হারিয়ে গেছে সেই শুক্রবার।।
হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই,
আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে নিজের চিন্তা চেতনা থেকে শুক্রবার নিয়ে কিছু কথা শেয়ার করার চেষ্টা করবো। হারানো দিনের কিছু স্মৃতি নিয়ে আলোচনা করবো। তখনকার দিন গুলো কেমন ছিল আর এখন কেমন যাচ্ছে। এই দুইটা বিষয়ের মধ্যে কিছুটা পার্থক্য তুলে ধরার চেষ্টা করবো। চলুন শুরু করি।
ছোট সময় আমরা যখন দুষ্টামি করতাম তখন মুরুব্বিরা বলতো এখনকার বাচ্ছারা কত দুষ্ট আর আমরা কত ভাল ছিলাম। তখন বুঝি নাই তারা কি বুঝাতে চেয়েছে। আজকে বড় হয়ে তাদের কথা গুলোর গুরুত্ব অনুধাবন করতেছি। ছোট সময়ের স্মৃতি গুলো খুব মিস করি। কোন টেনশন ছিল না,চিন্তা ছিল না। এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াতাম। সময়ের গুরুত্ব বুঝি নাই। তবে মজার সময় কাটিয়েছি।
ছোট সময় স্কুলের সময় হলে বৃষ্টির জন্য দোয়া করতাম। মা-বাবা যদি কোথাও পাঠাতেন ইচ্ছা করে দেরি করে স্কুলের সময় অতিবাহিত করতাম। স্কুলে মধ্যাহ্নভোজের সময় দিলে বই খাতা নিয়ে পালিয়ে চলে আসতাম। স্কুল পালানোর মাঝে দারুন মজা পেতাম। তখন বুঝি নাই নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারছি। আজ পনের বছর পড়ে সেটা ঠিকই বুঝতে পারতেছি।
সারা সাপ্তাহ অপেক্ষা করতাম কখন বৃহস্পতিবার আর শুক্রবার আসবে। কারন বৃহস্পতিবারে হাফ টাইমে স্কুল ছুটি হয়ে যেত। আর শুক্রবারে সকাল থেকে অপেক্ষা করতাম কখন জুম্মান নামাজের আজান দিবে। সাড়ে বারোটার সময় আজান হলে গোসল করে মসজিদে চলে যেতাম। যে মসজিদে তবারক বা মিষ্টি জিলাপি দেওয়ার সম্ভবনা থাকে সেই মসজিদে যাওয়ার চেষ্টা করতাম। নামাজ শেষ হলে দোয়া করার সময় সামনের কাতারে চলে যেতাম। কারন সামনের কাতারে আগে জিলাপি দেওয়া হয়। মাঝে মাঝে একবার পাওয়ার পরেও দুইবার বা তিনবার নেওয়ার চেষ্টা করতাম,হা হা হা। আর এখন হাত ধোয়ার অজুহাতে জিলাপি দিলে নেয় না ।
জিলাপি নিয়ে খুশি মনে বাড়ি ফিরতাম। তারপর দুপুরের খাবার খেয়ে বাবার হাত ধরে ব্যাগ নিয়ে গ্রামের বাজারে চলে যেতাম। তারপর বাবার পিছনে পিছনে থেকে সারা বাজার মার্কেট ঘুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষ কিনতাম। তারপর বাজার শেষ হলে বাবা এক টাকা বা দুই টাকা আলাদা ভাবে দিতো। সেই এক দুই টাকা পেয়ে যে খুশি হতাম বর্তমানে হাজার টাকা পেয়েও সে খুশি হয় না। এক দুই টাকা দিয়ে মোরালি,মনেক্কা,বাদামি,চপ,পেয়াজু, তিল্লাই এগুলোর কিনতাম। সেই দিন গুলো কি যে মজার দিন ছিল, সেটা বলে বুঝানো যাবে না।
বাজার থেকে এসে সাড়ে তিনটার দিকে যাদের বাড়িতে টিভি আছে তাদের বাড়িতে চলে যেতাম। তখন সাদাকালো বিটিভি ছিল। ছোটরা নিচে ফ্লোরে বসতো আর বড়রা উপরে খাটে,চেয়ারে বসতো। যারা বড় ছিল তাদেরকে গিয়ে জিঙ্গেস করতাম আজকের সিনেমার নায়ক কে। শুক্রবারে ১২ টার সময় একটি নিউজে বলে দেওয়া হতো সারাদিন কি অনুষ্ঠান বা সিনেমা চলবে। নায়েকের উপর সিনেমার একশন নির্ভর করতো। আমাদের এক ভাবি ছিল সে মাঝে মাঝে রাগ করে বলতো আরে নায়ক ছাড়া সিনেমা হয় না। কেউ না কেউ তো নায়ক আছেই,চুপ করে বসে থাক। সিনেমা শুরু হলে তখন দেখতে পারবি কে নায়ক আর কে নায়িকা। তবে দুঃখের বিষয় হলো সেই ভাবি এখন আর দুনিয়াতে নেই।
একসাথে বসে সিনেমা দেখার মজাই ছিল আলাদা। দশ মিনিট মুভি দেখিয়ে বিজ্ঞাপণ দিতো আর আমরা বিজ্ঞাপণ গুনতাম। প্রায় ত্রিশ থেকে পয়ত্রিশটা বিজ্ঞাপণ দেখানোর পরই সিনেমা শুরু হতো। তখনকার নায়ক নায়িকা ছিল রাজ্জাক, আলমগীর,সাবানা, ইলিয়াস কাঞ্চন, দিতি, জসীম, ববিতা, মৌসুমি রুবেল,সোহেল রানা,সালমান শাহ। ভিলেনের মধ্যে যারা ছিল তারা হলো হুমায়ূন ফরিদী, রাজীব, রিনা খান,আহমেদ শরীফ, মিজু আহমেদ, জাম্বু। এরা যদি সিনেমায় থাকে তাহলে সিনেমা বেশ জমে উঠে। শুক্রবার সকাল থেকে এসব আলোচনাই হতো বেশি।
নায়ক মার খেলে আর নায়িকারা শশুর শাশুড়ির মাধ্যমে নির্যাতিত হলে আমরা খুবই কষ্ট পেতাম, সাবানা আর ববিতার অসহায় দেখে কান্নায় চোখে পানি চলে আসতো। আর গুন্ডা বা ভিলেনদেরকে কত যে গালি দিয়েছি তার কোন হিসাব নেই। সন্ধার আগে আগে সিনেমা শেষ হয়ে যাওয়ার জন্য তারাহুরো করতাম। কারন সন্ধার আগে বাসায় না ফিরলে মা এমন কেলানি দিতো যা কোনদিন ভুল যায় না। আবার সন্ধার পর ঘর থেকে বের হওয়ার ব্যপারে ১৪৪ ধারা জারি ছিল। এই সিনেমা দেখা নিয়ে মায়ের হাতে কত যে মার খেয়েছি তার কোন হিসাব নেই। আর এখন মোবাইল আছে,ল্যাপটপ,কম্পিউটার আছে অথচ সিনেমা দেখার সময় নেই। জীবন নামের রেলগাড়ি এখন তেল নেওয়ারও সময় পায় না।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.