“ মিথ্যা বলা বারণ” নাটক রিভিউ ।। 10% beneficary for @shyfox ❤️

মূল চরিত্রেঃ

• অপূর্ব
• সাফা কবির

সংক্ষেপ রিভিউ

স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব

আজকের নাটকটি সমাজের ঘৃন্য,অভিশপ্ত একটি অভ্যাসকে কেন্দ্র করে সাজানো হয়েছে। যদি আপনারা নাটকটি ঠিক ভাবে দেখেন তাহলে অবশ্যই কিছুটা শিক্ষা অর্জন করতে পারবেন। হামেদ হাসান নোমান পরিচালিত মিথ্যা বলা বারণ নাটকটি আমি দেখেছি আরো দুইদিন আগে। আজকে সে নাটকের রিভিউ আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে বসলাম। নাটকটি ৩০শে জুন ২০২৩ ইং তারিখে রিলিজ হয়েছে। এখন পর্যন্ত এক মিলিয়ন প্লাস ভিউ হয়েছে। এর দ্বারা বুঝা যায় দর্শকরা নাটকটি ভালই দেখেছে। মাত্র দুই মাসে দুই মিলিয়নের কাছাকাছি ভিউ চলে গেছে। তাছাড়া নাটকটি তেইশ হাজার লাইক এবং ছয়শত কমেন্ট পেয়েছে। সব কিছু বিবেচনা করে নাটকটির জনপ্রিয়তা খুব সহজেই বুঝা যাচ্ছে।

নাটকটি শুরু হয় অপূর্বের মিথ্যা বলা দিয়ে। সে সিএনজি থেকে নেমে ড্রাইভারকে দুইশো টাকা দেয়। সিএনজি ড্রাইভার বলে ভাড়া তো তিনশত টাকা। অপূর্ব বলে আমি তো দুই আঙ্গুল উঠিয়ে দুইশো টাকা বলেছিলাম। ড্রাইভার বলে এটা আমার সাথে অন্যায় করছেন। তারপর অপূর্ব বলে আপনি মিটার নিয়ে গাড়ি চালান না কেন। মিটার না থাকার কারনে আপনাকে জরিমানা করা হবে। এমন কথা শুনে ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে চলে গেল। সাথে সাথে অপূর্ব এর অফিসের বস ফোন দিয়ে বলে এখন এগারোটা বাজে আপনি এখনও অফিসে আসেন নি। অপূর্ব দারোয়ান থেকে বসের শার্টের কালারটা চট করে জেনে নেয়। তারপর বললো কি বলেন আমি তো সেই নয়টার সময় অফিসে এসে বসে আছি। আপনাকে দেখলাম ব্লো কালার শার্ট পড়ে এসেছেন। বস বলে ঠিক আছে আমার অফিসে আসেন।

অপূর্ব বলে যাক আজকের দিনটা খুব সুন্দর ভাবেই শুরু হয়েছে। এভাবেই অপূর্ব অফিসের বাহিরে ভিতরে প্রমিকার সাথে মিথ্যা কথা বলে বেড়ায়। মানে মিধ্যা বলা তার অভ্যাসে পরিনত হয়ে গেছে। নিজে অফিসে সারাদিন গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলে। নিজে কাজ করে না। মিথ্যা কথা বলে অন্য মানুষকে দিয়ে কাজ করায়। আবার অন্যদিকে মিথ্যা আর চাপাবাজি করে অফিসের বসকে নিজে কবজায়,নিজের সাপোর্টে নিয়ে আসে। যার ফলে অফিসের বসও অপূর্বকে কিছু বলে না।

একদিন অপূর্ব খুব সুন্দর করে একটি মিথ্যা নাটক সাজিয়ে অপূর্ব তার বসের কাছ থেকে একটি গাড়ি, ৫০ হাজার টাকা,চার দিন মেডিকেল ছুটি নিয়ে নেয়। কি সেই মিথ্যা নাটক সেটি জানতে হলে দেখতে হবে আপনাদের নাটকটি। অফিস থেকে গাড়ি নিয়ে গার্লফ্রেন্ডের সাথে মিট করতে যায়। যাওয়ার সময় গার্লফ্রেন্ডের চাওয়া অনুযায়ী কালো গোলাপ নিয়ে যায়। কালো রং দিয়ে লাল গোলাপকে কালো বানিয়ে নিয়ে বলে তার কাজিনের মাধ্যমে সুইজারল্যান্ড থেকে নিয়ে এসেছে। কত বড় মিথ্যা কথা চিন্তা করেন।

শুধু তাই নয় প্রেমিকার বাবার কাছে ইনিয়ে বিনিয়ে এমন সব মিথ্যা কথা বলেছে যে গুলো শুনলে আপনাদের মাথার চুল পড়ে যাবে। যার থাকার ঘর নেই তারা নাকি আগে গ্রুপ কোম্পানির মালিক ছিল। আর অপূর্বর মিথ্যার ফাঁদে পড়ে প্রেমিকার বাবাও বিয়ে দিতে রাজি হয়ে যায়। অপূর্ব মূলত সম্পতির লোভে সাফা করিবকে ভালোবেসে ছিল। কিন্তুু সেটা সে কারো কাছে প্রকাশ করেনি। এই নাটকে আরো একটি মজার জিনিষ আছে। আর সেটা হলো সাফা কবিরের রান্নার সিস্টেম। সে এমন ভাবে রান্না করে যা শুনলে হাসঁতে হাঁসতে চেয়ার থেকে পড়ে যাবেন।

এভাবে মিথ্যা বলতে বলতে এক সময় সে তার ক্লাস টিচারের সাথেও মিথ্যা কথা বলে ফেলে। সেটা খুবই মর্মান্তিক একটি ব্যাপার। এতক্ষন যে মিথ্যা কথা গুলো বলেছে সব গুলো শুনলে হাঁসি পাবে। তবে টিচারের সাথে যে মিথ্যা কথা গুলো বলেছে তার জন্য আপনাদের ভিতরে অনেক কষ্ট হবে। এখানে অপূর্ব মিথ্যা কথা গুলো না বললেও পারতো। তবে এটাই তার মিথ্যা কথা ছাড়ার একটি উপায় ছিল। তার মিথ্যা কথার কারনে তার ক্লাস টিচার মনে অনেক কষ্ট পেয়েছে। পরে অবশ্য সেই টিচার অপূর্বর মুখোমুখি হয়ে তাকে মিথ্যা ছাড়ার পরামর্শ দেয়।

এর পর থেকে অপূর্ব মিথ্যা কথা বলতে গিয়েও মিথ্যা বলতে পারে না। যার ফলে অপূর্ব যেখানে চাকরি করে সেখানের সব অর্ডার বাতিল হয়ে যায়। অপূর্বর চাকরি চলে যায়। তার প্রেমিকার সাথে ব্রেকাপ হয়ে যায়। পরে সে বুঝতে পারে এতদিন সে খুব অন্যার কাজ করে এসেছে। এখন থেকে সে সত্য কথা বলতে চায়। তার মিথ্যার কথা বলার পিছনে অনেক বড় একটি কারন লুকিয়ে আছে। আর সেই কারনটি জানতে হলে চট করে ইউটিউব থেকে নাটকটি দেখে ফেলুন।

মতামত বা শিক্ষা-
এই নাটকটিতে বড় একটি শিক্ষা রয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় ছোট ছোট মিথ্যা কথা বলতে বলতে এমন জাগায় গিয়ে মিথ্যা কথা বলে ফেলে, যার জন্য সারাজীবন অনুতপ্ত হতে হয়। তাছাড়া সব র্ধমেই মিথ্যা কথা বলা মহাপাপ। একটি মিথ্যা কথা ঢাকতে গিয়ে একশত মিথ্যা কথা বলতে হয়। সুতরাং আমাদের ‍উচিৎ সর্ব ক্ষেত্রে মিথ্যা পরিহার করা। ষাট সত্তর বছর জীবনের মধ্যে অন্যকে ঠকিয়ে কি লাভ। তা ছাড়া মিথ্যা বলে যে সম্পতি অর্জন করা হয় সেটা সবাই ভোগ করতে পারে না। শুধু গুনার বোঝা মাথায় নিয়ে পরপারে যেতে হয়।