ফিরে দেখা//স্মৃতিচারন মূলক পোস্ট//পর্বঃ--০৩

in আমার বাংলা ব্লগ11 months ago (edited)

আজ - ০৩ আশ্বিন | ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | সোমবার | শরৎকাল |



আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।


আজ আমি আপনাদের মাঝে ছোটবেলায় আমার চোখের সামনে ঘটে যাওয়া বৈদ্যুতিক আঘাতপ্রাপ্ত এক মহিলার ঘটনা আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। আশা করছি আপনাদের সবার ভালো লাগবে।



  • প্রিয় কমিউনিটি,আমার বাংলা ব্লগ
  • স্মৃতিচারন মূলক পোস্ট//পর্বঃ--০৩
  • আজ ০৩রা আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  • সোমবার


তো চলুন শুরু করা যাক...!


শুভ সন্ধ্যা সবাইকে......!!


আমাদের চোখের সামনে অথবা আমরা নিজেরাই বৈদ্যুতিক শর্ট- সার্কিট জনিত কারণে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি অথবা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে এমন অনেক মানুষ দেখেছি। আমরা অনেক সময় কোন ছোটখাটো কাজ করতে গেলে মাঝে মাঝে আমরা বৈদ্যুতিক তারের সাথে হাত লেগে যাওয়ার কারণে আঘাতপ্রাপ্ত হই যাকে আমরা শর্ট বলে থাকি। ঠিক তেমনি ভাবে আমার চোখের সামনে ঘটে যাওয়া এক মহিলা বৈদ্যুতিক আঘাত প্রাপ্ত হওয়ার পর তার কি অবস্থা হয়েছিল এবং সে কিভাবে আঘাত পেয়েছিল সে ব্যাপারে আপনাদের মাঝে একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। ছোটবেলা থেকেই যেহেতু আমি গ্রামে বড় হয়েছি আর গ্রামের মানুষজন একে অপরকে খুব ভালোভাবেই চেনে। তাই আমি সেই মহিলাকে অনেক আগে থেকেই চিনতাম। আমরা সকলেই আমাদের বাসা থেকে একটু দূরে একটা গার্লস স্কুল রয়েছে মূলত সবাই সেখানে গিয়ে বিকেলবেলা আমরা ক্রিকেট খেলতাম। অনেক বড় একটা মহল্লা ছিল আর সেই বড় মহল্লার মধ্যে শুধুমাত্র একটাই খেলার মাঠ ছিল যার কারণে বিকেল বেলা সেখানে প্রচুর ছেলেপেলে খেলতে আসতো। সবাই আমরা একসাথেই খেলাধুলা করতাম।

ঠিক তেমনিভাবে কোন একদিন বিকেল বেলা আমরা স্কুল মাঠে খেলতে গিয়েছিলাম। এই ধরুন,আসরের নামাজ শেষ করে আমরা সকলে খেলতে যেতাম সেই মাঠে। প্রতিদিনের মতো সেদিনও খেলার আগে কে কোন দলে খেলবে এই ব্যাপারটা নিয়ে অনেকের ভেতরে অনেক রকম কথা কাটাকাটি হচ্ছিল কারণ সকলেই চাই যে তার দলে ভালো খেলোয়াড় গুলো খেলুক। যদিও আমি ক্রিকেট তেমন একটা ভালো খেলি না যার কারণে আমার যেকোনো একদিকে রাখলেই চলবে কারণ আমি ক্রিকেটের থেকে ফুটবলকে অনেক বেশি ভালোবাসি। এরপরে আমরা সকলেই দেখতে পাই যে হঠাৎ এক মহিলা হাতে অনেক বড় একটা বাস যেটা কিনা খুবই চিকন এবং অনেক লম্বা আবার বাসের সাথে কাঁচি বাঁধানো। সেই মহিলাটি মূলত স্কুল মাঠে এসেছে মেহেগুণীর গাছ থেকে গাছের পাতা পারার জন্য।

হয়তোবা তার কোন ছাগল ছিল আর ছাগলের খাওয়ানোর জন্যই হয়তো বা মেহগনির গাছ থেকে মেহগনির পাতা ছিড়তে এসেছিল। যদিও আমরা প্রথম অবস্থায় অতটা খেয়াল করিনি যে সে যে বড় বাসটা নিয়ে এসেছে সেটা শুকনো ছিল না সেটা ছিল একদমই ভেজা সবুজ একটি বাঁশ। এরপরে এসে যেই গাছের উপর দিয়ে বৈদ্যুতিক তারের লাইন টানানো হয়েছে সে সেই গাছ থেকে মেহগনির পাতা পারতে থাকে।

power-lines-4758957_1280.png

source

এরপরে আমরা সবাই তাকিয়ে দেখি যে সে সেই গাছ থেকে মেহগনির পাতা পারছে যদিও আমরা কেউ কিছু তাকে বলি না। এ কারণেই বলিনি কারণ সেখান থেকে মাঝে মাঝে অনেক মানুষ অনেক মেহগনির পাতা পেড়ে নিয়ে যায়। আমরা যথারীতি ব্যস্ত ছিলাম ক্রিকেট খেলার নিয়ে ক্রিকেট খেলায় ব্যস্ত থাকাকালীন সময়েই হঠাৎ আমরা দেখতে পাই যে ওই কাঁচা বাঁশ যখন বৈদ্যুতিক তারের উপর যে লেগেছে তখন সেই বাঁশের মাধ্যমে ওই মহিলার বৈদ্যুতিক শক লেগেছে এবং সে বাঁশের সাথে ঝুলছে। এটা দেখে আমরা সকলেই তার কাছে দূর দিয়ে চলে যাই। আমাদের পাশে থাকা এক বড় ভাই বলে যে তোমরা কেউ তার গা ছুঁবে না। গা ছুয়ে দিলে কিন্তু সেও বৈদ্যুতিক আঘাতপ্রাপ্ত হবে। আমাদের আশেপাশে তেমন কোনো শুকনো জিনিস ছিল না যেটা হাতে নিয়ে আমরা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করতে পারি। এরপরে আমরা ক্রিকেট খেলায় যে ইস্টাম ব্যবহার করি সেটা ৩-৪ জন হাতে নিয়ে সেটা তার গায়ের সাথে লাগিয়ে জোরে একটা ধাক্কা দিয়ে দিই পরক্ষণেই সেই মহিলা একটু দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ে যায়।

এরপরে আমরা যেহেতু ছেলে মানুষ তাই মহিলাদের গায়ে সেভাবে হাত দিতে পারছিলাম না যার কারণে সবাই অনেক চিল্লাচিল্লি করছিল এবং পাশের বাসা থেকে তিন থেকে চারজন মহিলা সেখানে চলে আসে এবং পড়ে যাওয়া সেই মহিলার হাতে পায়ে এবং শরীরে মেসেজ করতে থাকে। এতক্ষণে শার্ট পাওয়া মহিলাটি প্রায় অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে। এরপরে সেখান থাকা মহিলারা তাকে অনেক রকম ভাবেই মেসেজ করছিল কিন্তু সে কোনভাবেই জ্ঞান ফিরে পাচ্ছিল না সে অনেকটাই বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল। অনেকক্ষণ তাকে মেসেজ করার পরে তার জ্ঞান ফিরে এসেছিল তারপরে তাকে সেই মহিলারা বাসায় নিয়ে গিয়েছিল। এর আগেও কয়েকজন এভাবে শর্ট খেয়েছিল কিন্তু এটা নিয়ে কোন রকম মাথাব্যথা নেই সেখানকার মানুষের।

electricity-98829_1280.webp

source

সেদিন যদি আমরা ওখানে না থাকতাম আর ওইভাবে তাকে বৈদ্যুতিক শক থেকে যদি না ছাড়িয়া দিতাম তাহলে আল্লাহ না করুক সে হয়তো সেখানে মৃত্যুবরণ করত কেউ বুঝতেই পারত না যে কিভাবে মৃত্যুবরণ করেছে। যাইহোক সেদিনের পর থেকে আর কেউ নতুন করে সেই মেহগনির গাছ থেকে পাতা পারতে যায়নি সকলেই অনেক বেশি ভয় পেতো তারপর থেকে। আমরাও অনেকটা সাবধান হয়ে গিয়েছিলাম সেদিনের পর থেকে।

এটাই ছিল আমার ছোটবেলায় চোখের সামনে ঘটে যাওয়া এক বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিটের জড়িত এক মহিলার কাহিনী। আশা করছি আমার এই পোস্ট আপনাদের সকলের কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আজ আর নাই এখানেই শেষ করছি। সকলেই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পরিবারের সঙ্গেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে....!!



সমাপ্ত


আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আশা করছি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্ট খুবই ভালো লেগেছে। আমার এই পোস্ট পরে সুন্দর মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন বলে আশা রাখি। আপনার সুন্দর মন্তব্যই আমার কাজ করার অনুপ্রেরণা

বিবরণ
বিভাগজেনারেল রাইটিং
বিষয়ফিরে দেখা//স্মৃতিচারন মূলক পোস্ট//পর্বঃ--০৩
পোস্ট এর কারিগর@jibon47
অবস্থান[সংযুক্তি]source

VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  
 11 months ago 

মানুষ চাইলেও ছেলেবেলাকে ভুলতে পারে না তেমনি কিছু ঘটনা হৃদয়ে গেঁথে যায় আমাদের।কারেন্টের তারগুলি গাছের ডাল বা পাতার সঙ্গে লেগে থাকলে খুবই বিপজ্জনক।আপনারা না থাকলে মহিলাটি হয়তো মারা যেত, যাইহোক এখন বেঁচে আছেন জেনে ভালো লাগছে।ধন্যবাদ আপনাকে।

 11 months ago 

আসলে গ্রাম অঞ্চলে বৈদ্যুতিক লাইনের তার গুলো গাছের পাতার ভেতর দিয়েই চালানো হয়েছে যার কারণে মানুষের এরকম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সেদিন ওই মহিলাটি খুবই মারাত্মক একটা অবস্থার মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

 11 months ago 

গ্রামের দিকে সাধারণত তারের কভার থাকে না। ঐজন‍্য ঐ মহিলা টা এইরকম দূর্ঘটনার স্বীকার হয়েছিল। আর ঐ মহিলার হয়তো খেয়াল করেনি তার বাঁশটা তারের সঙ্গে লেগে গিয়েছে। যাইহোক শেষমেশ যি উনি বেঁচে ছিলেন এটাই অনেক। এবং আমিও আপনার মতো ভাই ক্রিকেট খুব একটা পছন্দ করি না। ফুটবল আমারও পছন্দের খেলা।।

Posted using SteemPro Mobile

 11 months ago 

ওই মহিলাটি বাসের সাথে হাত লাগিয়ে ঝুলছিল আমরা হয়তোবা না থাকলে সে সেখানে মরে পড়ে থাকত কেউ বুঝতোই না। ব্যক্তিগতভাবে ফুটবল আমার অনেক বেশি পছন্দের ক্রিকেট তেমন একটা ভালো লাগেনা, আপনারও দেখছি একই অবস্থা। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.13
JST 0.028
BTC 59887.64
ETH 2670.13
USDT 1.00
SBD 2.47