হঠাৎ ডাক্তারের শরণাপন্ন।।
আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ
হ্যালো,
আমার প্রিয় স্টিমিট বাসি,কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার আজকের ব্লগের বিষয় অসুস্থতা নিয়ে। নিচে বিস্তারিত বর্ণনা করছি।
অসুস্থ না হলে সুস্থতার মূল্য বুঝা যায় না। পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তার অনেক বড় একটি নিয়ামত হলো সুস্থতা। নিজে অসুস্থ হলে সারা পৃথিবীই অসুস্থ মনে হয়। পৃথিবীর কোথায় গিয়ে শান্তি নেই। সামনে যত ভাল কিছুই থাকুক না কেন, কোন ভাবেই শান্তি আসে না। সুস্থ জীবনের জন্য মানুষ যে কোন কিছু করতে রাজি থাকে। কিছুদিন আগে আমার ডান হাতের শাহাদাৎ আঙ্গুলের মাঝখানে ছোট একটি ঘামাছি ফুটে ছিল। আমি সেটাকে গুরুত্ব না দিয়ে ভিতরে বিষাক্ত পানিটা বের করে ফেলেছিলাম। আর এটাই ছিল আমার মারাত্বক ভুল।
রাতের বেলা বিষাক্তপানিটা বের করার পরে ঘুমিয়ে পড়লাম। এটা নিয়ে তেমন কোন মাথা ঘামানোর দরকার বলে মনে করেনি। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি আঙ্গুলটা একটু ফুলে গেছে। তখনও আমি গুরুত্ব না দিয়ে গোসল করে নাস্তা করে অফিসে চলে গেলাম। অফিসে গিয়ে কাজ করছি,বেলা যত বাড়ছে আঙ্গুলটা তত ফুলে যাচ্ছে। বিকালের দিকে ব্যাথা শুরু হয়েছে। এখন ভয় লাগছে, এত ব্যাথা করছে যে মন চাইছে আঙ্গুলটা কেটে ফেলে দেয়। এখন তো ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় দেখতেছি না। আমি আবার ছোট বেলা থেকে যে কোন রুগকে গুরুত্ব দিতাম না। ঔষুধ বা ট্যাবলেট খাওয়ার প্রতি এত মনযোগ দেয় না। একবার রমজান মাসে ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করতে গিয়ে জ্বর হয়েছিল। ডাক্তারের কাছে গেলে এক্সে সহ অনেক গুলো টেষ্ট দিয়েছিল। মেডিনোভা সেন্টার থেকে সব গুলো টেষ্টই করিয়ে ছিলাম। তারা বলেছিলো টেষ্টের রিপোর্ট গুলো পরের দিন এসে নিয়ে যেতে। রিপোর্ট গুলো দেখার আগে ডাক্তার যে ঐষুধ লিখে দিয়েছিলো সে গুলো খাওয়ার পরে জ্বর কমে গিয়েছিল। যার ফলে পরের দিন আর ঐ রিপোর্ট গুলো আনতে যায়নি। প্রায় পাচঁ হাজার টাকার রিপোর্ট তাদের কাছেই রয়ে গেছে।
এর পরে চার পাচঁ বছর অতিক্রম হয়ে গেছে। ডাক্তার বা হাসপাতালে যাওয়ার দরকার হয়নি। সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ভালই আছি,আলহামদুলিল্লাহ। তবে এখন আঙ্গুলটির জন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় দেখতেছি না। সন্ধার সময় ম্যানাজার স্যারকে বলে পরের দিন হাসপাতালে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। কারন বেশি অবহেলা করলে পরে আর বেশি ঝামেলা হয়ে যেতে পারে।
পরের দিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে, গোসল করে নাস্তা করে হাসপাতালের দিকে রওয়া দিলাম। কিন্তুু ভাগ্য খারাপ হাসপাতালে যাওয়ার আগেই মাঝ রাস্তায় জ্যামের মধ্যে আটকে গেলাম। নারায়নগঞ্জের খানপুরে একটি সরকারি হাসপাতাল আছে,তবে সেখান থেকে ভিক্টোরিয়া হাসপাতলে যাওয়া সঠিক মনে করলাম। আবার কয়েকজন ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে যাওয়ার জন্য উপদেশ দিলেন। সে জন্য সে দিকেই যাচ্ছিলাম।
চাষাড়া মোড়ের একটু পরেই পপুলার ডায়াগনিস্টক সেন্টার আছে। আর আমিও পপুলারের সামনেই জ্যামে আটকা পড়েছিলাম। একবার মনে মনে চিন্তা করেছিলাম পপুলারেই চলে যায়। আবার চিন্তা করলাম পপুলারে ডাক্তার পায় কিনা সেটা সিউর না। তাই পূর্বের সিদ্ধান্তে অটল রইলাম।
অবশেষে দশটার দিকে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপতালে গিয়ে পৌছালাম। এই প্রথম এই হাসপাতালে গেলাম। লম্বা সিরিয়াল ধরে একটি টিকেট সংগ্রহ করলাম। তারপর দুই তলায় আবার লম্বা এক সিরিয়াল ধরে ডাক্তারের সাক্ষাত পেলাম। তিনি ভাল ভাবে দেখে জিঙ্গেস করলো আঙ্গুল ছাড়া আর কোথাও এমন আছে না কি। আমি বললাম না শুধু আঙ্গুলেই আছে। তারপর ডাক্তারি ভাষায় কি কি লিখেছে সেটা বুঝার ক্ষমতা আমার নেই। হয়তো আমাদের সম্মানিত এডমিন শুভ ভাইয়া হলে বুঝতো। আমি ডাক্তারের লেখা কাগজ নিয়ে ফার্মেসিতে দিলাম । সেখানে তারা দেখেই ডাক্তারের লেখা বুঝে গেল। তাদের সেই ভাষা বুঝার ক্ষমতা আছে। আমাকে প্রতিদিন খাওয়ার জন্য এক প্রকারের ট্যাবলেট দিলো,সাপ্তাহিক খাওয়ার জন্য একটি ট্যাবলেট দিলো,আর একটি মলম লিখে দিলো। এখন আপনাদের দোয়ায় আর সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ভাল আছি। আঙ্গুলটি সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেছে।
বন্ধুরা এটাই হলো আমার আজকের আয়োজন। আজকের শিক্ষা হলো যে কোন রোগ নিয়ে অবহেলা করা ঠিক নয়। আর যে কোন বিপদে পড়লে ঘাবরানো যাবে না,ধর্য ধরতে হবে। ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সবাই ভাল থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন।
সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ফটোগ্রাফির বিবরণ:
ডিভাইস | মোবাইল |
---|---|
মডেল | রেডমি নোট-৮ |
শিরোনাম | হঠাৎ ডাক্তারের শরণাপন্ন। |
স্থান | জেনারেল হাসপাতাল (ভিক্টোরিয়া) নারায়ণগঞ্জ |
কমিউনিটি | আমার বাংলা ব্লগ |
ফটোগ্রাফার | @joniprins |
সবাইকে ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।।
আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।
Bangla Witness কে সাপোর্ট করতে এখানে ক্লিক করুন
এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP 500 SP 1000 SP 2000 SP 5000 SP
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.
আমার মনে হয় আমরা সবাই অনেকটা অসুস্থ না হলে ডাক্তারের কাছে যায়না। তবে এটা আমাদের করা উচিত নয়। আমরা যদি অসুখ হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের কাছে যায় তাহলে হয়তো আমাদের তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়ার সম্ভবনা আছে আর এতে ডাক্তারের খরচ ও কম হয়।ডাক্তার দেখে আঙ্গুর ভালো হয়েছে জেনে ভালো লাগলো ধন্যবাদ আপনাকে।
জী আপু একটু সতর্ক থাকলে ভাল হয়। সমস্যা ছোট থাকতে সেরে ফেলা উচিত। ধন্যবাদ আপু।
টেস্ট করতে দিয়ে আসার পর যখন জ্বর চলে গেল তখন মনে মনে ডাক্তারকে গালি দিয়েছেন নিশ্চয়ই। শুধু শুধু এতগুলো টেস্ট দিল। আমাদের সবার সাথেই এমন হয়। যাইহোক অনেকদিন সুস্থ ছিলেন জেনে ভালো লাগলো। আঙ্গুলের সমস্যা খুব একটা বড় হয়নি বোঝা যাচ্ছে। ওষুধের যেহেতু সেরে গিয়েছে তাহলে ছোটখাটো সমস্যা ছিল। আশা করি এখন সুস্থ আছেন ভাইয়া।
জী আপু বাংলাদেশের ডাক্তারদের কাছে রোগী গেলে তারা মনে করে আমার ব্যাংক একাউন্ট এসে গেছে। এখন যত রাখা যায়,হা হা হা। ধন্যবাদ আপু।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
নিজে অসুস্থ হলে আসলেই মনে হয় পুরো পৃথিবী অসুস্থ। আশেপাশের কোন কিছুই ভালো লাগেনা। যাই হোক আপনি বেশ ভালো বলেছেন ডাক্তার প্রেসক্রিপশনটা হয়তোবা আমাদের অ্যাডমিন শুভ ভাইয়া দেখলে বুঝতে পারত। ভাইয়া ওষুধ নিয়মিত খাবেন ও মলম নিয়মিত ব্যবহার করবেন। আশা করি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে আঙ্গুল।
জী আপু আপনাদের দোয়ায় আঙ্গুলটা ভাল হয়ে গেছে। ধন্যবাদ আপু।
অন্য কেউ ডাক্তারের লেখা না বুঝলেও ফার্মেসীওয়ালারা ঠিকই বুঝে যায়। তবে সামান্য ছোট ঘামাচির মত থেকে যে এত বড় সমস্যা হবে সেটা বুঝতে পারিনি ভাইয়া। আসলে সমস্যা কখন হয় সেটা বলা খুবই মুশকিল। আপনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি ভাইয়া। অনেক অনেক দোয়া রইল আপনার জন্য।
জী আপু কখন কি থেকে কি হয় সেটা বুঝা বড় মুশকিল। ধন্যবাদ আপু।
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে সেটা ছিল এক্সিমা। আপনার মত এমন রোগী পেলে যেমন ডায়াগনেস্টিক সেন্টারের লাভ তেমনি ডাক্তারেরও লাভ। যাক সে কথা ডাক্তারদের ভাষা আপনি কেন আমিও বুঝি না। সেদিনে তো বললেন অন্য কারনে গিয়েছেন ভিক্টোরিয়ায়। আর আজ কি লিখলেন। সত্যি কি তাই?
জী আপু দুইটাই করেছি,আমার টা আমি লিখলাম আর তারটা সে লিখবে। ধন্যবাদ আপু।
আসলে সামান্য কিছু থেকেও যে কখন কি হয়ে যায় তা বোঝা যায় না।দীর্ঘ অনেকদিন যাবত সুস্থ ছিলেন।আসলে সুস্থতা যে কত বড় নেয়ামত তা অসুস্থ হলে বোঝা যায়। যাক আপনি এখন ওষুধ খেয়ে অনেকটাই সুস্থ আছেন জেনে ভালো লাগলো।
জী আপু সুস্থতা সৃষ্টিকর্তার অনেক বড় একটি নিয়ামত। ধন্যবাদ আপু।
মানুষের শরীরের মধ্যে অনেক রকম সমস্যা থেকে থাকে যা সব সময় বোঝা যায় না। তবে আমাদের উচিত সবসময় সচেতন থাকা। তবে নিজের শরীর যদি অসুস্থ হয় তখন যেন নিজেকেই মনে হয় দুনিয়ার বুকে সবচেয়ে বড় অসহায়।
জী ভাইয়া নিজের শরীর অসুস্থ হলে দুনিয়ার কিছুই ভাল লাগে না। ধন্যবাদ ভাইয়া।