জিনিষ যেটা ভালো দাম তার একটু বেশি।

হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই। আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো। মাঝে মাঝে কোন জিনিষ বেশি দামে কিনে সেই জিনিষটা যখন অন্য জাগায় কম দামে বিক্রয় করতে দেখি তখন খুবই কষ্ট লাগে। নিজেকে বোকা বোকাও মনে হয়। এমনি একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে যাচ্ছি।

বৈদ্যুতিক লাইট বা বাতি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ। বর্তমানে বিদ্যুত ছাড়া আমাদের জীবন যেমন অকল্পনীয় ঠিক তেমনি রাতের বেলা বাল্ব ছাড়া আলো পাওয়া অকল্পনীয়। আমি ২০১৯ সালে মেসে থাকার সময় ৩৫০ টাকা দিয়ে একটি বৈদ্যুতিক লাইট কিনেছিলাম। আপনারা হয়তো বলতে পারেন,আমার মত এত বোকা মানুষ এখনো বেঁচে আছে কিভাবে...? বাংলাদেশে তো প্রায় অনেক বছর ধরে কোম্পানির প্রচারের জন্য ৩০০ টাকার লাইট ১০০ টাকা দিয়ে বিক্রয় করতেছে। তাহলে আপনি ৩৫০ টাকা দিয়ে কেন লাইট কিনলেন। আপনাদের মনের ধারনা বা চিন্তা শতভাগ সত্য। রাস্তায় অটোরিকশা দিয়ে ঘুরে ঘুরে তিনশো টাকার লাইট একশত টাকায় বিক্রয় করতে আমি দেখেছি এমনকি প্রতিদিনই দেখি। শুধু তাই নয় মাঝে মাঝে একশত টাকায় একটি লাইট কিনলে সাথে দুইটি লাইট ফ্রী দেয়। তার মানে প্রতি লাইটের দাম পড়লো ৩৩ টাকা ৩৩ পয়সা।

আমি ২০১৯ সালে ৩৫০ টাকা দিয়ে যে লাইট কিনেছিলাম সেটা ২০২৩ সালে এখনও দিব্যি আলো দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি অন্যন্য লাইট থেকে অনেক বেশি আলো দেয়। আলো বেশি থাকার কারনে এটি বন্ধ রেখে অন্য একটি লাইট জ্বালানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভূব করলাম। যার ফলে ফেমিলি বাসা নেওয়ার সময় ২০২৩ সালের জানুয়ারী মাসে দুইটি লাইট কিনেছি ২০০ টাকা দিয়ে। মোটামুটি ভালোই আলো দেয়। সে জন্য ওয়াশরুম আর কিচেন রুমের জন্য আরো দুইটি লাইট কিনলাম। তখন আমি ৩৫০ টাকা দিয়ে লাইট কেনার ফলে নিজেকে সত্যিই গাদা মনে করতে লাগলাম। কিন্তুু আসল খেলা এখনো বাকি আছে সেটা জানা ছিলো না।

যায়হোক লাইট কেনার সময় দোকানদার আমার পূর্ব পরিচিত থাকার কারনে ওয়ারেন্টি কার্ডে বিক্রির তারিখ লিখে দেয়নি। বলেছে যখন ইচ্ছা তখন এসে পরিবর্তন করে নিয়ে যাবেন। আমি তো মহা খুশি। তিন মাস যেতে না যেতেই একটি লাইট নষ্ট হয়ে গেল। লাইট নিয়ে দোকানদারকে ফেরত দিলাম একটি নতুন লাইট দিয়ে দিলো। তারপর কয়েক মাস পরে আবার আরেকটি নষ্ট হয়ে গেছে। ফেরত দিয়ে নতুন নিয়ে আসলাম। এভাবে আট মাসের মধ্যে চারটি লাইট ই পরিবর্তন করেছি। কিন্তুু আমার ৩৫০ টাকার লাইট ঠিকই আলো দিয়ে যাচ্ছে।

এখানে একটি চালাকি করেছিলাম যে লাইটই নষ্ট হতো প্রতিবারই আমি নতুন কভারটি নিয়ে যেতাম। পুরাতন কভার নিয়ে গেলে যদি পরিবর্তন করে না দেয় সে জন্য নতুন কভারের ভিতরে পুরাতন লাইট ঢুকিয়ে নিয়ে গিয়ে দোকানদারকে বলতাম কভার এখনো নতুন রয়েছে,কয়দিন আগে নিলাম আবার নষ্ট হয়ে গেছে। দোকানদার দেখে বলতো ঠিকই তো কভার তো একেবারে নতুন চকচক করছে। মনে হয় গত মাসে নিয়েছে। তখন নতুন লাইট দিয়ে দিতো। তখন নিজেকে অনেক চালাক আর বুদ্ধিমান মনে করতে লাগলাম,হি হি হি।

গত পরশুদিন সন্ধার সময় হঠাৎ লক্ষ করলাম দুইটি লাইট জ্বলছে না। চিরতরে নিভে গেছে। কত আর পরিবর্তন করা যায়। তারপরেও নতুন লাইট পাওয়ার আশায় লাইট নিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করলাম। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস একটি লাইট খোলার সময় ভেঙ্গে গেছে,কি সর্বনাশ হলো আমার। তারপর দ্বিতীয় লাইটটি খুব সাবধানে খুলে নিলাম। ভাঙ্গা লাইটিটি ফেলে দিয়ে অন্যটি নিয়ে দোকানদারের কাছে গেলাম। দোকানদার হতাশার বানী শোনালেন। বললেন আগের কোম্পানির লোক আর আসে না,লাইটও পরিবর্তন করে দেয় না তাই নতুন লাইট কিনে নিতে হবে। এগিকে পকেটের অবস্থা খুবই খারাপ,মাস শেষে হয়েছে এখনো সেলারি আসে নাই। যায়হোক বাধ্য হয়ে বাকিতে দুইটি লাইট নিলাম।

কোম্পানি আমাদের চালাকি বন্ধ করার জন্য নতুন সিস্টেম চালু করেছে। প্রত্যেকটা লাইটের গায়ে একটি করে কোড নাম্বার লাগিয়ে দিয়েছে। আর ওয়ারেন্টি কার্ডের মধ্যেও সেই কোড নাম্বার লিখে দিয়েছে। একটি লাইটের জন্য একটি কার্ডই থাকে। এক লাইটের কার্ড দিয়ে অন্য লাইট পরিবর্তন করে দিবে না। তার মানে কার্ড গুলো যত্ন করে রাখতে হবে। এবার ওয়েন্টি কার্ডে তারিখ লিখে দিয়েছে। টাইম শেষ হওয়ার পরে নষ্ট হলো লাইট বাতিল।

এই ছিল আমার আজকের আয়োজন। আশা করছি আপনারদের কাছে ভালো লাগবে। আবার দেখা হবে ন নতুন কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন। সব শেষে একটি কথাই বলবো, জিনিষ যেটা ভালো দাম তার একটু বেশি হে হে হে।

আমি একজন বাংলাদেশের সাধারন নাগরিক। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে আমার বসবাস। সিম্পল আমার স্বপ্ন সিম্পল আমার জীবন। স্টিমিট আমার জীবনের একটি অংশ, আমার বাংলা ব্লগ আমার পরিবার। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া বলতে আমি স্টিমিটকেই চিনি। ভ্রমন করা, ফটেগ্রাফি করা আর বই পড়া আমার স্বপ্ন। আমি বিশ্বাস করি মানুষের জীবনে উত্তান পতন আছেই। সর্বপরি কাজ করতে হবে লেগে থাকতে হবে, তাহলেই একদিন সফলতা আসবে,এটাই আমি বিশ্বাস করি। সবাইকে ধন্যবাদ।।