বাহারি হেয়ার স্টাইলের ম্যাজিক হেয়ার লক।।

হেয়ার বা চুল শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। যাদের চুল সুন্দর তাদের দেখতেও লাগে অনেক সুন্দর। মানুষের প্রথম নজরই পরে চুলের উপরে। এই চুলের কাটিং বা স্টাইলের এর কোন শেষ নেই। সেলুন অথবা পার্লারে গেলে তাদের হেয়ার স্টাইলের সংখ্যা ও নাম শুনলে মাটিতে শুয়ে হাঁসতে ইচ্ছে করে। আর মাঝে মাঝে কিছু মানুষের হেয়ার স্টাইল দেখলে বুঝতে পারি না,তারা কি লোকালয়ে বাস করে না কি অ্যামাজন জঙ্গলে বাস করে। আর যাদের মাথায় চুল নেই, যাদের মাথা মরুভূমি হয়ে গেছে। তাদের কোন স্টাইল ফিস্টাইলের দরকার নেই। আগে মরুভূমিতে গাছ উৎপাদন করার ব্যর্থ চেষ্টা করুন,হে হে হে। চিন্তা করবেন না,আমিও আপনাদের দলে আসতেছি। যে পরিমান মানুষিক টেনশনে আছি মাথা মরুভূমি হতে বেশি দিন লাগবে না। অলরেডি চুল যাওয়া শুরু হয়ে গেছে😪। যায়হোক আজকের ব্লগটি মূলত আপা মনিদের জন্য। জী হ্যা, ঠিকই পড়েছেন।

আজকে আমি আপামনিদের হেয়ার স্টাইল নিয়ে কথা বলবো। তাদের লম্বা লম্বা চুল আছে। তারা চুলের পিছনে প্রতিদিন অনেক সময় ব্যয় করে। শুধু তাই নয় অনেক টাকা পয়সাও খরচ করে। চুলকে আকর্ষনীয় করার জন্য বুঝে না বুঝে অনেক কিছু করে। সুন্দর একটি লুক আনার জন্য অনেক ধরনের হেয়ার স্টাইল করে। আজকে আমি একটি ম্যাজিক হেয়ার লক নিয়ে কথা বলবো। এই ম্যাজিক হেয়ার লকটি কেউ ব্যবহার করেছেন কি না আমি জানি না। এটা ব্যবহার করা ঠিক হবে কি না সেটাও আমি বলতে পারছি না। এটা কারো ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা থাকলে,মতামত শেয়ার করতে ভুল করবেন না।

গত পরশু দিন মাগরিবের নামাজ পড়ে হেঁটে হেঁটে বাসায় যায়তেছিলাম। অফিস থেকে বাসা তেমন দূরে নয়। হেঁটে যেতে পাঁচ সাত মিনিট সময় লাগে। এই টুকু রাস্তা রিকশা বা অটো দিয়ে যাতায়ত করে বিলাসিতা করার মত বড়লোক আমি এখনো হয়নি। আমি এখনো মাইলের পর মাইল হেঁটে এখানে সেখানে যাতায়ত করি। তাতে কে কি ধারনা করলো বার কে কি বললো সেটা আমার কিছু আসে যায় না। বাংলাদেশের মানুষ নিজের বিষয়ে চিন্তা করে ২ ঘন্টা আর পরের বিষয়ে চিন্তা করে ৫ ঘন্টা। তারা অন্যের বিষয়ে সমালোচনা করতে পারলে স্বর্গের সুখ অনুভব করে। যাক সে দিকে আর গেলাম না। অফিসের গেইট থেকে বের হয়ে দুই মিনিট হাটার পরে মোস্তুফা কামাল প্লাজার সামনে একজন ভদ্র লোককে ঘিরে কয়েক জন মানুষকে দাড়িয়ে থাকতে দেখলাম। আমি দুর থেকে মানুষের জটলা লক্ষ করে এগিয়ে গেলাম বিষয়টা কি সেটা জানার জন্য। গিয়ে দেখি এক লোক একটি পুতুলের মধ্যে অনেক গুলো চুল লাগিয়ে একটি ম্যাজিক হেয়ার লক দিয়ে চুল গুলোকে বিভিন্ন স্টাইল করছে। আর একটি সাউন্ড বক্স আর মাইক্রোফোন দিয়ে উনার হাতের ম্যাজিক হেয়ার লকটির বিষয়ে বিভিন্ন কথা বলছে।

তিনি একটি প্লাস্টিকের ম্যাজিক হেয়ার লক বিক্রয় করেন। সেটা দিয়ে মহিলা বা আপ মনিরা তাদের চুলের বিভিন্ন স্টাইল করতে পারবেন। তিনি একটি পুতুলের মধ্যে অনেক গুলো চুল লাগিয়ে তার হাতের ম্যাজিক হেয়ার লকটি দিয়ে চুলের বিভিন্ন স্টাইল করে দেখাচ্ছেন। তিনি একেকটি স্টাইল করছে আর মাইক্রোফোন দিয়ে বলছে। কলেজে গেলে এক স্টাইল,শপিং করতে গেলে এক স্টাইল,কারো বাসায় দাওয়াত খেতে গেলে এক স্টাইল এমনকি কিচেন রুমে গেলেও চুলের স্টাইল করে যেতে পারেন। আর সব গুলো স্টাইল একটি মাত্র ম্যাজিক হেয়ার লক দিয়ে করা যায়। তিনি যে পুতুলের মধ্যে চুল গুলো লাগিয়ে স্টাইল গুলো দেখাচ্ছেন সে চুল গুলো অরিজিনাল চুল কিনা সেটা আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তবে আমি ধরে দেখি নাই।

আমি আবার ঐ লোকের কাছ থেকে একটি ম্যাজিক হেয়ার লক হাতে নিয়ে একটি ছবি তুলেছি। তিনি এই ম্যাজিক হেয়ার লকটির দাম নিচ্ছেন মাত্র ২০ টাকা। বিশ টাকার জিনিষ আর কতটুকু ভালো হবে সেটা আপনারা ঠিকই বুঝতে পারছেন। কয়েকজন মানুষকে দেখলাম মনযোগ সহকারে ঐ লোকের কথা গুলো শুনছে আর হেয়ার স্টাইল গুলো দেখছেন। যদি কেউ এই ম্যাজিক হেয়ার লক কিনে বাসায় নিয়ে যায়। তাহলে তো ঘরের মহিলাদেরকে হেয়ার স্টাইল গুলো কিভাবে করে সেটা দেখাতে হবে। তা না হলে হঠাৎ একটি হেয়ার লক দিয়ে তারা কিভাবে চুলের স্টাইল করবে। ঐ লোক আমাকে বলতেছে এই নামে অনলাইনে সার্চ দিলে সব কিছু পেয়ে যাবেন। এখানে ফোন নাম্বার ও কোম্পানির নাম, লোকেশন সব কিছু দেওয়া আছে। কোন দুই নাম্বারি নেই।

আমি কিছুক্ষন দাড়িয়ে কয়েকটি হেয়ার স্টাইল দেখে কয়েকটি ফটোগ্রাফি নিয়ে বাসার দিকে হাঁটা দিলাম। হকার মামা বলছে মামা নিবেন না। আমি বললাম না মামা, আজকে দেখলাম অন্য একদিন নিবো। মনে মনে বলতে লাগলাম এগুলো বাসায় নিতে হলে আগে বাসার প্রধানমন্ত্রীর বরাবর এ্যাপ্লিকেশন করে অনুমতি নিতে হবে। আর অনুমতি ছাড়া এগুলো বাসার ভিতরে নিয়ে গেলে রাতে আমাকে বাসার বাহিরে থাকতে হবে,হা হা হা।😝

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।