প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ || আমার জীবনে ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতি।

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago
আস-সালামু আলাইকুম

প্রিয় আমার বাংলা কমিউনিটির ভাইবোন বন্ধুরা,

আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন আমি আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে নিয়ে চলে আসলাম আমার জীবনে ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতি নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের মাঝে এমন একটা বন্ধুর কথা শেয়ার করব যার সাথে আমি ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়েছি। ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত ওর সাথে আমার তেমন একটা বন্ডিং ছিল না। কারন আমার বাড়ির পাশে একটা ফ্রেন্ড ছিল তার সাথে আমি বেশি সময় কাটাতাম। যেহেতু ওর বাড়ি আমার বাড়ির পাশে ছিল তাই ওর সাথে বেশি ভালো বন্ধুত্ব তাই অন্য ক্লাসমেটদের সাথে অত সম্পর্ক ছিল না।

20221012_232944.jpg

তবে সবাই সবাইকে মোটামুটি চিনতাম। তো এরপর যা হল ক্লাস ফাইভ পাস করলাম। তো প্রাথমিক শেষ এবার মাধ্যমিকে যাওয়ার পালা। তো মাধ্যমিকে অন্য স্কুল তার জন্য অনেক বন্ধুরাই আলাদা হয়ে যায়। আমার বাড়ির পাশে যে বন্ধুটা ছিল ও গেল একটা হাই স্কুলে আর আমি অন্য আরেকটা হাইস্কুলে। এখন তো আর ওর সাথে স্কুল যেতে পারছি না। আমি যেদিন হাই স্কুলে প্রথম যাই তো এখন তো বন্ধু লাগবে যেহেতু বাড়ির পাশের বন্ধুটা অন্য একটা হাইস্কুলে ভর্তি হয়েছে।

দেখলাম ক্লাস ফাইভে আমি যাদের সাথে পড়ে এসেছি। তাদের মধ্যে কয়েকজন আমার স্কুলে ভর্তি হয়েছে। তো তার মধ্যে জুবায়ের নামে একজন যাকে আমি একটু বেশি চিনতাম। যেহেতু আমরা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে আসছি একসাথে। আগে তো ওর সাথে অতটা কথা হতো না। তো এবার তো শুধু চিনার মতো ও আর আমি আছি বাদবাকিরা তো সবাই অজানা। তাই ওর আর আমার মধ্যে ধীরে ধীরে ভালো বন্ধুতো হতে লাগলো। তারপর এমন একটা সময় এসে যায়।সকালে স্কুল গিয়ে আমরা একসাথে বসতাম।

boy-286809__480.jpg
সোর্স
আমাদের ইস্কুল সময় ছিল বারোটা থেকে চারটা পর্যন্ত। তাই মাঝে খাওয়ার তেমন একটা প্রয়োজন হতো না। কিন্তু তারপরও ৩০ মিনিটের জন্য একটা টিফিন টাইম ছিল তো ওই টাইমটা আমরা গল্প আর খেলার মাঝেই কাটিয়ে দিতাম। তো এভাবে ক্লাস সিক্স পার হয়ে গেল‌। এরপর আমি যখন সপ্তম শ্রেণীতে উঠলাম। তখন আমার আর স্কুলে যেতে ভালো লাগত না। তিন মাস মতো স্কুলে নিয়মিত গিয়েছিলাম তারপর থেকে মাসে ২-১ দিন করে যেতাম। তো তার জন্য পরে আর আমার ওই বন্ধুটার সাথে কথা হতো না।

স্কুলে না গেলে কথা হবেই বা কি করে। কারণ ওর বাড়ি আর আমার বাড়ির দূরত্ব ছিল বেশ খানিকটা। ও আমার বাড়ি চিনতো কিন্তু আমি ওর বাড়ি আজও চিনতে পারিনি।ও আমাকে বলেনি ওর বাড়ি কোনটা। তো ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত আমাদের বন্ধুত্বটা খুবই গভীর ছিল। তো আমি যখন অষ্টম শ্রেণীতে উঠলাম তখন অন্য একটা স্কুলে চলে গেলাম। আমার বাড়ি থেকে অনেক দূরে আপুর বাসায়। কিন্তু এখানেই শেষ নয় যখন ক্লাস নাইনে উঠলাম তখন আবার বাড়িতে চলে আসলাম। তবে এবার আগের স্কুলে ভর্তি না হয়ে ওই আমার ছোটবেলার বাড়ির পাশে যে বন্ধুটা ছিল ওর স্কুলে ভর্তি হলাম।

তখন জুবায়ের ‌আমার বাড়িতে মাঝে মাঝে আসতো। আর বলতো যে আবার আগের স্কুলে চলে আয়। কিন্তু তখন আর ওই স্কুলে যাওয়া হয়নি। তারপর ক্লাস নাইনে তিন মাস আমি ঠিকমতো স্কুল গিয়ে তারপর আর যাইনি। তখন আমি মোবাইল গেমের নেশায় পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু জোবায়ের আমাকে ভুলেনি ও তাও মাঝে মাঝে আমার বাড়িতে আসতো। কিন্তু এবার আমি যা করেছিলাম এর জন্যই হয়তো আমাদের বন্ধুত্বটা আর নাই। জুবায়ের আসতো আর আমি ওকে বসিয়ে রেখেই গেমে ব্যস্ত থাকতাম। এককথায় ইগনোর করতাম। ও কিছুক্ষণ বসেই চলে যেত।

istockphoto-1063673444-612x612.jpg
সোর্স
এর জন্যই হয়তো আমাদের বন্ধুত্বটা আর নেই। যখন এসএসসি পরীক্ষা হয়েছিল তখন ও আমার পাশের বেঞ্চিতে বসেছিল দুজন দুই স্কুল সত্ত্বেও কিন্তু আমার সাথে জুবায়ের তেমন একটা কথা বলছিল না। তখন মনে খুবই কষ্ট লাগছিল। এখন মাঝে মাঝে ওর সাথে দেখা হয় কিন্তু শুধুকেমন আছিস এর বেশি আর কোন কথা হয় না।

তোর প্রিয় আমার বাংলা কমেন্টটির ভাই বোন ও বন্ধুরা এই ছিল মূলত আমার আজকের ফেলে আসা বন্ধুত্বের স্মৃতি নিয়ে পোস্ট। আবারো খুব শীঘ্রই নতুন কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হবে আপনাদের মাঝে ইনশা-আল্লাহ। আচ্ছা ভাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন নিজের খেয়াল রাখবেন।

আল্লাহ হাফেজ

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 60836.32
ETH 2449.94
USDT 1.00
SBD 2.65