রাতের বেলা ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট) এ ঘুরাঘুরি,পর্ব: প্রথম। [benificiary ১০% @shy-fox]|
আজ - ০৪ মাঘ| ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | বুধবার | শীতকাল|
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
- অনেকদিন পর ঘুরাঘুরি
- আজ ০৪ষ্ঠা মাঘ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
- বুধবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ সকাল সবাইকে......!!
আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন আমি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলাম জব কোচিং করার জন্য। সেখানে আমি যদিও বেশি দিন পর্যন্ত জব কোচিং করতে পারেনি তবে ৬ থেকে ৭ মাস পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেছিলাম। জব কোচিং করার আগে আমি প্রথমেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আগে গাজীপুর গিয়ে একটা মেস ঠিক করে আসবো তারপরে সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেলে গাজীপুরে একদম পার্মানেন্টলি চলে যাবে। কিন্তু সমস্যা হয়ে গিয়েছিল একটা, সেটা হচ্ছে যে গাজীপুরে সেরকম কোন পরিচিত ভাই ছিল না। এর আগে যে ভাইগুলো ছিল তারা গাজীপুর ছেড়ে অন্যত্রে চলে গিয়েছে যার কারণে তাদের সঙ্গেও এখন আর দেখা-সাক্ষাৎ হতো না। মাঝে মাঝে শুধু কথা হতো।
আবার এদিকে আমি সবকিছু নিয়ে গাজীপুর চলে যেতেও পারছিলাম না কারণ পুরো জায়গাটি আমার একদম অচেনা ছিল এর আগে যদিও দুবার গিয়েছিলাম কিন্তু সেরকমভাবে কোন কিছু চেনা পরিচিত হয়ে উঠেছিল না। যার কারনে বড় বিপদে পড়ে গিয়েছিলাম। কি করবো ভেবে না পেয়ে আমার চাচাতো বোন, ও আমার থেকে দু বছরের বড়। আপু কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে এখন ঢাকাতে বিএসসি তে ভর্তি হয়েছে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
তো আমি কোন কিছু না ভেবে সরাসরি আপুর কাছে ফোন দিয়ে পুরো ঘটনাটি বললাম। আপু আমার কথা শুনে বলল টেনশন করার দরকার নেই আমার অনেক বন্ধু আছে যারা কিনা ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমি ওদের সঙ্গে কথা বলে নেব তোকে একটা ভালো মেস ঠিক করে দেবে। কথাটা শুনে অনেকটাই স্বস্তি পেলাম। তারপরে আপুকে বললাম তাহলে আপনি কিছুদিনের মধ্যেই আপনার বন্ধুদের বলে সবকিছু ঠিকঠাক করে নেন, আমি খুব দ্রুতই গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করব।
এরপরে আপু তার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। মূলত সোশ্যাল মিডিয়া আমাদেরকে অনেক বেশি জনপ্রিয় করে তুলেছে আমরা ইচ্ছে করলেই যে কারো সঙ্গেই খুব দ্রুত তার সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারি। যাই হোক আমি মেস দেখার উদ্দেশ্যে একদিন গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যাওয়ার আগে আমি আপু এবং সেই ভাইয়াকে বলে রাখি। সেটাই ছিল আমার প্রথম কোন ভ্রমণ যে ভ্রমণে আমি একা একা ভ্রমণ করছি কিন্তু কোথাও কিছু চিনি না। ব্যাপারটা আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগছিল আবার মনে মনে একটু ভয় লাগছিল কারণ অপরিচিত কোন জায়গায় যাচ্ছি একদম একা একা। যাই হোক অবশেষে ভাইয়া যেভাবে আমাকে বলে দিয়েছিল আমি সেভাবেই গিয়েছিলাম এবং অবশেষে তার মেসের সামনে গিয়ে পৌঁছেছিলাম।
দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষ করে ভাইয়ার রুমে অনেকটা সময় রেস্ট করেছিলাম। বিকেল হবার সাথে সাথে ভাইয়া আমাকে বলল চলো একটু ঘুরে আসি পাশাপাশি দেখি কোন মেস পাওয়া যায় কিনা। আমি অনেক বেশি ক্লান্ত ছিলাম কারণ অনেকদিন পরে এরকম বড় ধরনের একটা জার্নি করে মন চাইছিল না বিছানা থেকে উঠি। তবুও ভাইয়ার কথায় উঠে ফ্রেশ হয়ে ভাইয়ের সাথে রওনা হলাম ঘুরাঘুরি এবং মেস দেখা।
প্রথম অবস্থাতে একটা মেস পেয়েছিলাম কিন্তু সেই মেস আমার কাছে তেমন একটা পছন্দ হয়নি। কারণ মেস অনেকটাই অন্ধকার ছিল মানে চারিদিকে গাছপালা যার কারণে সূর্যের আলো খুবই কম দেখা যায়। আমার পছন্দ না হওয়াতে ভাইয়া বলল সমস্যা নেই চলো সামনের দিকে হাঁটতে থাকি অনেক মেস পাওয়া যাবে।
এরপরে আমি আর ভাইয়া সামনের দিকে হাঁটতে থাকি হাঁটতে হাঁটতে একটা খেলার মাঠের কাছে যাই এবং সেখানে গিয়ে দেখি অনেক ছেলেপেলে খেলাধুলা করছে। ভাইয়া তার বন্ধুদেরকে ফোন দিল দু তিনজন কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসলো। এর পরে তাদের কাছে বলল ছোট ভাইয়ের জন্য একটা মেস লাগবে। একজন বলল একটা মেস আছে আশা করি পছন্দ হবে চলো সেখানে যাই। আমি আর ভাইয়া তাদের সঙ্গে গিয়ে সেই মেস দেখি আমার খুবই পছন্দ হয় এবং সেখানেই সেট বুকিং দিয়ে ভাইয়ার সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে যাই। এরপরে ভাইয়া আমাকে জিজ্ঞেস করল তুমি কি কখনো এই ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেছো। আমি বললাম না ভাইয়া এখন পর্যন্ত যাওয়া হয়নি। তো ভাইয়া বলল ঠিক আছে চলো তাহলে ক্যাম্পাস ঘুরে আসি।
এরপরে ভাইয়ার দুজন বন্ধুসহ আমি ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রবেশ করি। ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রবেশ করলেই দেখা যাবে ডান সাইডে শহীদ মিনার তৈরি করে রাখা হয়েছে। তার একটু সামনের দিকে গেলেই বাম সাইডে দেখা যাবে তিনজনের মূর্তি এবং হাতে তাদের অস্ত্র রয়েছে। এটা মূলত পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের যখন যুদ্ধ হয়েছিল সে যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের সেনাদেরকে লক্ষ্য করে এই মূর্তিটি তৈরি করা হয়েছে দেখতে খুবই সুন্দর দেখায়।
আমি তাদের সাথে গল্প করছিলাম আর হেঁটে হেঁটে ক্যাম্পাসের মধ্যে প্রবেশ করছিলাম। আর মাঝে মাঝে ফটোগ্রাফি করছিলাম ভাইয়া আমাকে দেখিয়ে দিচ্ছিল কোনটা কোন হল আর কোন হলে কোন ডিপার্টমেন্টের ছাত্ররা থাকে। এভাবে হাটতে হাঁটতে পুরো ক্যাম্পাসটা ঘুরে ছিলাম খুবই ভালো লেগেছিল তারপরে খেলার মাঠের ওখানে বসে থাকার জন্য অনেক সুন্দর ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। সেখানে বসে অনেক গল্প করেছিলাম। এর মধ্যে ভাই আর বন্ধু একটা গল্প করেছিল যে গল্পটা আমার কাছে এত ভালো লেগেছিল যে সেই গল্পটা আমার এখন পর্যন্ত মনে আছে। সেই গল্পটা আমি পরবর্তী পোস্টে আপনাদের মাঝে শেয়ার করব আশা করছি আপনারা ততক্ষণ পর্যন্ত ধৈর্য ধরবেন। আজ আর নয় এখানেই আমি আমার আজকের পোস্ট শেষ করছি। সকলেই সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা
বিভাগ | হঠাৎ ঘুরাঘুরি |
---|---|
বিষয় | রাতের বেলা ডুয়েট ক্যাম্পাসে |
পোষ্ট এর কারিগর | @jibon47 |
অবস্থান | [সংযুক্তি]source |
VOTE @bangla.witness as witness
OR
প্রথমেই আপনাকে জানাই আগামীর জন্য শুভেচ্ছা। তারপর বলবো আসলে অপরিচিত কোন জায়গায় গেলে এমনই হয়। আপনি ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতের বেলায় আপনার বড় ভাইয়ের সাথে বেশ ভালই সময় কাটিয়েছেন। আসলেই রাতে ডুয়েট দেখতে বেশ সুন্দর যা আপনার পোস্টের মাধ্যমে আজ দেখতে পেলাম। তবে ভাল লাগলো যে অবশেষে আপনি একটা ভাল মেস খুঁজে পেলেন।
সত্যি শুধু রাত্রে বড় ভাইয়ের সঙ্গে ডুয়েট ক্যাম্পাসে খুবই চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলাম বিশেষ করে রাত্রেবেলা খুবই সুন্দর দেখাচ্ছিল পুরো ক্যাম্পাসটা যেটা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম।
ভাই, আমিও গাজীপুরে গেলাম! কিন্তু মনের মতো মেস খুজেঁ পেলাম না ! যাও একটা পেয়েছিলাম কিন্তু সেখানে সূর্যের দেখা পাওয়া যাবে! এছাড়া খাওয়া-দাওয়ার ঝামেলা তো আছেই! আপনি যদি একটু হেল্প করতেন 😐
ভাই আমি তো গাজীপুর ছেড়ে চলে এসেছি কিছুদিন আগে। যদি গাজীপুরে থাকতাম তাহলে অবশ্যই আমি আপনাকে হেল্প করতাম।
আপনার আপুর বন্ধুর সাথে পুরো ক্যাম্পাস টা ঘুরে সবকিছু চিনে নিলেন।অপরিচিত জায়গায় আসলেই পরিচিত কোনো লোক না থাকলে কষ্টকর ব্যাপার হয়ে পড়ে।ম্যাক্সিমাম মেস গুলোই অন্ধকার এজন্য আমার মেসে থাকতে ভালো লাগেনা।আপনিও দেখছি একই প্রবলেমের জন্য মেস ঠিক করতে পারেননি। ডুয়েট কম্পাসের ফটোগ্রাফি গুলো দারুন লাগছিল।ধন্যবাদ সুন্দর ব্লগটি শেয়ার করার জন্য।
অপরিচিত জায়গায় সত্যি নিজেকে অনেক বেশি অসহায় মনে হয় কিন্তু কেউ যদি পরিচিত থাকে তাহলে খুবই ভালো লাগে আর গাজীপুর শহরে ম্যাক্সিমাম ম্যাচগুলোই অনেকটাই অন্ধকার।
আপনি তো দেখছি পড়ালেখা শেষ করে ফেললেন, তবে আপনি পরিচিত কাউকে খুঁজে পাচ্ছেন না দেখে খারাপ লাগলো। তবে আপনার চাচাতো বোন সব কথা শুনে যে একটা সমাধান বের করল এটা দেখে ভালো লাগলো। তবে পুরো ক্যাম্পাসের চারপাশে ঘুরেছেন দেখে ভালো লাগলো। আসলে এরকম জায়গা গুলোতে ঘুরতে ভীষণ ভালো লাগে। খুব সুন্দর একটা সময় কাটালেন।
লেখাপড়া এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি বি এস সি তে ভর্তি হব কিছুদিন পরেই সত্যিই সেদিন চাচাতো বোনের সঙ্গে কথা বলে একটু সমাধান বের করেছিলাম। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
এরকম অপরিচিত জায়গায় যাওয়ার ফলে সবকিছু ম্যানেজ করতে অনেক কষ্ট হয়। কিন্তু সেখানে যদি পরিচিত কেউ থাকে তাহলে সবকিছু ম্যানেজ করতে এত বেশি কষ্ট হয় না। আপনি আপনার আপুর বন্ধুর সাথে পুরো ক্যাম্পাসটা ঘুরে সব কিছু তাহলে চিনে নিলেন। বেশ ভালোই করেছেন। আপনি তো দেখছি মেস ঠিক করতে পারিনি। আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য খুবই সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফিও করলেন দেখছি। ফটোগ্রাফি গুলোও বেশ ভালো ছিল। ভালো একটি মুহূর্ত কাটালেন।
অপরিচিত জায়গা যদি এই পরিচিত কেউ থাকে তাহলে তেমন একটা বেশি সমস্যার মধ্যে পড়তে হয় না পুরো ক্যাম্পাস টা ভাইয়ের সঙ্গে সত্যিই খুবই সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিলাম।
ঢাকা প্রকৌশলীতে ঘোরাঘুরি দারুণ একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। আসলে শীতের সময় সুন্দরকালীন সময়ে বন্ধুদের সাথে ঘোরাঘুরি করার মজাটা আলাদা হয়। দারুন কিছু ফটোগ্রাফির পাশাপাশি সুন্দর বর্ণনা পড়ে অনেক কিছু ধারণা অর্জন করতে পারলাম।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।