গতকাল রাতে বন্ধুদের সাথে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ খেলা দেখার অনুভূতি।
প্রিয় আমার বাংলা কমিউনিটির ভাইবোন বন্ধুরা,
ব্রাজিল বনাম ক্রোয়েশিয়া
আমরা ওখানে পৌঁছে দেখি খেলা শুরু হয়ে গেছে। দেখলাম প্রায় ১০০ জন নতুন হাজির হয়ে গেছে খেলা দেখার জন্য। আর দেখছি একজন চটপটি ওয়ালা হাজির চটপটি বিক্রয় করার জন্য। প্রথমে আমার কয়েকটা বন্ধু খেলা দেখতে চলে গিয়েছিল। আমি পৌঁছে দেখছি তাঁরা একটা উচু জায়গায় উঠে খেলা দেখছে। আমরাও বাকিরা যারা ছিলাম সবাই ওইখানে উঠে পড়লাম খেলা দেখার জন্য। খেলা হচ্ছিল মূলত ব্রাজিলের সাথে ক্রোয়েশিয়া নামের একটা দেশের সাথে। যেহেতু এটা হারলেই আর সুযোগ নেই তাই সবাই নিজের জায়গা থেকে বেস্ট খেলার চেষ্টা করছিল। দেখছিলাম ব্রাজিল যখন বল গোলের কাছে নিয়ে যাচ্ছিল তখন যারা ব্রাজিলের সাপোর্টার ছিল তারা নাচানাচি করছিল। আর যখন ক্রোয়েশিয়া ব্রাজিলের দিকে বল নিয়ে যাচ্ছিল তখন যারা আর্জেন্টিনা সাপোর্টার ছিল তারা নাচানাচি করছিল। আসলে এবার খেলা দেখে বুঝতে পারলাম সবাই মিলে একসাথে খেলা দেখার মজাটাই আলাদা।
যাই হোক খেলা দেখলাম দুই দলই তার নিজের জায়গা থেকে বেস্ট খেলার চেষ্টা করছিল। তবে ক্রোয়েশিয়া থেকে ব্রাজিলের পায়ে তুলনামূলকভাবে একটু বেশি বল ছিল। ব্রাজিল ক্রোয়েশিয়ার গোলে অনেকগুলো হিট করছে তবে একটাও ভালো মতো না হওয়ার কারণে গোল হয়নি। ক্রোয়েশিয়া ও অনেকবার চেষ্টা করেছে কিন্তু তারাও গোল দিতে সক্ষম হচ্ছিল না। এভাবেই টান টান উত্তেজনার মধ্যে খেলাটা চলছিল কিন্তু ৯০ মিনিট হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও কোন দলের কাছ থেকে একটা গোলেরও দেখা পাওয়া গেল না। যেহেতু ম্যাচ ড্র হয়েছে তার জন্য আরও ৩০ মিনিট একটা ম্যাচ হলো। ১০৫ মিনিটে ব্রাজিল একটা গোল দিয়ে দিল। ব্রাজিলের সাপোর্টাররা তো অনেক খুশি কারণ যে ম্যাচ চলছিল এটাতে একটা গোল দেওয়া মানেই অনেক কিছু। তারপর খেলা চলতে চলতে যখন ম্যাচ শেষ হতে আর তিন মিনিট বাকি তখনই ক্রোয়েশিয়া একটা গোল দিয়ে দিল। আবারো ম্যাচ ড্র হয়ে গেল। এবারে হলো পেনাল্টি। এখানে ব্রাজিল প্রথম গোলটাই মিস করে দেয়। কিন্তু ক্রোয়েশিয়া গোলটা দিয়ে দেয়। সেকেন্ড পেনাল্টিতে ব্রাজিলও গোল দিয়ে দেয় ক্রোয়েশিয়াও গোল দিয়ে দেয়। থার্ড পেনাল্টিতেও ব্রাজিলও গোল দিয়ে দেয় ক্রোয়েশিয়াও গোল দিয়ে দেয়। তারপর চতুর্থ পেনাল্টিতে ক্রোয়েশিয়া গোল দিয়ে দেয় কিন্তু ব্রাজিল গোল দিতে পারে না। যেহেতু ব্রাজিল দুইটা গোল দিতে পারেনি আর ক্রোয়েশিয়া চারটি গোলই দিয়ে দিয়েছি। তাই এই ম্যাচটাতে ক্রোয়েশিয়া দেশটি জয়লাভ করে।
ক্রোয়েশিয়ার জয়লাভে আর্জেন্টিনা সাপোর্টারদের আনন্দ।
আর্জেন্টিনা বনাম নেদারল্যান্ডস
কিন্তু ৩৪ মিনিটে দেখি আর্জেন্টিনা একটি গোল দিয়ে দিয়েছে। সবাই তো ইচ্ছামতো নাচানাচি শুরু করে দিয়েছে। যাই হোক আনন্দ উল্লাসের পর আবারো খেলা শুরু হয়ে গেল। এবার হাফ টাইম হয়ে গেল কিন্তু আর কোনো বলে দেখা পাওয়া যায়নি। তারপর দুই দলই তাদের নিজের মতো করে খেলছিল। কিন্তু ৭০ মিনিটে গিয়ে দেখি আর্জেন্টিনা একটি পেনাল্টি পেয়ে গিয়েছে। দেখলাম পেনাল্টিতে মেসি গোল দিয়ে দিল। সবাই তো অনেক খুশি ভাবছে এবার হয়তো জিতে গেছি। কারণ আর খুব বেশি সময় ও নাই।
কিন্তু ৮২ মিনিটে গিয়ে দেখি নেদারল্যান্ডস একটি দারুন গোল দিয়ে দিয়েছে। আর্জেন্টিনার সাপোর্টাররা সবাই স্থির হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাও তারা একটু শান্ত থাকলো কারণ এখনো তো এক গোলে এগিয়ে আছে। তারপর ম্যাচের টাইম প্রায় শেষের দিকে এক মিনিট মত সময় আছে তখনই আর্জেন্টিনার একটা প্লেয়ার ডি বক্সের একটু বাইরে ফাউল করলো। ধরতে গেলে নেদারল্যান্ডস এর কাছে এটাই লাস্ট সুযোগ। সবাইকে অবাক করে দিয়ে নেদারল্যান্ডস এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে তারা আরও একটা গোল করে দিল। এখানে আর্জেন্টিনার খেলাতেও আবার ম্যাচ ড্র হয়ে গেল। আবার ৩০ মিনিট টাইমের একটা ম্যাচ হবে। এদিকে অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে ভাবছিলাম বাড়ি চলে যাব। কিন্তু ঘুম আর আসছিল না তাই বাড়ি চলে আসলাম না। ৩০ মিনিট খেলাই দেখলাম কেউ একটা গোলও দিতে পারল না। তারপর আর্জেন্টিনারাও পেনাল্টি পর্যন্ত চলে গেল। প্রথমে নেদারল্যান্ডস পেনাল্টি মারল কিন্তু এখানে আর্জেন্টিনার গোলকি গোলটাকে সেভ করে দিল। আর আর্জেন্টিনার প্রথম পেনাল্টি মেসি হিট করলো। প্রথম শট এই গোল হয়ে গেল। এরপর নেদারল্যান্ডস গোলে হিট করলো। সবাইকে অবাক করে দিয়ে এবারও আর্জেন্টিনার গোলকি এই গোলটাকেও সেভ করে দিল। এবারে সবাই মোটামুটি শিওর হয়ে গেছে যে আর্জেন্টিনায় জিতবে। তারপরে আর্জেন্টিনা গোল দিয়ে দিল। এরপর আবার নেদারল্যান্ডও গোল দিয়ে দিল। তারপর আবার আর্জেন্টিনাও গোল দিয়ে দিল। তারপর নেদারল্যান্ডও আরেকটা গোল দিয়ে দিল। এবারে আর্জেন্টিনা একটা গোল দিতে পারলে ম্যাচটি জিতে যাবে। বাট এবারের আর্জেন্টিনার প্লেয়ারটা গোলটা মিস করলো। তারপর নেজারল্যান্ড আরও একটা গোল দিয়ে দিল। এবারে আর্জেন্টিনার কাছে আরেকটা চান্স এটা গোল দিতে পারলে জয় লাভ করবে। আর যদি না দিতে পারেন তাহলে নেদারল্যান্ডস আর একটা চান্স পেলেও পেতে পারে।
শেষে একটা কথা বলতে হচ্ছে সবাই তার নিজের নিজের জায়গা থেকে ভালো করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু খেলায় যেহেতু হার-জিত থাকে তাই একজনকে তো হারতে হবেই। যাই হোক আরো একটা কথা বলব আমি ঐদিন রাতে আর্জেন্টিনা খেলা থেকেও ব্রাজিলের খেলা দেখে বেশি ইনজয় করেছিলাম।
তোর প্রিয় আমার বাংলা কমিউনিটির ভাইবোন ও বন্ধুরা ছিল আমার সেদিন রাতে খেলা দেখার অনুভূতি। আশা করি ভালো লেগেছে। আজকের মত এটুকুই আবারো খুব শীঘ্রই নতুন কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে ইনশা-আল্লাহ। ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন নিজের খেয়াল রাখবেন।
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
আসলে বন্ধুদের সাথে একসাথে এভাবে খেলা দেখার মজাই আলাদা ৷ বন্ধুরা পাশে থাকলে যেকোনো জায়গায় অন্যরকম মজা হয় ৷ যাই হোক গতকালের খেলা আমিও দেখেছি তবে টিভিতে ৷ আপনি বন্ধুদের সাথে বেশ চমৎকার সময় কাটিয়েছেন এবং খেলা উপভোগ করেছেন ৷ তবে ঠিক বলেছেন আপনি খেলায় সবাই ভালো করার চেষ্টা করেছেন নিজ নিজ জায়গায় থেকে কিন্তু খেলায় তো হার জিত থাকবেই ৷
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আমি সেই দিন ব্রাজিল আর্জেন্টিনার খেলা দেখেছিলাম।বাসার পাশেই একটা প্রজেক্টার লাগিয়েছিলো,ব্রাজিলের খেলার সময় ব্রাজিল রা বল নিলেই কি সেই চিৎকার।তাদের চিৎকারের ধরন দেখেই বুঝা যায় কে গোল দিয়েছে 😉।আর আর্জেন্টিনার কথা কি বলবো হলুদ কার্ডের ছড়াছড়ি। বেশ ভালোই লেগেছে। আর বন্ধুদের সাথে খেলা দেখার মজাই আলাদা।ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে
আপনিও খেলা দেখেছেন যেন ভালো লাগলো। আপনি ঠিক বলেছেন এবারে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা বনাম নেদারল্যান্ডস এর ম্যাচটিতেই মনে হয় সবচেয়ে বেশি হলুদ কার্ড ছিল। ধন্যবাদ আপু আপনাকে আমার পোস্টে মন্তব্য করার জন্য।
খেলা দেখার অনুভূতিটা সত্যিই দারুন ছিল আপনার বন্ধুদের সঙ্গে খেলা দেখার অনুভূতি আমাদের সঙ্গে চমৎকারভাবে আপনি তুলে ধরেছেন। আসলে গত ম্যাচটা ছিল আর্জেন্টিনার বাঁচা মরার লড়াই এই ম্যাচে আর্জেন্টিনা হেরে গেলে বাদ হয়ে যেত। আমরাও আপনার মত প্রজেক্টর এ অনেক রাত অব্দি খেলা দেখেছিলাম যদিও আমি আর্জেন্টিনার অনেক বড় একজন ভক্ত। শেষে আর্জেন্টিনার জয় দেখে নিজের অজান্তে কান্না শুরু করে দিয়েছিলাম। যাইহোক আর্জেন্টিনার পরবর্তী ম্যাচগুলোর জন্য শুভকামনা রইল।
আপনি আর্জেন্টিনা সাপোর্টার যেন ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টে মন্তব্য করার জন্য।
সেদিনের দুটা ম্যাচই খুব দুর্দান্ত ছিল। আর্জেন্টিনা সাপোর্টার হলেও সেদিন ব্রাজিল হারার কারণে কিছুটা খারাপ লেগেছে। কারণ ভেবেছিলাম ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সেমিফাইনাল হবে। ব্রাজিল এবং ক্রোয়েশিয়া অনেক বেশি চেষ্টা করেছে। শেষ পর্যন্ত হয়তো ভাগ্যে ছিল না। যাইহোক, ভালো লিখেছেন আপনি। ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে আপনার মত অনেকেই এটাই ভাবছিল। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপনি অনেক সুন্দর করে বন্ধুদের সাথে খেলা দেখার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। ঐদিন আমি বাজিল এবং ক্রোয়েশিয়া। এবং আর্জেন্টিনা ও নেদারল্যান্ড এর খেলাগুলো দেখলাম। সবগুলো ম্যাচ প্লান্টিক এর মাধ্যমে জয়লাভ করলো ক্রোয়েশিয়া এবং আর্জেন্টিনা। আমরা পরিবারের সবাই একসাথে বসে খেলা গুলো উপভোগ করলাম। আপনি আর্জেন্টিনার খেলা থেকে ব্রাজিলের খেলাটি আপনি বেশি উপভোগ করলেন।ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর করে খেলা দেখার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
আপনি পরিবারের সবার সাথে একসাথে খেলা গুলো ইনজয় করছেন যেন ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপু আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।