পরিকল্পনা ছাড়াই ZAIMA FOOD PARK এ একদিন

in আমার বাংলা ব্লগ3 months ago

আজ--১১ ভাদ্র| ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |সোমবার | শরৎকাল|



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে কোনরকম পরিকল্পনা ছাড়াই কলিকদের সঙ্গে রেস্টুরেন্টে গিয়ে সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করার পাশাপাশি খাওয়া-দাওয়ার মুহূর্ত আপনাদের মাঝে তুলে ধরব। আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • পরিকল্পনা ছাড়াই ZAIMA FOOD PARK এ একদিন।
  • আজ--১১ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • সোমবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ দুপুর সবাইকে......!!


Picsart_24-08-25_13-10-31-282.jpg

কভার ফটো তৈরিতে--@jibon47



পরিকল্পনা করে তো আমরা অনেকেই অনেক জায়গায় ঘুরতে যাই অনেক জায়গায় খাওয়া-দাওয়া করতে চাই। কিন্তু কোন রকম পরিকল্পনা ছাড়াই যখন কোন একটা রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া করার জন্য যাওয়া হয় তখন কিন্তু পুরো ব্যাপারটা একদমই অন্যরকম লাগে। মাঝে মাঝে কিছু কিছু কাজ পরিকল্পনা ছাড়া করতে বেশ ভালই লাগে সবসময়ই পরিকল্পনা করে কাজ করতে হবে বা পরিকল্পনা করেই কোথাও ঘুরতে যেতে হবে এমন তো কোন কথা নেই। মাঝে মাঝে হঠাৎ করেই পরিকল্পনা ছাড়া কোথাও ঘুরতে যাওয়ার মাঝে রয়েছে এক অন্যরকম আনন্দ আর পরিকল্পনা ছাড়া যদি খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। কিছুদিন আগে সারাদিন অনেক বেশি বৃষ্টি ছিল বৃষ্টি থাকার কারণে চারিদিকে অনেকটাই মেঘাচ্ছন্ন হয়েছিল সারাদিন রোদ্রের দেখা পেয়েছিলাম না। অফিসেও খুব তেমন একটা কাজ ছিল না অনেকটা সময় বসে ছিলাম। এভাবেই কাটছিল দিন তবে বিকেলের শেষাংশে গিয়ে অর্থাৎ পাঁচ টার পরে আমার দুই কলিং আমাকে ফোন দেয়। তাদের দুজনের আবার সেদিন ছুটি ছিল আমার ছুটির সঙ্গে তাদের ছুটির দিন ভিন্ন। ফোন দিয়ে তারা আমাকে জানতে চায় যে আমি অফিসে আছি কিনা। যথারীতি আমি তাদেরকে জানিয়েছিলাম যে আমি অফিসেই আছি। এরপরে তারা আমাকে ফোন দিয়ে বলে যে খুব দ্রুতই আপনি গাউছিয়া মার্কেটে চলে আসেন।

যদিও প্রথম অবস্থায় আমি যেতে চাইনি কারণ সারাদিন এমনিতেই অনেক বেশি বৃষ্টি ছিল আর এখনো বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে কারণ চারিদিকে নেক হাছানো ছিল এই বৃষ্টির দিনে শুধু শুধু গাউছিয়া মার্কেটে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন বোধ মনে করছিলাম না। কিন্তু তারা দুজন এত বেশি রিকোয়েস্ট করল যে আর থাকতে পারলাম না দুজনে প্রায় অনেকবার আমাকে ফোন দিয়েছে গাউছিয়া যাওয়ার জন্য কিন্তু কি কারনে যেতে হবে সেটা তারা বলছে না তারা বলছে বারবার একই কথা যে আজকে আমাদের ছুটি আমরা গাউছিয়াতে ঘুরতে এসেছি আপনি এখনই চলে আসেন। আমি তাদেরকে অনেকবার রিকোয়েস্ট করছিলাম যে এখন আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয় কিন্তু তারা কোনভাবেই সেটা মানছিল না। যাইহোক একটা সময় মনের বিরুদ্ধে গিয়ে এই গাউছিয়া মার্কেটের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। প্রতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেল বৃষ্টি রিকশা যাওয়ার পথে কিছুটা ভিজেই গিয়েছিলাম। এরপরে তারা আমাকে যেই লোকেশন টা দিয়ে দেয় সেই লোকেশনে পৌঁছানোর আগেই দেখি তারা দুজন ওখানে দাঁড়িয়ে আছে। এরপর সেখানে গিয়ে তাদের সঙ্গে কিছুটা সময় মতবিনিময় করার পরে তারা বলল যে কিছু কেনাকাটা আছে চলেন কিনে নিয়ে আসি।

এরপরে তাদের সঙ্গে গেলাম একটা শোরুমে সেখানে গিয়ে একজন রাইস কুকার কিনল। যদিও কয়েকটা দোকান ঘুরাঘুরির পরে রাইস কুকার টা কেনা হয়েছে। তবে সত্যি বলতে আমার খুব একটা বেশি ঘুরাঘুরি করতে মন চাচ্ছিল না। যাই হোক কেনাকাটা শেষ করার পরে এবার তারা আমাকে এটা জানালো যে যেহেতু গাউছিয়াতে চলে এসেছি চলেন একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে কিছু খাওয়া দাওয়া করি। যেহেতু খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারটা আর কথা চলেই এসেছে তাই আর বেশি দেরি না করে বললাম যে খুব দ্রুতই তাহলে আমরা যে কোন একটা রেস্টুরেন্টে যাব কিন্তু পাশে থাকা এক ভাই বলল যে এখানে একটা রেস্টুরেন্ট আছে আমি কয়েকবার গিয়েছি সেটা কিছুটা ভেতরে ভেতরে বলতেছে এটা বোঝা যাচ্ছে যে রেস্টুরেন্টটা কিছুটা আন্ডারগ্রাউন্ড এর মত। তার কথায় কিছুটা অবাক হয়ে ডিসিশন নিলাম যে সেই রেস্টুরেন্টেই যাব। যেমন কথা তেমন কাজ অবশেষে সেই রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।

IMG20240718185622.jpg

IMG20240718185617.jpg

IMG20240718185626.jpg

IMG20240718185804.jpg

IMG20240718185702.jpg

একটা রিকশা নিয়ে আমরা খুব দ্রুতই রেস্টুরেন্টের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলাম। এরপরে রিক্সা কোন একটা জায়গায় গিয়ে থেমে গেল কিন্তু সেখানে কোন রেস্টুরেন্ট ছিল না যেহেতু আমি গাউছিয়াতে একদমই নতুন যার কারণে খুব একটা ভালো তেমন কিছু চিনি না। যাইহোক রিক্সা থেকে নেমে আমরা চলে যাই একটা গ্রাউন্ড ফ্লোরের নিচ তলায় সেখান থেকে আরও একটা করিডোর দিয়ে চলে যাই অন্য আরেকটা ফ্লোরে সেই ফ্লোরের নিচের তলায় মূলত আন্ডারগ্রাউন্ডের সেই রেস্টুরেন্টটা। রেস্টুরেন্টটা এতটা নির্জন পরিবেশে করা হয়েছে যে প্রথমে কেউ বুঝতেই পারবে না যে এরকম একটা জায়গায় এরকম একটা সুন্দর রেস্টুরেন্ট রয়েছে। রেস্টুরেন্ট এর ভেতরে প্রবেশ করার পরেই আমি বুঝতে পারলাম যে এখানে মূলত জন্মদিন উৎসব থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের উৎসব পালন করা হয়। কারণ চারিদিকে সুন্দর সুন্দর লাইটিং করা ছিল আর লাইটিং গুলো অনেক বেশি ডিপ ছিল খুব একটা বেশি আলোর ঝলকানি ছিল না। রেস্টুরেন্টরা অনেক বড় এক পাশে তৈরি করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান পালনের জন্য অনেক বড় একটা স্পেস আর এক পাশে রেস্টুরেন্টের মতো চেয়ার টেবিল রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে রেস্টুরেন্টের পরিবেশটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে সেই সাথেই ছিল শব্দবিহীন। যেহেতু কিছুটা সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল যার কারণে মানুষের ভিড় অনেক বেশি ছিল।

যাইহোক আমরা তিনজন একটা কর্নারে বসে পড়ি সেখানে বসে থাকাকালীন সময়ে রেস্টুরেন্টের ওয়েটার এসে আমাদেরকে খাবারের মেনু দেখায়। খাবারের মেনু দেখার পরে আমরা তিনজনে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে নান রুটি এবং গ্রিল খাব। যথারীতি আমরা অর্ডার দিয়েছিলাম অর্ডার দেওয়ার অনেকটা সময় পরে তারা খাবার আমাদের সামনে পরিবেশন করল যদিও আমরা অধৈর্য হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ রেস্টুরেন্টে এত বেশি মানুষ ছিল যে তারা এত চাপ সামলাতে পারছিল না আমরা প্রায় আধা ঘন্টার মত সেখানে অপেক্ষা করেছিলাম আর এই আধা ঘন্টা আমরা খুবই সুন্দর একটা মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলাম অনেকটা সময় আমরা গল্প করেছি অনেক বিষয় নিয়ে। যাইহোক অবশেষে যেহেতু খাবার চলেই এসেছিল আমরা তিনজনে গ্রিল এবং নান রুটি খাওয়া শুরু করলাম মোটামুটি রেস্টুরেন্টের খাবার অনেক ভালই ছিল। বিশেষ করে গ্রিলটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছিল তবে নান রুটিটা খুব একটা বেশি ভালো লাগেনি। যেহেতু বৃষ্টির দিন ছিল তাই আমি খুব দ্রুতই বাসায় যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে পড়েছিলাম কিন্তু তারা দুজন ছিল খুবই রিলাক্স মুভে।

IMG20240718185607.jpg

IMG20240718185600.jpg

IMG20240718190648.jpg

IMG20240718190701.jpg

IMG20240718190716.jpg

খাওয়া-দাওয়া শেষ করার পরে বিল দেওয়া নিয়ে তিন জনের ভেতরে শুরু হয়ে যায় তর্ক বিতর্ক। যদিও আমরা আস্তে আস্তেই একে অপরের সঙ্গে কথা বলছিলাম তবে কেউ কাউকে বিল দিতে দিচ্ছিলাম না। তারা দুজন আমাকে বলছিল যে আমরা আপনাকে ডেকে নিয়ে এসেছি যার কারণে আমরা বিল দিব কিন্তু আমি তাদেরকে এটা বলছিলাম যে যেহেতু আমি আপনাদের সঙ্গে এই প্রথমবার কোন একটা রেস্টুরেন্টে এসেছি তাই বিলটা আমি দেবো কিন্তু তারা এটা কোনভাবেই মেনে নিচ্ছিল না। অবশেষে অনেকটা জোর খাটিয়েই আমি বিলটা দিয়েছিলাম। যাইহোক সেখান থেকে বের হয়ে আমরা একটা চায়ের দোকানে বসি। আসলে যতই খাওয়া দাওয়া করি না কেন আড্ডা দেওয়ার সময় রং দোকানে না বসলে পুরো ব্যাপারটা অপূর্ণ থেকে যায়। একটা টম দোকানে বসে চা কফি খেয়ে অবশেষে বাসার ফিরতে অনেকটা রাত হয়ে গিয়েছিল।

সে যাই হোক অনেকদিন পরে কলিগের সঙ্গে এরকম সুন্দর একটা মুহূর্ত অতিবাহিত করতে পেরে নিজের কাছে অনেক বেশি ভালো লাগছিল এরকম মুহূর্ত খুবই কম কাটানো হয়েছে। তবে এরকম মুহুর্ত বার বার কাটাতে মন চায় জানিনা আবার কবে কাটাতে পারব কারণ খুব একটা বেশি বাহিরে যাওয়া হয় না, কাজের এত চাপ যে শেষ সময় অবধি কাজ করতে হয়। যাই হোক এটাই ছিল আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট আশা করছি আমাদের পোস্ট আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি, সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়পরিকল্পনা ছাড়াই ZAIMA FOOD PARK এ একদিন
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source


এটাই আমি..!!

IMG_5290-01.jpeg

আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@jibon47



VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.18
JST 0.035
BTC 90928.46
ETH 3207.56
USDT 1.00
SBD 2.81