বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একদিন।।
হ্যালো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই,
আজকে আমি আপনাদের সামনে নতুন একটি পোষ্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার আজকের পোষ্টের বিষয় হলো জাতীয় শহীদ মিনারে ঘোরাঘুরির অনূভুতি প্রকাশ। ইট পাথরের শহরে চার দেয়ালে আবদ্ধ থেকে মানুষ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এক হলো প্রচন্ড গরম আরেক হলো শহরে গাছ পালা খুবই কম। ঢাকা শহরে মানুষ যে বেচে আছে, এটা আল্লাহর অনেক বড় দয়া। পরিবেশের দিকে কারো কোন নজর নেই। সবাই বড় বড় দালান কোঠা নিয়ে ব্যস্ত। যায়হোক অফিস ছুটি থাকায় একদিন গিয়েছিলাম বাংলাদেশের জাতীয় শহীদ মিনারে।
শহীদ মিনার হলো বাংলা ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিসৌধ। এটি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার কেন্দ্রস্থলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থিত। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু সংখ্যক ছাত্র ও প্রগতিশীল কিছু রাজনৈতিক কর্মী মিলে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের কাছাকাছি এলে পুলিশ ১৪৪ ধারা অবমাননার অজুহাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। আর তখনই সালাম,রফিক, বরকত, জব্বার সহ আরো অনেক মানুষ শহীদ হয়। শহীদের রক্তে লাল হয়ে যায় রাস্তার পিচ। বাংলা ভাষা এমন একটি ভাষা যার জন্য মানুষ রক্ত দিয়েছে।
“ভাষা আন্দোলনের শহীদের স্মরণার্থে প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণ হয়েছিল অপরিকল্পিতভাবে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে শহীদ মিনারটি নির্মাণ শুরু করে রাত্রির মধ্যে তা সম্পন্ন করে ফেলে। শহীদ মিনারটি ছিল ১০ ফুট উচ্চ ও ৬ ফুট চওড়া। মিনার তৈরির তদারকিতে ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার শরফুদ্দিন, ডিজাইন করেছিলেন বদরুল আলম। তাদের সহযোগিতা করেন দুইজন রাজমিস্ত্রী। মেডিকেল কলেজের সম্প্রসারণের জন্য জমিয়ে রাখা ইট, বালি এবং পুরান ঢাকার পিয়ারু সর্দারের গুদাম থেকে সিমেন্ট আনা হয়। ভোর হবার পর একটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় মিনারটি। ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে শহীদ শফিউরের পিতা অনানুষ্ঠানিক ভাবে শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ও সেনাবাহিনী মেডিকেলের ছাত্র হোস্টেল ঘিরে ফেলে এবং প্রথম শহীদ মিনার ভেঙ্গে ফেলে। এরপর ঢাকা কলেজেও একটি শহীদ মিনার তৈরি করা হয়, এটিও একসময় সরকারের নির্দেশে ভেঙ্গে ফেলা হয়। অবশেষে, বাংলাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেবার পরে ১৯৫৭ সালের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাজ শুরু হয়। এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৬৩ সালে। তখন এর নকশা করেছিলেন ভাস্কর হামিদুর রহমান”।
বিভিন্ন বই পুস্তুক থেকে পড়া সংক্ষিপ্ত আকারে ইতিহাসটা আমি তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। যেহেতো আমারা সবাই বাংলাতে ব্লগিং করি আর আমাদের প্রিয় কমিউনিটির নাম হলো আমার বাংলা ব্লগ। সেহেতো আমাদের কমিউনিটির সাথে এই শহীদ মিনারের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। তাই আমি আজকে এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা শেয়ার করলাম।
আমরা যখন ঘুরতে গেছি তখন দুপুর বারোটা বাজে। যার জন্য অনেক রোদ ছিল। পাকাও অনেক গরম ছিল। আমি গাছের নিচে বসে থেকে শহীদ মিনারের চার পাশের কয়েকটি ফটোগ্রাফি নিয়েছিলাম। মানুষজন খুবই কম ছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজের পাশে বিশাল বড় এরিয়া নিয়ে শহীদ মিনারটি করা হয়েছে। যখন ফেব্রুয়ারি মাস আসে তখন মানুষের আনোগোনা বেশি থাকে। তাছাড়া বিকাল বেলা একাকি সময় কাটাতে মানুষজন এখানে আসে। শহীদ মিনারের চার পাশে বসার জন্য ব্যবস্থা রয়েছে।
শহীদ মিনারে অনেক বড় বড় কিছু গাছ রয়েছে। যারা ঘুরতে যায় তারা সাধারনত এই গাছ গুলোর নিচে বসে সময় কাটায়। গাছ গুলো থাকার কারনে এখানে সব সময় ছায়া এবং বাতাস থাকে। গাছ গুলো শহীদ মিনারের সুন্দর্যটাকে হাজার গুনে বাড়িয়ে দিয়েছে। জায়গাটিতে গেলে মন-মানুষিকতা চেন্জ হয়ে যায়। খুবই ভাল লাগে। অবশেষে ভাষা শহীদের আত্নার মাফিরাত কামনা করে ব্লগটি শেষ করছি।
বন্ধুরা আজকে এপর্যন্তই,আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। আশা করি আমার আজকের আয়োজনটা আপনাদের কাছে ভাল লাগবে। যরা গিয়েছে তারা বারবার যায়,আর যারা যায়নি তার একবার হলেও শহীদ মিনার ঘুরে আসবেন। সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
শিরোনাম | বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একদিন। |
স্থান | কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে বেশ ভালোই মুহূর্ত কাটিয়েছিলেন দেখছি। এরকম জায়গা গুলোতে যেতে সত্যি অনেক বেশি ভালো লাগে। শহীদ মিনারের চারপাশের পরিবেশটা সত্যি অনেক সুন্দর। গাছপালা থাকার কারণে আরো ভালো মুহূর্ত কাটানো যাবে বসে বসে। আপনার কাটানো মুহূর্তটা আপনি ফটোগ্রাফির মাধ্যমে এবং লেখার মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন, যা দেখে এবং পড়ে ভালো লাগলো।
জী ভাইয়া চার পাশের পরিবেশটা দারুন ছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে খুব সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে নিশ্চয় ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। শহীদ মিনারের ফটোগ্রাফি দেখে খুব ভালো লাগলো। আসলে শহীদ মিনারে চারপাশের পুরো পরিবেশটা খুব অসাধারণ। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
জী ভাইয়া যাদের জন্য আমরা বাংলা ভাষা পেয়েছি তাদের কথা স্বরণ করে গিয়েছিলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।
ঠিক বলছেন ইট পাথরের শহরে এত গরমের দিনে সুস্থ থাকাটাই হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার অনেক বড় একটি নেয়ামত। তবে ছুটির দিনে আপনি বেশ সুন্দর ঘোরাফেরা করলেন এক দিকে মনটা অনেক বেশি সতেজ হবে অন্যদিকে অনেক কিছু জানা গেছে আপনার পোস্টের মাধ্যমে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ফটোগ্রাফি ও সুন্দর তথ্য শেয়ার করার জন্য অনেক ভালো লেগেছে ধন্যবাদ।
জী আপু একদিন সময় নিয়ে মুক্ত বাতাসে ঘুরে আসলাম। ধন্যবাদ আপু।
আপনি তো দেখছি একদম ভর দুপুরবেলা শহীদ মিনারে ঘুরতে গিয়েছিলেন দুপুরবেলা ঘুরতে যাওয়াতে আমি মনে করি তেমন একটা মজা নেই কারণ তখন প্রচন্ড রকমের গরম পড়ে আর এই গরমের সময়ে সেখানে বসে থাকাটা অনেক বেশি কষ্টকর। তবুও বড় বড় গাছের ছায়ায় বসে শহীদ মিনারের কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন সেই সাথে সুন্দর একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন বোঝাই যাচ্ছে। শহীদ মিনারটা আসলে আমাদের কাছে এক ভালবাসার প্রতীক হিসেবেই ধরে নেওয়া হয়। ভালো লাগলো আপনার এই অনুভূতি পড়ে ধন্যবাদ।
জী ভাইয়া গাছ থাকার কারনে কিছুটা ছাঁয়া পেয়েছিলাম। না হলে রোদে পুড়ে যেতাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমার অনেক ইচ্ছা বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঘুরতে যাওয়ার। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আপনি বেশ ভালোই মুহূর্ত কাটিয়েছিলেন তা দেখেই বুঝতে পারছি। পরিবেশটাও অনেক সুন্দর সেখানে ভালো মুহূর্ত কাটানো যাবে। আর আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে অনেক কিছুই জানতে পেরেছি। এতকিছু এই পোস্টটার মাধ্যমে জানতে পেরে ভালোই লাগলো। এটা কিন্তু ঠিক বলেছেন, গাছগুলো শহীদ মিনারের সৌন্দর্তাকে হাজার গুনে বাড়িয়ে দিয়েছে।
আপু একদিন সময় নিয়ে চলে আসবেন। পরিবেশটা দারুন। ঘুরে অনেক মজা পাবেন। ধন্যবাদ আপু।
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যাওয়ার সৌভাগ্য আজ পর্যন্ত আমার হয়নি তবে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় জাতীয় স্মৃতিসৌধে বেড়াতে গিয়েছিলাম। আপনার আজকের এই পোস্ট দেখে কিন্তু আমার সেই নতুন করে উৎসাহ প্রদান হলো এবং জাতীয় শহীদ মিনার দেখতে যাওয়ার জন্য, তবে চেষ্টা করব কোন একটা সময় সুযোগ করে যাওয়ার জন্য
জী ভাইয়া এক সময় সুযোগ করে চলে যাবেন। এসব জাগায় ঘুরলে নলেজ বৃদ্ধি পায়। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আসলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার দেখলেই আমাদের বাংলা ভাষাকে রক্ষা করার জন্য, বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য শহীদ হওয়া ভাইদের প্রতি শ্রদ্ধায় আমাদের মাথা এমনিতেই নিচু হয়ে যায়। কেন্দ্র শহীদ মিনারে এরকম বড় বড় সুন্দর গাছ থাকার কারণে পরিবেশটা সব সময় মনোরম থাকে। আমাদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ভ্রমণ করে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
জী ভাইয়া যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা বাংলা ভাষা পেয়েছি, তাদের স্বরন রাখা দরকার। ধন্যবাদ ভাইয়া।