টি-২০ বিশ্বকাপ ফাইনাল--ভারত vs সাউথ আফ্রিকা/দ্বিতীয় ইনিংস(নিজের অনুভূতি)
আজ--২২ আষাঢ় | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | শনিবার | বর্ষাকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- ভারত vs সাউথ আফ্রিকা ম্যাচের রিভিউ এবং আমার অনুভূতি
- আজ--২২শ আষাঢ়, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
- শনিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ দুপুর সবাইকে......!!
গত কয়েকদিন আগে আমি আপনাদের মাঝে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালের ভারত এবং সাউথ আফ্রিকার মধ্যাকর খেলার রিভিউ তুলে ধরেছিলাম। প্রথম ইনিংসে সাউথ আফ্রিকা বোলিং করেছিল আর ভারত করেছিল ব্যাটিং। ব্যাটিং এ গিয়ে ভারত সাউথ আফ্রিকা কে ১৭৬ রানের টার্গেট দেয়। বুঝতেই পারছেন যেহেতু টি-টোয়েন্টি খেলা আর টি-টোয়েন্টি খেলাতে ১৭৬ রান মানে অনেকটাই বেশি তবে সাউথ আফ্রিকার কাছে ১৭৬ রান খুব একটা বেশি বড় নয়। যদিও ম্যাচ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমি দেখেছিলাম প্রথম অবস্থাতে আমি ভেবেছিলাম যে ভারত হয়তোবা জিততে পারবে না আমি যাদের সঙ্গে খেলা দেখেছিলাম তাদের কাছেই বলেছিলাম যে ভারত প্রায় চার থেকে দশ রানে পিছিয়ে আছে। আমি চেয়েছিলাম ভারতে ১৯০ রাম যদি করতে পারত তাহলে হয়তো বা নিশ্চিত ভাবে জিতে যেত যেহেতু তারা ১৯০ এর থেকে অনেকটাই কম রান করেছে তার মানে আমি ভেবেছিলাম হয়তোবা ভারত জিততে পারবে না কারণ সাউথ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইন অনেক বেশি শক্তিশালী তবে সে দিক থেকে চিন্তা করলে ভারতের বোলিং লাইন আরো বেশি দুর্দান্ত। যাইহোক প্রথম ইনিংসের গল্প আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছিলাম এখন চলে আসলাম দ্বিতীয় ইনিংস। প্রথম ইনিংস শেষ হবার পরে ব্যাটিং করতে আসে সাউথ আফ্রিকা।
প্রথম অবস্থায় ভারত সাউথ আফ্রিকা কে কিছুটা চাপে ফেলে দিয়েছিল কারণ আমি আপনাদেরকে আগেই বলেছি ভারতের বোলিং লাইন কিছুটা শক্তিশালী বর্তমান সময়ে। তবে সাউথ আফ্রিকার ওপেনার দুজনের মধ্যে একজন খুব একটা বেশিক্ষণ ব্যাটিং করতে পারেনি খুব দ্রুতই আউট হয়ে গিয়েছিল। যখন দুই ওভার খেলা মাত্র শেষ হয়েছে তখনই সাউথ আফ্রিকার স্কোরবোর্ডের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে ২০ রানের নিচে তাদের রান আবার এদিকে উইকেট দুটো পড়ে গিয়েছে। তার মানে বুঝতেই পারছেন যে সাউথ আফ্রিকা কতটা চাপে পড়ে গিয়েছিল এরপরেও সাউথ আফ্রিকা যেহেতু ব্যাটিং লাইন কিছুটা শক্তিশালী যার কারণে তারা ফিরে আসার চেষ্টা করেছিল। সেই সাথে তারা এটাও চেষ্টা করেছিল ম্যাচটা তাদের নিজের আয়ত্তে রাখার কিন্তু সময় যতই অতিবাহিত হচ্ছিল ততই সাউথ আফ্রিকার কাছ থেকে তাদের সুনিশ্চিত জয়কৃত ম্যাচটা তারা হারিয়ে ফেলছিল। সত্যি বলতে ক্রিকেটে এমন একটা খেলা এই খেলা খেলতে খেলতে অনেক হেরে যাওয়া ম্যাচ জিতে যায় আবার অনেক দিতে দেওয়া ম্যাচ খুব দ্রুতই হেরে যায়।
খেলায় হার-জিত নির্ভর করে নিজেদের দক্ষতার উপর যেই দল যত বেশি দক্ষতার সঙ্গে খেলতে পারবে সেই দলের জয় নিশ্চিত হবে। তবে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে আমি খুব একটা বেশি আশাবাদী ছিলাম না কারণ প্রথম অবস্থাতে যখন বাংলাদেশ দ্রুতই তারা বাসায় ফিরে আসে তখন থেকেই খেলা দেখার প্রতি আগ্রহ টা হারিয়ে ফেলেছিলাম তবে সাউথ আফ্রিকার খেলা দেখে আমার মনে হয়েছে এ যেন দ্বিতীয় কোন বাংলাদেশ, কারণ তারা তাদের জিতে যাওয়া ম্যাচটা ঠিক তেমনভাবেই হেরেছে যেমনভাবে বাংলাদেশ অন্যান্য দলের কাছে হারে এটা আসলে আমার কাছে অনেক বেশি খারাপ লেগেছে।
তবে আমি এটা বলতে চাইছি না যে সাউথ আফ্রিকা একদমই খারাপ খেলেছে। সাউথ আফ্রিকা ভীষণ ভালো খেলেছে তবে প্রথম দুই ওভারের মধ্যে তাদের দুটো উইকেট পড়ে যাওয়ার কারণে তারা কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল বিশেষ করে যখন সাউথ আফ্রিকার উইকেট কিপার ডি-কক আউট হয়ে গেল তখনই মূলত সাউথ আফ্রিকা ম্যাচটা হাতের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল কারণ ডিকক যতক্ষণ মাঠে ছিল ততক্ষণ পর্যন্ত বেশ ভালই বাউন্ডারি হাকাচ্ছিল। তবে ইন্ডিয়ার বোলিং লাইন অনেক চেষ্টা করেছে ডি কককে খুব দ্রুত আউট করতে। কারণ ইন্ডিয়ার বোলিং লাইন বোঝে গিয়েছিল যে তাকে যদি দ্রুত আ উট করে সাজ ঘরে না ফেরানো যায় তাহলে তারাও এই ম্যাচ জিততে পারবে না যার কারণে তারা অনেকটা কৌশল অবলম্বন করেই খেলছিল। তবে সেদিন ইন্ডিয়ার বলেই অ্যাকশন দেখে অনেক বেশি অবাক হয়েছিলাম বিশেষ করে বুমরা, আরফিন দ্বীপ, সহ প্রায় সকলেই অনেক বেশি ভালো বল করেছিল। সেদিন ইন্ডিয়ার বোলিং একশন দেখে কিছুটা মুগ্ধ হয়েছে আসলে একটা দেশে ক্রিকেট বোর্ড যদি ক্রিকেটারদের নিয়ে অনেক চিন্তিত এবং যত্নশীল হয় তাহলে সেই দেশের ক্রিকেট খুব দ্রুতই ভালো কিছু অর্জন করবে বলে আমার মনে হয়।
যাইহোক খেলা প্রথম থেকে শুরু করেই অনেক বেশি উত্তেজনা কাজ করছিল কারণ কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছিল না। অবশেষে ২০ বলে ২২ রানের প্রয়োজন ছিল সাউথ আফ্রিকার। আপনি কি কখনো এটা ভাবতে পারেন যে সাউথ আফ্রিকার মত এত বড় একটা দল ২০ বলে ২২ রান নিতে পারবে না..? সত্যি বলতে আমি এটা কখনোই ভাবেনি যে সাউথ আফ্রিকার মত একটা দল এত বলে মাত্র এই কয়েকটা রান করতে পারবে না কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস এটাই যে তারা তখন এত দূরত্ব উইকেট পড়ছিল যে ইন্ডিয়া তাদেরকে মাঠে বেশিক্ষণ দাঁড়াতেই দেয়নি। যেই ব্যাটিং করতে আসছিল তিন থেকে চারটা বল খেলার পরেই আউট হয়ে যাচ্ছিল। এরকমভাবে করতে করতে ৬ বলে দরকার ছিল ১৬ রানের, আর ঠিক তখনই ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা আস্থা রেখেছিল হার্দিক পান্ডিয়ার উপর। হার্দিক পান্ডিয়ার খেলা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে মূলত আমি ইন্ডিয়ান কোন ক্রিকেটার কে যদি ফলো করি তাহলে সেটা হচ্ছে হার্দিক পান্ডিয়া তার ব্যাটিং বোলিং এবং ফিল্ডিং দুটোই আমার অনেক বেশি ভালো লাগে।
যেহেতু রহিত শর্মা হার্দিক পান্ডিয়ার উপর ভরসা রেখেছিল সেহেতু হার্দিক পান্ডিয়া কখনোই রোহিত শর্মাকে হতাশ করেনি। এক ওভারে ১৬ টা রান করা কিন্তু খুব একটা বেশি ব্যাপার না কিন্তু বলেন যদি ভালো মানের বল করে এবং ব্যাটিংকে যদি পরাস্ত করতে পারে তাহলে এক ওভারের ১৬ রান নেওয়াটা অনেকটাই কষ্টসাধ্য একটা ব্যাপার। যদিও প্রথম অবস্থায় সাউথ আফ্রিকা চাপে পড়ে গিয়েছিল কিন্তু মাঝে কিছুটা উঠে গিয়েছিল কিন্তু লাস্টের দিকে এসে আবার সাউথ আফ্রিকা অনেকটাই চাপে পড়ে গিয়েছিল। খুব দ্রুতই তারা উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল খুব দ্রুত উইকেট হারিয়ে ফেলার কারণে তারা শেষ পর্যায়ে এসে আর জয়ের মুখ দেখতে পারেনি তারা বরাবরই এটা নিশ্চিত ছিল যে তারা আজকের ম্যাচ জিতে যাবে কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তারা ম্যাচ জিততে পারেনি। হার্দিক পান্ডিয়া এত বেশি ভালো বল করেছে যে আপনারা সকলেই দেখেছেন তার বোলিং একশন টা কতটা সুন্দর ছিল।
নিজে বল করে নিজের দলকে যদি জেতানো যায় তাহলে সেই জেতার মাঝে এক অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে আর এই ভালোলাগা থেকেই হয়তো বা হার্দিক পান্ডিয়া শেষ পর্যায়ে এসে কান্না করে দিয়েছিল। যদিও এই মানুষটার ব্যক্তিগত জীবনটা অনেকটাই কষ্টের যাইহোক সে সব কথা আর না বলি শেষমেশ ইন্ডিয়া জিতে যায় সাউথ আফ্রিকার থেকে আর সাউথ আফ্রিকা তাদের অধরা স্বপ্নটা আর ধরতে পারল না সকলেই কান্নায় ভেঙে পড়ে। এটাই ছিল আমার আজকের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার রিভিউ, আশা করছি আপনাদের ভালো লেগেছে। আজ আর নয় এখানেই শেষ করছি, সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | খেলার রিভিউ |
---|---|
বিষয় | টি-২০ বিশ্বকাপ ফাইনাল--ভারত vs সাউথ আফ্রিকা/দ্বিতীয় ইনিংস(নিজের অনুভূতি) |
পোস্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নেম @jibon47। আমি মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আব্বু আম্মু আর ছোট বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। এই তিনজন মানুষকে কেন্দ্র করেই আমার পৃথিবী।একসাথে সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়, তারপরও আমি চেষ্টা করি পরিবারের সবাইকে খুশি রাখার। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে।আমি বর্তমানে সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটিতে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়া করছি। আমি গান গাইতে, কবিতা লিখতে, এবং ভাই ব্রাদারের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করতে অনেক বেশি ভালোবাসি। সত্যি বলতে আমি প্রচন্ড রকমের অভিমানী, হতে পারে এটা আমার একটা বদ অভ্যাস। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব,"আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, পরিশ্রম সফলতার চাবিকাঠি।
@jibon47
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
খুবই উত্তেজনা ময় ম্যাচ ছিল এটা।সাউথ আফ্রিকা শেষ হাসিটা হাসতে পারলো না খারাপ লাগলো তাদের জন্য।অনেক দারুন রিভিউ করেছেন তবে মার্কডাউন এর ব্যবহার আরেকটু করে প্রতিটা ব্যাটিং এবং বোলিং এর ফিগার তুলে ধরলে আরো ভালো হতো ধন্যবাদ।
এবারের টি-টোয়েন্টি ফাইনাল খেলাটি অনেক উত্তেজনা ময় ছিল। ঠিক আপনার মত আমিও মনে করেছিলাম যে ভারত এই ম্যাচটি জিততে পারবে না। তবে সাউথ আফ্রিকা অনেক চেষ্টা করছে তাদের চেষ্টার কোন কমতি ছিল না। আসলে ডিকক এবং ডেভিড মিলার আউট হওয়ার পর তারা ম্যাচটি হারিয়ে ফেলে।যাইহোক আপনি খুবই সুন্দরভাবে খেলাটির অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করছেন। আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
সাউথ আফ্রিকা জয়ের অনেক কাছেই চলে গিয়েছিল। কিন্তু তখনই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয় বুমরাহ এবং হার্দিক। সুরিয়া কুমারের ঐ ক্যাচটাও ছিল অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা মূহূর্ত। ফাইনালের জন্য রান টা ছিল একেবারে পারফেক্ট।