টাকা আসার ফাঁদ ছিল না কি আমার মরন ফাঁদ ছিল। চতুর্থ ও শেষ পর্ব ।। 10% beneficary for @shyfox ❤️

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আসসালামু-আলাইকুম/ আদাব - নমস্কার

আমি @joniprins বাংলাদেশ থেকে সব সময় আছি আপনাদের পাশে।

মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভাল আছেন। সবার সুস্থতা ও সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করে আমি আমার আজকের পোষ্টটি সেয়ার করতেছি।

বন্ধরা আপনারা সবাই জানেন যে আমি আমার জীবনের একটি গল্প সেয়ার করতেছি। আজকে সেই গল্পের চতুর্থ ও শেষ পর্ব সেয়ার করবো। যারা এখনো আগের পর্ব গুলো পড়েন নাই তারাতারি পড়ে আসুন, তাহলে অনেক মজা পাবেন। চলোন কথা না বাড়িয়ে শুরু করি।

money-4068671_1920.jpg

Source

ঈদের সময় অফিস বন্ধ থাকায় যথা সময়ে বাড়িতে গেলাম। বাড়িতে যাওয়ার পরের দিন সন্ধার পরে বাড়ির পাশে পুকুরের ঘাটলায় বসে আছি । এমন সময় ঐলোকটি ফোন দিলো। আমি উনার সাথে কথা বললাম। উনি আমাকে বাড়িতে গেছি কিনা জিঙ্গেস করলেন। আমি উনার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ফোন রেখে দিলাম। এমন সময় আমার পাশে বসে থাকা আমার এক পাশের বাড়ির চাচা আমাকে বললো কে ফোন দিয়েছে। আমি চাচাকে বললাম চাচা অনেক বড় একটি সুসংবাদ আছে। তোমাকে আমার সাথে দিনাজপুর যেতে হবে। চাচা বললো কিসের জন্য আমি বললাম একটি কাহিনী আছে। আগে তাহলে কাহিনীটা শোন। চাচা আমার থেকে বয়সে দুই তিন বছরের বড় হবে। আমি সম্পূর্ন ঘটনাটা চাচাকে খুলে বললাম। এই প্রথম কয়েনের বিষয়টা আমি কারো সাথে সেয়ার করলাম।

আমার বড় চাচা তখন প্রবাসি কল্যান মন্ত্রনালয়ের উপ সচিপ ছিল। বর্তমানে বিআরটিসির চেয়ারম্যান। বড় চাচার নিজের প্রাইভেটকার আছে আবার সরকার থেকে দেওয়া একটি গাড়িও আছে। আমি ছোট কাকাকে, বড় কাকার যে কোন একটি গাড়ি নিয়ে গিয়ে কয়েন গুলো আনার প্রস্তাব দিলাম। আমি কাকাকে বিশেষ করে সরকারি গাড়িটি নিয়ে যাওয়ার কথা বললাম। কারন সরকারি গাড়ি পুলিশ দেখলেই চিনে ফেলবে তাহলে আর চেক করার জন্য রাস্তায় গাড়ি আটকাবে না। কাকা আমার ঘটনাটা এবং আমার প্লান শুনে প্রথমে হাসলেন তারপর আমাকে বললে এই সব কিছু বাটপারি। ঐলোক তোকে ডেকে নিয়ে আটকিয়ে তারপর তোর বাবা মার কাছ থেকে টাকা আদায় করার প্লান করতেছে । ঐলোকের সাথে আর কথা বলিস না। আমি ঐলোকের কুরিয়ার করে পাঠানো কয়েন গুলো কাকাকে দেখালাম। কাকা বললো এরকম হাজার হাজর কয়েন ঢাকার বিভিন্ন জাগায় বিক্রয় করে।

কাকার এসব কথা শুনে আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম। তাহলে সব কিছু কি মিথ্যা, সব কিছু বাটপারি। তারা আমাকে কিডন্যাপ করতে চাই। এই পুরাতন কয়েন দিয়ে তারা আমাকে কিডন্যাপ করার ফাঁদ পেতেছে। তারপর থেকে কয়েকদিন আর ঐ লোকের সাথে কথা হয়নি। আমি আমার পরিচিত যত জ্ঞানী গুনি লোক আছে সবার সাথে বিষয়টি সেয়ার করলাম। কেউ বিশ্বাস করে নাই এবং কেউ আমাকে দিনাজপুর যেতে দিতে চাইলো না। আমি ঈদের পরে ঢাকা এসে ঐ লোককে ফোন দিয়ে বললাম,আমাদের অফিসে কাজের অনেক চাপ আমি দিনাজপুর যেতে পারবো না। আপনি বরং কয়েন গুলো নিয়ে ঢাকা চলে আসেন। ঐ লোক বললো আমি একা একা ঢাকা যাবো না আপনি না আসলে আমি অন্য লোকের সাথে কথা বলবো। আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে অন্য কারো সাথে যোগাযোগ করেন। তারপর ঐ লোকের সাথে আর কথা হয়নি। আমি আজও জানি না ঐ লোকের খালু সত্যই গুপ্তধন পেয়েছিল কি না।

money-1477064_1920.jpg

Source

এরকম সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি ঘটনা বলি।

আমার এক দূরসর্ম্পকের চাচি হয়। তিনির বাড়ি আমাদের গ্রামের উত্তর সাইটে কুমিল্লা - সিলেট হাইওয়ে রোডের পাশে। আমার চাচা মানে চাচির হাজবেন্ড সৌদি প্রবাসি। বাড়িতে চাচির সাথে তার তিন ছেলে আর ছোট এক মেয়ে থাকে। ছেলেরা সবাই স্কুল কলেজে ছিল। ছোট মেয়েটা শুধু বাড়িতে ছিল। হঠাৎ করে একদিন দিনের বেলা এক ভদ্র মহিলা তার অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে চাচির বাড়িতে এসে হাজির। ঐ মহিলা স্বর্ণের দুইটি কানের দুল,গলার একটি নেকলেস,হাতের দুইটি বালা নিয়ে চাচিকে বললো এগুলো আমার গহনা। আমার হাসবেন্ড রাস্তায় অসুস্থ হয়ে গেছে। আমি আমার এই গহনা গুলো বিক্রয় করে দিবো। আপনি নিবেন কি না,আপনি নিলে আপনাকে সস্তায় দিয়ে দিবো। এখন দোকানে বা মার্কেটে গিয়ে বিক্রয় করার সময় নেই। আমার হাসবেন্ডকে নিয়ে তারাতারি হাসপাতালে যেতে হবে।

চাচি স্বর্ণ গুলো হাতে নিয়ে ভালভাবে দেখলেন। গহনা গুলো দেখে চাচির লোভ লেগে গেল। কথায় আছে “মহিলা মানুষের দুইটি জিনিষের প্রতি বেশি লোভ একটি হলো শাড়ি আরেকটি হরো গহনা।” এই দুইটি জিনিষ পেলে তারা সবাইকে ভুলে যেতে পারবে। তো চাচি জিঙ্গেস করলেন কত টাকা বিক্রয় করবেন। ঐ মহিলা বললো এখানে তিন থেকে চার লাখ টাকার গহনা আছে । আমি দুইলাখ টাকা হলে বিক্রয় করে দিবো। চাচির তো লোভ আরো বেড়ে গেল। তবে তার কাছে এত টাকা নেই। সব ডিব্বা ডাব্বা খুজে এক লাখ টাকা বের করলো। তারপর ঐ মহিলাকে বললো আমার কাছে এক লাখ টাকা আছে। এখন এক লাখ টাকা নিয়ে যান, আপনার হাসবেন্ডকে হাসপাতালে ভর্তি করে এসে বাকি একলাখ টাকা নিয়ে যাবেন। ঐ মহিলা তাতেই রাজি হয়ে গেল। তারপর এক লাখ টাকা দিয়ে চাচি গহনা গুলো রেখে দিলেন।

gold-1369453_1920.jpg
Source

তারপর কিছুক্ষনের মধ্যে বাবার বাড়ি,খালার বাড়ি, বোনের বাড়ি সবার কাছে ফোন দিয়ে বিকাশে আরো এক লাখ টাকা রেডি করে ফেললো। তবে কাউকে স্বর্ণের কথা বলে নাই। তারপর ‍দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলো ঐ মহিলা টাকা নিতে আর আসে না। যখন সন্ধা হয়ে যাচ্ছে চাচির তখন স্বর্ণ নিয়ে সন্দেহ হলো। তারাতারি উনার ছেলেকে সাথে নিয়ে স্বর্ণকারের দোকানে গেলেন। তারপর স্বর্ণকার ভাল ভাবে ঘসা মাজা করে দেখে বললেন এগুলো নকল স্বর্ণ। এ কথা শুনে আমার চাচি বেহুশ।

download-03.png

বন্ধরা এই ছিল আমার আজকের আয়োজন। আজ এখান থেকেই বিদায় নিতে হবে। কেমন হলো কমেন্ট করে জানাবেন। ভূল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। দেখা হবে আবার নতুন বিষয় নিয়ে। সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।।

2bP4pJr4wVimqCWjYimXJe2cnCgn99njcohq4r9LUHc.png

gPCasciUWmEwHnsXKML7.png

ddddoo.png

RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1rDaeRdtDvsXGmDbuRg1s1soomTEddbTFxfMMYzob4oRFK8fTZQyYP8LbQ4tbMTAd2enV3Wq9Ze3N8TTU2.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

4789.gif

Sort:  
 2 years ago 

আপনার গল্প টি পড়ে মজাই পেলাম। আপনার চাচি পরে বেহুশ হয়ে পড়লেন। ওনার উচিত ছিল আগে থেকে চেক করা যদি আসল স্বর্ণ হত তাহলে কেন স্বর্ণ দোকানে না গিয়ে কেন ওনার কাছে আসবে। আর কয়েন বিষয় আমি ও অনেক আগে শুনছিলাম।এগুলো ভুয়া।

 2 years ago 

জী আপু চাচি স্বর্ণ গুলো দেখে লোভ সামলাতে পারে নাই। যার কারনে এই পরিনতি।

 2 years ago 

আপনার এই পোস্ট পড়ে আমাকে খুব ভালো লেগেছিল প্রথম পর্বে। আজ শেষ পর্ব হলেও বেশ ভালো লাগলো তবে একটু হতাশা হলাম এই জন্য যে এখন থেকে ১০ ঘণ্টা আগে পোস্ট করেছেন কিন্তু গল্প বলে খুব কম সংখ্যক মানুষই আপনার পোস্টে কমেন্ট করেছে। আর যাই হোক একটি সঠিক কথা বলেছেন মহিলা মানুষের শাড়ি আর গহনার প্রতি বেশি লোভ থেকে থাকে।

 2 years ago 

জী ভাইয়া জেনারেল পোষ্ট সবাই পড়তে চাই না। ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 63177.41
ETH 2439.37
USDT 1.00
SBD 2.58