ফেলে যাওয়া ছোট্ট কাগজ

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আজ -১৩ শ্রবণ | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার |বর্ষাকাল|



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এখন জনপ্রিয় কয়েকটি কমিউনিটির মধ্যে একটি। এটা ভাবতেই আমার অনেক বেশি ভালো লাগে,সেই সাথে আমি সত্যিই অনেক বেশি গর্বিত আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন সদস্য হয়ে।


আজ আমি আপনাদের মাঝে কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া বড় ভাই এবং আমার ঘটা একটি ঘটনা আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো। এটা নিছক একটা গল্প এই গল্পটাই আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে চলেছি।আশা করছি,আমার লেখা এই কবিতাটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
  • স্বরচিত কবিতা
  • আজ ১৩ শ্রাবণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  • শুক্রবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


আজকের এই পোষ্টের টাইটেল দেখে আপনারা হয়তোবা অনেকটাই বেশি অবাক হয়ে গিয়েছেন যে ছোট্ট একটি কাগজ কি এমন সেই কাগজ যার কারণেই আজকের এই পোস্ট। ঘটনাটা কিছুটা বিশদভাবে বলতে গেলে এমন হয়ে যায় যে, আমরা মানুষ অনেক সময় অনেক কিছু ভুলে যাই হয়তোবা যে জিনিসটা আমাদের অনেক বেশি প্রয়োজন সে জিনিসটা আমরা যখন প্রয়োজন হয় তখন সেটা নিতেই ভুলে যাই। এরকম মানুষ অনেক আছে যারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অপ্রয়োজনীয় সময় খুব যত্ন করে রেখে দেয় কিন্তু কোথায় রেখেছে সেটা হয়তোবা মনে থাকে না। যখন সেই জিনিসটার দরকার হয় তখন সেটা অনেক খোঁজাখুঁজি পরেও হয়তো বা পাওয়া যায় না। এরকম ঘটনা আপনাদের সঙ্গে ঘটেছে কিনা সেটা আমি জানিনা তবে আমার সঙ্গে এরকম ঘটনা অনেক ঘটেছে। তবে আমার বিশ্বাস আপনাদের সঙ্গেও এরকম ঘটনা ঘটেছে কারণ এটা এমন একটা ঘটনা যেটা সকলের সঙ্গেই কয়েকবার ঘটে যায়। তো এক বড় ভাইয়ের ঘটনা যেহেতু আমরা এখন সাবলেট থাকি ভাই ব্রাদার কয়েকজন মিলে সবাই অনেক পরিচিত এবং আন্তরিক। এরকম পরিবেশে থাকতে আসলেই অনেক বেশি ভালো লাগে কেননা এরকম পরিবেশে সকলেই সকলের সঙ্গে অনেক ভালো আন্তরিক হওয়া যায় বলে আমার বিশ্বাস।

ভাই গ্রাজুয়েশন শেষ করেছি কিছুদিন আগে। আর আমরা সকলেই জানি গ্রাজুয়েশন শেষ করলে ভার্সিটি থেকে তখন তাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এই ব্যাপারটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে তো ভাইয়ের ভার্সিটি থেকে সম্মাননা জানানোর জন্য অনেক আগেই জানিয়ে রেখেছিল এবং পাশাপাশি গ্রাউন্ডসহ একটা ছোট্ট কাগজ দিয়েছিল যেটা তার অনুষ্ঠানে নিয়ে যেতে হবে পাশাপাশি গ্রাউন্ড সহ নিয়ে যেতে হবে। রাত্রেবেলা ভাই সেগুলো আমাদের দেখালো এবং বলল এগুলো পড়ে আমাকে কালকে ভার্সিটিতে যেতে হবে আমরা সকলেই সেই গ্রাউন্ড টা দেখে ভাইয়ের সঙ্গে অনেক রকম ভাবেই মজা নিচ্ছিলাম। কেউ কেউ বসলাম এই গ্রাউন্ড পড়ে আমরা ফেসবুকে ছবি আপলোড দিয়ে বলবো অবশেষে আমি আমার গ্রাজুয়েশন শেষ করলাম অনেকেই অনেক রকম ভাবেই মজা নিচ্ছিলাম ভাইয়ের সঙ্গে বেশ ভালো লাগছিল।

এরপরে আমরা রাত্রে অনেক রাত অব্দি আড্ডা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম যদিও সেদিন রাত্রে ঘুমাতে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছিল কারণ সকলে মিলে আড্ডা দিতে অনেকটাই রাত হয়ে গিয়েছিল। এরপরে আমরা খুব সকালে কেউই ঘুম থেকে উঠিনি যেহেতু ভাইয়ের ভার্সিটিতে যাওয়ার কথা ছিল তাই ভাই খুব সকালবেলা তৈরি করে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। এদিকে ভাই গ্রাউন্ড নিয়ে গিয়েছে কিন্তু ভার্সিটি থেকে যে ছোট্ট একটি কাগজ দিয়েছিল সেটা সে নিয়ে যেতে ভুল করেছে। আর সেই কাগজটা অনেকটাই মূল্যবান ছিল সেদিনের জন্য। এরপরে ভাই ভার্সিটিতে গিয়ে যখন সেই কাগজ তার ব্যাগের মধ্যে পাইনি তখন তার মনে পড়েছে যে সে কাগজটা বাসায় ফেলে এসেছে। এবার তাহলে আপনারাই বুঝতে পারছেন সে কতটা বিপদে পড়ে গিয়েছে। এরকম বিপদে পড়লে মাথায় কোন কিছুই আসে না অনেকটাই হতাশ মনে হয়।

courier-2957629_1280.jpg

source


তখন অব্দি আমরা সকলেই ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো ফোনটা রিসিভ করেই বুঝতে পারলাম বড় ভাই ফোন দিয়েছে। এরপরে ভাই তার কাগজের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে ঘুম ঘুম চোখেই তার কথার উত্তর দিলাম, ভাই কোথায় রেখেছেন সেটা তো জানিনা। এরপরে ঘুম ঘুম চোখে বিছানা থেকে উঠে দেখলাম ভাইয়ের ড্রয়ারের মধ্যে কাগজটা রয়েছে। এরপরে ভাই বলল কাগজটা নিয়ে এখনই তার ভার্সিটিতে যেতে হবে। যেহেতু বড় ভাই বলেছে অবশ্যই যেতে হবে এখানে আর কোন দ্বিতীয় কথা নেই।

এরপর আমি দ্রুত ফ্রেস হয়ে ভাইয়ের ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। বের হওয়ার সময় বুঝতেই পারিনি যে বাহিরে এতটা গরম আর এতটা রোদ্র। অতি রোদ্র ছিল যার কারণে ঘেমে একদম একাকার হয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু কিছু করার নেই আমার উদ্দেশ্য একটাই সেটা কাগজ নিয়ে ভাইয়ের ভার্সিটিতে এক্ষুনি যেতে হবে এটাই বড় কথা ছিল সেই সময়। প্রচন্ড গরমের মধ্যে নিজেকে আর ধরে রাখতে না পেরে রাস্তার পাশের দোকান থেকে শরবত খেয়ে কিছুটা ঠান্ডা হওয়ার চেষ্টা করলাম। কিছুটা সময় অবশ্য ঠান্ডা ছিলাম তবে পরক্ষণেই আবার গরমে একদম অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলাম। তবে আমার ভাগ্য ভালো যে বেশিই পথ আমাকে অতিক্রম করতে হয়নি কিছুটা পথ যাওয়ার পরে ভাইয়ের ফোন আসলো আমার ফোনে।

ফোনটা রিসিভ করলাম তখন ভাই এর কথামতো বুঝতে পারলাম যে ভাই অনেকটাই চলে এসেছে তাই আমার আর ভাইয়ের ভার্সিটিতে যা লাগছে না এটা ভাবতেই ভালো লাগছিল। এই গরমের মধ্যে ভাইয়ের ভার্সিটিতে যাওয়াটা আমার পক্ষে অনেকটাই কষ্টসাধ্য একটা ব্যাপার হয়ে পড়েছিল তবুও কষ্ট হলেও ভাইয়ের ভার্সিটিতে যেতাম। এরপরে ভাইয়েরা হাতে সেই কাগজটা দিয়ে আমি খুব দ্রুতই সেখান থেকে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করার মুহূর্তে রাস্তার পাশের দোকান থেকে আবার এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত খেলাম। বিশ্বাস করবেন না এতটা ভালো লাগছিল বলে বোঝাতে পারবো না।

sun-3313646_1280.jpg

source


এরপরে খুব দ্রুতই বাসায় চলে আসলাম। সন্ধ্যেবেলা এই ভাইয়ের আগমন ঘটলো এরপরে ভাই ফ্রেশ হয়ে যখন রুমে আসলো তখন ভাইয়ের কাছে তার সংবর্ধনার অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাইলাম ভাই খুবই ভালোভাবে আমাদেরকে পুরো ব্যাপারটা বলল। গল্প শুনতে খুবই ভালো লাগছিল সেখানে এসেছিলেন সাবেক ক্রিকেটার বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। এরপরে মাশরাফি বিন মুর্তজা কিভাবে বক্তব্য দিলেন সে কেমন মানুষ এ ব্যাপারে ভাই অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প করছিল শুনতে খুবই ভালো লাগছিল। শেষমেষ ভাইয়ের কাছে সেই কাগজের ব্যাপারে জানতে চাইলাম সে কি করে কাগজটা না নিয়ে চলে গেল। এরপর ভাই বলল সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে আমার কাগজ নেওয়ার কথা একটুও মনে ছিল না কারণ আমি এমনিতেই অনেক দেরি করে ঘুম থেকে উঠেছিলাম। খুব দ্রুত রেডি হয়ে বের হয়ে গিয়েছে যার কারণে ভুলে গিয়েছি কাগজটা নিতে।

এরপরে ভাই আমাকে ধন্যবাদ জানালো আমি তো ভাইকে সোজাসুজি বলে দিলাম ধন্যবাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই একদিন বিরিয়ানি খাওয়ায়ে দিয়েন তাহলেই হয়ে যাবে হাহাহা। এরপরে ভাই হেসে দিয়ে বলল সামান্য বিরিয়ানি খাবে..!! আচ্ছা তোমাকে একদিন বিরিয়ানি খাইয়ে দেব। এর পরে ভাইয়ের সাথে আবার আড্ডা দিয়ে অনেক রাত অব্দি গল্প করে ঘুমিয়ে পড়লাম।

ছোট একটা কাগজের জন্যই এত বড় একটা গল্প হয়ে গিয়েছে। কাগজটা সত্যিই অনেক বেশি ভাইয়ের কাছে মূল্যবান ছিল কারণ সেই কাগজ ব্যতীত সে ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না এরকম একটা কাগজ ছিল। তো তাহলে বুঝতেই পারছেন কাগজটা ভাইয়ের কাছে কতটা মূল্যবান ছিল সেই সময়টাতে। যাইহোক শেষমেষ ভাই কাগজটা নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে পেরেছিল এটাই অনেক বড় কথা আর নিজের কাছেও ভালো লাগছে।

এটাই ছিল আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট আশা করছি আপনাদের সকলের খুব ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি। সকলেই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়ফেলে যাওয়া ছোট্ট কাগজ
পোস্টের কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  
 last year 

কাগজের টুকরোটি ছোট হলেও যে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম।বড় ভাইয়ের ফেলে যাওয়া কাগজের জন্য হয়তো উনি সম্মাননা পেতেন না।আপনাকে ফোন দিয়ে জানালে আপনি সেই কাগজটি নিয়ে বড় ভাইয়ের ভার্সিটির উদ্দেশ্যে ছুটলেন।খুব গুরুত্বপূর্ণ কাগজ বলেই বড় ভাই দেরী না করে কাগজ নিতে অনেকটা পথ চলে এলেন।তাই আপনার এই গরমে আর ভাইয়ার ভার্সিটিতে যাওয়া লাগলো না।অন্যের কাজে লাগতে পারাটা কিন্তু ভালো একটি মানবিক গুণ।খুব ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 

একদম ঠিক বলছেন আপনি আসলে কাগজটা ছোট হলে কি হবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি কাগজ ছিল। যেটার কারণে হয়তো উনি সম্মাননা পেতেন না জমা না দিলে কাগজটি। যাক অবশেষে আপনি কাগজটি পেলেন এবং আপনার বড় ভাইয়ের কাছে পৌঁছে দিতে পারলেন সেটা হচ্ছে বড় কথা। অসংখ্য ধন্যবাদ এরকম পরোপকারী কাজ করার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 56998.67
ETH 2405.23
USDT 1.00
SBD 2.28