“কিডনি” নাটক রিভিউ ।। 10% beneficary for @shyfox ❤️

“কিডনি'' নাটকটি গত মাসের ত্রিশ তারিখ রিলেজ হয়েছে। রিলিজ হওয়া সাথে সাথে বিপুল আলোচনায় চলে আসে নাটকটি। মাত্র ২৮ দিনে নাটকটি ১৯ মিলিয়ন ভিউ পেয়েছে। কতটুকু জনপ্রিয় হলে এই সফলতা অজর্ন করা সম্ভব সেটা ভাবার বিষয়। শুধু তাই নয় সেই সাথে প্রায় পনের হাজার কমেন্ট ও তিন লাখের উপরে লাইক পেয়েছে। পরিচালক কাজল আরেফিন ওমে নতুন একটি বিষয় নিয়ে নাটকের কাহিনী সাজিয়েছেন। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখেই নাটকটি রিলিজ করা হয়েছিল।

নাটকের পটভূমির জন্য বেচে নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের অজপাড়া কোন গ্রাম আর সেই গ্রামের সহজ সরল মানুষদেরকে। নাটকের নাম দেখে বুঝতে পেরেছেন এখানে শুধু কিডনির খেলা। পাশা,ইভানা আর একজন ভারতীয় ডাক্তার মিলে সেই গ্রামে সেবার নামে একটি ক্লিনিক খুলে। সেই ক্লিনিকের নাম দেওয়া হয় “জনস্বার্থে আমরা” পাশা আর ইভানা গ্রামের সহজ সরল মানুষদের কে বুঝায় যে তারা নিজেদের অর্থায়নে বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামের গরীব মানুষদেরকে সেবা দিয়ে থাকে। এখানে তারা সেবা দিতে এসেছে। কিন্তুু মুহূর্তেই তারা গ্রামবাসিকে তাদের কথা ছলে ফেলে দেয় কিডনি ব্যবসা করার জন্য।

তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষদেরকে বুঝায় যে বিদেশের মানুষ এতবড়লোক হওয়ার কারন হলো তারা তাদের দুইটি কিডনি থেকে একটি করে কিডনি বিক্রয় করে দেয়। তাদের নিজেদেরও একটি করে কিডনি বিক্রয় করে দিয়েছে। একটি কিডনির দাম হলো সাত লাখ টাকা। এই সাত লাখ টাকা দিয়ে তারা গ্রামের বাজারে বড় দোকান দিয়ে ব্যবসা বানিজ্য করে খেতে পারবে। তাদের এই লোভে পড়ে গ্রামের মানুষ একের পর এক কিডনি বিক্রয় করতে থাকে। আর সহজ সরল মানুষ পেয়ে সেই কিডনি নিয়ে তারা বিদেশে পাচার করে। গ্রামে কোন শিক্ষিত লোক ছিল না। যার ফলে তাদের যড়যন্ত্র কেউ বুঝতে পারেনি। গ্রামের এক যুবক তার কিডনি বিক্রয় করে নিজে একটি আইফোন কিনেছে আরেকটি তার গার্লফ্রেন্ডকে গিফট করেছে। চিন্তা করা যায় বিষয়টা।

শুধু তাই নয় ইভানা মহিলাদেকে বুঝিয়েছে কিডনি বিক্রয় করে তাদের হাজবেন্ডদেরকে টাকা দিলে তারা অনেক খুশি হবে,বিজনেস করবে তারপর অনেক টাকা পয়সা হবে সেই সাথে তাদেরকে বেশি বেশি ভালবাসবে। সেই লোভে পড়ে অনেক মহিলা তাদের কিডনি বিক্রয় করে দিয়েছে। ভাল ভাল মানুষ তাদের কিডনি বিক্রয় করে মটর সাইকেল কিনেছে। এক লোক তার বউয়ের কিডনি না পেয়ে নিজের শালির কিডনি বিক্রয় করে দিয়েছে। এমনকি গ্রামের মেম্বারকে পর্যন্ত বোকা বানিয়ে কিডনি রেখে দিয়েছে।

গ্রামটিতে কোন শিক্ষিত লোক না থাকার কারনে তারা বাটপারি করে এই কাজ গুলো করেছে। নাটকের মধ্যে একটি লোক রয়েছে যে সবসময় বলে সে নাকি ১৯৯৮ সালে এইট পাশ করেছে যা বর্তমানে এমএ পাশের সমান। তাকে পর্যন্ত বোকা বানিয়ে কিডনি রেখে দিয়েছে। অন্য মানুষকে টাকা দিয়েছে কিন্তুু তাকে একটি বুয়া মানি চেক ধরিয়ে দিয়েছে। সেই এই চেক নিয়ে ঘুরে ঘুরে ব্যাংক খুজে কিন্তুু ব্যাক আর খুজেঁ পায় না। সব কিছু নিয়ে ডাক্তারা যখন পালিয়ে গেছে তখন সবার হুশ এসেছে। গ্রামে একজন পাগল ছিল একমাত্র সেই বেচে গেল। নাটকের মূল কথা হলো অতি চালাকের গলায় রশি।

পরে অবশ্য তারা ডিবি পুলিশের নিকট ধরা পড়েছে। তবে ধরা পড়লে কি হবে তারা তো গ্রামের সহজ সরল মানুষ গুলোর জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। এমন চক্র আমাদের দেশে এখনো আছে। যারা ক্লিনিক খুলে সেবার নামে মানুষের অঙ্গ প্রতঙ্গ পাচার করে। শুধু তাই নয় বর্তমানে তো বাংলাদেশের ডাক্তারদের কে ডাক্তার বলা যায় না কষাই বললেও কম হয়ে যায়। মানুষের বিশ্বাসের উপর নিভর্র করে তারা দিনের পর দিন টাকা ইনকামের দিকে ছুটছে। ভাল ভাবে সেবা দেয় না। দিন দিন তাদের ভিজিট বাড়াচ্ছে। জনগন কোথায় থেকে টাকা পাবে সেটা তারা চিন্তা করে না। একদিনে তারা দশ লক্ষ টাকা ইনকাম করার সুযোগ খুজে।

নিজস্ব মতামত-

নাটকটি খুবই শিক্ষনীয় একটি নাটক। আমি মনে করে নাটকটি সবার দেখা উচিত। কিছু মানুষ রুপি পশুরা ডাক্তার হয়ে সেবার নামে কিভাবে মানুষ ঠকায় সেটা দেখে বুঝা দরকার। এরকম চক্র আমাদের আশে পাশেই রয়েছে। সে জন্য সব সময় চোখ কান খোলা রাখতে হবে। নতুন কোন বিষয় দেখলে বা জানলে সেটা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। আরেকটি বিষয় হলো কখনো লোভ করা যাবে না। লোভে পড়লে সব শেষ হয়ে যাবে। মানুষের জীবনে শিক্ষা যে কতটা জরুরী সেটা এই নাটকের মধ্যে খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলা হয়েছে। চরম হাসিঁ আর মজার নাটকটি দেখতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।