এই বছরের প্রথম শীতের অনুভূতি।।
হ্যালো বন্ধরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে এই বছরের প্রথম শীত নিয়ে মনের অনুভূতি শেয়ার করবো। সেই সাথে অনেক গুলো ফটোগ্রাফিও শেয়ার করবো। আশা করি ব্লগটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।
বন্ধুরা আপনারা সবাই জানেন যে,আমাদের বাংলাদেশে গ্রীষ্ম,বর্ষা,শরৎ,হেমন্ত,শীত ও বসন্ত এই ছয়টি ঋতু রয়েছে। বর্তমানে চতুর্থ নাম্বার ঋতু তথা হেমন্তকাল চলতেছে। ইংরেজিতে নভেম্বর মাস আর বাংলা অগ্রহায়ণ মাস হলো হেমন্তকাল। আর সেই হেমন্তকাল প্রায় শেষের দিকে। ইংরেজি ডিসেম্বর আর বাংলা পৌষ মাস থেকে শুরু হবে শীতকাল। এই শীতকাল ইংরেজি ফেব্রুয়ারি, বাংলা মাঘ মাস পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে।
বর্তমানে আবহাওয়ার দিকে লক্ষ করলে দেখা যায় যে,শীতের আগমনী বার্তা বহন করছে। আপনারা সবাই জানেন যে কিছুদিন আগে ভারত বাংলাদেশের উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় মিধিলি অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস জানায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে ১৭ নভেম্বর শুক্রবার সকালে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়। পরবর্তিতে এটিকে সাইক্লোন মিধিলি নাম করন করা হয়। সেই মিধিলির মাধ্যমেই বাংলাদেশে শীত ওয়েলকাম করেছে। শহরের দিকে শীত তেমন একটা বুঝা না গেলেও গ্রামের দিকে ভালোই শীত নেমেছে।
গত পরশুদিন হঠাৎ করে রাতের বেলা ট্রেনে গ্রামে চলে গেছিলাম। যাওয়ার সময় ট্রেনের ভিতরে শীত তেমন বুঝা যায়নি। চারপাশের দরজা জানালা বন্ধ ছিল। রাতের বারোটার সময় ট্রেন থেকে নেমে কিছুটা শীত অনুভূব করলাম। কিছুটা কুয়াশাও ছিল। সকাল বেলা বউ ডেকে তুললো নদীর পাড়ে হাটতে যাবে। অনিচ্ছা সত্বেও উঠতে হলো। রুম থেকে বের হয়ে দেখি চোখে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ভাবলাম এখনো রাত তাই অন্ধকার লাগছে। পরে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ছয়টা বাজে। ফজর নামাজ শেষ করে মুসল্লিরা রাস্তা দিয়ে হেটে যাচ্ছে। ফ্রেশ হয়ে রাস্তায় বের হলাম।
কিছুক্ষন হেটে নদীর পাড়ে গেলাম। চার দিকে কোয়াশার কারনে চোখের দৃষ্টি বেশি দূর যাচ্ছিলো না। মোবাইলটা নিয়ে কয়েকটি ফটোগ্রাফি করলাম। আপনরা দেখতে পাচ্ছেন নদীতে নৌকা নিয়ে এক জেলে ভাই মাছ ধরছে। আমার কাছ থেকে বেশি দুরে না কিন্তুু,তারপর ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে না। ফটোগ্রাফির মধ্যে নৌকাটা ঝাপসা ঝাপসা দেখাচ্ছে। এত শীত, পানি কত ঠান্ডা,তারপরও জীবিকার তাগিতে নদীতে মাছ ধরতে যেতে হয়।
রাস্তার মধ্যে আমরা বাদে তেমন কোন মানুষজনকে দেখতে পাচ্ছিলাম না। এই সময় কম্বলের নিচে থাকার কথা। এত কোয়াশায় কেউ হাটতে আসে..। আমরা পাগল তাই হাটতে গেছিলাম। ছিনতাই কারীরা যদি আমাদেরকে ধরে সব কিছু নিয়ে যায়,চিৎকার করলেও কেউ আসতে পারবে না। কোথায় থেকে চিৎকার আসছে সেটাও তো বুঝায় উপায় নেই। তবে ভাগ্য ভালো গ্রামের কোন ছিনতাই কারী নেই।
উপড়ের ফটোগ্রাফিতে একটি মাছ ধরার জাল দেখতে পাচ্ছেন। আমাদের গ্রামের ভাষায় এটিকে খরা জাল বলা হয়। নদী বা খাল বিলের পানি যখন কমতে থাকে তখন এই জাল গুলো দিয়ে মাছ ধরা হয়। এই জন্যই হয়তো খরা জাল বলা হয়। আপনাদের দিকে অন্য নাম থাকতে পারে। সেটা কমেন্ট করে জানাতে পারেন। জালটি অবশ্য পানির উপরে তুলে রাখা হয়েছে। সারারাত জেলে ভাই যে মাছ ধরেছে সেই মাছ নিয়ে হয়তো হাঁটে গেছে। নদীতেও তেমন স্রোত নেই।
এখানে দেখতে পাচ্ছেন জমিতে ধানের চারার জন্য ধানের গেরা ফেলা হয়েছে। এগুলো যখন চারাতে রুপান্তরিত হবে তখন জমিতে রোপন করা হবে। আমি এক সময় এই চারা জমিতে রোপন করেছি। শীতে হাত পা জমে যেত। সূর্যের দেখা পাওয়া যেতে না। ধানের খরে আগুন জ্বালিয়ে তারপর হাতপা গরম করে কাজ করতাম। মোটামুটি এক ঘন্টার মত হাটাহাটি করলাম। হাটতে হাটতে পেটে খিদা লেগে গেছে। নদীর পাড়ে দোকান আছে কিন্তুু বন্ধ। দোকানের মালিক তো আমাদের মত পাগল হয়নি যে এত কুয়াশায় দোকান খুলবে।
অবশেষে মনাপুরা নামক একটি স্থানে গিয়ে কিছুক্ষন রেস্ট নিলাম। তারপর আবার হাটতে হাটতে বাসার দিকে চলে আসলাম। বাসায় এসে দেখি অনেক প্রকারের নাস্তা রেডি হয়ে গেছে। ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে ঢাকার দিকে রওয়ানা দিলাম। বন্ধুরা আজকে আর বাড়াবো না। এখান থেকেই বিদায় নিলাম। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
শিরোনাম | এই বছরের প্রথম শীতের অনুভূতি।। |
স্থান | ঢাকা,বাংলাদেশ। |
তারিখ | ২২/ ১১ /২০২৩ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
শীতের সকালে ভ্রমণ করে দারুণ একটি অনুভূতির গল্প আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন সাথে ফটোগ্রাফি গুলো অসাধারণ ছিল।
শহরাঞ্চলের শীতের আবহাওয়া টা বোঝা না গেলেও গ্রামে কিন্তু খুব ভালো উপলব্ধি করা যাচ্ছে শীতের সময়টা এই।
আসলে এরকম হালকা শীতের মাঝে সকাল সকাল উঠে কুয়াশার মধ্যে ঘুরলে যদিও ঠান্ডা লাগে তারপরেও সময়টা অনেক ভালো অতিবাহিত করা যায়।
জী ভাইয়া শহর থেকে গ্রামে শীতের ধরন বেশি। আমি তো প্রথমে এত শীত বুঝতে পারি নাই। গ্রামে গিয়ে দেখলাম। ধন্যবাদ।
মোটামুটি ঠান্ডার দিন চলে এসেছে। আজকে দেখলাম ভালোই কুয়াশা পড়ছে। চারিপাশে কুয়াশা এসেছে তাই একটু দূরে যেন আর ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে না। ঠান্ডার দিনকে কেন্দ্র করে খুব সুন্দর একটি পোস্ট আজকে আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। সুন্দরভাবে ফুটে তোলার চেষ্টা করেছেন কুয়াশার জন্য সকলের দৃশ্য যেখানে মানুষের আনাগোনা খুবই কম।
জী ভাইয়া কুয়াশার কারনে কিছু দেখা যাচ্ছে না। তারপরও অনেকটা সময় হেটেছি। ধন্যবাদ।
চমৎকার অনুভূতি শেয়ার করলেন ভাইয়া। আপনার শেয়ার করা ফটোগ্রাফি গুলোর মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে আপনাদের ওদিকে খুব বেশি শীত। আসলেই এত আগে থেকে শীত তো বেশ অনুভব করতেছেন। সত্যি দেখে অনেক ভালো লাগলো। হয়তো গ্রামে গেলে বুঝতে পারব কিন্তু শহরে এত শীত নেই। যেহেতু চোখে কিছু দেখা যাচ্ছে না তাহলে বুঝা যাচ্ছে শীত কিন্তু বেশি পড়া শুরু করেছে। নদীর পাড়ে গেলেন এত ঠান্ডার মধ্যে অনেক মজার হবে মুহূর্ত গুলো। বেশ ভালই লাগলো শেয়ার করার জন্য।
জী আপু নদীর পাড়ে হওয়ার কারনে শীত আরো বেশি লাগছে। ধন্যবাদ।