স্মৃতির পাতায় পবিত্র শবে বরাত।।
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই,আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে পবিত্র শবে বরাতের স্মৃতি নিয়ে একটি ব্লগ শেয়ার করবো। আশা করি ব্লগটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।
বন্ধুরা আপনারা সবাই জানেন যে,আজকে পবিত্র শবে বরাত। সারা বিশ্বের মুসলমারা নামাজ, রোজা,কোরআন তেলাওয়াত,জিকির আজকারের মাধ্যমে আজকের দিনটি অতিবাহিত করবে। আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা সারারাত ইবাদত বন্দেগী করে ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করে সকাল বেলা বাসায় ফিরে যায়। পবিত্র শবে বরাতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে আগামীকাল বাংলাদেশের সমস্ত সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। আর শবে বরাত মানে হলো পবিত্র রমজান মাসের আগমনি বার্তা। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১১ অথবা ১২ মার্চ ২০২৪ পবিত্র রমজান মাসের শুরু হবে।
আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন খুবই আগ্রহ নিয়ে এই শবে বরাত পালন করতাম। যখন স্কুলে পড়তাম তখন শবে বরাতের আগের দিনও স্কুলে যেতাম না। দিনের বেলাই রাতে নামাজ আদায় করার প্রস্তুুতি নিতাম। মা আমাদের নামাজ আদায় করার জন্য পাঞ্জাবী পায়জামা,টুপি আর জায়নামাজ ধুয়ে দিতেন। আমরা পাড়ার ছেলে পুলেরা সবাই মিলে কনডেন্সড মিল্কের খালি মোড়ক কুড়িয়ে আনতাম। তারপর দা অথবা বটি দিয়ে মাঝ খানে ফুটো করে সেখানে একটি ছোট কাঁচের বোতল লাগিয়ে নিতাম। তারপর কাচেঁর বোতলে কেরোসিন তৈল আর পাটের আশঁ দিয়ে শলতে বানিয়ে তাতে আগুন জ্বালাতাম। এভাবে রাতের বেলা ঘুরাফেরা করার জন্য একটি বাতি তৈরী করতাম।
আসরের নামাজের পরেই প্রত্যেক ঘরে ঘরে মিষ্টি জাতীয় খাবার আর রুটি বানানো হতো। এগুলোর মধ্যে রয়েছে হালুয়া,সেমাই,ফিন্নি,রুটি ইত্যাদি। আসরের নামাজ আদায় করেই আমরা রাতে বাতি নিয়ে কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবো তার প্লান করে ফেলতাম। সবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলে আসতাম মাগরিবের নামাজের পরেই আমরা বাতি নিয়ে বের হবো। আর একটি বিষয় আমার খুব ভালো লাগতো। আমরা একজনের ঘরের মিষ্টি জাতীয় খাবার অন্যের ঘরে নিয়ে দিয়ে আসতাম। আবার অন্যের ঘর থেকেও আমাদের ঘরে দিয়ে যেতো। এটার মধ্যে যে কি আনন্দ ছিল বলে বুঝানো যাবে না।
তারপর মাগরিবের আজান হলেই সবাই নিজের হাতে তৈরী করা বাতি নিয়ে মসজিদে চলে যেতাম। মাগরিবের নামাজ আদায় করেই বাতি নিয়ে বের হয়ে যেতাম। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় হেটে বেড়াতাম,মিশিল করতাম। সেটা খুবই আনন্দের একটি বিষয় ছিল। তারপর ঘন্টা খানেক হাটাহাটির পরে বাসায় গিয়ে খাবার দাবাড় খেয়ে নিতাম। এশার নামাজের পরে শুরু হতো শবে বরাতের মূল পর্ব। নামাজের আগেই হুজুর শবে বরাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতেন। সবাই নিজেদের সাধ্যমত নতুন জামা গায়ে দিয়ে মসজিদে যেতেন। সবাই যখন মসজিদে উপস্থিত হতো তখন হুজুর কি কি কাজ করে রাত অতিবাহিত করবে সেটা বুঝিয়ে দিতেন।
ঐদিন প্রায় মসজিদে তাবাকর বিতরন করা হতো। আমরা ছেলে পুলেরা দুই তিনটি মসজিদে ঘুরে ঘুরে তাবারক নিতাম। আমাদের নিজের হাতে তৈরী করা বাতি নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম। তখন আমাদের বাবা-চাচা ও দাদাদের দেখতাম সারারাত মসজিদে নামাজ,জিকির,কোরআন তেলাওয়াত করতো। আবার কেউ মসজিদে এক পাশে কিছুক্ষন শুয়ে বসে রেস্ট নিয়ে আবার নামাজ আদায় করতেন। রাতটিকে সবাই উৎসবের মত করে পালন করতো। তবে ইদানিং কালে শবে বরাত কে আর ঘটা করে পালন করা হয় না। জাষ্ট দায় সারার মত করে হালকা জিকির আর নামাজ আদায় করেই সবাই চলে আসে। এখন আর আগের মত আনন্দ হয় না।
আগে তো মোবাইল ইন্টারনের এত প্রচলন ছিল না। যার ফলে সবাই ইবাদত বন্দেগীতে সময় দিতো। এখন হাতে হাতে মোবাইল ইন্টারনেট চলে আসায় সবাই ছবি তুলে ফেইসবুকে পোষ্ট করেই দায়িত্ব শেষ করে দেয়। এখন আর আগের মত আনন্দ পাওয়া যায় না। সেই দিন গুলো এখন স্মৃতির পাতায় জমা হয়ে আছে। খুব মিস করি সেই দিন গুলো। মন চাই আবার ফিরে যায় সেই দিন গুলোতে। তবে সেটা কখনো সম্ভব না। আজকে পবিত্র শবে বরাত। আজকের রাতে সবাই চেষ্টা করবেন ইবাদত বন্দেগীতে কাটানোর জন্য। সবাই শবে বরাত পালন করার জন্য প্রস্তুুতি গ্রহন করুন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
বেশ সুন্দর করে ছেলেবেলার শবেবরাতের কিছু স্মৃতি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আসলে যতই যাই বলি আমাদের ছেলেবেলার শবেবরাত ছিল বেশ আনন্দের। যদিও রাতটি ধর্মীয় রাত ছিল। আপনার কথাগুলো পড়ে চলে গিয়েছিলাম সেই ছেলেবেলায়। ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
জী আপু ছোট সময়ের সবে বরাত দারুন ছিল। খুব মিস করি সেই সময় গুলো। ধন্যবাদ।
আগেকার দিনে শবে বরাতে আমরা এরকম সবাই মিলে একসঙ্গে নামাজ পড়তাম। তাছাড়া দিনে বিভিন্ন রুটি হালুয়া ব্যবস্থা করা হতো। কিন্তু যেদিন থেকে জেনেছি এগুলোর কোন ধর্মীয় নিয়ম নীতি নেই সেদিন থেকে বন্ধ করে দিয়েছি। আসলে মানুষ সব কিছুর মধ্যেই আনন্দ খুঁজে। এজন্যই দেখা যায় ইবাদতের থেকে হাসি মজাই বেশি হয়। যাই হোক তারপরও নিজ নিজ জায়গা থেকে ঠিকমত ইবাদত করা উচিত।
হালুয়া রুটি না করে রেজা, নামাজে,জিকিরে মনযোগ দেওয়া উচিৎ। ধন্যবাদ।
আপনি শবেবরাত নিয়ে আপনি অনেক সুন্দর একটি ব্লগ রেখেছেন।আসলে ভাইয়া আমাদের সবারই এই শবেবরাত রাতে বেশি বেশি করে ইবাদত করা উচিত। ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
জী আপু এসব রাত বছরে একবার আসে। তাই কদর করা উচিৎ। ধন্যবাদ।
পবিত্র শবেবরাত নিয়ে বেশ চমৎকার একটি পোস্ট লিখেছেন। ছোট বেলায় আমরাও বন্ধু বান্ধব মিলে একসঙ্গে সারারাত নামাজ পরতাম এবং বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘড়ি করতাম। আপনার পোস্টটি পড়ে সেই স্মৃতি গুলো মনে পরে গেলো। আসলে এই রাতটি আমাদের ইবাদতের রাত। তাই আমাদের উচিত নিজ নিজ জায়গা থেকে ঠিকমতো ইবাদত করা। ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
জী ভাইয়া ছোট সময়ের শবে বরাত পালন দারুন ছিল। সে গুলো এখন স্মৃতির পাতায় লিপিবদ্ধ। ধন্যবাদ।