বর্তমানে মানুষকে দেখা যায়,কিন্তুু স্পর্শ করা যায় না।। ১০% লাজুক খ্যাঁকের জন্য।।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

আসসালামুআলাইকুম

আমার বাংলা ব্লগ,বাংলা ভাষায় প্রকাশ করো তোমার মনের অনুভূতি

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। সৃষ্টিকর্তা কাকে কখন কোন বিষয় দিয়ে পরিক্ষা করে সেটা বুঝা বড় দায়। গত প্রায় ছয় সাত মাস ধরে সমস্যা আমার পিছন ছাড়ছে না। একটা সমস্যা সমাধান করি আরেকটা সমস্যা এসে হাজির হয়ে যায়। বেভেছিলাম এই মাসে সমস্যা শেষ হয়ে যাবে। কিন্তুু ফলাফল কি দাড়াল আগের সমস্যাটা তো আছে সামনে মাসে নতুন আরেকটি সমস্যা এসে হাজির হয়ে গেছে। কি করবো কিছু বুঝতেছি না। যায়হোক দেখা যাক কি হয়।কিভাবে সমস্যার সমাধান হয়। চলুন একটি পোষ্ট সেয়ার করি।

storm-4688918_1920.jpg
Source

আমি যখন কলেজে পড়তাম তখন আমার এক বছর জুনিয়র একটি ছেলের সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল। ছেলেটির নাম হলো জামিল। জামিল সহ তাদের ক্লাসের ছোট বড় সবাই আমাকে অনেক সম্মান করতো। কলেজে আমার একটি আলাদা সম্মান ছিল। সবাই আমাকে এক নামে চিনতো। কলেজের যে কোন অনুষ্ঠান বা সমস্যা সমাধানে আমার ভূমিকা থাকতো সবার আগে। সেই সুবাদে জামিলদের বাড়িতে কয়েকবার যাওয়া হয়েছে। জামিলের এক বড় ভাই এশিয়ার অন্যতম উন্নয়নশীল দেশ জাপানে থাকতো। জামিল সবসময় বলতো যে সে জাপান চলে যাবে। ইন্টার পাশ করার পর ঠিকই সে জাপান চলে গিয়েছে। এখনও সে জাপানে আছে। জামিল জাপান যাওয়ার পর মাঝে মাঝে আমার সাথে ফেসবুক মেসেন্জারে কথা হতো।

জামিলের সাথে কথা বলতে বলতে একসময় জামিল জাপানের কয়েকটি হৃদয়বিদারক প্রথার কথা বলেছিলো। তার মধ্যে একটি প্রথা হলো জাপানিরা সবসময় একক ফেমিলি পছন্দ করে। বিয়ের পর তারা বউ নিয়ে আলাদা বাসায় বসবাস করে। বিভিন্ন দিবসে তারা বাবা মাকে দেখতে আসে। যারা বৃদ্ধ হয়ে যায় তারাও আলাদা একটি বাসায় থাকে। স্বামী-স্ত্রী বৃদ্ধ হয়ে কেউ মারা গেলে আনেকজন একাকি জীবন কাটাতে হয়। আরেকটি প্রথা হলো প্রতিবেশি হিসাবে জাপানিরা একজনের বাসায় আরেক জন যায় না। সবাই নিজের মত করে চলে। এজন্য একাকি ঘরে কেউ যদি মারাও যায়, সেটা তারা সাথে সাথে জানতে পারে না। তিন চারদিন ধরে যখন ঘরের বারান্দায় বা বাগানে লোকটিকে না দেখে তখন তারা তার খুজ নেয়। ততদিনে মানুষটি ঘরের ভিতরে মরে পচে যায়। এমনও নজির আছে যে পনের দিন এক মাস পরে তারা জানতে পারে যে পাশের ফ্লাটে কেউ মরে পচে গেছে। পোকা মাকড় তার লাশ খেয়ে ফেলেছে। কেউ তার খবরও জানে না।

জাপানে বর্তমানে অনেক গুলো সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থা রয়েছে যারা মৃত মানুষ সহ তাদের বাসা বাড়ির ময়লা পরিস্কার করে। জাপানের অনেক বৃদ্ধ মানুষ এসব সংস্থার নাম্বার সংগ্রহ করে সেইব করে রাখে। প্রায় সময় বৃদ্ধ মানুষেরা ঐ সংস্থার লোক গুলোকে ফোন করে তাদের শরীরের অবস্থা জানাই, শুধু মৃত্যুর তারিখটা বা সময়টা বলতে পারে না। কতটা একাকীত্ব থেকে মনে কত কষ্ট নিয়ে মানুষ এসব সংস্থায় ফোন করে। আবার অনেক মানুষ আছে যারা জীবত অবস্থায় ঐসমস্ত সংস্থা গুলোতে তাদের নাম রেজিষ্টার করে আসে। যেন তারা মারা যাওয়ার পর তাদের লাশ দাফন কাফনের ব্যবস্থা করে এবং তাদের মৃত্যুর পরে তাদের জন্য দোয়ার ব্যবস্থা করে।

hand-3666974_1920.jpg
Source

এখন প্রশ্ন আসে তাহলে বৃদ্ধ মানুষ গুলোর ছেলে মেয়েরা কি করে। তারা কি তাদের মা বাবা খেয়াল রাখে না বা দেখা শোনা করে না। প্রশ্নের উত্তর হলো ছেলে মেয়েরা প্রতি মাসে তাদের মা-বাবার অর্থের দরকার হলে মা-বাবার একাউন্টে অর্থ পাঠিয়ে দেয়। আর অধিকাংশ বৃদ্ধ মানুষকে সরকার থেকে বৃদ্ধ ভাতা দেওয়া হয়। ভাতার টাকা দিয়েই তাদের জীবন চলে যায়। ছেলে মেয়েরা তাদের মা-বাবাকে বাড়িতে এসে দেখার মত সময় নেই। মোবাইলে বিডিও কলে দেখে ফেলে। আর বিশেষ কোন দিবস আসলে যেমন মা দিবস,বাবা দিবস এসব দিবস আসলে মা-বাবাকে এসে দেখে আবার চলে যায়। দিন শেষে বৃদ্ধ মা-বাবারা একাই জীবন অতিবাহিত করে।

বর্তমানে আধুনিক যুগে ঘন্টার পর ঘন্টা অনলাইনে থাকার সময় হয়। কিন্তুু আপন মানুষকে সময় দেওয়ার মত সময় নেই। আবার দেখা যায় এত সুযোগ থাকা সত্বেও আপন মানুষ গুলো অনলাইনে থাকা সত্বেও এক মিনিট কথা বলার সুযোগ হয় না। আপন মানুষ গুলোর সাথে কথা বলতেও মন চাই না। আমরা এমন একটি যুগে এসে পরেছি যে যুগে মানুষকে দেখা যায় কিন্তুু স্পর্শ করা যায় না। অনলাইনের মাধ্যমে মানুষ গুলোকে খুব কাছে দেখা যায় কিন্তুু তার হাতটি ধরতে বিমান দিয়ে গিয়েও পথ শেষ করা যায় না। অনলাইন ইন্টারনেট আমাদের হৃদয়কে পাথরের মত কঠিন করে ফেলেছে। বর্তমানে অধিকাংশ বৃদ্ধ মানুষ একাকীত্ব জীবন যাপন করে। জানিনা আমাদের ভাগ্যে কি আছে। সবাইকে ধন্যবাদ।।

555555.png

111.png

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7jpbMNKdA1Swxiey857mvDu4v9YQGGGa7u8o3aSuH2T9hohoCpGA4xjXECnmqJUuaGBR4n9tutUQsJX8FzZckBvZL.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

112.gif

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

আসলেই কি সমস্যা পেছন ছাড়ে....? উত্তর হলো, একদমই না। একটা সমস্যার সমাধান হলে, সাথে সাথেই অন্য একটা সমস্যা এসে হাজির হয়, এটাই তো দুনিয়ার নিয়ম।

আর জাপানিদের নিয়ে আপনি যে কথাগুলো বললেন, সেগুলো সম্পর্কে আমি আগে থেকেই অবগত। কারণ এত পরিমাণে সিনেমা দেখেছি যে, ওদের কালচার সম্পর্কে মোটামুটি একটা ধারণা চলে এসেছে এবং আপনার বলা প্রত্যেকটা কথাই সত্যি। এই দিক থেকে আমরা কিন্তু অনেক ভালোই আছি। আমাদের প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজনরা আমাদের খোঁজখবর নেয়। আমরা মোটামুটি সবাই পরিবারের সাথে একসাথে থাকার চেষ্টা করি। তবে জাপানিরা আসলে তাদের ওই কালচারের সাথে অভ্যস্ত, আমাদের সাথে ব্যাপারটাকে গুলিয়ে ফেললে হবে না।

 2 years ago 

ভাইয়া কিছু বুঝতেছিনা। সমস্যা পিছুই ছাড়ছে না। এটা জাপানিদের কালচার। এটা নিয়ে বেশি ভাবি না।

Coin Marketplace

STEEM 0.21
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 68152.98
ETH 3536.22
USDT 1.00
SBD 2.86