হোটেলে মাছের কাঁটাটাও চেটে-পুটে খায়, কিন্তু অনুষ্ঠানে রোস্টে এক কামড় বসিয়েই ফেলে দেয়।।
বাংলা ভাষার কমিউনিটি
হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন।
আমাদের সমাজে এক অদ্ভুত দ্বিচারিতা দেখা যায়, যখন কেউ হোটেল বা রেস্টুরেন্টে নিজের টাকায় খেতে যায়, তখন প্লেটের একটিও দানা ফেলে না। মাছের কাঁটাও চেটে-পুটে খায়, ভাতের শেষ কণাটাও শেষ করে দেয়। কিন্তু যখন একই মানুষ কোনো বিয়ের দাওয়াতে যায়, কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে ভোজে বসে, তখন যেন এক ধরণের দাম্ভিক ভদ্রতা এসে যায়। রোস্টে এক কামড়, পোলাও অর্ধেক, সালাদে ছোঁয়া দিয়ে উঠে পড়ে। ফলাফল এক প্লেট খাবার অর্ধেক খাওয়া অবস্থায় ডাস্টবিনে চলে যায়।
খাবারের অপচয় এখন শুধু ব্যক্তিগত অভ্যাস নয়, এটি একটি সামাজিক রোগে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে আমাদের দেশে, যেখানে কোটি কোটি মানুষ প্রতিদিন পেট ভরে খেতে পারে না, সেখানে এই অপচয় সত্যিই লজ্জাজনক। শহরের বড় বড় হোটেল, বিয়ের অনুষ্ঠান কিংবা পারিবারিক দাওয়াতে প্রতিদিন টন টন খাবার নষ্ট হয়। অথচ, সেই খাবার দিয়ে আশেপাশের ক্ষুধার্ত মানুষদের অন্তত একবেলা খাওয়ানো যেত।
অদ্ভুত বিষয় হলো, এই অপচয় করা মানুষগুলোই বাড়ি ফিরে সন্তানদের শেখায় খাবার অপচয় করো না, এটা গুনাহ। কিন্তু নিজেরাই সেই গুনাহের কাজ প্রকাশ্যে করে। আসলে এখানে মূল সমস্যা মানসিকতা ও প্রদর্শনের সংস্কৃতি। অনেকেই ভাবে, অনুষ্ঠানে কম খেলে ভদ্র দেখা যায়। কেউ আবার সব আইটেম একটু একটু করে খাবো এই চিন্তায় প্লেট ভর্তি করে ফেলে। কিন্তু পেট তো আর সব সামলায় না, শেষ পর্যন্ত ডাস্টবিনই হয় তার শেষ গন্তব্য।
খাবারের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। প্রাচীনকালে আমাদের দাদা-দাদীরা বলতেন ভাতের দানায় আল্লাহর বরকত আছে। আজকের প্রজন্ম সেটা ভুলে গেছে। আমরা এখন খাবারকে প্রয়োজন নয়, বরং স্ট্যাটাসের প্রতীক হিসেবে দেখছি। তাই খাবার নষ্ট করলেও খারাপ লাগছে না। কিন্তু যদি একটু ভাবা যায় এক কামড় খাবারের পেছনে কত শ্রম লুকিয়ে আছে! কৃষকের ঘাম, রাঁধুনির পরিশ্রম, বিদ্যুতের বিল, গ্যাস, পানি সব কিছু মিলিয়ে সেই খাবারের মূল্য অনেক।
খাবার অপচয় রোধ করতে চাইলে আমাদের সচেতন হতে হবে। প্লেটে যতটা খেতে পারো, ততটাই নেওয়া। অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রদর্শনের জন্য নয়, প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার বেছে নেওয়া। পরিবারে ছোটদের শেখানো যে খাবার নষ্ট করা লজ্জার, অপরাধেরও কাছাকাছি। আর যদি কোনো অনুষ্ঠানে দেখা যায় খাবার বাড়তি রয়ে গেছে, চেষ্টা করা সেই খাবার দরিদ্র মানুষদের মধ্যে ভাগ করে দিতে।
খাবার শুধু শরীরের জ্বালানি নয়, এটি কৃতজ্ঞতার প্রতীক। প্রতিটি দানায় রয়েছে আল্লাহর নিয়ামত। তাই প্লেট ভরা খাবার ফেলে দেওয়া মানে শুধু অপচয় নয়, কৃতজ্ঞতার অভাবও। মনে রাখবো যে খাবারের মর্যাদা দিতে জানে না, সে আশীর্বাদ ধরে রাখতে পারে না।
শেষ পর্যন্ত কথা একটা কথাই বলবো- হোটেলে মাছের কাঁটাটাও চেটে-পুটে খাওয়া যদি সম্মানের হয়, তাহলে অনুষ্ঠানে রোস্ট শেষ করা লজ্জার নয়, বরং দায়িত্ববোধের পরিচয়।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server

















