বড় ধরনের একটা দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরলাম

in আমার বাংলা ব্লগlast year

আজ - ০৪ আষাঢ় | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | রবিবার | বর্ষাকাল |



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে আমার সাথে ঘটে যাওয়া এক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা থেকে কিভাবে বেঁচে ফিরলাম সেই ব্যাপারেই নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছে। আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেড়া
  • আজ ০৪ষ্ঠা আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  • রবিবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ দুপুর সবাইকে......!!


শহরটা বরাবরই আমার কাছে তেমন একটা ভালো লাগে না। যদিও এসএসসি পাস করার পরে আর গ্রামে থাকা হয়নি। ছোটবেলা থেকে গ্রামে বড় হয়েছি যার কারণে গ্রামের প্রতি এখন ওরকম ভালোলাগা ভালোবাসা কাজ করে সব সময়ই। এই শহরে চলাচল করার সময় নিজের আত্মা যেন হাতের উপর নিয়ে চলাচল করতে হয় এরকম একটা অবস্থা হয়ে গিয়েছে বর্তমান সময়ে। সকলেই যে যার মত ব্যস্ত, কে কাকে পেছনে ফেলে সামনের দিকে অগ্রসর হবে এই অসুস্থ প্রতিযোগিতায় শহরের মানুষ বরাবরই মেতে উঠেছে অনেক আগে থেকেই। জানিনা কবে এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা শেষ হবে এই অসুস্থ প্রতিযোগিতায় মানুষ মেতে উঠেছে বিধায় এত বেশি দুর্ঘটনা এত বেশি এক্সিডেন্ট। সকালবেলা পত্রিকা খুললেই দেখা যায় দেশের কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গিয়েছে। এমন একটা দিন নেই যে দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যায়নি। সড়ক দুর্ঘটনা এখন মানুষের কাছে নিত্যদিনের এক খেলনা হয়ে গিয়েছে যেটার সঙ্গে মানুষ প্রতিনিয়ত আলিঙ্গন করছে। সত্যি বলতে এই অসুস্থ প্রতিযোগিতার শেষ কোথায় সেটা আমি জানি না। আদেও কি কখনো শেষ হবে...!!

ঈদের পরে ঢাকায় এসেছি ঢাকায় এসেই নিজের মতো করে জীবন যাপন করছি ভালো লাগছে আবার কখনো ভাল লাগছে না। মাঝে মাঝে মন চায় পাখির মত উড়ে বাসায় চলে যাই কিন্তু সেটা আর কখনোই হয়ে ওঠে না। আসলে আমাদের কিছু কিছু ইচ্ছে থাকে যে ইচ্ছেগুলো সময়ের সাথে সাথে ইচ্ছেটা একদমই মরে যায়। ঠিক এরকমই একটি ইচ্ছে আমার মাঝে মাঝে হয় কিন্তু ইচ্ছেটা সবসময় ইচ্ছেই থেকে যায় কখনো পূরণ হয় না। গতকাল দুপুর বেলা বাসা থেকে খাওয়া-দাওয়া শেষ করেই আপুর বাসায় রওনা করেছিলাম। আপুর বাসা আমার বাসা থেকে তেমন একটা বেশি দূরে নয় এই চার থেকে পাঁচ কিলো হবে।

যথারীতি বাসা থেকে রওনা করে আপুর বাসায় পৌঁছে গিয়েছিলাম খুব শীঘ্রই যেহেতু শনিবার ছিল তাই তেমন একটা যানজট পায়নি। আপুর বাসায় গিয়েছিলাম আমার কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং দুটো বই নেওয়ার জন্য কারণ আমার কাগজ এবং বইপত্র সবগুলো আপুর বাসায় রেখে দিয়েছে। যখন যেটা প্রয়োজন হয় তখন সেটা আপুর বাসায় গিয়ে নিয়ে আসি। আজকেও তার ব্যতিক্রম কিছু ঘটেনি। যথারীতি কাগজপত্র নিয়ে আমি কয়েক ঘন্টা সেখানে থেকে আমার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম।

পতি মধ্যেই ঘটে গেল এক বিপত্তিকর দুর্ঘটনা যেটার জন্য আমি কখনোই প্রস্তুত ছিলাম না। এমন কিছু সময় আসে যেটার জন্য আমরা কখনোই প্রস্তুত থাকি না। প্রস্তুত থাকো তো দূরের কথা আমরা কখনো কল্পনাও করতে পারি না। যাইহোক, আকাশে প্রচন্ড মেঘ দেখা গিয়েছিল মনে হচ্ছিল এই বুঝি বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে চারিদিকে বাতাস সেই সাথে রাস্তার ধুলাবালি গায়ে এসে একদম একাকার করে দিচ্ছিল। নিজের কাছে একটুও ভালো লাগছিল।

accident-2161956_1280.jpg

source


সত্যি বলতে শহরের এই যানজট ধুলাবালি এবং গাড়ির শব্দ আমার কাছে একটুও ভালো লাগেনা। তাই একটা রিকশা নিয়ে আমি আমার বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। রিক্সাওয়ালা আমাকে উঠিয়ে অনেক জোরে জোরে রিক্সা চালাচ্ছিল আমি তাকে বলেছিলাম বেশি জোরে যাওয়ার দরকার নেই কিন্তু মেঘ আর বাতাস দেখে সে হয়তো বা একটু জোরেই রিকশা চালাচ্ছিল তবে আমি তাকে আর নিষেধ করিনি। যেহেতু আকাশে প্রচন্ড মেঘ লেগেছিল তাই আমিও চাচ্ছিলাম যে যত তাড়াতাড়ি বাসায় পৌঁছানো যায় ততই ভালো। একটা সময় এরকম যেতে যেতেই হঠাৎ করে গাড়িটা ধুপ করে থেমে গেল। কেন এই ধুপ করে গাড়িটা থেমে গেল অবশ্যই বুঝতে পারছেন। যদিও আমার বুঝতে দু সেকেন্ড সময় লেগেছিল।

এরপরে আমি দেখি যে সামনে থেকে অন্য আরেকটি রিকশা এসে আমি যে রিক্সাতে বসে আছি সেটার সঙ্গে লাগিয়ে দিয়েছে। আমি অলরেডি রিকশা থেকে পড়ে যাব যাব ঠিক সেই সময়টাতেই রিক্সার কোন একটা কোনা ধরে আমি পড়তে যেয়ে পড়িনি। সামনের রিক্সার সামনের চাকাটা একদম বাঁকা হয়ে গিয়েছে। আমি যে রিক্সাতে ছিলাম সেটার তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এরপর ওখানে সেখানে অনেক মানুষের ভিড় শুরু হয়ে গেল মানুষ এসে দেখছে আসলে ব্যাপারটা কি। এরপরে শুরু হয়ে গেল ২ রিক্সাওয়ালার মাঝে তর্কাতর্কি।

এই তর্ক তর্কির মাঝে আমি তাদের দিকে তাকিয়ে আছি কেউ কারো উপর দোষ নিচ্ছে না একে অন্যকে দোষারোপ করছে। আমি কোন কিছু না বলে চুপ করে তাদের তর্কাতর্কি শুনছিলাম কারণ এখানে আমি কারো পক্ষই নিতে পারবো না দুজনেই দুজনের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য অনেক বেশি ব্যস্ত। যার কারনেই এই এক্সিডেন্টটা ঘটেছিল।

car-accident-1995852_1280.webp

source


যেই রিক্সাওয়ালার ক্ষতি হয়েছে এখন সে রিকশাওয়ালা অপর রিক্সাওয়ালার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ চাইছে। কিন্তু ওপরে রিক্সাওয়ালা কোনভাবেই সেই ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি নয় এটা নিয়েই তাদের মধ্যে অনেক সময় কথা কাটাকাটি হয়। এদিকে মেঘ প্রচন্ডরকম ভাবে লেগে গিয়েছে মনে হচ্ছে ভেঙেচুরে বৃষ্টি আসবে কিছুক্ষণের মধ্যেই। এরপরে সেখানে থাকা এক সার্জেন্ট চলে আসলো সার্জেন্ট এসে তাদের সকল কথাবার্তা শুনে কোনরকম ক্ষতিপূরণ না দিয়ে আমাদের রিক্সাওয়ালা কে ছেড়ে দিল। এরপরে আমি মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে নেমে হেঁটে হেঁটে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে এটাই যে আমি বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে ততক্ষণে বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে।

আমি যখন বাসায় এসে পৌছালাম পৌঁছানোর আগে থেকেই বৃষ্টি এসে আমি পুরা ভিজে গেলাম। বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমি একটা পর্যায়ে দৌড় শুরু করলাম। কিন্তু বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে আমি একদম ভিজে একাকার হয়ে গেলাম। মূলত দুই রিকশাওয়ালার মাঝে কথা কাটাকাটির পর্যায়ে অনেকটা সময় চলে গিয়েছে যার কারণে আমি নির্দিষ্ট সময় বাসায় পৌঁছাতে পারেনি। সেখানে যদি তাদের সঙ্গে সেরকম কথা কাটাকাটি না হতো তাহলে আমি ভালোভাবেই বাসায় পৌঁছে যেতে পারতাম। এটাই ছিল আমার বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরার গল্প।


আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের খুবই ভালো লেগেছে আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি। সকলেই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়বড় ধরনের একটা দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরলাম
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

 last year 
 last year 

আসলে শহরের রাস্তাঘাটে যেভাবে গাড়ি বেপরোয়া ভাবে চালায় তাতে জীবনের যেকোনো সময় মানুষের বড় একটা ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। আপনি রিকশা করে গিয়েও তার হাত থেকে রক্ষা পাননি। তবে সবচেয়ে বড় কথা আপনার কোন ক্ষতি হয়নি এটা জেনে খুব ভালো লেগেছে। বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার পরেও ঠিকভাবে পৌঁছে যেতে পেরেছেন । এবং বড় একটি দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরলেন।

 last year 

হ্যাঁ আসলে সেদিন তেমন একটা বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে গিয়েছি এটা ভাবতেই ভালো লাগছে। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

 last year 

আপনি ঠিক বলছেন আসলে গ্রামের পরিবেশ যত নিরাপদ কিন্তু ঢাকা শহরে ততটা নিরাপদ নয়। এত যানজটের শহর গুলো গাড়ি আর ধূলো বালি সত্যি অনেক অসহ্যকর। তবে বিপদগুলো একদম বলে আসে না হুট করে আসে এবং খুব খারাপ অবস্থা হয়। ভাগ্যিস আপনি বেঁচে গেছেন অনেক বিপদের হাত থেকে। আপনার জন্য দোয়া রইল যেন সুস্থভাবে থাকতে পারেন।

 last year 

মানুষের জীবনে বিপদ কখন চলে আসে সেটা কেউই বলতে পারেনা হুটহাট করে বিপদ আপদ মানুষের জীবনে চলে আসে যেটা সারা জীবনের কান্না হয়ে যেতে পারে। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আপু।

 last year 

আসলে দুর্ঘটনা কখনো কাউকে বলে করে আসে না। আপনি রিকশা থেকে পড়ে গেলে একটু বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। যাহোক মহান আল্লাহ আপনাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। তাই মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট শুকরিয়া আদায় করছি। পথঘাটে চলা চল করার সময় আমাদের সকলকেই আরো বেশি সতর্ক এবং সচেতন হতে হবে।

 last year 

অবশ্যই সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আসলেই আমাদের চলার পথে আরো বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

 last year 

শহরের রাস্তাঘাটে যেভাবে গাড়ি চলাচল করে তাতে খুব আতংকই লাগে। আপনি রিকশা করে গেলেও মুক্তি পাননি।তবে কোন বিপদ হয়নি এটা জেনে ভালো লাগলো। আমাদের সাবধানতা অবলম্বন আরো বেশী করে চলা উচিত।কারন বিপদ বলে কয়ে আসেনা।

 last year 

শহরের রাস্তাগুলোতে চলা গাড়ি গুলো দেখলেই আমার অনেক বেশি ভয় লাগে কিছু কিছু ড্রাইভার অনেক বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালায় যার কারণে যখন তখন জনজীবন হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 last year 

আল্লাহর রহমতে বেঁচে গিয়েছেন এই যাত্রায়। শহরে যেতেই তো এজন্য আমার ভয় করে।ড্রাইভারগণ বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালায়, যার জন্য এসকল দুর্ঘটনা।আপনি রিক্সায় গিয়েছিলেন,তারপরেও সমস্যা।যদিও দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে ফিরেছেন,এটা জেনে ভালো লাগলো।ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।

 last year 

অবশেষে তেমন কোন বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি সুস্থভাবে বাসায় পৌঁছাতে পেরেছিলাম এটাই আমার অনেক বড় একটা সার্থকতা। গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 88194.12
ETH 3339.93
USDT 1.00
SBD 3.00