়ে এক দোকানে চা পেয়েছি তবে সেটা তেমন গরম না। হয়তো চুলা অফ করে দিয়েছে অথবা শীতে চা ও ঠান্ডা হয়ে গেছে। এবারের ছুটিতে বাড়িতে গিয়ে দারুন অনুভূতি হয়েছে। রাতের বেলা গ্রামের রাস্তায় বের হলে অন্যরকম একটি অনভূতি ফিল হয়। তবে একটি সমস্যা রয়েছে। আর সেটি হলো এই শীতে গ্রামের অনেক মানুষ ঠান্ডা জ্বরে অসুস্থ হয়ে গেছে। অনেক মানুষ শীতের কাপড় না থাকায় কষ্ট করছে। এই সমস্যাটা শহরের বিভিন্ন বস্তি,রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা মানুষ অথবা স্টেশনে শুয়ে থাকা মানুষের ক্ষেতেও লক্ষ করা যায়। এই বিষয় নিয়ে সম্পূর্ণ একটি ব্লগ শেয়ার করবো।

যেহেতো যাওয়ার সময় ট্রেনে বাড়িতে গিয়েছিলাম। তাই আসার সময়ও ট্রেনে আসার চিন্তা করলাম। তবে সমস্যা হলো ট্রেনের টিকেট তো নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন তো টিকেট কালোবাজির দিক থেকে এক নাম্বার। কাউন্টারে কোন টিকেট পাওয়া যায় না। সব টিকেট থাকে ব্ল্যাকার বা টিকেট কালোবাজারিদের হাতে। রবিবারে ১২টার দিকে স্টেশনে গেলাম টিকেট সংগ্রহ করতে। কাউন্টারে টিকেট না পেয়ে ব্ল্যাকারের সন্ধান করতে লাগলাম। যদি সাথে ওয়াইফ না আসতো তাহলে ব্ল্যাকারদের থেকে টিকেট নিতাম না। কারন তাদের থেকে টিকেট নেওয়া মানে তাদের অন্যায় কাজকে সাপোর্ট করা। নিরুপায় হয়ে তাদের স্বনাপন্য হলাম। স্টেশনের মেইন গেটের সামনে দেখি কয়েকজন ব্ল্যাকার দাড়িয়ে দাড়িয়ে টিকেট বিক্রয় করছে। সাথে মোবাইল থাকা সত্বেও ফটো তুলতে পারলাম না। কারন তারা ছবি তুলতে দেয় না। তাই আমিও আর জোড়োজুড়ি করিনি। পরে আবার হিতে বিপরীত হতে পারে।

photo_2023-12-12_11-55-02 (2).jpg

প্রশাসনের নাকের ডগায় দাড়িয়ে দাড়িয়ে তারা টিকেট কালোবাজারি করে। অথচ প্রশাসনের লোক কিছু বলে না। মাঝে মাঝে উপর মহল থেকে চাপ আসলে তখন দুই একজনকে ধরে নিউজ করে ছেড়ে দেয়। তাদের হাতে সাধারন মানুষ জিম্মি। একজনকে জিঙ্গেস করলাম সোমবারে ঢাকা যাবো কোন ট্রেনের টিকেট আছে না কি। চেয়ে দেখি ব্ল্যাকারের মানি ব্যাগে ২০/২৫ টা টিকেট হবে। সে আমাকে জিঙ্গেস করলো কোন ট্রেনে যাবো। আমি বললাম বিকাল চারটার পরে যে কোন ট্রেন। তারপর সে বিকাল সাড়ে চারটার সময়ের মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের দুই সিটের একটি টিকেট দিয়ে বলে ৭০০ টাকা দেন। যেখানে অরিজিনাল ভাড়া হলো ২৯০ টাকা। আমি বললাম ৫০০ টাকা দিবো। সে বলে এক টাকাও কম হবে না।

আমি অন্য আরেকজনের কাছে গিয়ে টিকেট খুঁজ করলাম। তারকাছেও ১৫/২০টি টিকেট হবে। সে আমাকে ফেনী থেকে ঢাকার মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনের দুই সিটের একটি টিকেট দিয়ে বলে ৭০০ টাকা দেন। আমি বললাম না ৫০০ টাকা দিবো। সে বলে একদাম,৭০০ টাকা,কম হবে না। তারপর যখন চলে আসতে চাইলাম তখন বললো একদাম ৬৫০ টাকা হলে নিতে পারবেন। তারপর নিরুপায় হয়ে ২৯০ টাকার টিকে ৬৫০ টাকা দিয়ে নিলাম। তবে ফেনী থেকে ঢাকার দুইটি টিকেটের মূল ছিল ৪৪০ টাকা। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে স্টোপিজ দেয় এমন সব ট্রেনের যেকোন টিকেট পায় সেটাই সংগ্রহ করে হাতে রেখে দেয়। তারপর ধীরে ধীরে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে সাধারন যাত্রীর কাছে সে গুলো বিক্রয় করে। টিকেটে দেখা যায় আবদুল খালেক নামের একজনের এন আইডি কার্ড দিয়ে টিকেট টি অনলাইন থেকে নেওয়া হয়েছে। পরে সম্পূর্ণ তথ্য নিয়ে জানতে পারি তারা বিভিন্ন মানুষের এনআইডি কার্ড দিয়ে অনলাইন থেকে টিকেট গুলো কেটে ফেলে। তারপর কাউন্টার থেকে অনলাইন কপি দিয়ে অরিজিনাল কপি বের করে নেয়।

photo_2023-12-12_11-55-02.jpg

যায়হোক টিকেট নিয়ে বাসায় চলে গেলাম। পরের দিন বিকাল চারটার সময় এসে স্টেশনে দাড়িয়ে ছিলাম। আমাদের ট্রেন আসার কথা ছিল সাড়ে চারটার সময়। অপেক্ষা করতে করতে ৫ঃ১৫ মিনিটে ৪৫ মিনিট লেইট করে ট্রেন আসে। ট্রেনে যাত্রীতে ঠাসা ছিল। অনেক কষ্ট করে সিট অনুযায়ী বসলাম। আমাদের সিট ছিল ( জ ) বগির ৫১-৫২ নামার সিট। তবে আশার বানী হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন ছাড়ার পরে ভৈরব,নরসিংদী,বিমান বন্দর স্টেশন শুধু স্টোপজ দিয়েছিল। রাত আটটার মধ্যেই আমরা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌছে গেছিলাম। তারপর সেখান থেকে রিকশা নিয়ে গেলাম বাইতুল মুকাররাম মসজিদের দক্ষিণ গেইটে। সেখান থেকে উৎসব বাসে চড়ে নামলাম শিবু মার্কেট। সেখান থেকে হেটে বাসায় ফিরলাম। বাসায় যখন পৌছালাম তখন ১০ টা বাজবে। জার্নি করে শরীরটা খুবই ক্লান্ত ছিল। হালকা কিছু খাওয়ার পরে ল্যাপটপ অপেন করে কমিউনিটির কিছু কাজ করলাম। তারপর সকাল বেলার সূর্য দেখার আশা নিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম। এটাই মানব জীবন,চরকির মত ঘুরে।

সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলরিয়েলমি-53
শিরোনামছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরে আসা।।
স্থানকমলাপুর,ঢাকা,বাংলাদেশ।
তারিখ১২ / ১২ /২০২৩
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@joniprins

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

IMG_20190907_175336_618.JPG

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।

FNeY1coMNUL9WkErUPeUKmtGszS37qoEdLJEhh8bj8LkMZg4ZnLbSCPtsqdFwbPFaU6vxamfJRhKsAXwWBZmAwtf2KFjktn9asDsnKpUF6cbBcNYFzwcTbFb5dfFf7N5Lt5j8KUqpB64Bhu5yFCR9Qn5uG4sQo8t4PYbc7VJq37PW7258mLRbFTrsBTtbAnos9AJnU46Lv3HqXsN7s.gif

Zskj9C56UonWToSX8tGXNY8jeXKSedJ2aRhGRj6HDecqrigHRpcui9esXgmzET2bzsQeMg4RmCSqymiE62YF9FX9CSeYHcZbStqFqiFen18HjyXNbtXG.png

KNoz79cGRt58XHcjM3shjWsSEtKgRtxoVdChppmw4FvW2CQtZxVJGen4yBCeRMj2Y2h9ttHevCs9rtWncvn3FXAHo5MrkNBCbLay5LtH7wgCA27mBRvWM5GDKNQKzJk62Dz8KRvqdiFsZ66guzvyhyBYqJu6KB21dLiPDmtFGR2yvqBCtUPp3Rscm37PwtDEWYMtuKM5v3qhNod24L.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

HNWT6DgoBc14riaEeLCzGYopkqYBKxpGKqfNWfgr368M9VRjuxKSTKuNvqEk1nfiYiKKnHbcTuABq9Fu2qE77V9BjGsoqkb23ngKUAk2mCBmjpG3wz3go7Vd2YW.png

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WP87ckB6VoL3UD42BtkosJzLXYjuCC4ws3sxuihZ3nhDfd815qMJiiETpWAiutfN7bjurhaBbivMFVTYEDiv.png

download-03.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য

download-044.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP

RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1rDaeRdtDvsXGmDbuRg1s1soomTEddbTFxfMMYzob4oRFK8fTZQyYP8LbQ4tbMTAd2enV3Wq9Ze3N8TTU2.png

Click Here For Join Heroism Discord Server

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7J8W9NZEbNsUTLEMkrtgqwUMHmRbAh6UqX4xVw4ivcS7bbpBquT2w2543nYruerj3XBGzuKvCPijibJe6h1hHzcjF.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 57346.65
ETH 3107.45
USDT 1.00
SBD 2.40