জন্ম ভূমির টানে বাড়ি ফেরা।।

হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ বাসি কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই অনেক অনেক ভালো আছেন।আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার আজকের ব্লগের বিষয় হলো জন্ম ভূমির টানে বাড়ি ফেরা।

আমি আজকে ঢাকা থেকে বাড়িতে এসেছি। আমার মত হাজার হাজার মানুষ নারীর টানে ঢাকা ছেড়েছে। আমাদের অফিস গত মঙ্গলবারে ছুটি দিলেও নিরাপত্তার কারণে বুধবারে বাড়িতে এসেছি। আপনারা সবাই জানেন যে বাংলাদেশে ঈদের সময় ট্রেনের অগ্রিম টিকেট পাওয়া মানে সোনার হরিণ পাওয়ার মত। অনলাইনে জুন মাসের ১৮ তারিখ ২৮ তারিখের টিকেট দেওয়া হয়েছে। মানে বর্তমানে দশ দিন আগে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট দেওয়া হয়। ১৮ তারিখ অনলাইনে টিকেট সংগ্রহ করার জন্য আমি বাসাতেই ছিলাম। আমাদের পূর্ববঙ্গের টিকেট দুপুর ১২ টার পরে অনলাইনে শো করেছিল। ইন্টারনেটগত ঝামেলার কারণে এই বছর রেল কর্তৃপক্ষ দুইটি টাইমের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট ছেড়েছে। যারা পশ্চিমবঙ্গের দিকে যাত্রা করবে তারা সকাল আটটা থেকে বারোটা পর্যন্ত টিকিট পেয়েছে আর আমাদের টিকেট বারোটা থেকে চারটা পর্যন্ত।

আমি অসুস্থতার কারণে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাসাতে অবস্থান করতেছিলাম অর্থাৎ আগেই হসপিটাল এবং ডাক্তারের কাজ করে ফেলেছিলাম।যার জন্য বারোটার পূর্বে ল্যাপটপ ওপেন করে টিকেটের আশায় বসে ছিলাম। বারোটার আগে আমি কমপক্ষে ৫০ বার রিলোড দিয়ে আমার টিকেট সংগ্রহ করার পেইজটি সচল রেখেছিলাম।কিন্তু আমার ভাগ্যের নির্মম পরিহাস স্বচক্ষে দেখেছিলাম অর্থাৎ বারোটা বাজার পরে ১০ সেকেন্ডের মধ্যে সমস্ত টিকেট উধাও হয়ে গেল। আমি চেয়েছিলাম মহানগর প্রভাতী ট্রেনের টিকেট কাটার জন্য কিন্তু ১০ সেকেন্ড পরে আমি আর কোন টিকেট দেখতে পায়নি।

আমার বাসার ওয়াইফাই এর স্পিড সম্ভবত এক সেকেন্ড স্লো ছিল যার জন্য আমি টিকিট পাইনি। আমি কিন্তু ঠিকই অনেকগুলো সিটের মধ্যে ক্লিক করেছিলাম কিন্তু ১ থেকে ২ সেকেন্ড ঘুরে তারপর আমাকে সরি বলে দিলো। ঐদিন আমি বুঝেছিলাম মানুষ কত স্পিডে কাজ করতে পারে।

যাই হোক আমি ঐদিন মহানগর প্রভাতীর টিকেট না পেয়ে আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কম্পিউটার ট্রেন তিতাসে আসার চিন্তা করলাম। সে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সমস্ত পদক্ষেপ সমাপ্ত করলাম। আমি জানি সকাল সকাল যদি বাসা থেকে বের না হয় তাহলে তিতাস ট্রেনের টিকেট পাওয়া সম্ভব নয়।যার ফলে আজকে সকাল পাঁচটার সময় রেডি হয়ে কমলাপুর এর উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলাম।কিন্তু বাসা থেকে বের হয়েই দেখলাম গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়তেছে।বৃষ্টিকে পাত্তা না দিয়ে হাইওয়ে রুটের পাশে এসে দাঁড়ালাম। গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম কিন্তু রুটের পাশে দাঁড়ানোর দুই থেকে তিন মিনিট পরেই প্রচুর বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল।দু-একটা অটো মামা কে জিজ্ঞেস করলাম সাইনবোর্ড যাবে কিনা তারা বলে জনপ্রতি ১০০ টাকা হলে যাবে যেখানে ভাড়া হলো মাত্র ১০ টাকা। অটোওয়ালা মামাদের কথা শুনে মনে হলো টাকা গাছের পাতা,গাছ থেকে ছিড়ে এনে তাদেরকে দিয়ে দেওয়া হয়। যাইহোক জনপ্রতি ৩০ টাকা করে দিয়ে আমরা সাইনবোর্ডে আসলাম। সাইনবোর্ডে আসার পরে বৃষ্টি আরো বেড়ে গেল। কি এক ঝামেলার মধ্যে পড়লাম চিন্তা করে দেখেন।

সেখানেও দুর্নীতি শুরু হয়ে গেল। এতক্ষণ তো শুনলেন পুকুর চুরির কথা। এখন যেটা বলব সেটা হল নদী চুরি। সাইনবোর্ড থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আসার লাব্বাইক বাসের ভাড়া হলো ২৫ টাকা সেই জায়গায় তারা ভাড়া চায় জনপ্রতি ২০০ টাকা। অবশেষে ১০০ টাকা করে আসতে রাজি হলো। বৃষ্টি ভিজেই গাড়িতে উঠলাম।রায়েরবাগ অতিক্রম করার পরে এমন জ্যামে পড়লাম সেটা আর ভাষাই প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

প্রায় দুই ঘন্টা জ্যামের মধ্যে থেকে আমরা ধীরে ধীরে যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার উপরে উঠলাম।ফ্লাইওভার এ উঠার পরে তেমন আর জ্যামে পড়েনি। তারপর গোপীবাগের মধ্যে থেমে থেমে কিছুটা জ্যামের মধ্যে পড়েছিলাম।আমরা যখন কমলাপুরে পৌঁছায় তখন ৮ঃ৩০ মিনিট বাজে। যখন গাড়ি থেকে নেমেছিলাম তখনোও বৃষ্টি ছিল। অবশেষে বিশাল লম্ব লাইনে দাঁড়িয়ে তিতাস ট্রেনের দুইজনের পরিবর্তে ছয়টি টিকেট কাটতে হয়েছে। তারপরে দুইটি সিট পেয়েছি।

তারপর ৯.৩০ এর ট্রেন ১০.০৫ মিনিটে কমলাপুর স্টেশন ছেড়েছিল। ট্রেনে প্রচুর পরিমাণে মানুষ ছিল। যেখানে একটি বগিতে সিট ছিল ৬০টি। সেই বগিতে মানুষ উঠেছিল প্রায় ৩০০ এর মত। অবশেষে অনেক কষ্টের পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে এসে পৌঁছলাম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আমাদের গ্রামে আসতে দুই তিনবার বৃষ্টিতে ভিজে ছিলাম। আজকের জার্নিটা হল বৃষ্টিময় জার্নি।

বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই আবার দেখা হবে, নতুন কোন ব্লগ নিয়ে, সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।