শিশু নির্যাতন বন্ধ করতে এগিয়ে আসুন ।। 10% beneficary for @shyfox ❤️

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আজ রবিবার -২৮ ই কার্তিক ১৪২৯ বঙ্গাব্দ হেমন্তকাল

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। গত বেশ কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের দ্রব্যমূল্য বেড়েই চলছে। আর এদিকে স্টিমিটের দাম দিনে দিনে কমতেছে। গত দুইদিন ধরে স্টিমিট সহ পুরো ক্রিপ্টো মার্কেটে ধস নেমেছে। তার পিছনে অবশ্য কয়েকটি কারনও আছে। যায়হোক মনোযোগ দিয়ে কাজ করে যেতে হবে। আশা করি খুব তারাতারি এই অবস্থার উন্নতি হবে। চলুন আপনাদের সাথে একটি পোষ্ট সেয়ার করি।

child-334309_1920.jpg
Source

আমার খুব ক্লোজ একজন অফিস কলিগ আছে, নাম শান্ত। তার বাড়ি বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের জামাল পুরে। সে বর্তমানে তার মা এবং বউ সহ নারায়ণগঞ্জের সস্তাপুরে থাকে। একটি পাচঁতলা ফ্লাটের চারতলায় তারা থাকে। তারা যে ফ্লাটে থাকে তার ডানে একটি মসজিদ আছে। বামে এবং পিছনে কোন বেল্ডিং নেই। তবে সামনে একটি পাচঁতলা বেল্ডিং আছে। ঐ বেল্ডিং এর তিন তলা থেকে প্রায় সময় একটি বাচ্ছার কান্নার আওয়াজ আসে। তবে তাতে কেউ কিছু মনে করে না। সবাই ভাবে হয়তো বাচ্ছাকে পড়ার জন্য মা-বাবা শাষন করে,যার জন্য বাচ্ছাটা কান্না করে। এভাবে বেশ কয়েক মাস গেল।

অফিস শেষ করে আমি শান্ত আরো কয়েকজন মিলে আমরা সন্ধার পরে চায়ের আড্ডা দেয়। একদিন শান্তর মা আর বউ গ্রামে চলে গেছে। তো আমরা সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে শান্তর বাসায় বিরিয়ানি পার্টি করার সিধান্ত নিলাম। সবাই রাজি রাতে পার্টি হবে,গান হবে। ঐদিন আমি আর শান্ত অফিস থেকে একটু তারাতারি বের হয়ে গেছিলাম। শান্তর বাসার সামনে গিয়ে দেখি প্রচুর পরিমান মানুষের জমায়েত। শান্ত ঐ দৃশ্যটা দেখে দৌড়ে গেল,আমি তার পিছনে পিছনে গেলাম। গিয়ে দেখি শান্তর এক ফ্রেন্ডের সাথে নয় বা দশ বছরের একটি মেয়ে বসে আছে। তবে মেয়েটার অবস্থা খুবই খারাপ। গায়ে অনেক জ্বর অসুস্থ।

শান্ত তার ফ্রেন্ডকে জিঙ্গেস করলো ব্যাপারকি...? এই মেয়েটা কে...? শান্তর ফ্রেন্ড জানালো যে তারা কয়েকজন শান্তর বাসায় পার্টির ব্যাপারে কথা বলার জন্য একটি সেলুনে বসে আমাদের জন্য অপেক্ষা করতেছিল। এমন সময় এই মেয়েটি শান্তর সামনের বাসা থেকে কাদঁতে কাদঁতে বের হয়ে কি একটি জিনিষ আনার জন্য একটি দোকানে যায়। আর সেই বিষয়টি তারা লক্ষ করে মেয়েটিকে তাদের কাছে আসার জন্য ডাক দেয়। তারপর মেয়েটি একটু সংকোচ নিয়েই তাদের সামনে আসে। তারা দেখে যে প্রচন্ড গরমের মাঝেই মেয়েটার গলায় কাপড় প্যাচানো আর হাত গুলো ওড়না দিয়ে ডাকা। তারা জিঙ্গেস করে তুমি কাদঁছো কেন..? তোমার গলায় কি সমস্যা..? কি হয়েছে তোমার..?

child-g40976d182_1920.jpg
Source

তারপর মেয়েটা যা বর্ণনা করলো তার জন্য মোটেও কেউ প্রস্তুত ছিল না। মেয়েটা জানায় যে তার বাড়ি বরিশাল। তাকে ঐ বেল্ডিং এর তিন তলার ভাড়াটিয়া গ্রাম থেকে এখানে নিয়ে এসেছে তাদের বাসায় কাজ করার জন্য। কিন্তুু তারা প্রতিদিন তার উপর অত্যাচার করে। তার গলা এবং হাত দেখে বুঝা যায় যে তার সারা শরীরে কালো কালো আঘাতের দাগ। গলার দাগ গুলো যেন দেখা না যায় তার জন্য ঐ বাসার মহিলা তার গলায় কাপড় প্যাচিয়ে রাখতে বলে। গত সাতদিন ধরে তা গায়ে প্রচন্ড জ্বর। সে ঔষধের কথা বললে তারা আরো বেশি তাকে মারে। ঠিক ভাবে খাবার দেয় না,হাতের কাছে যা পায় সেটা দিয়েই আঘাত করে। তার এমন এমন জাগায় আঘাতের চিহ্ন আছে যা আমি লিখে প্রকাশ করতে পারতেছি না। মানুষ কত নিষ্ঠর ও পাষান হলে একটি ছোট বাচ্ছার উপর এমন ভাবে অত্যাচার করতে পারে। তাকে নাকি বাড়িতে ফোন করতেও দেওয়া হয় না।

সব ঘটনা শুনে ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশকে ডাকা হলো। তারপর ঐ মহিলার স্বামী আসলে তারা দুইজনের নামে শিশু নির্যাতন মামলা দিয়ে তাদেরকে সাথে সাথে কারাগারে পাঠিয়ে দিলো। আর পরের দিন ঐ ফ্রেন্ডটা নিজে দায়িত্ব নিয়ে বরিশাল ঔ মেয়ের বাসায় মেয়েটাকে পৌছে দিয়ে আসে। মেয়ের বাবা মা জানায় যে তারা তাকে কাজ করতে দিতে চায়নি। ভদ্রলোক না কি বলছে আমাদের কোন ছেলে মেয়ে নেই,তাকে আমরা আমাদের মেয়ের মতই দেখবো। স্কুলে পড়াবো,কাপড়,বই-খাতা কলম সব কিছু তারা কিনে দিবে। এমন কথা বলেই নাকি গ্রাম থেকে মেয়েটাকে নিয়ে এসেছে। আর বাস্তবে মেয়েটার কি অবস্থা করেছে।

শেষ কথা

এমন হাজারো মেয়ে বিভিন্ন বাসায় অত্যাচারিত হচ্ছে। প্রত্রিকা পড়লে আমরা প্রায় সময় এমন নিউজ দেখতে পায়। কিছু ‍কিছু সময় এমন নিউজ দেখি যে তাকে মানুষ বলতে ঘৃনা লাগে। গরিব পেয়ে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। এসব মুখোশধারী পশুরা কবে যে মানুষ হবে সেটা আল্লাহই জানে। সবাই নিজের চারপাশের দিকে নজর রাখবেন। হয়তো আপনার এলাকায়ও এমন ঘটনা ঘটতে পারে। সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।

A5tMjLhTTnj4UJ3Q17DFR9PmiB5HnomwsPZ1BrfGqKbjde9GYkLeJnew7bGkZMcQhpUsb9FKBp1Ac9v1VQQgvoikPF8KRCLkW3TPkop1QHZBNAcJ1cfaD3V995zWXKffuVgdPYefuDixnWw52BY985A9tjHc1bghbWq3UzmW825L1sETEtjnCs4uPLBVLEgHm.png

111.png

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7jpbMNKdA1Swxiey857mvDu4v9YQGGGa7u8o3aSuH2T9hohoCpGA4xjXECnmqJUuaGBR4n9tutUQsJX8FzZckBvZL.png

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPrexwcy6xHQHfFaMXGPra6UPL.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

112.gif

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 2 years ago 

অনেক সেন্সিটিভ একটি ইস্যু নিয়ে পোস্ট করেছেন ভাইয়া।মানুষ দিন দিন অমানুষ হয়ে যাচ্ছে,তবে আপনাদের মত ভাল মানুষও আছে। একজন মানুষ আরেকজন মানুষের সন্তানের উপর কিভাবে এমন নির্যাতন করতে পারে।আপনারা ঐ দম্পতি কে পুলিশে দিয়ে ভাল কাজ করেছেন।ধন্যবাদ নাগরিক দায়িত্ব পালন করার জন্য।

 2 years ago 

বিভিন্ন সময় টিভিতে দেখা যায় যে কাজের মেয়েদের নির্যাতন করা হয়। এই বিষয়টি আমার মাথায় আসে না যে লোকজন কিভাবে পারে এত ছোট বাচ্চাদের এভাবে অত্যাচার করতে। বিবেকেও তো একটু বাঁধে। নাকি এদের বিবেক মনুষত্ব কিছুই নেই। যাই হোক আপনার বন্ধুটি মেয়েটিকে দেখে জানতে চেয়েছিল জন্য মেয়েটি উদ্ধার পেল। খুব ভালো কাজ করেছে নিজে গিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। আপনার বন্ধুর জন্য অনেক দোয়া রইল এত মহৎ একটি কাজ করার জন্য।

 2 years ago 

আসলে এই বিষয়গুলো এখন প্রতিনিয়তই আমাদের সমাজের লক্ষ্য করা যায়। আমি ব্যাপারটা বুঝি না কিভাবে তারা পারে এতটুকু ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের ওপরে এমন নির্যাতন করতে। আপনারা ঐ দম্পতিকে পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে খুবই ভালো একটা কাজ করেছেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.16
JST 0.033
BTC 63875.92
ETH 2747.99
USDT 1.00
SBD 2.65