ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে ওয়াজ শোনা খাওয়া-দাওয়া ও ঘোরাঘুরি করার কিছু মুহূর্ত।
প্রিয় আমার বাংলা কমিউনিটির ভাইবোন বন্ধুরা,
তো ওয়াজ মাহফিলটা অনুষ্ঠিত হয়েছিল মূলত গাংনী খানকা শরীফ মাদ্রাসায়। মাহফিলটা হওয়ার কথা ছিল তিন দিনব্যাপী এবং সেটা হয়েওছিল। তবে আমার তিন দিন যাওয়ার সুযোগ হয়নি কিন্তু আমরা দুইদিন গিয়েছিলাম। তো প্রথম দিন আমরা যখন মাহফিলে পৌছাই তখন হয়তো বা রাত প্রায় এগারোটা বেজে গিয়েছিল। তো আমরা সেখানে পৌঁছে দেখি অনেক অনেক স্টল বসেছে। আর মানুষজনের পচুর ভিড়। যাই হোক এরপর বাইরে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর ভিতর দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। ভিতরে যাওয়ার সময় দেখি মাহফিলের গেটটা বেশ ভালই সাজিয়েছিল। তারপর মাহফিলের ভিতরে গিয়ে দেখি বক্তাদের জন্য একটা স্টেজ এবং আমাদের বাসার জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা করেছিল। এবং দুই সাইডে এবং উপরে খুব সুন্দর ভাবেই ঘেরা ছিল।
তবে এই চেয়ারের ব্যবস্থা করা দেখে আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম কারণ এই প্রথমবার দেখলাম কোনো মাহফিলে আমাদের বসার জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা করেছিল। যদিও বা চেয়ারে ব্যবস্থা করার কারণে সবাই বসতে পারেনি কারণ চেয়ারে তুলনায় মানুষজন অনেক বেশি ছিল। যাইহোক এরপর আবারো বাইরের দিকে আসলাম বাইরে এসে অনেক অনেক খাবার দেখে ভাবলাম কিছু একটা খাওয়া যাক। তো এবারে ওয়াজ মাহফিলে দেখলাম অনেক নতুন নতুন খাওয়ার জিনিস ছিল। যেমন স্যান্ডউইচ,বার্গার,চিংড়ি ইত্যাদি। আসলে সাধারণত এ ধরনের খাবারগুলো খুব একটা দেখা যায় না । যাই হোক ভাবলাম কিছু একটা খাব তো সেই ভাবনা থেকেই তিনজনে তিনটা চিংড়ির চপ নিয়ে নিলাম। কিন্তু খেতে খুবই বাজে ছিল যার কারণে ওখান থেকে আর কিছুই খাওয়া হয়নি। যাইহোক কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই দিনের মাহফিলটা শেষ হয়ে গেল এবারে ছিল তবারক বিতরণের পালা। তো এই তাবারক বিতরণের সময় অন্যরকম এক ঝড় দেখতে পারলাম। যাই হোক সেটা আর না বলি।
এইতো গেল প্রথম দিন মাহফিলে যাওয়ার অনুভূতি এবার আসা যাক পরের দিনে। পরের দিন যখন প্রায় দশটা বেজে আসছে তখন আমার বন্ধু আকাশ আমাকে মেসেজ দিয়ে বলল মাহফিলে যেতে হবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি চলে আয়। তো আমি ওর কথা মত কোনরকম প্রস্তুত হয়েই চলে গেলাম রাস্তায়। তো রাস্তায় গিয়ে দেখি আকাশ দাঁড়িয়ে আছে এবং ও বললো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে আমাদের আরো দুইটা বন্ধু নয়ন এবং সাহরিয়া আসছে। তো কিছুক্ষণের মধ্যে ওরা দুজন চলে আসলো তারপর আমরা চারজন মিলে রওনা দিলাম মাহফিলের উদ্দেশ্যে। তো মাহফিলে গিয়ে প্রথমে মেন জায়গায় গেলাম। তো সেখানে কিছুক্ষণ থেকে আবারও বাইরের দিকে বেরিয়ে আসলাম । তো বাইরে এসে যেই রাস্তায় সুন্দর করে লাইট দিয়ে সাজিয়ে রেখেছে সেখানে আমরা কিছু ফটো তুলছিলাম।
আপনারা এখানে চটপটির পাশে দুইটা খিচুড়ির প্যাকেট দেখে ভাইবেন না যে আমি দুইটা তাবারক নিয়েছি। আসলে পাশেরটা আমার বন্ধু ছিল।
তো এই ফটো তুলতে তুলতেই দেখি অনেক সময় পার করে ফেলেছি। তারপর এই ফটো তোলা শেষ করে যখন ভাবলাম এবারে গিয়ে কিছু খাওয়া যাক ঠিক তখনই মাইকে বলতে শুনলাম যে মাহফিল এখনই শেষ হয়ে যাবে। এটা শুনে বেশ অবাক হয়েছিলাম কারণ তখন বাজছিল রাত এগারোটা সাধারণত এত তাড়াতাড়ি মাহফিল শেষ হয় না। তো যাই হোক যেহেতু মাহফিল শেষ হয়ে যাবে এই সময় তাবারক বিতরণ করবে। আর তাবারক কি আর ছাড়া যায় তাই সোজা চলে গেলাম তাবারক নিয়ে আনতে। তো তাবারক নিয়ে বাইরে এসে ভাবলাম যে এবারে এই শেষ মুহূর্তে কিছু একটা খাওয়া যাক। তো সামনে চটপটি দোকান দেখে সবাই মিলে চটপটি খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। তো সেই সিদ্ধান্ত থেকেই আমরা চলে গেলাম চটপটি খেতে। তো চটপটি অর্ডার করার কিছুক্ষণের মধ্যেই উনি আমাদেরকে চটপটি বানিয়ে দিল কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে এযাবৎকালে আমি যত চটপটি খেয়েছি তার মধ্যে এটাই সবথেকে বাজে লেগেছে। আর এই বাজে লাগার পিছনে মেন কারণ লবণ অনেকটাই বেশি দিয়ে ফেলেছিল। প্রথমে ভাবছিলাম হয়তো আমার টা তে লবণ বেশি কিন্তু পরে জানতে পারি যে আমার বন্ধুদেরটাও লবণ অনেক বেশি হয়েছে।
তো এ লবণ ওয়ালা চটপটি খেয়ে শেষে ভাবলাম জিলাপি খেয়ে মুখটা মিষ্টি করে যাক। তো সেই সময়টা যেহেতু একদম শেষের দিকে ছিল তাই জিলাপি দেখি প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ার মতোই অবস্থা। দুই জায়গায় অল্প অল্প করে জিলাপি ছিল আর আমাদের সামনে থেকেই দেখি সমস্ত জিলাপি গুলোই দুই জন এসে কিনে নিয়ে গেল। তাই ভাবলাম জিলাপি খাওয়া হয়তো আর হবে না কিন্তু দেখি একজনের কাছে এখনো কিছু পরিমাণ গুড়ের জিলাপি অবশিষ্ট আছে। তো সেটা দেখে আমরা সেখান থেকেই কিছুটা জিলাপি কিনে খেয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। তবে চটপটি খারাপ লাগলে জিলাপি খেতে কিন্তু বেশ ভালই লেগেছিল।
তো প্রিয় আমার বাংলা কমিউনিটির ভাই বোন বন্ধুরা, এই ছিল আমার আজকের পোস্ট। তো আমার আজকের পোস্টে আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। আর হ্যাঁ এটাই ছিল আমার এই বছরের প্রথম ওয়াজ মাহফিলে যাওয়া। সবকিছু বেশ ভালই ছিল এবং ওয়াজের বক্তব্য গুলো ভালো ছিল। তো আজকের মতো এটুকুই আবারো খুব শীঘ্রই নতুন কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে ইনশা-আল্লাহ। ততক্ষণ সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন নিজের খেয়াল রাখবেন।
https://twitter.com/MdJohir65/status/1726640971168059728?t=dFDZ3zuPYe41DBP_RcbvFg&s=19
ওয়াজ মাহফিলে কাটানো মুহূর্তগুলো শেয়ার করেছেন দেখে ভালো লাগলো। যেহেতু শীতকাল চলে এসেছে তাই এখন সব জায়গাতেই এই ওয়াজ মাহফিল গুলো হচ্ছে। আমাদের এদিকেও বেশ কয়েকটি হয়েছে। আমাদের বাসা থেকে স্পষ্ট শোনা যায়। তাই কখনো যাওয়া হয় না। তবে বাসা থেকে বের হলে দেখতাম বেশ কিছু স্টল বসেছে। এগারোটায় ওয়াজ মাহফিল শেষ শুনে একটু অবাক হলাম কারণ এত তাড়াতাড়ি তো আর কোথাও শেষ হতে দেখিনি। চটপটি খাওয়ার কথা শুনে খারাপ লাগলো।
আমাদের বাসা থেকেও ওয়াজ শোনা যায় তবে যেহেতু বন্ধুরা সবাই যেতে চাইছিল তাই আর না করিনি।
আমি কিছুদিন আগে ভাইয়া এই মাদ্রাসায় গিয়েছিলাম আমার ছোট ভাইয়া ওই মাদ্রাসায় পড়ে। ইস আপনার সাথে দেখা হতো তাহলে ভীষণ ভালো লাগতো। ওখানকার পরিবেশটা আমার ভীষণ ভালো লাগছিল এবং ওখানকার ছবিও আমি তুলে ধরেছি। আপনি রাতে তুলে ধরেছেন। অনেক ভালো লাগলো। অনেক সুন্দর ভাবে বন্ধুগুলো মিলে খাওয়া-দাওয়া করেছেন। সবাই মিলে দারুন মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। যদি এবার কখনো যায় তাহলে অবশ্যই আপনার সাথে দেখা করব।
হ্যাঁ ভাই যদি আপনার সাথে দেখা হতো তাহলে আমারও বেশ ভালো লাগতো। ইনশা-আল্লাহ পরে কখনো দেখা হয়ে যাবে। যাইহোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে সুন্দর ভাবে গুছিয়ে মন্তব্যটি করার জন্য।