হঠাৎ ভাগিনার সাথে ম্যালিয়াস হসপিটালে।।

in আমার বাংলা ব্লগlast year

হ্যালো বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই,
আশা করি বৃষ্টিময় দিনে সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে যদিও আমি বৃষ্টি চায়নি, তারপরও আজকে সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে। যেহেতো আজকে ঢাকা শহরে সারাদিন ঘোরঘুরি করতে হয়েছে তাই বৃষ্টির জন্য একটু সমস্যা হয়েছে। তারপর আমাদের পথ চলা থেমে থাকে নি। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই আমাদের অভিযান শেষ করে রাতে বাসায় ফিরেছি। চলুন এখন মূল বিষয়টা বর্ণনা করছি।

photo_2023-08-08_00-14-01.jpg

গত কাল সন্ধার পরে অফিস থেকে বাসায় এসে দেখি বাসায় মেহমান এসেছে। মেহমান হলো আমার ভাগিনা। আপনারা হয়তো অনেকই জানেন যে আমি গত কয়েক মাস আগে সিলেট বেড়াতে গিয়েছিলাম। আর সিলেট হলো আমার বড় আপুর বাসা। সেই বড় আপুর ছেলেই গত কাল সিলেট থেকে ঢাকায় এসেছে। তবে ঢাকায় সে বেড়াতে আসে নাই। এসেছে ডাক্তারের সাথে দেখা করতে। তার সাথেই আজকে সারাদিন অতিক্রম হয়েছে।

গত জুন মাসের পচিঁশ তারিখ আমার ভাগিনার নাকের অপারেশন হয়। তার নাকের হার বাকাঁ হয়ে গেছিলো। যার ফলে অপারেশন করতে হয়েছে। অপারেশন করেন ঢাকা শান্তিনগর ম্যালিয়াস হসপিটালের প্রধান ডাক্তার বাসুদেব কুমার সাহা। তিনি তিনটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, নাক,কান আর গলা। আমার দুলাভাই সৌদিআরব থাকে। সেখানে বসে ম্যালিয়াস হসপিটালের ইউটিউব বিডিও দেখে তারপর ভাগিনাকে সেখানে পাঠিয়েছে। ডাক্তার ভাগিনাকে দেখে কোন ঔষুধ সাজেষ্ট করে নাই। সরাসরি অপারেশন করার কথা বলে। দুলাভাই ডাক্তারের কথার সাথে এক মত হয়ে অপারেশন করার ডিল ফাইনাল করে। সুন্দর ভাবে অপারেশনও হয়ে যায়। ডাক্তার তাকে এক মাস পরে দেখা করতে বলে। ডাক্তারের কথা অনুযায়ী সেই এক মাস পরে দেখা করার জনই গতকাল ঢাকায় এসেছে।

আমি আজকে অফিসে যায় নি। অফিস থেকে ছুুটি নিয়ে সকাল বেলা ভাগিনাকে নিয়ে ম্যালিয়াস হসপিটালে যায়। আমরা সকাল ছয়টার সময় ঘুম থেকে উঠে পড়ি। তারপর ফ্রেশ হয়ে বাসায় নাস্তা না করেই বের হয়ে যায়। কারন সকাল আটটার আগে গিয়ে সিরিয়াল দিতে না পারলে সিরিয়াল অনেক পিছনে পড়ে যাবে। সকাল বেলা বাসা থেকে বের হয়ে বৃষ্টির দেখা পেলাম। সারা রাত বৃষ্টি হয়েছে। রাস্তায় পানি জমে একাকার হয়ে গেছে। জুতা খুলে হাতে নিয়ে যেতে হয়েছে। যায়হোক তারপর মেইন রাস্তায় গিয়ে গুলিস্তানে যাওয়ার জন্য উৎসব গাড়িত উঠলাম। যাওয়ার সময় রাস্তায় তেমন কোন জ্যাম পেলাম না। যাত্রাবাড়ির নিচের রাস্তা বন্ধ থাকলেও বৃষ্টির কারনে অনেক চালকই গাড়ি নিয়ে বের হয়নি। যার ফলে তেমন কোন জ্যাম পড়ে নাই।

গুলিস্তান যখন পৌছেছি তখন সাড়ে সাতটা বাজে। তখনও বৃষ্টি পড়তেছিল। বুদ্ধি করে বাসা থেকে যাওয়ার সময় ছাতাটি নিয়ে গেছিলাম। তারপর অল্প একটু হেটে রিকশা নিয়ে সুজা শান্তিনগর চলে গেলাম। সকাল বেলা তেমন কোন গাড়ি নেই,রাস্তা ফাঁকাই ছিল। যার ফলে আমরা খুব তারাতারি হস্পিটালে পৌছে গেলাম। আমরা যখন হস্পিটালে পৌছেছি তখন লিফটের অপারেটরও আসে নাই। এমন কি যে সিরিয়াল লিখবে সেও আসে নাই।

photo_2023-08-08_00-14-00 (2).jpg

photo_2023-08-08_00-14-00.jpg

হস্পিটাল একেবারে ফাঁকা। তখন ৭.৫২ মিনিট বাজে। আমরা হস্পিটালের ভিতরে গিয়ে কিছুক্ষন বসলাম। তারপর আটটার সময় রিসিপশনে লোক আসলো। তারপর আমরা তার কাছে রিসিয়াল দিলাম। আমারদের সিরিয়াল পড়ে তিন নাম্বার। তারমানে আমাদের আগেও দুইজন চলে এসেছে। ঐখানে নতুন রোগী দেখার ভিজিট হলো ১৫০০ টাকা। আর রিপোর্ট দেখানো বা পুরাতন রোগি আসলে ১০০০ টাকা ভিজিট। চিন্তা করেন ডাক্তারদের কত ডিমান্ড। যায়হোক আমাদের বললো সন্ধা সাতটার পরে আসতে। কারন ডাক্তার সাহেব সারাদিন অপারেশন করে আর সন্ধা সাতটার পরে রোগি দেখে। এটা আবার কোন নিয়ম বুঝলাম না। কত নিয়ম কানুন দেখলাম বলে আর লাভ নেই।

আমরা সারাদিন এখানে সেখানে ঘুরে কিছু টুকটাক পারসোনাল কাজ করেছি। সে গুলো পরে সেয়ার করবো। তারপর আমরা সন্ধা সাতটার সময় আবার ম্যালিয়াস হসপিটালে গেলাম। গিয়ে দেখি রোগীর কোন অভাব নেই। সিলেট,নোয়াখালি,বরিশাল,চট্রগ্রাম,রংপুর, খুলনা থেকেও মানুষ এসেছে। সন্ধা সাতটা পার হয়ে আটটা যখন বেজে গেল তখনও ডাক্তার রোগি দেখা শুরু করে নাই। যার ফলে আমি খুঁজ নিয়ে জানতে পারলাম ডাক্তার সাহেব একটি অপারেশন করছে সেটা করতে সময় লাগবে। সবাইকে ধৈর্য সহকারে অপেক্ষা করতে বলে। সবাই তখন নিরোপায় হলে বসে রইল।

photo_2023-08-08_00-09-00.jpg

photo_2023-08-08_00-09-05.jpg

রাত দশটার সময় ডাক্তার সাহেব অপারেশন শেষ করে উনার চেম্বারে আসলেন। তারপর ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খেলেন। তখন বাজে রাত সাড়ে দশটা। তারপর প্রথম রোগির ডাক পড়লো। অবশেষে ১০.৪৫ মিনিটে আমাদের রোগির ডাক পড়লো। রোগীর সাথে আমিও ভিতরে গেলাম। ডাক্তার ফাইল দেখে নাকটা দেখে জিঙ্গেস করলেন কোন সমস্যা আছে কি না। রোগী বললো কোন সমস্যা নেই। তারপর ডাক্তার বললো ঠিক আছে। ছয় মাস পরে আবার আসবেন। দুই মিনিটেই কাজ হয়ে গেল। দুই মিনিটের জন্য পনের ঘন্টা সময় অপেক্ষা করলাম। মনটা এত খারাপ হয়েছে যে, কোন কিছু বলার ভাষা নেই। তারপর ১১টার সময় বাসা থেকে বের হয়ে রিকশা গাড়ি চরে বাসায় আসতে আসতে বারোটার উপরে বেজে গেছে। তারপর ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে পোষ্ট লিখতে বসলাম। দুই মিনিট ডাক্তারের স্বাক্ষাতের জন্য সারাদিন মাটি হয়ে গেল।

বন্ধুরা এই ছিল আমার আজকের আয়োজন। আশা করি আপনাদের নিকট ব্লগটি ভাল লাগবে। আর ভুলেও কেউ ম্যালিয়াস হসপিটালের দিকে পা বাড়াবেন না। তাদের ফি এবং অপারেশন ব্যায় অনেক টাকা। যা সাধারন ফ্যামিলির বহন করা অসম্ভব। সব মিলিয়ে আমার ভাগিনার দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যায়হোক সবার জন্য সুস্থতা কামনা করি। সবাই ভাল থাকবেন।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলরেডমি নোট-১০
শিরোনামহঠাৎ ভাগিনার সাথে ম্যালিয়াস হসপিটালে।।
স্থানশান্তিনগর, ঢাকা।
তারিখ০৭-০৮-২০২৩
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@joniprins

সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

IMG_20190907_175336_618.JPG

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।

FNeY1coMNUL9WkErUPeUKmtGszS37qoEdLJEhh8bj8LkMZg4ZnLbSCPtsqdFwbPFaU6vxamfJRhKsAXwWBZmAwtf2KFjktn9asDsnKpUF6cbBcNYFzwcTbFb5dfFf7N5Lt5j8KUqpB64Bhu5yFCR9Qn5uG4sQo8t4PYbc7VJq37PW7258mLRbFTrsBTtbAnos9AJnU46Lv3HqXsN7s.gif

Zskj9C56UonWToSX8tGXNY8jeXKSedJ2aRhGRj6HDecqrigHRpcui9esXgmzET2bzsQeMg4RmCSqymiE62YF9FX9CSeYHcZbStqFqiFen18HjyXNbtXG.png

KNoz79cGRt58XHcjM3shjWsSEtKgRtxoVdChppmw4FvW2CQtZxVJGen4yBCeRMj2Y2h9ttHevCs9rtWncvn3FXAHo5MrkNBCbLay5LtH7wgCA27mBRvWM5GDKNQKzJk62Dz8KRvqdiFsZ66guzvyhyBYqJu6KB21dLiPDmtFGR2yvqBCtUPp3Rscm37PwtDEWYMtuKM5v3qhNod24L.png

7258xSVeJbKkzXhyseBP4PYz11eBDT8sW2oR1a4vfVFS6JTrGU8e1FPUaNdHG5vjXyg2xthV78bDEmEVvKCQpyzX1kq8gAVzGsPp9GqJVRWxb6T9y35PZmQehnLjELdKKmnhdxQjDuny4.png

Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

HNWT6DgoBc14riaEeLCzGYopkqYBKxpGKqfNWfgr368M9VRjuxKSTKuNvqEk1nfiYiKKnHbcTuABq9Fu2qE77V9BjGsoqkb23ngKUAk2mCBmjpG3wz3go7Vd2YW.png

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WP87ckB6VoL3UD42BtkosJzLXYjuCC4ws3sxuihZ3nhDfd815qMJiiETpWAiutfN7bjurhaBbivMFVTYEDiv.png

download-03.png

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য

download-044.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP

RGgukq5E6HBM2jscGd4Sszpv94XxHH2uqxMY9z21vaqHt1rDaeRdtDvsXGmDbuRg1s1soomTEddbTFxfMMYzob4oRFK8fTZQyYP8LbQ4tbMTAd2enV3Wq9Ze3N8TTU2.png

Click Here For Join Heroism Discord Server

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7J8W9NZEbNsUTLEMkrtgqwUMHmRbAh6UqX4xVw4ivcS7bbpBquT2w2543nYruerj3XBGzuKvCPijibJe6h1hHzcjF.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

ভাগিনা কে নিয়ে হসপিটালে গেলেন ভালোই হলো। কারণ তারা বিপদে পড়ে দুরদূরান্ত থেকে আসে ডাক্তার দেখানোর জন্য। তাছাড়া বৃষ্টির কারণে একটু সমস্যা হয়েছে সব জায়গায় এখন। হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে গেলেন সেই সাথে আপনি টুকটাক কাজও করে নিলেন অনেক ভালো লাগলো। আপনার পোস্টের বিস্তারিত পড়েছি অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

 last year 

জী আপু সিলেট থেকে বিপদে পড়েই এসেছে। তাই অফিস বন্ধ করে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই যেতে হয়েছে। ধন্যবাদ আপু।

 last year 

বড় ডাক্তার গুলোর কাছে গেলে এরকম লাগে। অনেক সময় ডাক্তারের উপর অনেক মনে কষ্ট চলে আসে। আপনার ভাগিনাকে দুই মিনিট ডাক্তার দেখেছে অথচ আপনি ১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলেন। তবে আপনার ভাগিনার নাখে মনে হয় হালকা সমস্যা দেখা দিয়েছে। এই কারণে ছয় মাস পর আবার দেখা করার জন্য বলল। তবে আপনি সাথে ছিলেন এই কারণে হয়তো তাদের জন্য অনেক ভালো হলো। তবে মনে হয় ডাক্তার ভিজিট ১৫০০ টাকা হলে অনেক বেশি। যাইহোক রাত এগারোটা বাজে বাসায় এসে পৌঁছলেন। আপনার ভাগিনার জন্য দোয়া রইল।

 last year 

আপু ডাক্তারদের কথা আর কি বলবো তাদের সময়ের অনেক দাম আর তার জন্য বসে থাকা ৫০/৬০ জন রোগীর সময়ের কোন মূল্য নেই।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 67388.31
ETH 3311.98
USDT 1.00
SBD 2.74