ভালোবাসি বলা হয় নি /পর্বঃ-০১ [benificiary ১০% @shy-fox]|
আজ - ০৮ ভাদ্র | ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | মঙ্গলবার | শরৎকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- ছোট গল্প
- আজ ০৮ম ভাদ্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
- মঙ্গলবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ সকাল সবাইকে......!!
গল্প করতে কার না ভালো লাগে আপনারাই বলুন...? আপনাদের কার কাছে কেমন লাগে সেটা আমি জানি না তবে ব্যক্তিগতভাবে গল্প করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আমি এটাও মনে করি কমিউনিটির সকলের কাছেই ছোট ছোট গল্প পড়তে হয়তো অনেক বেশি ভালো লাগে। ব্যক্তিগতভাবে আমি সবসময়ই চেষ্টা করি ছোট ছোট গল্প পড়ার জন্য। কমিউনিটিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই অনেক রকম গল্প পড়েছি। কমিউনিটির প্রায় প্রতিটি সদস্যই অনেক সুন্দর সুন্দর গল্প লেখে যে গল্পগুলো পড়ে নিজের কাছে এক অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে। সময় পেলেই আমি কমিউনিটিতে সকলের গল্প করি এবং কিছুটা জ্ঞান আহরণ করার চেষ্টা করি। মূলত সেই জ্ঞান থেকেই আমি ছোট ছোট গল্প লিখি। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আমি আপনাদের মাঝে আজকে ছোট্ট একটি গল্প উপস্থাপন করব। ছোট্ট এই গল্পটি আশা করছি আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লাগবে। যদিও গল্পটি আমি কয়েকটি পর্বে উপস্থাপন করব আশা করছি প্রতিটি পর্ব আপনাদের কাছে খুবই ভালো লাগবে। তো চলুন আর বেশি কথা না বাড়িয়ে গল্প শুরু করি।
ছোট্ট এই গ্রামের নাম শান্তিপুর। শান্তিপুর গ্রামের নাম অনুসারে এই গ্রামের মানুষ খুবই শান্ত সৃষ্ট এবং ভদ্র। যেটা গ্রামের পরিবেশ দেখলেই বোঝা যায় সবুজ প্রকৃতির মাঝে ছোট্ট একটি গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়েই পদ্মা নদীর শাখা নদী আঁকাবাঁকা ভাবে বয়ে গিয়েছে। সকালবেলা পাখির কলকা কলি সেই সাথে ভোরের আলো ২ মিলে যেন এক মিলন মেলা। ছোট্ট এই গ্রামে মানুষ খুবই শান্তভাবে এবং শান্তিতে বসবাস করে। তাদের কারো সাথে কারো কোনরকম ঝড়গা বিভেদ মারামারি হিংসা কোন কিছুই নেই। পুরো গ্রামটা যেন এক শান্তির প্রতিচ্ছবি। এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজ করে কৃষিকাজ করেই তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। এই গ্রামের মানুষকে স্বীকার করলেও তারা তাদের ছেলেমেয়ে এবং তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই সতর্ক। প্রতিটা বাড়ি থেকে ই প্রত্যেকটা ছেলে মেয়ে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া করে। এই ছোট্ট গ্রামে একটি বিদ্যালয় রয়েছে এটি মূলত গ্রামের একদম মাঝামাঝি। এই গ্রামের প্রতিটা ছেলেমেয়েরা এই বিদ্যালয়ের থেকেই লেখাপড়া শেষ করে। এর ভিতরে থেকে তারা লেখাপড়া শেষ করে তারা শহর অঞ্চলের দিকে রওনা শুরু করে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া করার জন্য। এই গ্রামেরই দুটি পরিবারের তিনটি সন্তান রয়েছে যাদের মধ্যে এক পরিবারে দুজন এবং অন্য আরেকটি পরিবারে একজন। শাহেদ, রিফাত, এবং ঋতু। মূলত এই তিনজনের চরিত্র কে নিয়েই আমি গল্প লেখা শুরু করেছি। রিফাত এবং ঋতু এই দুজন একে অপরের ভাই এবং বোন। রিফাত এবং ঋতু এই দুজন এক পরিবারের সন্তান এবং শাহেদ অন্য আরেকটি পরিবারের ছেলে। কাকতালীয়ভাবে তাদের দুই পরিবারের বাবা কৃষক। তারা একই সাথে স্কুলে যায় এবং বাড়িতে ফিরে আসে। বলে রাখা ভালো যে এখানে শাহেদ এবং রিফাত দুজন একই ক্লাসে পড়লেও ঋতু তাদের থেকে ২ ক্লাস নিচে লেখাপড়া করছে। শাহেদ আর রিফাত এবার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র সেই ধারাবাহিকতায় ঋতু এবার দ্বিতীয় শ্রেণীতে। ঋতু দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়লেও সে অনেকটা বুদ্ধিমতী একটি মেয়ে। তারা তিনজন একত্রে স্কুলে যায় এবং টিফিন টাইমে একই সময় তারা সময় অতিবাহিত করে। স্কুল ছুটির পরে তারা তিনজন একত্রে আড্ডা দিতে আনন্দ করতে করতে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা করে। এভাবেই কেটে যাচ্ছিল তাদের দিন। প্রতিটা দিন তারা এরকম ভাবেই স্কুলে যাওয়া আসা করে।
তাদের এরকম বন্ধুত্ব সুলভ আচরণ দেখে তাদের মা বাবা খুবই খুশি হন। রিফাত এবং শাহেদ এই দুজনার বাবাই ছিল গ্রামের আদর্শ কৃষক তারা গ্রামের জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করত তাদের জমিতে অনেক ভালো মনের ফলন হত। এরকম ভাবেই তাদের দুই পরিবার খুবই আনন্দের দিন কাটছিল সেই সাথে তাদের দুই পরিবারের মধ্যে অন্যরকম একটা সম্পর্ক ছিল। সবাই সবার বিপদে-আপদে এগিয়ে আসতো সবাই সবাইকে সুখে দুখে পাশে থাকতো। মূলত তাদের বাবাদের মধ্যে এই বন্ধুসুলভ আচরণটা গড়ে উঠেছে তাদের সন্তানদের থেকেই কারণ তাদের সন্তানরা একে অপরের সাথে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে মিশে গিয়েছিল। এরকম ঘনিষ্ঠ এবং বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক দেখে তাদের বাবা-মারা দুই ফ্যামিলি খুবই বন্ধুদের আবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল কম সময়ের মধ্যেই। যেহেতু দুই ফ্যামিলি বন্ধুত্বমূলক বন্ধনে আবদ্ধ তাই সবাই সবার বাড়িতে যাওয়া আসা হতো। এদিকে রিফাত শাহেদ এবং রিতু যেহেতু ছোট সেহেতু তারা সবসময়ই দুজনার বাড়িতে সময় কাটাতো অনেকটা বেশিই। এদিকে একটা সময় যে রিফাতের বাবা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে তাদের সংসারটা অনেকটাই ঢলে পড়েছিল। যেহেতু রিফাত এবং ঋতু এই দুজনার ভাই বোন ছিল তাই তাদের পরিবারের একমাত্র রুজি রোজগারের ব্যবস্থা ছিল তার বাবা। যেহেতু তার বাবা খুবই অসুস্থ সেহেতু তাদের সংসারটা কোনরকম ভাবেই আর চলছিল না। এমত অবস্থায় শাহেদের বাবা তাদের সংসারের পাশে দাঁড়ায়। নিজের শ্রম টাকা পয়সা দিয়ে তাদেরকে অনেকটাই সাহায্য সহযোগিতা করেছিল যাতে করে রিফাত এবং ঋতু দুজনে ভালোমতো লেখাপড়া টা চালিয়ে যেতে পারে। বিপদে তাদেরকে পাশে পেয়ে রিফাত এবং ঋতুর বাবা খুবই খুশি হয়েছিল এবং এতটাই খুশি হয়েছিল যে সে সুস্থ হবার পরপরই তার ঋণ পরিশোধের জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ে। কিন্তু শাহেদের বাবা একটু মধ্যবিত্ত হওয়ায় সে কিছুটা আশ্বাস দিয়ে বলে আগে ছেলে মেয়েকে বড় করো তারপরে এসব নিয়ে ভেবো।
দেখতে দেখতে শাহেদ এবং রিফাত দুজন এবার ষষ্ঠ শ্রেণীতে পদার্পণ করেছে। এখন শাহেদ এবং রিফাত মাধ্যমিক স্তরের ছাত্র আর ঋতু এখন পর্যন্ত প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রী। যদিও মাধ্যমিক এবং প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রছাত্রী হওয়ার পরেও তাদের মধ্যে কোনরকম দূরত্ব সৃষ্টি হয়নি কারণ দুটো একই স্কুলে প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হতো। এদিকে তাদের স্কুলে যাওয়া আসায় খুবই কষ্ট হতো হেঁটে হেঁটে অনেকটা দূর যাওয়ার আশা করতে তাদের অনেকটাই দুঃখ এবং কষ্ট হতো যেটা দেখে শাহেদের বাবা সাহেবকে একটি ছোট সাইকেল কিনে দেয়। ছোট সাইকেল দেখে সাহে অনেক খুশি হয় এবং সে প্রতিদিন সাইকেল নিয়ে স্কুলে যাওয়া আসা করবে এটা ভেবে রাখে। শাহেদের সাইকেল দেখে রিফাত তার বাবার কাছে সাইকেল আবদার করে কিন্তু রিফাতের বাবা অনেকটাই নিম্নবিত্ত ছিল যার কারণে সে তাকে সাইকেল কিনে দিতে নারাজ হয়। এদিকে শাহেদ জানতে পেরেছে যে রিফাতের বাবা তাকে সাইকেল কিনে দেবে না তাই সে প্রতিদিন একই সাইকেলে তিনজন স্কুলে যাওয়া আসা করে। সাইকেলের সামনের অংশে ঋতু এবং পেছনের অংশে রিফাত এই দুজনকে বসিয়ে মাঝখানে বসে সাহেব সাইকেল চালায় এভাবেই তাদের প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া আসা হয়। তারা কখনোই ভাবেনি যে তাদের মধ্যে এত ভালো বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক গড়ে উঠবে। এভাবে দেখতে দেখতে রিতু একটা সময় মাধ্যমিক স্তরে পদার্পণ করে। ঋতু দেখতে অনেকটাই বড় হয়ে গিয়েছে। এদিকে রিফাত এবং শাহেদ দুজনে ঋতুর মতই কিছুটা বড় হয়ে গিয়েছে এবং তাদের মুখে গোঁফ দাড়ি মাত্র দেখা যাচ্ছে। এরকম ভাবেই কেটে যাচ্ছিল তাদের দিন অনেকটা বছর অতিবাহিত করার পরে রিফাত এবং শাহেদ এবার মেট্রিকের পরীক্ষার্থী। তারা এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে আর ঋতু অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। এখন পর্যন্ত তারা শুধুমাত্র বন্ধু ।বন্ধু ছাড়া তাদের মধ্যে এখনো তেমন কোনরকম লোভ-লসা বা আবেগের সৃষ্টি হয়নি। এভাবেই চলতে থাকবে কয়েক টি বছর।
যাই হোক গল্পটি আমি যেহেতু কয়েকটি পর্বে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব সেহেতু আমি এখানেই আমার প্রথম পর্ব শেষ করছি। খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের মাঝে পরবর্তী কয়েকটি পর্ব উপস্থাপন করব। আমি আশা করছি এই গল্পটি আপনাদের অনেক বেশি ভালো লাগবে। মূলত গল্প লেখাটা আমি অনেকটাই বেশি পছন্দ করি। আর এরকম অনুগল্প আমি প্রতিনিয়ত আপনাদের মাঝে শেয়ার করে যাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও শেয়ার করবো বলে আশা রাখি।
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন
বিভাগ | ছোট গল্প |
---|---|
বিষয় | ভালোবাসি বলা হয় নি,প্রথম পর্ব |
গল্পের কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
স্বল্প সংখ্যক সাপোর্ট করে পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার গল্পের পর্বগুলো একসাথে দেখতে পারলে অনেক মজা লাগতো।। খুবই সুন্দর লাগলো পর্ব প্রথম টি পড়ে।। আশা করি সামনের দিনগুলোতে খুবই তাড়াতাড়ি পর্বগুলো শেয়ার করবেন।।
খুবই চমৎকার একটি মন্তব্য করেছেন দেখে খুবই ভালো লাগলো খুব শীঘ্রই আমি আপনাদের মাঝে পরবর্তী পর্বগুলো উপস্থাপন করব অপেক্ষায় থাকুন।
খুবই সুন্দর লিখেছেন ভাই পড়ে খুবই ভালো লাগলো। খুব সুন্দরভাবে আপনি গুছিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ধন্যবাদ আপনাকে।
মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ এভাবে সবসময় পাশে থাকবেন আশা করি সুস্থ থাকুন সবসময়।