অনলাইন ফাঁদ থেকে সতর্ক থাকুন।।
আসসালামু আলাইকুম
কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভাল আছি। বর্তমানে সবাই স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকে। ছোট থেকে বড় সবার হাতেই মোবাইল কম্পিউটার রয়েছে। কমপক্ষে দিনের এক তৃতীয়াংশ সময় মানুষ অনলাইনে ব্যয় করে থাকে। ফেুসবুক,টুইটার, লিঙ্কডিন, ইউটিউব, পিন্টারেস্ট, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো,টেলিগ্রাম,ভাইবার সহ আরো অনেক স্যোশাল মিডিয়া রয়েছে। এগুলো ব্যবহার করতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘটনার সম্মখীন হয়। এমনই একটি চক্রান্ত মূলক ঘটনা শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। চলুন শুরু করি।
ঘটনাটি ২০১৯ সালের দিকের ঘটনা। তখন আমি স্টিমিটে কাজ করা ছেড়ে দিয়েছিলাম। যার ফলে ফেসবুক আর টুইটারে বেশি সময় নষ্ট করতাম। হঠাৎ করে একদিন আফগানিস্তানে যুদ্ধ করতে আসা আমেরিকান একজন মহিলা সেনা সদস্যের সাথে পরিচয় হয়। আসলে সে মহিলা সেনা সদস্য না, বাংলাদেশি প্রতারক যুবক যুবতী চক্রের একজন সদস্য। তো প্রথমে সে টুইটারে ম্যাসেজ দিয়ে বলে যে, সে আমার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই। তো আমিও রাজি হয়ে গেলাম। তারপর বেশ কয়েকদিন কথা বলার পরে সে একদিন আমাকে বলে আমি তোমাকে আমার একজন বিশ্বস্ত বন্ধু মনে করি, বিশ্বাস করি। আমি তাকে ধন্যবাদ জানায়।
তারপর সে জানায় যে,সে আফগানিস্তানে যুদ্ধ করতে গিয়ে অনেক স্বর্ণ অলংকার এবং ডলার পেয়েছে। তাদের সদস্যদের সাথে ভাগাভাগি করে তার অংশটা তার কাছে গচ্ছিত আছে। তার হাসবেন্ড যুদ্ধে মারা গেছে,তাদের কোন ছেলে মেয়ে নেই। এখন তার কাছে গচ্ছিত স্বর্ণ অলংকার এবং ডলার গুলো আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে অন্য কোন দেশে সংরক্ষন করতে চাই। কারন আফগানিস্তানে তারা নিরাপদ নয়। যে কোন সময় তালেবানের মুজাহিদ বাহিনী আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখন করে নিতে পারে। তখন সে তার এই সম্পদ গুলো তার সাথে নিয়ে যেতে পারবে না। কত সুন্দর করে ফাদেঁ ফেলানোর জন্য জাল বিছিয়েছে। আমি বললাম এখন এগুলো আপনি কোন দেশে সংরক্ষন করতে চান..?
তিনি জানায় আপনি ছাড়া পৃথিবীতে আমার আর কোন বিশ্বস্ত বন্ধু নাই। সুতরাং আপনার কাছে বাংলাদেশে সংরক্ষন করতে চাই। সে আরো জানায় আমি আফগানিস্তান থেকে বাংলাদেশে আসবো। আমার সম্পদ থেকে আপনাকে ২০% অর্থ উপহার দিবো। আর আপনি চাইলে আমি আপনাকে বিয়েও করতে পারি। একথা শুনে আমার খুশি কে দেখে। আমেরিকা যাওয়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করলাম।
আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে আপনি কিভাবে পাঠাতে চান। সে আমার ভোটার আইডি কার্ডের ফটো কপি চাইলো। আমি তাকে আমার আইডি কার্ডের দুই পাশের ফটো তুলে, একটি কাগজে সস্পূর্ণ ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বার লিখে তার কাছে সেন্ড করলাম। তারপর কিছুদিন পরে সে আমার ঠিকানা অনুযায়ী আমার নামে বড় একটি কালো বক্স পাঠালো। বক্সের কয়েকটা পিক আমাকে দিয়েছিলো। আমি তো মনে মনে অনেক খুশি। রাতারাতি বড় লোক হওয়ার স্বপ্ন দেখেতে লাগলাম। টাকা দিয়ে কি কি করবো শুয়ে শুয়ে সব প্লান করতে লাগলাম। সে আমাকে প্রতি দিন ম্যাসেজ দিয়ে খোঁজখবর নেয় যে বিমান বন্দর থেকে আমাকে কোন কল দিয়েছে কি না। আমি বলি না আমাকে কোন ফোন দেয় নি।
তিনদিন পরে সে ম্যাসেজ দিয়ে জানায় যে আপনাকে হয়তো আগামীকাল কল দিতে পারে। আমি যেন বাসায় থাকি। ঐদিন আমি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় রয়েগেলাম। আমি রাতের বেলা মোবাইলে ১০০% চার্য দিনের বেলা বাসায় শুয়ে শুয়ে মোবাইলের দিকে তাকায় কখন কল দিবে আর কখন হাতে টাকা পাবো। কত বড় বোক আমি। যায়হোক আমি যেখানেই যায় মোবাইলটা সাথে সাথে নিয়ে যায়,কখন কল চলে আসে আবার যদি আমি কল রিসিপ করতে না পারি তাহলে তো এত গুলো স্বর্ণ-অলংকার,ডলার মিস হয়ে যাবে। বাথরুমে গেলেও মোবাইলটা সাথে নিয়ে যায়,হা হা হা।
হঠাৎ করে কি জানি মনে করে একটি কাথাঁ ছাদে রোদে দিতে গেলাম। তিনতলার বাসা আমি তৃতীয় তলায় থাকি। ছাদে যেতে আসতে এক মিনিট সময় লাগে। ছাদে কাথাঁ দিয়ে এসে মোবাইলে তাকিয়ে দেখি অপরিচিত একটি নাম্বারে কল এসেছিল যেটা আমি রিসিপ করতে পারি নাই। মিসকলটা দেখে মনটা খারাপ হয়ে গেলে। ঐ নাম্বারে আমি অনেক বার কল দিয়েছি কিন্তুু কল যায় নি। রাতের বেলা সেই আমেরিকান সেনা সদস্য আমাকে ম্যাসেজ দিলো। আমি বললাম মাত্র একটি কল দিয়েছিলো আমি রিসিপ করতে পারি নাই। পরে আমি অনেক বার ট্রাই করেছি কল ঢুকে নাই। সে বললো সমস্যা নাই পরের দিন আবার কল দিবে। আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে।
পরের দিন আমি অফিসে চলে আসলাম। ঠিক এগারোটার সময় অপরিচিত একটি নাম্বার থেকে আমার মোবাইলে কল দিয়ে আমার নাম জিঙ্গেস করলো। আমি নাম বললাম। অপাশ থেকে জানালো যে আপনার নামে চট্রগ্রাম বিমান বন্দরে একটি পার্সেল এসেছে। পার্সেলটা কি আপনি নিজে এসে নিয়ে যাবেন না কি আমরা লোক দিয়ে পাঠিয়ে দিবো। আমি বললাম আপনাদের লোক দিয়ে পাঠিয়ে দেন। তখন তারা আমাকে একটি ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার দিয়ে বলে যে, এই নাম্বারে কাস্টমস চার্য বাবদ ত্রিশ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিন। পার্সেল আপনার বাসায় পৌছে যাবে।
আমার কাছে যদি ঐদিন ক্যাশ টাকা থাকতো তাহলে হয়তো আমি টাকা পাঠিয়ে দিতাম। আর বড় একটি চক্রান্তের স্বীকার হতাম। কয়েক জনের সাথে আলাপ করার পরে তারা সবাই নিষেধ করলো। যার কারনে আর টাকা পাঠায় নি। টাকা দিয়ে বক্সটি না আনার কারনে ঐ টুইটারের মহিলা আমার সাথে রাগ করে আমাকে ব্লক করে দেয়।
পরে বিভিন্ন জনের কাছে তথ্য নিয়ে জানতে পারি এগুলো হলো কিছু বাংলাদেশি মানুষের চক্রান্ত। সাধারন মানুষকে বোকা বানিয়ে লাখ লাখ টাক হাতিয়ে নেয়। সবাই এসব চক্রান্ত থেকে সাবধান থাকবেন। আজকে এখান থেকে বিদায় নিলাম। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP













Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
সমসাময়িক এবং যুক্তিসঙ্গত কথা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন আজকে আপনি।। আসলে প্রতিনিয়ত আমরা অনলাইনের মাধ্যমে বেশি অর্থ উপার্জন করার জন্য অতি লোভে পড়ে প্রতারিত হচ্ছি।।
এদিক থেকে আমাদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে না হলে আমাদেরকে দেউলিয়া করে দেবে একদল কুচকুড়ি লোক।।
আমি মনে করি আপনাদের পোস্টটি করেছেন আমাদের সবার মনোযোগ সহকারে পড়া উচিত।।
ধন্যবাদ।।
জী ভাইয়া আমরা অনেক সময় লোভে পড়ে অনেক বড় ভুল করে ফেলি। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনার পোস্ট পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে । অনেক বড় প্রতারকের হাত থেকে আপনি বেঁচে গিয়েছেন। অনেকে এরকম লোভে পড়ে প্রতারিত হচ্ছে। আমাদের আশেপাশের অনেক লোকের কাছে শুনি অনেক টাকা দিয়ে নিজের অনেক বড় সর্বনাশ ডেকে আনছে। আপনার পোস্ট টি পড়ে অনেকে সতর্ক হতে পারবে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
জী আপু এরকম অনেক ঘটনা আমরা শুনেছি। আর এই বিষয়টা আমার সাথেও ঘটেছে। ধন্যবাদ আপু।
সেদিন অনলাইন ফাঁদ থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন ভাইয়া।নগদ ক্যাশ টাকা না থাকার কারণে প্রতারকদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।আইডি কার্ডের ফটোগ্রাফি দিয়েই ভুলটা করেছিলেন।ধন্যবাদ সতর্কতা মূলক পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
জী আপু সেই দিন যদি ক্যাশ টাকা থাকতো তাহলে হয়তো আমি প্রতারিত হতাম। ধন্যবাদ আপু।
প্রথমে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার এত সুন্দর জন সচেতন মূলক একটি পোস্ট পড়ে আমি মুগ্ধ। আপনি আমাদের মাঝে দারুন একটি সচেতন মূলক পোস্ট উপস্থাপন করেছেন যেটা আমাদের সকলের জন্য একান্তই প্রয়োজন। হয়তো এ পোস্ট পড়ে অনেকে সচেতন এবং সজাগ হতে পারবে।
জী ভাইয়া সবাই সর্তক থাকার জন্যই পোষ্টি করেছি। আশা করি সবার উপকার হবে।