জীবন একটি যুদ্ধ ক্ষেত্র,যুদ্ধ করেই বাচঁতে হবে।। 10% beneficary for @shyfox ❤️

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আজ রবিবার- ৩১ ই আশ্বিন | ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | শরৎকাল |

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই ভাল আছেন। কেমন কাটছে আপনাদের দৈনন্দিন জীবন। আমাদের জীবনটা অনেক জটিল। জীবনের এই জটিল সূত্র বুঝা বড় দায়। জীবনকে সূত্রের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে চলোন একটি পোষ্ট করে ফেলি।

office-594132_1920.jpg
Source

গত বৃহস্পতিবারে আমার অফিসের কাজের মধ্যে বড় একটি জামেলা হয়ে যায়। মানে একটি হিসাব মিলাতে পারতেছি না। সমস্যাটা হয়েছে কয়েক মাস আগে। আমি তখন দেখি নাই, যার কারনে হিসাবটা একটু জটিল হয়ে গেছে। সমস্যাটা পুরাতন হওয়ার কারনে কারো কাছে সেয়ারও করতে পারতেছি না। আমি নিজে নিজে যখন সমস্যাটা সমাধানের চেষ্টা করতে লাগলাম তখন আরো কয়েকটা সমস্যা এসে হাজির হলো। মাথাটা তখন গরম হয়ে গেল। তার মধ্যে ম্যানেজার স্যার একটি রিপোর্ট চাইল। তার মধ্যে আবার বার বার জেনারেটরের কারনে কারেন্ট চলে যাচ্ছে। কি করবো বুঝতে পারতেছিলাম না। তখন মন চাইছিলো চাকরিটা ছেড়ে চলে যায়। চাকরি অনেক প্যারা। কিছুক্ষন বসে চিন্তা করে মাথাটা ঠান্ডা করার চেষ্টা করলাম।

প্রথমে ম্যানেজার স্যারের রিপোর্টটা চেক দিয়ে জমা দিয়ে দিলাম। তারপর ধীরে ধীরে ছোট ছোট সমস্যা গুলো সমাধান করলাম। কিন্তুু পুরাতন সমস্যাটা কিছুতেই সমাধান করতে পারতেছি না। বারবার চেষ্টা করতেছি কিন্তুু মিলতেছে না। সন্ধা সাতটার দিকে আবার জিএম স্যারের রুম থেকে ডাক আসলো। তখন মনে মনে ভাবলাম আজকে মনে হয় আর বাসায় যাওয়া হবে না। ঔদিন আবার বৃহস্পতিবার হওয়ায় হ্যাং আউটের চিন্তাটাও মাথায় ছিল। কয়েকদিন আগে ভেবেছিলাম যে এ সাপ্তাহের হ্যাংআউটে একটি কবিতা আবৃতি করবো। এখন দেখতেছি হ্যাংআউটে জয়েন হতে পারি কিনা সেটা নিয়েই টেনশনে পড়ে গেলাম।

youtuber-2838945_1920.jpg
Source

যখন আমি জিএম স্যারের রুমে প্রবেশ করলাম তার আগেই জড় তুফান অন্যদের উপড় দিয়ে চলে গেছে। জিএম স্যার আমাকে দেখে বললো সাইদের সাথে কথা বলো। সাইদ ভাই আমার একজন সিনিয়র কলিগ, বাড়ি বরিশাল। আমি জী স্যার বলে সালাম দিয়ে তারাতারি করে স্যারের রুম থেকে বের হয়ে চলে আসলাম। এসে সাইদ ভাইকে বললাম কি হয়েছে। তিনি বললেন তুমি গত কাল রাতে যে রিপোর্ট দিয়েছো সেটা আমি চেক না করে জিএম স্যারকে দিয়ে দিয়েছি,কিন্তুু সেটাতে একটি ভুল ছিল। যার জন্য আমাকে গালি দিয়েছে। আমি বললাম ঐ রিপোর্টটি তো আমি ফাইনাল করি নাই। জাষ্ট রেডি করেছিলাম।চেক দেওয়া হয়নি। আচ্ছা যাক যা হবার তা তো হয়েই গেছে। সাইদ ভাই প্রায় সময় কোন রিপোর্ট মিলাতে না পারলে বা গড়মিল হলে আমার কাছে আসে। আমি তার সমস্যা সমাধান করে দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তুু আমি কোন বিপদে পড়লে তখন আমাকে হেল্প করে না। যায়হোক বরিশালের মানুষ কিছু বলার নাই।

আমি দ্রুত আমার ডেস্কে এসে পুরাতন সমস্যাটা সমাধান করার চেষ্টা করলাম। রাত প্রায় সাড়ে আটটা বেজে গেল। কিছুই হলো ন, হিসাব মিলতেছে না।। কি করবো বুঝতে পারতেছি না। রিপোর্টটি এঅবস্থায় রেখেই অফিস থেকে তারাতারি বের হয়ে গেলাম। খুব দ্রুত বাসায় আসলাম। বাসায় এসে ল্যাপটপটা অপেন করতে করতেই শুভ ভাই হ্যাংআউট শুরু করে দিলেন।নয়টার আগেই আসতে পেরেছি তার জন্য একটু স্বস্তি পেলাম । সব চিন্তা টেনশন বাদ দিয়ে হ্যাংআউট শুনতে শুরু করলাম।

হ্যাংআউট চলা কালিন সময় মনে কোন টেনশন আসে নাই। কারন মন তখন পুরোপুরি ভাবে হ্যাংআউটে ছিল। হ্যাংআউট শেষ করে খাবার খেয়ে সাড়ে বারোটার দিকে যখন বিছানায় গেলাম তখন অফিসের পুরাতন সমস্যারটার কথা মনে পড়ে গেল। এই টেনশনে রাতে তেমন ঘুম হয়নি। পরের দিন তো শুক্রবার। ঘুম থেকে উঠতে উঠতেই প্রায় এগারোটা বেজে গেল। সকালের নাস্তা করতে করতেই জুম্মার নামাযের আযান দিয়ে দিলো।

man-2562325_1920.jpg
Source

নামায পড়ে খেয়ে ‍সুয়ে সুয়ে ফোনে কথা বলতেছিলাম। হঠাৎ করে মনে হলো আজকে তো রেসিপি পোষ্ট করার কথা ছিল। রেসিপি পোষ্ট করতে করতেই কখন যেন সন্ধা হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না। চোখের পলকে শুক্রবার দিনটি চলে গেল। সন্ধার পরে একটু বাহিরে গিয়ে ছিলাম। জানুয়ারীতে বাসাটা চেন্জ করবো সেজন্য একটি বাসা দেখতে গিয়েছিলাম। নয়টার দিকে বাসায় এসে একটু কাজ করে ঘুমিয়ে গেলাম। পরের দিন শনিবারে সকাল নয়টায় অফিসে গিয়েই পুরাতন সমস্যাটা নিয়ে বসলাম। তখন দেখলাম এগারোটার আগেই রিপোর্টটা মিলে গেল আর সমস্যাটাও সমাধান হয়ে গেল। সমস্যাটা সমাধান হওয়ার সাথে সাথে শরীর টা অনেক হালকা হয়ে গেল। তখন আবার মনে মনে ভাবলাম নাহ,চাকরি ছাড়া যাবে না। জীবন একটি যুদ্ধ ক্ষেত্র,যুদ্ধ করেই বাচঁতে হবে।

সমস্যা যতই জটিল হোক না কেন তার একটি সমাধান আছেই। আমাদেরকে মাথা ঠান্ডা করে সেই সমাধানটা খুজে বের করতে হবে। কাজের চাপ থাকবেই এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। নিজের সাধ্য মতো চেষ্টা করতে হবে । যেখানে আমাদের চেষ্টার শেষ সীমানা, সেখান থেকেই সমাধান শুরু হয়। সুতরাং সমস্যা দেখলে ঘাবড়ে গেলে চলবে না। সাহস নিয়ে সেই সমস্যার মোকাবেল করতে হবে। মনে রাখতে হবে সব কিছুর একটা শেষ সীমানা আছে, এমনকি আমাদের সমস্যা গুলোরও। সে জন্য আমাদের শেষ সীমা পর্যন্ত চেষ্টা করতে হবে,অপেক্ষা করতে হবে। আল্লাহ হাফেজ।।

@joniprins সবাইকে ধন্যবাদ।।

110.png

111.png

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7jpbMNKdA1Swxiey857mvDu4v9YQGGGa7u8o3aSuH2T9hohoCpGA4xjXECnmqJUuaGBR4n9tutUQsJX8FzZckBvZL.png

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPrexwcy6xHQHfFaMXGPra6UPL.png

112.gif

Sort:  

Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

 2 years ago 

নানাবিধ সমস্যা নিয়েই আমাদের জীবন। সমসাকে সামনে রেখে যদি আমরা পালিয়ে যাই কখনোই সেই সমস্যার সমাধান হবে না। তাই মাথা ঠান্ডা রেখে সমস্যাগুলো থেকে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। হয়তো প্রথম দিন অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যায়নি। শনিবার এসে ঠান্ডা মাথায় চেষ্টা করেছেন বলেই সম্ভব হয়েছে। আর তাই জীবন নামের যুদ্ধক্ষেত্রে মাথা ঠান্ডা রেখে ভেবেচিন্তে এগোতে হবে।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

 2 years ago 

সত্যি বলতে এটা অনেক ভালো লাগলো যে যখনই অনেক চাপের মধ্যে আছেন, তখন হ্যাংআউটে এ জয়েন করার পরে আপনার মাথা অনেক ফ্রেশ হয়ে গিয়েছিল। আর এটাও সত্যি যে কোন সমস্যাকে ভয় পেলে চলবে না, তার সামনা সামনি বা মুখোমুখি হতে হয়, তখনই কোন একটা সলিউশন বের হয়। ধন্যবাদ আপনাকে অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আমিও মানি জীবন একটি যুদ্ধ ক্ষেত্র সবাইকে বাঁচতে হবে যুদ্ধ করে। মানুষের জীবনে কোনো না কোনো সমস্যা আসবেই এটাকে সবাই মেনে নিতে হবে। আপনিও এমন একটি সমস্যার সম্মুখে পড়েছিলেন কয়েক মাস আগে ব্যবসার হিসাব মেলাতে পারছিলেন না এ বিষয়টি সবার জীবনেই হয়তো আসে। সবকিছু ঠিকঠাক করে ম্যানেজার স্যারের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়ে দিয়েছিলেন এই বিষয়টি সত্যি অনেক ভালো লেগেছে বিষয়টি আপনি ছাপা না রেখে জানিয়ে দেওয়াই আমার মনে হয় সব থেকে বেশি ভালো।

 2 years ago 

আপনার লেখাটি পড়ে একটি জিনিস বুঝতে পারলাম সেটি হল বেঁচে থাকতে গেলে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয় আর যুদ্ধ মানেই যে দাঙ্গা-হাঙ্গামা তা নয় ভালো কিছু করতে গেলে অবশ্যই বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে হয় এটাই স্বাভাবিক।আপনার কথাগুলো বাস্তবতার সঙ্গে আমি বলব অনেকাংশেই মিল আছে।

 2 years ago 

চাকরি জীবনে প্রত্যেককেই ভাই অফিসিয়াল নানা ঝক্কি ঝামেলায় ফেস করতে হয়। বেঁচে থাকার এই জীবন যুদ্ধে সর্বদা যুদ্ধ করতেই হবে। যাইহোক শেষ পর্যন্ত আপনার হিসাবটা মিলেছে জেনে খুবই ভালো লাগলো।আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60752.38
ETH 2453.49
USDT 1.00
SBD 2.63