আজ--১৫ চৈত্র | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শুক্রবার | বসন্তকাল |

আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।

তো চলুন শুরু করা যাক...!

শুভ বিকেল সবাইকে......!!

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। ছোটবেলা থেকেই আমরা এই কথার সঙ্গে অনেক বেশি পরিচিত। বছরের অন্যান্য সময়ে আমরা খুব একটা বেশি আনন্দ না করলেও ঈদের সময় কিন্তু আমরা সকলেই একত্রে হয়ে অনেক বেশি আনন্দ করি। সেই সাথে ছোটবেলায় এই ঈদকে ঘিরে আমাদের অনেক রকম জল্পনা কল্পনা থাকতো। কারণ এই ঈদের সময়ে প্রত্যেকটা বাড়িতে এক অন্যরকম আনন্দ থাকতো। যদিও এখন ও প্রত্যেকটা বাড়িতেই একই রকম আনন্দ থাকে আমরা অনেকেই আছি যারা এই ঈদের আনন্দ গুলো ভাগাভাগি করার জন্য একে অপরের সঙ্গে অনেক জায়গা ঘুরতে যাই। মূলত আমরা চেষ্টা করি ঈদের আনন্দটা একা একা চুপিসারে পালন না করে সকলে মিলে একত্রে হয়ে আনন্দ করতে আর এই আনন্দের মাঝে যতটা ভালো লাগা কাজ করে সেটা হয়তো বা অন্য কোন মাধ্যমে বা অন্য কোন আনন্দে নেই। কিন্তু এখনো লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে ঈদের এই আনন্দটা হয়তোবা সকল পরিবারে একরকম হয় না। বর্তমান সময়ে এমন অনেক মানুষ আছে যে মানুষগুলো বছরের অন্যান্য দিন যেরকম ভাবে কাটায় ঈদের দিনটাও ঠিক একই রকম ভাবেই কাটায়।ঈদের দিনে তাদের স্পেশাল কোন কিছুই হয় না প্রতিদিনের সকালের মতোই ঈদের দিন তাদের মাঝে একই সূর্য উদয় হয়।

আমরা কি কখনো এই মানুষদেরকে খোঁজ নিয়েছি...?? আমরা কি কখনো এই মানুষদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছি ঈদের সময়ে..?? সমাজে এমন অনেক বিত্তবান মানুষেরা আছে যারা চাইলেই এই মানুষদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে পারে আপনারা হয়তো এতক্ষণে বুঝতে পারছেন যে আমি কোন মানুষদের নিয়ে কথা বলছি। সত্যি বলতে মাঝে মাঝে আমার মনে হয় যে শহর অঞ্চলের থেকে গ্রাম অঞ্চলের মানুষ অনেক বেশি ভালো আছে, গ্রাম অঞ্চলের এমন কোন মানুষ এখন নেই যে সেই মানুষটা না খেয়ে অনাহারে বা অর্ধ হারে দিন অতিবাহিত করছে পক্ষান্তরে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে শহর অঞ্চলে এমন অনেক মানুষ আছে যে মানুষগুলো কখনো না খেয়ে কখনো অর্ধ হারে দিন কাটাচ্ছে। এই মানুষগুলোর দুঃখ কখনোই শেষ হয় না এই মানুষগুলোর দুঃখ যেন চিরসঙ্গী। এই মানুষগুলো কখনোই ভালো সময়ের দেখা পায় না কিছু সময়ের জন্য ভালো দিনের দেখা পেলেও দীর্ঘক্ষণের জন্য তাদের জীবনে নেমে আসে অনেক দুঃখ এবং কষ্ট।

বর্তমানে দেশ এবং সমাজ দুটোই পাল্টে গিয়েছে এখন আর আগের মতো ঈদের দিনে মানুষ শুধুমাত্র একই ধরনের খাবার খায় না আবার একই ধরনের পোশাক পড়ে না। ভিন্ন ভিন্ন ধরনের মজাদার খাবার আর রংবেরঙের পোশাক বর্তমান সমাজের মানুষদের গৌরব। একই সমাজের মানুষ একদিকে দিন কাটাচ্ছে সুখে শান্তিতে আর অন্য দিকের মানুষগুলো দিনের পর দিন কষ্ট করে দিন কাটাচ্ছে তবুও সে সুখে থাকার মানুষগুলো কখনোই দুখে থাকা মানুষগুলোর খোঁজ নেয় না। কখনোই খোঁজ নিয়ে জানতে চায় না যে তাদের ঈদের আনন্দ কেমন হচ্ছে, কখনোই জানতে চায় না ঈদে তারা নতুন পোশাক পড়েছে কিনা, এই মানুষগুলো সব সময় নিজের চিন্তা নিয়েই ব্যস্ত থাকে।

source

মূলত এ ধরনের পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করার ইচ্ছে আমার ছিল না তবে গত কয়েকদিন আগে একটা ঘটনা দেখে নিজের কাছে অনেক বেশি খারাপ লেগেছিল। রাস্তা দিয়ে বাসে করে ভার্সিটিতে যাওয়ার সময় দেখেছিলাম যে রাস্তার পাশে ছোট্ট একটা ফ্যামিলি যেখানে কিনা ৫ থেকে ৬ জন মানুষ। বুঝতে পারছিলাম যে এরা একটা পরিবার, ছোট্ট একটা ঘর মাথায় অনেক বড় বড় চুল, পোশাকে ময়লা, খাওয়ার ব্যবস্থা হয়তোবা তেমন নেই। রাস্তার পাশে সবাই একই জায়গায় মাটিতে বসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। হতে পারে তার বাবা অথবা মা কোন কাজের মধ্যে রয়েছে কিন্তু তার সন্তানেরা এখন পর্যন্ত ছোট। দেখে বোধহয় যাচ্ছিল তারা খুব একটা ভালো নেই। তাদের মাঝে ইফতার মুহুর্তে নেই কোন সুস্বাদু খাবার তাদের মাঝে নেই কোন ঈদ উপলক্ষে বাড়তি আনন্দ, তাদের মাঝে নেই ঈদ উপলক্ষে ঠোঁটের কোণের মৃদু হাসি। চেহারার দিকে তাকালেই বোঝা যায় যে হতাশা আর দুরবস্থা তাদের চিরসঙ্গী। এই দুরবস্থা থেকে তারা কখনোই বের হয়ে আসতে পারছে না। তারা তাদের এই দুরবস্থাকেই মেনে নিয়ে দিন পার করছে। মাঝে মাঝে এটাই ভাবি এই মানুষগুলো শহরের বুকে কিভাবে বেঁচে থাকে..?? কিভাবে তাদের সংসার চলে কিভাবে তাদের দিন যায় এটা ভেবেই পাই না।

কিছু কিছু অনুভূতি আছে যে অনুভূতিগুলো কখনো বলে বোঝানো সম্ভব হয়ে ওঠে না, ঠিক তেমনি ভাবে এটা এমন একটা অনুভূতি বা এমন একটা দুঃখের বিষয় যে যেই দুঃখটা কখনো বলে বোঝানো সম্ভব নয়। মাঝে মাঝে আবার আমার এটাও মনে হয় যে শহরের মানুষগুলো বড্ড বেশি হৃদয় হীনা এরা কখনোই একজন মানুষের সত্যিকার অর্থে বিপদে পাশে থাকে না। যদিও সকল মানুষ এক রকম নয় এমন অনেক মানুষ আছে যারা বিপদের মুহূর্তে পাশে থাকে তাদের সাহায্য করে তবে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে বেশিরভাগ শহরের মানুষই অনেকটা উদাসীন। এই মানুষগুলোর উচিত শহরের বস্তিতে অথবা রাস্তার আশেপাশের মানুষগুলোর অন্তত একটু খোঁজখবর নেয়া এই ঈদের মুহূর্তে। সারা বছর তাদের দিন কিভাবে কাটে এটা জানতে না চাইলেও আমি মনে করি এই ঈদের আগে তাদের অন্তত একটু খোঁজ নেওয়া উচিত। নিজের আনন্দ গুলো সব সময় নিজের কাছে না রেখে তাদের মাঝেও ভাগাভাগি করে দেওয়া উচিত। এতেই আমি মনে করি খুঁজে পাওয়া যাবে এক অন্যরকম ভালো লাগার আনন্দ। যে আনন্দটা হয়তোবা অন্য কোথাও আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।

source

আমাদের সব সময় উচিত মানুষের পাশে থাকা, সবাই নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী যদি গরীব দুঃখী মানুষের পাশে থাকে তাহলে এই গরিব দুঃখী মানুষগুলো ঈদের সময়ে ভালো একটা দিন অতিবাহিত করতে পারবে। ঈদের আনন্দটা ভাগাভাগি করে নেওয়ার মাঝে এক অন্যরকম ভালো লাগার কাজ করে তাই আমাদের উচিত ভাল লাগাগুলো এদের মাঝে কিছুটা বিলিয়ে দেওয়া। আপনার ছোট একটু সহায়তা হতে পারে একটা পরিবারের হাসির কারণ যখন আপনি দেখবেন আপনার ছোট্ট একটু সহায়তার কারণে ছোট্ট একটা পরিবারের সকলে হাসছে তখন দেখবেন আপনার মনের ভেতরে প্রশান্তি কাজ করবে। আর এমন প্রশান্তি আপনি অনুভব করবেন যে প্রশান্তিটা হয়তোবা আর কখনো কোথাও কোন জায়গা থেকে আপনি পাননি। আমি মনে করি দিনশেষে নিজের কাছে নিজের প্রশান্তির অনুভব পেতে হলেও মাঝে মাঝে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো উচিত।

নিজের ভালোবাসাটা নিজের কাছে না রেখে মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিন, তাহলেই দেখবেন দিনশেষে আপনি কথাটা সুখী একজন মানুষ।আমাদের ছোট্ট একটা জীবন, এত ভুরি ভুরি অর্থ আর বিদ্যবান হয়ে কি লাভ যদি মারা যাওয়ার আগে কেউ মনেই না রাখে। পৃথিবীতে চির অমর হয়ে থাকার জন্য হলেও আমাদের মারা যাওয়ার আগে এই পৃথিবীতে কিছু রেখে যাওয়া উচিত। তাই আসুন, একা একা আনন্দ না করে সবাইকে নিয়ে আনন্দ করি। এটাই ছিল আমার আজকের সংক্ষিপ্ত পোস্ট আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি, সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে...!!

আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy