অনলাইনে ইলিশ মাছ কিনতে গিয়ে ১৮০৭৫ টাকা গচ্ছা গেল।।
হ্যালো বন্ধুরা,কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আবারো আপনাদের সামনে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে একটি শিক্ষামূলক ব্লগ শেয়ার করবো। আশা করি বিষয়টা জানলে আপারাও সতর্ক থাকতে পারবেন।
আমার এক সিনিয়র ভাই আছে, যে আমার সাথে ডিএমএস এর কোর্স করে। সে বিদেশ ফেরত একজন মানুষ। মধ্যেপাচ্যের দেশ দুবাই,সৌদিআরবে অনেক বছর থেকে এসেছে। সে বর্তমানে থাকে ঢাকা শহরের দুলাইপাড় এলাকায়। সে প্রায় সময় অনলাইন থেকে কেনা কাটা করে। মোটামুটি ভালো টাকা পায়সা আছে তাই যখন যেটা মন চাই সেটাই ক্রয় করে। গত ১১ সেপ্টেম্বর রোজ বোধবার তিনি ফেসবুকে নিউজফিট দেখছেন। এমন সময় হঠাৎ করে ইলিশ মাছ বিক্রয়ের একটি পেইজ তার সামনে আসে। যে পেইজটির মাধ্যমে পদ্মার মাওয়া ঘাট থেকে সরাসরি ইলিশ মাছ ডেলিভারি দিয়ে থাকে। ভাইয়ার এক বন্ধু এবং ছোট ভাই বিদেশ থেকে টাটকা ইলিশ মাছ চেয়েছে। তাই বিদেশে পাঠানোর জন্য তিনি ইলিশ মাছ খুঁজতেছিলেন।
ঐ পেইজের মধ্যে অনেক গুলো ইলিশ মাছের ছবি দেখে তার পছন্দ হয়ে গেল। সে পেইজের এডমিনের সাথে ম্যাসেজ দিয়ে কথা বললো। এডমিন খুব সুন্দর ব্যবহার করে তাদের সার্ভিসের অনেক গুনগান বললো। ভাইয়া তাদের রসের কথায় মুগ্ধ হয়ে জিঙ্গেস করলেন কত টাকা কেজি। এডমিন বললো ১০০০ টাকা কেজি। তবে বেশি করে নিলে কিছুটা কম রাখা যাবে। ভাইয়া বললেন ১০ কেজি নিবো। তখন এডমিন বললেন ১০ কেজি নিলে আট হাজার টাকা রাখা যাবে। তবে অর্ডার কন্ফার্মের জন্য ৫০০ টাকা অগ্রিম সেন্ড করতে হবে। ভাইয়া ৫০০ টাকা তাদের নগদ নাম্বারে সেন্ড করে অর্ডার কন্ফার্ম করে দিলেন। ভাইয়া খুব খুশি পদ্মা নদীর তাজা ইলিশ ৮০০ টাকা কেজি ধরে পেয়ে গেছেন।
সকালে অর্ডার কন্ফার্ম করার পরে সন্ধায় এডমিন ম্যাসেজ দিয়ে জানায় যে, রাতের বেলা আমরা অর্ডারের মাছ প্যাকেট করি। প্রতিটি প্যাকেটের গায়ে ক্রেতার কাছে পাঠানো একটি কোড নাম্বার থাকে। যে কোড দিয়ে ডেলিভারি ম্যান ক্রেতার নিকট তার নির্ধারিত প্যাকেট পৌছে দেয়। এখন আপনি যেদি সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেন তাহলে আপনার মোবাইলে একটি কোড যাবে। সেই কোডটি আমাদের কাছে দিতে হবে। এই কথা শুনে ভাইয়া তাদের নাম্বারে ৭৫০০ টাকা সেন্ড করে দিলেন। সকালের ৫০০+৭৫০০ মোট ৮০০০ টাকা সেন্ড করে দেন। সম্পূর্ণ টাকা সেন্ড করার পরেও ভাইয়া মোবাইলে কোড যায়নি। এডমিনের নিকট টাকা পাঠানোর স্কিনশর্ট সেন্ড করে করলেন। তারপর জিঙ্গেস করলেন তার মোবাইলে কোড কেন আসতেছে না। এডমিন জানালো আপনি ক্যাশ আউটের টাকা যোগ করে পাঠাননি। যার ফলে কোড যায়নি। আপনি আবার সাড়ে সাত হাজার টাকার সাথে ক্যাশ আউটের টাকা যোগ করে পাঠান। তখন আপনার মোবাইলে কোড যাবে। আর আগের সাড়ে সাত হাজার টাকা ডেলিভারি ম্যান মাছে সাথে আপনাকে রিটার্ন করে দিবে।
ভাইয়া বললো ক্যাশআউটের টাকা লাগবে সেটা আপনারা আগে জানালেন না কেন....। এখন ডাবল টাকা পাঠানো লাগতেছে। তারপর দ্বিতীয় বার আবার সাড়ে সাত হাজার টাকা পাঠালেন। তখন কোড আসলো এবং সেই কোড এডমিনের নিকট পাঠানো হলো। ডেলিভারি ম্যান আবার ফোন করে ভাইয়াকে কন্ফার্ম করলো যে মাছের সাথে সাড়ে সাত হাজার টাকাও বুঝিয়ে দিবে। ভাইয়া তখন রিলাক্সে রাতের বেলা ঘুম দিলেন। কারন সকালে বেলা তার জাতীয় মাছ ইলিশের প্যাকেট আসবে।
১২ তারিখ বৃহস্পতিবার সকাল বেলা যখন এডমিনকে ম্যাসেজ দিতে যাবে,তখন ভাইয়া যেন আকাশ থেকে পড়লো। কারন ভাইয়াকে এডমিন অলরেডি ব্লক মেরে দিয়েছে। এডমিনের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলো তখন নাম্বার বন্ধ পায়। ডেলিভারি ম্যানের নাম্বারে কল দেয় সেটাও বন্ধ। বেচারার ঠান্ডা মাথ গরম হয়ে গেল। সারাদিন অপেক্ষার করার পরেও ইলিশের প্যাকেট আর আসলো না। তখন এই ঘটনা আবার তার এক বন্ধুকে জানালো। সে বললো মাওয়া ঘাটের এক পুলিশ অফিসার তার খুব পরিচিত। সব তথ্য দিলে সে হয়তো বাটপারকে খুঁজে বের করতে পারবে। তবে পুলিশকে কিছু নাস্তাপানির টাকা দিতে হবে। তখন ভাইয়া আবার তার বন্ধুকে ২০০০ টাকা আর সকল তথ্যের স্কিন শর্ট পাঠালেন। সর্বমোট ১৮০৭৫ টাকা ব্যায় করলেন ইলিশ মাছের জন্য। এক সাপ্তাহ হয়ে যাচ্ছে না পেল ইলিশ মাছ না পেলো টাকা। ভাইয়া এখন তার আশে পাশের সবাইকে বলতেছে অনলাইনে কাউকে যেন বিশ্বাস না করে।
মতামত বা শিক্ষা-
পরিচিত লোক ছাড়া অনলাইনে বিশ্বাস করে কারো সাথে লেনদেন করলে ৯৯.৯৯% প্রতারনার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই অনলাইনে কাউকে বিশ্বাস করার ক্ষেত্রে সাবধান থাকতে হবে। অনলাইনে কেনাকাটা করার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে। এই যে আমার ভাইয়া না বুঝে বিশ্বাস করে তিনবার টাকা পাঠিয়ে প্রতারনার শিকার হয়েছেন। অনলাইনে কিছু মানুষ আছে যারা প্রতরনার ফাঁদ পেতে বসে আছেন। আর এই ফাঁদে পা দিলেই শেষ। আমিও কয়েকবার অনলাইনে টাকা দিয়ে প্রতারনার শিকার হয়েছি। তবে আমি দুই তিন বারে ১০০০ হাজার টাকার মত হারিয়েছি। এখন আর পরিচিত লোক ছাড়া ক্যাশ টাকা দিয়ে অনলাইনে কাউকে বিশ্বাস হয় না। আশা করি আপনারাও সতর্ক থাকবেন।
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা,ডিজাইন করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Click Here For Join Heroism Discord Server
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
সম্পুর্ন ঘটনাটা পড়ে আমার ভীষণ খারাপ লাগালো।এখনো মানুষ বিশ্বাস করে এতো টাকা আগেই দিয়ে দেয়? অবাক হলাম।আমি এমনটা কখনই করিনা।যে পেইজে ক্যাশ অন ডেলিভারী তাতে আমি আছি।নয়ত গুড বাই।মানুষ আজকাল বেশীর ভাগ ধান্দাবাজ।আমাদের সকলের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আমি যদিও এখন ও অনলাইনে এমন ধরা খাইনি।
জী আপু যে পেইজে ক্যাশ অন ডেলিভারী করে তাতে আমিও আছি। তা না হলে বাটপারি করে। ধন্যবাদ।
সম্পূর্ণ ঘটনাটি পড়ে আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছে। এরকম ঘটনাগুলো এখন অহরহ হচ্ছে।আসলে আমি মনে করি অনলাইনে কেনাকাটা করার ক্ষেত্রে একটু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। আর না জেনে শুনে অতোগুলো টাকা আগে দিয়ে দেওয়া উচিত হয়নি। আপনার পোস্ট পড়ে অনেকেই সতর্ক হতে পারবে। ধন্যবাদ আপনাকে সতর্কতামূলক একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
জী আপু তিনি বুঝতে পারেনি। বিদেশ ছিল তো তাই বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে ধারনা নেই। ধন্যবাদ।
আসলে ভাই আমি অনলাইন থেকে এই কারণে কিছুই কিনি না কারণ অনলাইনে প্রতারণা শেষ নেই। পণ্য দেখায় একটা দে আরেকটা । পণ্য যে তারিখে দিবে ও তারিখ থেকে অনেক দেরি দেয়। আবার দেখা গেছে টাকা মেরে দেয় এসব ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকার জন্য নিজে গিয়ে দেখে শুনে যে জিনিস ক্রয় করা উত্তম। আসলে স্বাদের ইলিশের জন্য এত টাকা গেল সত্যিই তা খুব দুঃখজনক । অপরিচিত ব্যক্তি এডমিন কে বিশ্বাস করা খুব বোকামি হয়েছে।
জী ভাইয়া অনলাইনে কেনাকাটা অনেক রিক্স। তারপরও সাবধান থাকতে হয়। ধন্যবাদ।
বর্তমানে অনলাইন যেন একটা প্রতারণার সব থেকে বড় ফাঁদ হয়ে গিয়েছে। আপনিও দেখছি ইলিশ মাছ কেনার জন্য সেই ফাঁদের মধ্যেই পা দিয়ে ফেলেছেন। ইলিশ মাছ কিনতে যেয়ে অনেকগুলো টাকা নষ্ট হয়ে গেল এটা জেনে খুবই খারাপ লাগছে ভাইয়া।
জী ভাইয়া এখন মানুষের প্রতরানার বড় জায়গা হয়ে গেছে অনলাইন। তাই সাবধান থাকতে হবে। ধন্যবাদ।