হঠাৎ করে এক বন্ধুর বাসায় বেড়াতে আসা।।
আমাদের ভালোবাসার কমিউনিটি-
হ্যালো আমার প্রিয় বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি হঠাৎ করে এক বন্ধুর বাসায় বেড়াতে আসার অনুভূতি শেয়ার করবো।
আপনাদের সাথে হয়তো এখনো বলা হয়নি, আমার এক বন্ধু ঢাকা সাইনবোর্ড এক মাদ্রাসার টিচার হিসেবে অনেকদিন যাবত চাকরি করে আসতেছে। আমার এই বন্ধুর নাম হল আলমগীর হোসেন। সে আর আমি একসাথে আমাদের গ্রামের মাদ্রাসায় কয়েক বছর পড়াশোনা করেছিলাম। সেই সুবাদ তার সাথে আমার অনেকদিন আগে থেকেই পরিচয়। তাছাড়া তার বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে পাঁচ মিনিটের দূরত্ব হবে। কয়েক বছর পড়াশোনা করার পরে আমি জেনারেল লাইনে চলে এসেছিলাম। আর আলমগীর হোসেন ওই মাদ্রাসাতে পড়াশোনা শেষ করে,আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে মুফতি শেষ করেছে। দেওবন্দ থেকে পড়াশোনা শেষ করে আসার পরেই সাইনবোর্ডের এই মাদ্রাসাতে প্রথম টিচার হিসেবে তার চাকরি জীবন শুরু করে। এখানে সে প্রায় ৭/৮ বছর যাবত আছে। আমি যখন সর্ব প্রথম ঢাকায় ফ্যামিলি নিয়ে আসি, তখন তাকে আমাদের বাসায় দাওয়াত করে নিয়েছিলাম। মাঝে মাঝে আমাদের মোবাইলে কথাবার্তা হয়ে থাকে। তবে ইদানিং কালে সে বেশ কয়েকবার খুব রিকুয়েস্ট করতেছে তার বাসায় যাওয়ার জন্য। সেও বিয়ে করেছে তার দুইটি সন্তান রয়েছে। যার ফলে চিন্তা করলাম একদিন তার বাসায় গিয়ে ঘুরে আসি। সে বর্তমানে যে মাদ্রাসায় চাকরি করছে সে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আবার আমাদের গ্রামের মানুষ। তিনি আমাদের গ্রামের মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল সেই সাথে ঢাকাতেও নিজে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছে। খুবই ভালো মানুষ এবং আল্লাহওয়ালা মানুষ। আমি তিনি কে ছোট থেকেই খুব ভালোভাবে চিনি। আমি ওই মাদ্রাসাতেও বেশ কয়েকবার গিয়েছিলাম। বিশাল বড় মাদ্রাসা অনেক স্টুডেন্ট রয়েছে।
যাই হোক গতকাল সন্ধ্যার পরে আমি অফিস থেকে বের হওয়ার পরে হঠাৎ করে মোবাইলে একটি নাম্বার থেকে কল আসলো। ফোন রিসিভ করার পরে বুঝতে পারলাম সে আমার বন্ধু আলমগীর। সে আমাকে বলতেছে যেহেতু শুক্রবারে আমার অফিস বন্ধ থাকে, আমি যেন ফ্যামিলি নিয়ে আগামীকাল তার বাসায় গিয়ে ঘুরে আসি। চিন্তা করলাম সে অনেকদিন যাবত বলতেছে। তাছাড়া আগামীকাল আমিও ফ্রি আছি। সেজন্য তাকে কনফার্ম জানিয়ে দিলাম যে শুক্রবারে তার বাসার পাশের মসজিদে আমি জুম্মার নামাজ পড়বো।
আজকে শুক্রবার হওয়ার কারণে সকাল বেলা আমার ঘুম থেকে ওঠার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু সকাল সাতটার সময় মোবাইলে রিংটোন বেজে উঠলো। ফোন রিসিভ করার পরে আলমগীর হোসেন বলতেছে আমরা যেন সকাল তার বাসায় চলে যাই। আমি তখন বলেছিলাম আচ্ছা ঠিক আছে দশটার দিকে রওনা দিবো। কিন্তু আমি উঠতে চাইলেও ঘুম আমাকে বিছানা ছেড়ে উঠতে দেয় না। অবশেষে এগারোটার দিকে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে হালকা নাস্তা করে সবাইকে বের হয়ে গেলাম।
আমার বাসা থেকে সাইনবোর্ড যেতে মাত্র ১০ টাকা ভাড়া লাগে। তারপরও সবাইকে নিয়ে আলমগীর হোসেনের বাসায় যেতে যেতে বারোটা বেজে গেলো। সবাইকে নিয়ে আলমগীর হোসেনের বাসায় রেখে আমি আর আলমগীর হোসেন জুম্মার নামাজ আদায় করার জন্য মসজিদে চলে গেলাম। মসজিদে হুজুর বয়ান শেষ করার পরে সুন্নত নামাজের সময় দিলো। আর তখনই মসজিদের মধ্যে আর এক গন্ডগোল বেজে গেলো। আজকে নাকি ওই মসজিদে নতুন করে কমিটি গঠন করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা কেন নামাজের আগে এলান করে বলা হলো না। সেজন্য একদল মানুষ মসজিদ থেকে বের হয়ে গেল। আরেক দল মানুষ তাদেরকে আবার ফিরিয়ে আনতে গিয়ে মোটামুটি অনেকটা সময় অতিক্রম হয়ে গেলো।
যাই হোক তারপরে জুমার নামাজ শুরু হতে হতে প্রায় একটা ৪৫ মিনিট বেজে গেলো। নামাজ শেষ করে আলমগীর হুসেন এর সাথে তার বাসায় আসলাম। এসে দেখি সব খাবার-দাবার রেডি করা। অনেক ধরনের খাবার রান্না করা হয়েছে। খাবারের আইটেমের মধ্যে ছিল, পাবদা মাছ ভুনা, কাচকি মাছ ভুনা, ডিম ভুনা, ঢেরস ভাজি, গরুর মাংস, ডাল সর্বশেষ ছিল লাচ্ছি। সব মিলিয়ে ভালোই খাওয়া দাওয়া হলো। খাওয়া দাওয়া করে কিছুক্ষণ রেস্ট নিতে নিতেই আসরের নামাজের আজান হয়ে গেল। আসরের নামাজ পড়ে বাসায় এসে, আমার ওয়াইফ কে রেডি হতে বললাম। আর তখনই বিপত্তি বাজলো।
আলমগীর হোসেন কখনোই আমাদেরকে আজকে যেতে দিবে না। খুব রিকুয়েস্ট করতে লাগলো যেন একটি রাত তার বাসায় থেকে যাই। অবশেষে আমি ব্যর্থ হলাম। তার বাসায় একটি রাত থাকার জন্য সিদ্ধান্ত নিলাম। মাগরিবের নামাজ আদায় করে বাসায় আসার পরে। ছোলা বুট, আলুর চপ, পেঁয়াজু, সশা দিয়ে দারুন একটি ঝাল মুড়ি খেলাম।
আলমগীর হোসেন একটি কাজের জন্য তার মাদ্রাসায় গেলেন। হঠাৎ করে একটি ফোন আসলো। সেজন্য জরুরি ভিত্তিতে গিয়েছে। আলমগীর হোসেন যাওয়ার পরে আমি বাসার ছাদে উঠে এই ব্লগটি লিখতেছি। রাত্রে বেলা খাওয়া-দাওয়া করে হয়তো কিছুক্ষণ আড্ডা হবে, তারপরে ঘুম। সকাল সকাল আবার ঘুম থেকে উঠে চলে যেতে হবে। কারণ আগামীকাল আবার অফিস খোলা। সম্পূর্ণ এক দিনের বর্ণনা, বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে আসা, সব মিলিয়ে সময় টা ভালোই কেটেছে।
তো বন্ধুরা আজকে আর বাড়াবো না, এখান থেকেই বিদায় নিবো। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আগামীকাল আবার দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
নাম | হঠাৎ করে এক বন্ধুর বাসায় বেড়াতে আসা।। |
স্থান | নারায়নগঞ্জ, ঢাকা, বাংলাদেশ। |
তারিখ | ২৫/১০/২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
মাঝে মাঝে বন্ধুদের বাসায় বেড়াতে যাওয়া, বন্ধুদের সাথে কথা ঘুরতে যাওয়ার মধ্যে অন্যরকম আনন্দ থাকে। ঠিক তেমনই ভালো লাগলো আপনার আজকের এই চমৎকার একটি পোস্ট দেখে। অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনি। তবে সময় সুযোগ বুঝে বন্ধুদের টাইম দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে যেহেতু আসতে দিতে চেয়েছিল না থাকাটা প্রয়োজন ছিল।
জী ভাইয়া আত্বীয় স্বজনদের বাসায় আসা যাওয়া না থাকলে আত্বীয়তা থাকে না। ধন্যবাদ।
বলা যায় আপনার ছোটবেলার বন্ধুর বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। আপনার বন্ধু আলমগীর হোসেন আর আপনি একই সাথে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন সেই সুবাদে আপনার খুব কাছের ছোটবেলার বন্ধু। শহর এলাকায় এরকম কাছের মানুষ থাকলে বেশি ভালই হয়। আপনার সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো । শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
জী আপু বাল্যকালের বন্ধুই বলতে পারেন। ধন্যবাদ।
আলমগীর ভাইয়ের সাথে আপনার সম্পর্ক অনেক ভালো বুঝতে পারছি। আপনি আলমগীর ভাইয়ের বাসায় গিয়েছিলেন জেনে খুবই ভালো লাগলো। মাঝে মাঝে কোথাও ঘুরতে যেতেও অনেক ভালো লাগে। ভালো লাগলো ভাই আপনার লেখাগুলো পড়ে।
জী ভাইয়া এক তো বন্ধু মানুষ আবার একই গ্রামে থাকি। ছোট কাল থেকেই চেনাপরিচিত। ধন্যবাদ।
আপনার বন্ধু আলমগীর ঢাকা একটি মাদ্রাসায় চাকরি করছেন। আর সেই বন্ধুর সাথে আপনার দেখা করতে যাওয়া তার থাকার অনুরোধ। আসলে মাঝে মাঝে বন্ধুদের সাথে দেখা করা এবং একসাথে চলার মধ্যে আনন্দ রয়েছে। খুবই ভালো লাগলো আপনাদের সুন্দর এই মুহূর্ত আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন দেখে।
জী আপু অনেক রিকুয়েষ্টের পরে অবশেষে গিয়ে দেখে আসলাম। ধন্যবাদ।