আমাদের কমিউনিটিতে ক্লের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলছে। ক্লে এমন একটি পদার্থ যেটা দিয়ে যেভাবে ইচ্ছা বিভিন্ন জিনিষ পত্র বানানো যায়। আর বিভিন্ন কালার ক্লে ব্যবহার করার কারনে ডাই প্রজেক্ট গুলো দেখতেও অনেক সুন্দর লাগে। আমাদের কমিউনিটিতে আমাদের ভাইবোনেরা ক্লের মাধ্যমে তাদের ক্রিয়েটিভিটি প্রকাশ করে দারুন দারুন জিনিষ বানিয়ে উপহার দিচ্ছেন। তাদের সৃজনশীল কর্ম দেখে মাথা ঘুরে যায়। ক্লে দিয়ে তৈরীকৃত জিনিষ গুলো দেখলে আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি।

কয়েকদিন যাবৎ আমিও চিন্তা করতেছি ক্লে দিয়ে কিছু একটা তৈরী করবো। সেই চিন্তা থেকেই গত পরশুদিন অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে রাত আটটার দিকে দোকান থেকে ক্লে কিনে নিয়ে গেলাম। ক্লে কিনে আনা তো সহজ,টাকা দিলেই দোকানদার ক্লে দিয়ে দেয়। তবে ক্লের সঠিক ব্যবহার করাটাই কঠিন। ঐদিন সারারাত শুধু চিন্তাই করলাম,কি তৈরী করা যায়। চিন্তা করতে করতে রাতের বেলা ঘুমিয়ে যায়। রাতে আর কিছু তৈরী করা হয়নি। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে অফিসে আসার সময় ক্লের প্যাকেট গুলো সাথে করে অফিসে নিয়ে আসলাম। সকাল এগারোটার দিকে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়, কম্পিউটার অফ হয়ে গেছে,সবার কাজ বন্ধ। জেনারেটরের সমস্যা এক ঘন্টা বিদ্যুৎ আসবে না। আমি মনে মনে চিন্তা করলাম খাঁপেখাপ মিলে গেছে, এখন ক্লে দিয়ে কিছু একটা তৈরী করে ফেলি। তারপর প্রায় এক ঘন্টা চেষ্টা করার ফলে ক্লে দিয়ে দুটি কিউট টেডি বিয়ার তৈরী করলাম। এখন কিভাবে সেটা তৈরী করলাম,সেই প্রক্রিয়াটা নিচে বর্ণনা করছি।

প্রয়োজনী উপকরন

• পাঁচ কালারের ক্লে
• ক্লে কাটার কিছু যন্ত্র

টেডি বিয়ার তৈরীর প্রক্রিয়া-

প্রথমে আমি পিংক কালারের ক্লের প্যাকেটটি হাতে নিয়ে, প্যাকেট খুলে ক্লেটা বের করে নিলাম। তারপর অল্প একটু ক্লে হাতে নিয়ে দুই হাতের মাধ্যমে দুটি ছোট ছোট গোল বল তৈরী করে ডেস্কের উপরে রাখলাম। তারপর একটি গোল বল অন্য একটি বলের উপরে রেখে টেডি বিয়ারে বডি তৈরী করে নিলাম। এখন কিন্তুু কিছুই বুঝা যায় না।

যেহেতো বডি হয়েছে এখন টেডি বিয়ারের হাত পা দরকার। এখন অল্প অল্প ক্লে নিয়ে দুই হাতের তালুর মাধ্যমে হাত পা বানিয়ে ডেস্কের উপরে রাখলাম। টেডি বাবুরও দুই হাত দুই পা।

টেডি বাবুর শরীরে দুই হাত আর দুই পা লাগিয়ে দিলাম। হাত আর পা লাগানোর পরে দেখি কান নেই,হা হা হা। তারপর অল্প একটু ক্লে নিয়ে দুই টি কান বানিয়ে লাগিয়ে দিলাম। এখন মোটামুটি টেডি টেডি একটা ভাব বুঝা যায়।

টেডি বাবুর নাক মুখ ও চোখ দরকার। অল্প একটু সাদা ক্লে নিয়ে দুই হাতের সাহায্যে মুখ বানিয়ে লাগিয়ে দিলাম। তারপর মুখের উপরে ছোট ছোট দুটি কালো চোখও লাগিয়ে দিলাম।

মুখ লাগানোর পরে এটা কি ছেলে টেডি না কি মেয়ে টেডি সেটা বুঝতে পারছিলাম না। আমার কাছে মেয়ে টেডি ভালো লাগে। যার ফলে মাথার মধ্যে একটি চুলের ফিতা বানিয়ে লাগিয়ে দিলাম। বাহ দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে,অনেক কিউট হয়েছে।

টেডি বিয়ার বানিয়ে ডেস্কের উপরে রেখে একটি ফটো তুললাম। দেখলাম অনেক সুন্দর লাগছে। তবে কোথায় যেন একটু কমতি রয়ে গেলো। টেডি বিয়ার মন খারাপ করে বসে আছে। অনেক্ষন চিন্তা ভাবনা করে বুঝলাম তার খেলার সঙ্গি দরকার। শুরু হলো সঙ্গি বানানোর কর্মযজ্ঞ।

অবশেষে আরেক প্যাকেট ক্লে নিয়ে একটু কষ্ট করে শ্রম ও সময় দিয়ে আরেকটি টেডি বিয়ার তৈরী করলাম। দুই জন এখন অনেক দুষ্টামি করবে। খেলবে আনন্দ করবে,হে হে হে।

উপস্থাপনা-

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।