ঝড় বৃষ্টির মধ্যে বাড়ি ফেরার তিক্ত অভিজ্ঞতা।
প্রিয় আমার বাংলা কমিউনিটির ভাইবোন বন্ধুরা,
তো আমি বর্তমান যেখানে কাজ করি সেই জায়গাটা আমার বাড়ি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরত্বে। তো সেখান থেকেই ফিরতে মূলত আমার এই তিক্ত অভিজ্ঞতাটা হয়েছিল। আসলে গত বেশ কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করছি মাঝে মাঝেই হুট করে আবহাওয়া খারাপ হয়ে যায়। দেখি একটু আগেই সবকিছু ঠিক ছিল কিন্তু দেখা যায় হঠাৎ করেই জোরে জোরে বাতাস বইতে থাকে। তো এর আগে অনেকবার বাড়ি ফেরার সময় আবহাওয়া খারাপ হতে দেখতে পেয়েছিলাম। তবে সময় মত বেরিয়ে পড়ার কারণে এর আগে বাড়ি পৌছে যেতাম। তবে অন্যদিন কিছুক্ষণ বাতাস এবং হালকা কয়েক ফোঁটা পানি হওয়ার পরেই দেখতাম আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে যেতে।
যাইহোক গতকাল কে আমাদের আমাদের বাড়ি ফেরার সময় প্রায় হয়ে এসেছে ঠিক সেই সময় দেখলাম জোরে বাতাস বইতে শুরু করলো। আমরা ঠিক করলাম সবকিছু গুছিয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ির দিকে রওনা দিব যেন ঝড়ের জন্য আটকা পড়ে থাকতে না হয়। তো সবকিছু গুছিয়ে আমার রওনা দিয়ে দিলাম দেখি জোরে জোরে বাতাস হচ্ছে বাইক নিয়ে আসা বেশ কষ্টকর হয়ে যাচ্ছিল। একে তো বাতাস আছেই তারপর কিছু যাওয়ার পরে দেখলাম জোরে জোরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। যার কারনে অবস্থা বেশ খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কারণ পানি তো এমনিতেই আমাদের জীবন রক্ষা করে থাকে কিন্তু এই পানির ফোটাতেই কালকে যেন মনে হচ্ছিল আমার দুশমন। আর সাথে জোরে বাতাস তো আছে যার কারণে পানির গতিটা আরো বেড়ে গিয়েছিল।
যাইহোক তারপরেও আমরা কষ্ট কষ্ট করে আসছিলাম। তুই আসার সময় মাথার মধ্যে হঠাৎ করেই চিন্তা আসলো। যদি এই ঝড়ের কারণে এখন কোন গাছের ডাল ভেঙে পড়ে তাহলে তো বিপদ। তো এটা ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ করে দেখলাম পায়ের সাথে কিছু একটা বাড়ি লাগলো বুঝতে পারলাম কোন একটা ডালের সাথে হয়তোবা বাড়ি খেয়েছি। আসলে সামনে কিছুই দেখতে পারছিলাম না তাই পা টা সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাইনি। আপনারা এখন ভাবতে পারেন সামনে যেহেতু কিছু দেখা যাচ্ছিল না তো বাইকে আমরা আসছিলাম কিভাবে। আসলে যে ভাইটা বাইক চালাচ্ছিল উনার মাথার হেলমেট ছিল যার কারণে তিনি মূলত বাইক চালাতে পারছিল না হলে হয়তো বা আমাদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। যাই হোক ভাইটা সময় মতো ব্রেক করে ফেলার কারণে ডালটাতে খুব একটা লাগেনি যার কারণে খুব একটা সমস্যা হয়নি। যাইহোক তারপর দুজনে আস্তে আস্তে বাড়ি চলে আসলাম তখন মনের ভিতরে আলাদা একটা শান্তি লাগছিল। কারণ বাইকে বসে ছিলাম ততক্ষণ মনে হচ্ছিল না জানি আমি কোথায় আছি।
কিন্তু এরপর যা হলো বাড়িতে এসে দেখি আম্মু বাড়িতে নেই ঘর তালা মারা। আমার পুরা শরীর ভিজে গেছে। ভাবলাম আম্মুর কাছে একটা কল দিয়ে দেখব আম্মু কোথায় আছে। কিন্তু সারা শরীর ভিজে যাওয়ার কারণে পকেটে থাকা মোবাইলটাও ভিজে গেছে। তারপরেও মোবাইলটা বের করলাম এবং আম্মুকে কল করার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু মোবাইলের যে অবস্থা হয়েছিল এমনিতেই মোবাইলটা ওয়াটারপ্রুফ না তার উপর আবার ডিসপ্লে ফাটা। ঠিকঠাক মতো কাজও করছে না। তারপরেও বেশ কিছুক্ষণ ট্রাই করার পর আম্মুকে কল দিতে সক্ষম হয়েছিলাম। তো তখন কল দেয়ার পর জানতে পারলাম আমিও বাজারে গিয়েছিল। এবং বাজার থেকে ফেরার সময় বৃষ্টির শুরু হয়ে গিয়েছিল তার জন্য আম্মুও একটা জায়গায় আটকে আছে।
তো আমি আর বাড়িতে ওয়েট না করে ফোনটা একটা সেফ জায়গায় রেখে চলে গেলাম আম্মুর খোঁজে। তারপর প্রায় হাঁফ কিলোমিটার যাওয়ার পর আম্মু দেখা পেয়ে গেলাম। তারপর আম্মু এবং আমি আস্তে আস্তে বাড়ি ফিরে আসলাম। তখন অবশ্যই পানি মোটামুটি থেমে গিয়েছিল। আসলে খুব বেশিক্ষণ যে বৃষ্টি হয়েছিল তা কিন্তু নয় তবে যতক্ষণ বৃষ্টি হয়েছিল ততক্ষণ আমি বৃষ্টিতে ভিজতেছিলাম। আর ভিজা শরীর নিয়েও বেশ কিছুক্ষণ ছিলাম। ভাবছিলাম আজকে হয়তো বা অসুস্থ হয়ে যাব কিন্তু এখন পর্যন্ত আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ আছি। যাই হোক বাড়ি এসে আবার দেখলাম ঝড়ের কারনে আম গাছ থেকে অনেকগুলো আম পড়েছে। পরে সেগুলো কুড়িয়ে মূলত কাপড় চেঞ্জ করেছিলাম। আর এই আম কুড়ানোর কারণে ভিজা শরীর নিয়ে আরো বেশ কিছুক্ষণ থাকতে হয়েছিল।
তো প্রিয় আমার বাংলা কমিউনিটির ভাই বোন বন্ধুরা, এই ছিল আমার আজকের পোস্ট। তো এটাই ছিল মূলত আমার গতকালকে বাড়ি ফেরার তিক্ত অভিজ্ঞতা। আজকের মত এটুকুই। আবারো খুব শীঘ্রই নতুন কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে ইনশা-আল্লাহ। ততক্ষণ সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন নিজের খেয়াল রাখবেন।
আসলে বৃষ্টি কিছু কিছু সময় ভালো লাগলেও প্রয়োজনীয় সময় গুলোতে বৃষ্টির কারণে বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় । আপনিও গতকাল বৃষ্টির কবলে পড়েছিলেন । আসলে ঝড় বৃষ্টির সময় বাইক চালানো আমার কাছে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ মনে হয়েছে । তার ভিতরেও যে আপনারা বাইক চালিয়ে বাড়িতে নিরাপদে পৌঁছেছেন এটাই সবথেকে বড় কথা । অবশেষে আপনার আম্মুকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন জেনে ভালো লাগলো । ধন্যবাদ আপনাকে ।
আসলেই ঝড় বৃষ্টির মধ্যে বাইক চালানো বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। অতিরিক্ত বাতাসে তো বাইক রীতিমতো দোল খাচ্ছিল। তারপরেও ড্রাইভার ভালো থাকার কারণে এবং আল্লাহর ইচ্ছায় সুন্দরভাবে বাড়ীতে পৌঁছাতে পেরেছি।
বাড়ি থেকে দের কিলোমিটার দূরে থেকে ওই ঝড় বৃষ্টির মধ্যে বাইক চালিয়ে এসেছেন আসলে একটি রিস্কের কাজ করেছেন। হেলমেট পরা অবস্থায় চালিয়েছে দেখে চালাতে পেরেছে তা না হলে তো অসুবিধায় পড়তে হতো। কত কষ্ট করে ঝড় বৃষ্টির ভিতর এসে আবার ঘরে তালা থাকলে তো আরো অসুবিধা । আপনার মাও ঝড়ের ভিতরে আটকা পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত সবাই সুস্থভাবে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন এটাই বড় কথা।
আসলে আপু আপনার হয়তো কোথাও ভুল হয়েছে ওটা দেড় কিলোমিটার না ওটা ৪ কিলোমিটার হবে। যাইহোক ধন্যবাদ আপু আপনাকে সুন্দরভাবে গুছিয়ে মন্তব্যটি করার জন্য ।
ভাইয়া ঝড়ের দিনের তিক্ত অভিজ্ঞতাটি পড়ে প্রথমে একটু ঘাবড়ে গিয়েছিলাম না জানি আপনার বড় কোন বিপদ হয়নি তো? যদি বড়সড়ো কোন গাছের ডাল ভেঙ্গে পড়তো গায়ে তাহলে তো অনেক বড় বিপদ হয়ে যেত, যাক এই যাত্রাই বেঁচে গেলেন। তবে পরবর্তীতে এরকম বড়সড় জড়ের ক্ষেত্রে কোথাও দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করাই ভালো, কিছুটা সময় বেশি লাগলেও এই ক্ষেত্রে অন্তত এই ধরনের বিপদ আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
আসলে আমাদের কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তারপর বেরোনো উচিত ছিল। কিন্তু আমাদের বেরোনোর পরেই ঝড় শুরু হয়ে গিয়েছে তাই আর থামানোর উপায় ছিল না তাই সোজা বাড়ি চলে এসেছিলাম। যাই হোক ধন্যবাদ আপু আপনাকে সুন্দর ভাবে গুছিয়ে মন্তব্যটি করার জন্য।
https://twitter.com/MdJohir65/status/1662058478519853056?t=n8YFB49LB1lBDIOf-g9NiQ&s=19
হঠাৎ করেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলে খুবই মুশকিলে পড়তে হয়।যেমনটি আপনাকে ও আপনার আম্মুকে পড়তে হয়েছিল।তাছাড়া ফোনের ভিতর জল ঢুকে গেলে সমস্যা দেখা দেয়।আশা করি আপনার ফোনে কোনো অসুবিধা হয় নি।কিছু সময় বৃষ্টি হলে ভালোই লাগে আর কিছু সময় বিরক্তিকর।ধন্যবাদ ভাইয়া।
এতদিন পরে এই পোস্টে আপনার কমেন্টটি পেয়ে বেশ ভালো লাগলো। আসলে আপনি ঠিক বলেছেন মাঝে মাঝে বৃষ্টি হলে খুবই ভালো লাগে আবার মাঝে মাঝে বৃষ্টি হলে বিপদে পড়তে হয়। যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর ভাবে গুছিয়ে মন্তব্যটি করার জন্য।