প্লাস্টিকের অদৃশ্য হুমকি: শ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করছে মাইক্রোপ্লাস্টিক।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
আজকের আধুনিক জীবনযাত্রায় প্লাস্টিক আমাদের চারপাশে এমনভাবে মিশে গেছে যে, একে এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। বাজারের ব্যাগ থেকে শুরু করে বোতল, খেলনা, প্যাকেটজাত খাবার, এমনকি আমাদের ব্যবহৃত গাড়ি ও বাসার বিভিন্ন জিনিসে প্লাস্টিকের আধিপত্য রয়েছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণার ফলাফল আমাদের জন্য ভয়াবহ একটি সতর্কবার্তা দিয়েছে, মানুষ প্রতিদিন গড়ে ৬৮ হাজার পর্যন্ত ক্ষুদ্র মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করছে। অর্থাৎ, প্রতিটি নিঃশ্বাসে আমরা অদৃশ্য প্লাস্টিক কণাকে শরীরে প্রবেশ করাচ্ছি, যা আমাদের অজান্তেই ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
মাইক্রোপ্লাস্টিক কীভাবে শরীরে প্রবেশ করছে?
মাইক্রোপ্লাস্টিক হলো প্লাস্টিকের অতিক্ষুদ্র ভগ্নাংশ, যা চোখে দেখা যায় না। গবেষকরা দেখিয়েছেন, ঘরের ভেতর ব্যবহার করা প্লাস্টিকের আসবাবপত্র, কৃত্রিম কাপড়, কার্পেট, খেলনা, কিংবা গাড়ির সিট ও ড্যাশবোর্ড থেকে এই ক্ষুদ্র কণা বাতাসে ভেসে বেড়ায়। আমরা যখন শ্বাস নেই, তখন সেই কণাগুলো ফুসফুসের গভীরে পৌঁছে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে শরীরে জমতে জমতে এগুলো শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের প্রদাহ, এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকি পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
স্বাস্থ্যের জন্য প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিক:-
শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসের রোগ – বাতাসে ভাসমান মাইক্রোপ্লাস্টিক ফুসফুসে জমে গিয়ে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে।
রক্তে প্রবেশ – সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মাইক্রোপ্লাস্টিক শুধু ফুসফুসেই আটকে থাকে না, বরং রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে। ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হয়।
হরমোনজনিত সমস্যা – প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থ যেমন BPA। মানুষের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে, যা ডায়াবেটিস ও বন্ধ্যাত্বের মতো জটিলতা তৈরি করে।
হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি – দীর্ঘমেয়াদে মাইক্রোপ্লাস্টিক কণার প্রভাব হৃদযন্ত্রের সমস্যা এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে গবেষকেরা সতর্ক করেছেন।
প্লাস্টিক শুধু মানুষের শরীরেই ক্ষতি করছে না, প্রকৃতি ও পরিবেশের জন্যও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নদী, সমুদ্র, মাটি সব জায়গায় প্লাস্টিকের বর্জ্য জমে গিয়ে জীববৈচিত্র্য নষ্ট করছে। মাছ, পাখি, এমনকি পশুপাখিরাও এই প্লাস্টিক খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। সবশেষে এই প্রাণীগুলো খাবার হিসেবে আমাদের টেবিলে পৌঁছে যাচ্ছে, আর আমরা আবারো প্লাস্টিকের বিষ শরীরে নিচ্ছি।
যদিও একেবারে প্লাস্টিক এড়িয়ে চলা কঠিন, তবে সচেতনতা ও জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন এনে আমরা এর ব্যবহার অনেকটা কমাতে পারি। যেমন
বাজার করতে গেলে প্লাস্টিক ব্যাগের বদলে কাপড় বা জুটের ব্যাগ ব্যবহার করা। পানি পানের জন্য প্লাস্টিক বোতলের পরিবর্তে স্টিল বা কাচের বোতল ব্যবহার করা। ঘরে খাবার সংরক্ষণে প্লাস্টিকের কৌটার বদলে কাচ বা স্টেইনলেস স্টিলের পাত্র ব্যবহার করা।ডিসপোজেবল প্লাস্টিক চামচ, গ্লাস, প্লেট এড়িয়ে চলা। শিশুদের জন্য প্লাস্টিক খেলনা কম ব্যবহার করে কাঠ বা অন্য প্রাকৃতিক উপাদানের খেলনা বেছে নেওয়া। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সম্পূর্ণভাবে বর্জন করা।
প্লাস্টিক আমাদের জীবনে সুবিধা দিলেও এর অদৃশ্য ক্ষতি আমাদের ভবিষ্যৎকে অন্ধকার করে দিচ্ছে। প্রতিটি শ্বাসের সঙ্গে মাইক্রোপ্লাস্টিক গ্রহণ করা মানে ধীরে ধীরে নিজেকে অসুস্থতার দিকে ঠেলে দেওয়া। তাই এখনই সময় নিজে সচেতন হওয়ার এবং অন্যদের সচেতন করার। প্লাস্টিক কম ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুললে শুধু নিজের স্বাস্থ্যই নয়, আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্যও একটি সুস্থ ও নিরাপদ পৃথিবী রেখে যাওয়া সম্ভব হবে।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। যা পড়ে বেশ ভালোই লেগেছে আসলে প্লাস্টিক আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। যা আমাদের অজান্তেই শরীরের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। যদিও প্লাস্টিকের তৈরি করা জিনিস এড়িয়ে চলা অনেক কঠিন তাও চেষ্টা করতে হবে। সতর্কতামূলক একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন পড়ে বেশ ভালো লেগেছে। এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
https://x.com/RamimHa74448648/status/1961803772776345997?t=LgUnhBxIl0j3-xhMOwPDoQ&s=19