একটি বৃষ্টির দিনের গল্প ||🦊 ১০% বেনিফিশিয়ারি🦊 @shy-fox 🦊||
আজ - ১১ বৈশাখ | ১৪২৯ বঙ্গাব্দ | রবিবার | গ্রীষ্মকাল |
আসসালামু ওয়ালাইকুম,আমি জীবন মাহমুদ, আমার ইউজার নাম @jibon47। বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালোই আছি মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, সবাইকে আমার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
- একটি বৃষ্টির দিনের গল্প কথা
- আজ ১১ শ বৈশাখ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
- রবিবার
তো চলুন শুরু করা যাক...!
শুভ সন্ধ্যা সবাইকে.....!!
Location |
---|
Device :realme 6i |
বৃষ্টির দিন মানে যেন এক অন্যরকম অনুভূতি। এই অনুভূতিটা কখনোই বলে শেষ করা যাবে না। আমার একটি ঘটনা মনে আছে যে আমরা যখন মাধ্যমিক অথবা উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্র ছিলাম, আচ্ছা মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক এর কথা বাদ দিই, যখন আমরা প্রাইমারি স্কুলে পড়তাম তখন আমরা সচরাচর স্কুলে না যাওয়ার জন্য অনেক রকম তালবাহানা শুরু করতাম। বিশেষ করে যেদিন ক্লাসের পড়া হতো না সেদিন স্কুলে যাওয়ার ইচ্ছা থাকতো না। তখন আমরা মনে মনে চাইতাম, ইস, আজকে সকালবেলা যদি বৃষ্টি হতো তাহলে কতই না ভালো হতো। স্কুলে যাওয়া লাগত না সারাদিন বাসায় থাকতে পারতাম। ঠিক তেমনি ভাবে এখন পর্যন্ত আমরা যারা কলেজ ইউনিভার্সিটিতে পড়ি তাদের মাঝে মাঝে এরকম মনে হয় যে সকালবেলা যদি বৃষ্টি হয় তাহলে কলেজ ইউনিভার্সিটি তে যাওয়া লাগত না। আপনাদের কার কী মনে হয় সেটা আমি জানি না তবে আমার মাঝে মাঝে এটা মনে হয় যে সকাল বেলা ঝুম বৃষ্টি নামবে কলেজে যাওয়া বন্ধ থাকবে। সারাদিন রুমের মধ্যে শুয়ে বসে দিন পার করব। তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে এটাই যে, আমি এ যাবৎ কালে দেখেছি, সারারাত বৃষ্টি খুবই বৃষ্টি বাহিরে যাওয়ার মতো কোন অবস্থা ছিল না। রাত্রেবেলা ভেবে রেখেছি যে সকালেও মনে হয় এরকম বৃষ্টি হবে। যাক ভালোই হলো তাহলে কাল কলেজে যাওয়া লাগবে না। কিন্তু সকাল হতে না হতেই বৃষ্টি কোথায় যে মিলিয়ে যায় তা বোঝাই যায়না। যখন সারারাত বৃষ্টি থাকার পরে সকাল বেলা বৃষ্টি থেমে যায় তখন স্টুডেন্টদের মনের অবস্থাটা একবার ভাবুন। কতটা কষ্ট লাগে তখন আবার প্রতিদিনের মতো সেই কলেজ বা ইউনিভার্সিটি তে যেতে হবে। তবে আপনারা যারা প্রতিনিয়ত ও কলেজ বা ইউনিভার্সিটি তে যেতে অভ্যস্ত তাদের কাছে এটা তেমন কোন কষ্টের কাজ নয়।
Location |
---|
Device :realme 6i |
সেদিনের সেই দিনটি ছিল রোদ্রজ্জল। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই দেখি জানালার ফাঁকা দিয়ে সূর্যের আলো রুমে প্রবেশ করেছে খুবই তীর্যকভাবে। সূর্যের আলোটা এমনভাবে আমার রুমে প্রবেশ করছিল যে আমি বুঝে গিয়েছিলাম যে আজকের দিনটা অনেক রৌদ্রময়। তো আমি ঘুম থেকে উঠে কিছু কাজের জন্য কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা করি, সে কি যে গরম সেটা বলে কাউকে বোঝাতে পারবো না। কলেজে গিয়ে কিছুটা সময় লাইব্রেরীতে বসেছিলাম। লাইব্রেরীতে বসে থাকে ও ঠান্ডা হতে পারছিলাম না তাই চলে যাই ছাত্র কমনরুম। ছাত্র কমনরুম যেহেতু দোতালায় সেহেতু, সেখানে কিছুটা বাতাস পাওয়া যাবে এটা ভেবেই আমি ছাত্র কমন রুমে চলে যাই। সেখানে গিয়ে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলাম। কলেজের কাজকর্ম সেরে আমি বাসায় চলে আসি।
বাসায় এসে খুব ক্লান্ত থাকার কারণে আমি ঘুমিয়ে পরি। ঘুম ভাঙ্গে ঠিক বিকেল তিনটায়। ঘুম থেকে উঠেই আমি শীতল হাওয়া অনুভব করছিলাম আমার শরীরে। আমি তখন বুঝতে পারছিলাম না যে এখন সকাল না বিকাল। এরকম মাঝেমাঝেই আমার সাথে হয়ে থাকে যখন আমি দুপুর বেলা ঘুমাই, কয়েক ঘণ্টা ঘুমানোর পর যখন ঘুম ভেঙে যায়, তখন কয়েক সেকেন্ডের জন্য আমি বুঝতে পারি না যে এখন সময় টা কি সকাল না বিকাল। অবশ্য কয়েক সেকেন্ড পরে সেটা বোঝা যায়। যাইহোক রুম থেকে বের হয়ে গিয়ে দেখি আকাশে প্রচণ্ড মেঘ। সেইসাথে ঝড়ো বাতাস বইছে। নিমিষেই শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল কি দারুন এক অনুভুতি সত্যিই বলে বোঝাতে পারবো না।
Location |
---|
Device :realme 6i |
যেহেতু এখন বৈশাখ মাস আর এই বৈশাখ মাসে কাল-বৈশাখী ঝড় হবে এটাই স্বাভাবিক। কালবৈশাখী ঝড়ের কথা মনে মনে ভাবতে ভাবতেই কোথা থেকে যেন কালো মেঘ এসে অন্ধকার করে দিলো পুরো পরিবেশটা। আমি এরকম পরিবেশ দেখে রুমে গিয়ে মুঠোফোন হাতে নিয়ে কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম আকাশের। সেইসাথে আকাশের গুড়ুম গুড়ুম শব্দ সাথে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল। খুবই ভয় লাগছিল যার কারণে বেশিক্ষণ বাইরে না থেকে আমি রুমে চলে আসি। রুমে আসতে আসতেই শুরু হয়ে গেল প্রচন্ড রকমের বৃষ্টি। এমন বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল যে মনে হচ্ছিল এ বৃষ্টি আর কখনোই থামবে না। প্রচন্ড বৃষ্টির সেইসাথে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল পরিবেশটা একটু ভুতুড়ে টাইপের মনে হচ্ছিল আমার কাছে। রুমের জানালা দরজা বন্ধ করে দিয়ে বসে ছিলাম নিশ্চুপ ভাবে। তারপরে হঠাৎ মনে হলো অনেকদিন বৃষ্টিতে গোসল করা হয় না। যাই একটু বৃষ্টিতে গোসল করে আসি। যেমন ভাবা ঠিক তেমনি কাজ দরজা খুলে বাহিরে চলে যাই বৃষ্টিতে গোসল করার জন্য। অনেকটা সময় গোসল করেছিলাম বৃষ্টির পানিতে। যার কারণে গত দু'দিন যাবত খুব ঠান্ডা ভুগছি।
Location |
---|
Device :realme 6i |
বৃষ্টিতে অনেক সময় গোসল করার পরে আমি রুমের মধ্যে চলে আসি। যেহেতু রমজান মাসে তো ইফতারি করতে হবে, তাই ইফতারের আয়োজন নিয়ে বসে যায় সকলে একত্রিত। এদিকে ম্যাচ লাইফ এ বৃষ্টি মানেই যেন খিচুড়ি ডিম ভাজি আর আলু ভর্তা খাওয়ার সুন্দর এক জায়গা। যেহেতু বৃষ্টিতেই সেহেতু মেসে রান্না করা হয়েছিল খিচুড়ি ডিম ভাজি এবং শুকনো মরিচ ভর্তা। এরকম খাবার দেখে আমার আর তর সইছিল না শুধু মনে হচ্ছিল যে কখন আজান দেবে আর কখন খাব। সমস্ত রকমের জল্পনার অবসান ঘটিয়ে একটা সময় ভেসে আসে আযানের ধ্বনি। ইফতারি শেষ করে আমরা সবাই একত্রে বসে ছিলাম ততক্ষণে বৃষ্টি একদম থেমে গিয়েছে। আকাশ পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে কোথাও এক ফোঁটা মেঘের আভা দেখা যাচ্ছে না। মনেই হচ্ছে না যে একটু আগে বৃষ্টি হয়েছে। যাই হোক কিছুটা সময় রেস্ট নিয়ে আমি রুমের বাইরে চলে আসি। রুমের বাইরে এসে আমি দেখতে পেয়েছিলাম অপরূপ সৌন্দর্য যেটা দেখার জন্য আমি সত্যিই প্রস্তুত ছিলাম না। আকাশে এত সুন্দর পূর্ণিমার চাঁদ উঠেছে যে যেটা দেখে রীতিমতো আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। এত সুন্দর পূর্ণিমার চাঁদ দেখে আমি নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেনি তাই কিছু ফটোগ্রাফি করেছিলাম। এখন সেই ফটোগ্রাফি আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করব।
Location |
---|
Device :realme 6i |
চাঁদের এরকম দৃশ্য দেখে আমি একটা জায়গায় স্থির ভাবে বসে যাই। চাঁদের দিকে অনেকটা সময় এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম। কি দারুন সেই অনুভূতি যা বলে কখনো বোঝানো যাবে না। সেই সাথে হালকা মৃদু বাতাস হচ্ছিল। চাঁদের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার কারণে দেখতে পাচ্ছিলাম চাঁদ সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে কিন্তু চাঁদ এক জায়গায় স্থির, আকাশের মেঘ গুলো ভেসে বেড়াচ্ছে যার কারনে মনে হচ্ছে যে চাঁদ সামনের দিকে এগিয়ে আসছে। তবে তখনকার সেই দৃশ্যটি আমার কাছে অপরূপ সুন্দর লেগেছিল। অনেকটা রাত পর্যন্ত বাইরে কাটিয়ে দিলাম চাঁদ দেখতে দেখতে। অনেকদিন বাদে এরকম একটি সুন্দর মুহূর্ত কাটাতে পেরে নিজের কাছে খুবই ভালো লাগছিল। বিশেষ করে দিনের বেলা বৃষ্টি আর রাত্রেবেলা চাঁদের আলো দুটো একত্রে অনেক সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছি।
আজ আর নয় এখানেই আমি আমার পোস্ট শেষ করছি।সবাই যে যার জায়গা থেকে সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন,পরিবারের সাথেই থাকুন। সেই সাথে প্রিয় মানুষকে সবসময় হ্যাপি থাকার চেষ্টা করুন। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। ধন্যবাদ সকলকে....!!
আমার পোষ্ট দেখার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি আশা করিছি আপনারা সবাই আমার পোষ্ট উপভোগ করবেন এবং আপনারা সবাই আমাকে অনুপ্রাণিত করবেন
বিভাগ | গল্প কথা । |
---|---|
বিষয় | একটি বৃষ্টির দিনের গল্প |
গল্পের কারিগর | @jibon47 |
গল্প তৈরি করার অবস্থান | লিংক |
বৃষ্টির দিনে আপনার কাটানো সময়টুকু অনেক সুন্দর ছিল। সুন্দর কাটানোর সময় এর পাশাপাশি সুন্দরভাবে ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল
বৃষ্টির দিন আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে। তাই বৃষ্টির দিনের কিছু অনুভূতি আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। আপনার মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ
ঠিক বলেছেন ছোট বেলায় বৃষ্টি হলে অনেক মজা লাগতো মনে হতো এই বুঝি স্কুলে যাওয়া লাগবে না এখনো সেই অনুভূতি কাজ করে। বৃষ্টির ভিতরে গোসল করতে আমার অনেক ভালো লাগে তবে ভয় হয় যদি ঠান্ডা লেগে যায়। আপনি অনেক ভালো সময় কাটিয়েছেন।
বৃষ্টির দিনে আমারও গোসল করতে খুবই ভালো লাগে তাই শত বাধা অতিক্রম করে বৃষ্টির পানিতে আমি গোসল করে থাকি মাঝে মাঝে।
আজকে আমাদের এলাকায় যে গরম পরেছে এর মধ্যে আপনার এই পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছে ইস এখনি যদি বৃষ্টি নামতো কত আরামেই না ঘুম দিতে পারতাম। অনেক ভাল ফটোগ্রাফি করেছেন সেই সাথে লেখার ধরন ও সুন্দর আপনার। ধন্যবাদ আপনাকে
বৃষ্টি মানে যেন আরামের ঘুম। বৃষ্টির রাতে ঘুমাতে সবথেকে বেশি আরামদায়ক মনে হয় আমার কাছে অন্যান্য রাতের থেকে। মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
বৃষ্টির দিন মানে যেন এক অন্যরকম অনুভূতি। এই অনুভূতিটা কখনোই বলে শেষ করা যাবে না।
আপনার এই কথাগুলোর সাথে আমি একমত।
আর আপনার বৃষ্টি দিনের গল্প পড়ে খুবই ভালো লাগলো ।সকালে স্কুলের টাইম হলে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতেন যাতে স্কুলে না যাওয়া লাগে ।খুবই ভাল একটি গল্প ছিল ভাইয়া ।
ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।।
ছোটবেলায় প্রায় সকলেরই একটাই চাওয়া থাকতো স্কুল টাইমে বৃষ্টি হোক ঠিক তেমনি ভাবে আমিও এটাই চাইতাম। আপনার গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
আপনি যথার্থই বলেছেন আমরা যারা স্কুল কলেজে পড়ি তারা সকলেই ভাবি যে সকালবেলায় বৃষ্টি হলে স্কুলে অথবা কলেজে যাওয়া লাগবে না । সারাদিন রুমে বসে পার করে দিবো এরকমটাই আমরা সবাই সাধারণত ভেবে থাকি। কিন্তু কর্মজীবী মানুষের কাছে সকালবেলার বৃষ্টিটা শুভকর নয়। ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি এখন পর্যন্ত এটা মনে মনে চাই যে কলেজে যাওয়ার আগমুহূর্তে বৃষ্টি হোক। তবে আপনার মন্তব্যের সাথে আমি একমত করছি বৃষ্টি কর্মজীবী মানুষদের জন্য শুভকর কখনোই হয় না।
বৃষ্টিবিলাসী একটি দিন 😍। পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। আমিও আপনার মতে এমনটাই করতাম। বৃষ্টি আসলে স্কুলে না যাওয়ার জন্য কত কি করেছি। তবে অনেকদিন হলো বৃষ্টিতে ভেজা হয়না।