কুমারপাড়া থেকে মাটির পাতিল কেনার অনুভূতি।।
বাংলা ভাষা ছড়িয়ে দাও সবার মাঝে-
হ্যালো বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে কুমারপাড়া থেকে মাটির পাতিল কেনার অনুভূতি শেয়ার করতে যাচ্ছি।
বন্ধুরা গতকাল আমি আপনাদের সাথে ঈদের ছুটিতে নানু বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করেছিলাম। আমি নানু বাড়ি থেকে সকালের নাস্তা করে আমার শ্বশুরবাড়িতে চলে এসেছিলাম। এখানে কয়েকদিন থেকে আগামী সোমবারে রাত সাড়ে আটটার পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিবো ইনশাআল্লাহ। তো গতকাল শ্বশুর বাড়িতে এসে লাঞ্চ করেছিলাম। লাঞ্চ করে কিছুক্ষণ রেস্ট নিলাম। আসরের নামাজের পরে আমার ছোট শালিকা বললো সে নাকি মাটির পাতিল কিনতে কুমারপাড়া যাবে। আমি বললাম ঠিক আছে চলো তাহলে একটু ঘুরে আসি।
আমরা বাসা থেকে বের হয়ে তিতাস নদীর পাড় দিয়ে দক্ষিণ দিকে হাঁটতে লাগলাম। কুমারপাড়া তে যাওয়ার জন্য কোন অটো বা রিক্সার রাস্তা নেই। নদীর পাড় দিয়ে হেঁটে হেঁটে যেতে হয়। আমরা নদীর সৌন্দর্য দেখতে দেখতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম। হঠাৎ করে বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি বেড়ে গেছে। তাছাড়া সিলেটের বন্যার কিছু পানি তিতাস নদীতে এসে পড়েছে। নদীর সাইটে অনেকগুলো নৌকা বাঁধা আছে। আমরা নৌকা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু নৌকা ও ওইদিকে যায় না। আমরা হেঁটে হেঁটে কুমারপাড়া পর্যন্ত পৌঁছে গেলাম।
আমরা কুমারপাড়া তে গিয়ে প্রচুর মাটির পাতিল দেখতে পেলাম। এখানে তারা তিতাস নদী থেকে মাটি তুলে, সেই মাটিকে বিভিন্ন প্রসেস করে প্রতিদিন মাটির পাতিল বানিয়ে থাকে। আমরা প্রথমে একটি বাড়িতে মাটির পাতিল দেখলাম। কিন্তু আমরা যেই সাইজের মাটির পাতিল চাই, সেখানে সেই সাইজের মাটির পাতিল ছিল না। আমরা মূলত এমন কিছু মাটির পাতিল চাই যেগুলোর মধ্যে ফুল গাছ লাগিয়ে সেগুলো ঝুলিয়ে রাখা যাবে। আমরা প্রথম বাড়িতে আমাদের নির্ধারিত মাটির পাতিল না পেয়ে আরো কয়েকটি বাড়িতে ঘুরে দেখলাম।
তারপর আমরা ধীরে ধীরে তাদের পাতিল বানানোর প্রক্রিয়াটা দেখলাম। তারা প্রথমে গোলাকার একটি ফরমেটের মধ্যে পাতিল গুলো বানিয়ে এক জায়গায় রাখে। তারপর রোদের মধ্যে শুকিয়ে সেগুলো একটি নির্ধারিত জায়গায় জমা করে। তারপরে বড় একটি মাটির চুলা তৈরি করে রেখেছে,চুলার উপরে মাটির পাতিল গুলো রেখে নিচ দিয়ে আগুন দেয়। তারপর মোটামুটি ভাবে পাতিল গুলো শক্ত হয়ে গেলে তারপর উপরে আবার বিভিন্ন খরকুটো লাকড়ি দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এখানে সম্ভবত তারা কয়েকদিন রেখে সেই মাটির পাতিল গুলো শক্ত করে। তারপর একটি সময়ের পরে আগুন দেওয়া বন্ধ করে দেয়। তারপর আরো কয়েকদিন পরে যখন পাতিল গুলো ঠান্ডা হয়, তখন সেগুলো সাবধানে সংরক্ষণ করে ঘরের ভিতরে রেখে দেয়। অনেক সময় তারা নিজেরাও বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে এই পাতিল গুলো বিক্রি করে আসে। আর আমাদের মত যাদের দরকার হয় তারা এখানে এসে পাতিল কিনে নিয়ে যায়। যেহেতু আমাদের এদিকে তিন চার দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে, তাই তারা নতুন কোন পাতিল বানাতে পারছে না। আর বানিয়ে রাখা পাতিল গুলো শুকাতেও পারছেন না।
অবশেষে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ঘুরে আমাদের নির্ধারিত সাইজের পাতিল পেয়ে গেলাম। আমরা সর্বমোট ১০ টি পাতিল নিবো। পাতিল গুলো বের করার পরে তাদের নিকট দাম জিজ্ঞাসা করা হলে তারা প্রতি পিস পাতিল ১৫ টাকা করে চাইলো। আমি প্রথমে আট টাকা করা বলার পরে তারা দেয়নি। সবশেষে ১০ টাকা করে ১০ টি পাতিল ১০০ টাকা দিয়ে নিয়ে আসলাম। তারা সেখান থেকে আমাদেরকে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে করে বাতিলগুলো ধরিয়ে দিলেন। আমরা এই পাতিল গুলোতে ফুল গাছ লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখবো। এই দৃশ্যটা দেখে অনেক ভালো লাগবে। আমার শ্বশুর বাড়িতে প্রচুর ফুলগাছ রয়েছে। পরিবেশটা অনেক সুন্দর।
বন্ধুরা এই হলো আমার আজকের নির্ধারিত ব্লগ। আশা করি ব্লগটি আপনাদের সবার অনেক পছন্দ হবে। আজকে এখান থেকেই বিদায় নিলাম। আবার আগামীকাল আপনাদের সাথে নতুন কোন ব্লগ নিয়ে হাজির হবো ইনশাআল্লাহ। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | realme-53 |
শিরোনাম | কুমারপাড়া থেকে মাটির পাতিল কেনার অনুভূতি।। |
স্থান | কুমারপাড়া, ভাদুঘর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ,চট্টগ্রাম , বাংলাদেশ। |
তারিখ | ২১/০৬ /২০২৪ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmd7of2TpLGqvckkrReWahnkxMWH6eMg5upXesfsujDCnW/image.png)
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmWDnFh7Kcgj2gdPc5RgG9Cezc4Bapq8sQQJvrkxR8rx5z/image.png)
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
মাটির পাতিল আমাদের প্রাচীন কালের একটি ঐতিহ্য। বর্তমান বাংলাদেশের কিছু কিছু গ্ৰাম এই ঐতিহ্য কে টিকিয়ে রেখে তারা এখনো মাটির তৈরি জিনিসপত্র বাজারের মধ্যে বিক্রি করছে। আপনি দেখছি আপনার পার্শ্ববর্তী একটি কুমার গ্ৰামে গিয়ে বেশ কিছু মাটির তৈরি জিনিসপত্র কিনেছেন, দেখে বেশ ভালো লাগলো। তবে, মাটির তৈরি করা জিনিস পত্র গুলো ব্যবহার করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।
জি ভাই মাটির পাতিল মাঝে মাঝে দরকার হয়, তাই গতকাল গেছিলাম কুমার পাড়ায়। ধন্যবাদ।
ছোট শালিকার সাথে মাটির পাতিল কিনতে গিয়েছেন। বেশ ভালো লাগলো আপনার কাটানো মুহূর্তগুলো দেখে। মাটির পাতিল তৈরি করার প্রক্রিয়াটা জানা ছিল না। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জেনে ভালো লাগলো। একটা দশ টাকা করে কিনেছেন তাহলে তো দাম একদমই কম। আসলেই এগুলোতে করে ফুল গাছ লাগালে খুবই সুন্দর লাগবে দেখতে।
জী আপু ফুল গাছ লাগানোর জন্যই অনেক দূর হেঁটে গিয়ে মাটির পাতিল গুলো সংগ্রহ করলাম।
একটা সময় এই মাটির জিনিসপত্রের খুবই কদর ছিল। এখন অনেকটা প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে আমার কাছে কুমোর পাড়ার জিনিসপত্র দেখতে খুব ভালো লাগে। তারা কি সুন্দর করে মাটি দিয়ে জিনিসগুলো তৈরি করে আবার সেগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে পরিপূর্ণ করে। তারা অনেক দক্ষতার সাথে এই কাজগুলো করে থাকে। আজ আপনি কুমোরপাড়ায় পাতিল কিনতে গিয়েছিলেন দেখে ভালো লাগলো। কিছুদিন আগে আমিও গিয়েছিলাম মাটির টব কিনে আনতে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
জী আপু তারা খুব যত্ন করে দক্ষতার সাথে পাতিল গুলো তৈরি করে থাকে।
এই পোস্টটি সত্যিই অনন্য! আপনার কুমারপাড়া থেকে মাটির পাতিল কেনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার ধরন খুবই জীবন্ত এবং বর্ণনামূলক। এটি পড়ে মনে হচ্ছে আমি নিজেই সেই সুন্দর তিতাস নদীর পাড় ধরে হাঁটছি এবং মাটির পাতিলের সেই সৃজনশীল প্রক্রিয়াটি দেখছি। আপনার লেখনীতে একটি সহজ সরলতা আছে যা পাঠককে আপনার গল্পের সাথে যুক্ত করে। ধন্যবাদ এমন একটি চমৎকার পোস্ট আমাদের সাথে ভাগ করার জন্য।
জ্বী ভাইয়া বিকাল বেলা তিতাস নদীর পাড় ধরে হাঁটতে খুবই ভালো লেগেছিল। ধন্যবাদ।
আপনাদের ঐদিকে যে এখনও কুমার নামের কিছু অবশিষ্ট আছে দেখে ভালো লাগল। দিনে দিনে আধুনিকতার ছোয়ায় এগুলোর ব্যবহার একেবারেই কমে আসছে। সেজন্য ক্রমেই বিলুপ্ত হচ্ছে এই পেশার মানুষের। মাটির তৈরি পাএগুলো দেখতে বেশ লাগছিল কিন্তু ভাই। চমৎকার করেছেন পোস্ট টা। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
জি ভাই এখনো মাঝেমধ্যে দুই একটি বাড়িতে মাটির পাতিল তৈরি করা হয়। তারা তাদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে।
মাটির তৈরি জিনিসপত্র গুলো দেখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।তবে এগুলো খুব সাবধানে ইউজ করতে হয়।এছাড়া মাটির তৈরী তৈজসপত্র গুলো বাঙালিদের ঐতিহ্য বহন করে। কুমোর পাড়া গেলে এধরনের জিনিস এর অনেক ভ্যারাইটি পাওয়া যায়।ভালো লাগলো পোস্টটি।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
জী আপু যেহেতু এগুলো মাটির জিনিস তাই খুবই সাবধানে ব্যবহার করতে হয়। ধন্যবাদ।
একটা সময় এই মাটির জিনিসের খুবই কদম ছিল। এখন মানুষ সাচার আচার এই মাটির জিনিস কেউ ব্যবহার করেনা। কিন্তু এখন সব নতুন মডেলের কারুকার্য করা জিনিস পাওয়া যাচ্ছে সেগুলা অনেকেই শখের বসে ব্যবহার করছে। তারা কি সুন্দর করে মাটি দিয়ে জিনিসগুলো তৈরি করে আবার সেগুলা আগুনে পুড়িয়ে পরিপূর্ণ করে। সত্যি মাটির জিনিস গুলা দেখতে অনেক ভালো লাগছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।